|| "আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা - ৪৫ : কাতলা মাছের মাথা দিয়ে পুঁই শাকের চচ্চড়ি " ||

in hive-129948 •  last year 

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি, আমার প্রিয় সেরা স্বাদের শাক রেসিপি নিয়ে। এই রেসিপিটি আসলে বর্তমানে চলাকালীন প্রতিযোগিতা -৪৫ এর জন্য তৈরি করেছি। যেদিনই এই কনটেস্ট এর ঘোষণা শুনেছিলাম সেদিনই মনে মনে ঠিক করে নিয়েছিলাম এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করব। কারণ আমাদের বাড়িতে প্রায় প্রতিনিয়তই একটি করে শাকের রেসিপি করা হয়। যদিও সব শাক আমি খুব বেশি পছন্দ করি না । তবে পুঁই শাক, লাল শাক, কুমড়ো শাক এগুলো কিন্তু আমার খুব প্রিয় । কিন্তু এর মধ্যে থেকে কোন শাক দিয়ে রেসিপি তৈরি করব? এই নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ভাবতে থাকলাম। তারপর মাথায় এল পুঁই শাক আর কাতলা মাছের মাথার সমন্বয়ে যদি একটি রেসিপি তৈরি করি ,তাহলে সেটি বেশ সুস্বাদু হবে। তবে সময়ের অভাবে এই কয়দিন করে উঠতে পারিনি রেসিপিটি, কিন্তু কাল দুপুরে তৈরি করে ফেললাম " কাতলা মাছের মাথা দিয়ে পুঁই শাকের চচ্চড়ি "। কাতলা মাছের মাথা আর পুঁই শাক , এই দুটি উপকরণকে এখানে প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করেছিলাম, তবে ঘরে অল্প কিছু চিংড়ি মাছ ছিল , তাই সেটাকে ডেকোরেশনের কাজে লাগানোর জন্য অ্যাড করে দিয়েছিলাম। রেসিপিটি তৈরি করার পরে দেখলাম , খেতে অনেক বেশী সুস্বাদু হয়েছে। আশা করি রেসিপিটি আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।


IMG_20231004_114629.jpg

IMG_20231004_120810.jpg

IMG_20231004_120746.jpg


এটি হলো আমার আজকের তৈরি রেসিপি।


প্রয়োজনীয় উপকরণপরিমাণ
পুঁই শাকপাতা সহ ২ টি ডাটা
কাতলা মাছের মাথা১ টি
বাগদা চিংড়ি৫ টি
কুমড়োএক টুকরো
আলু১ টি
পেঁয়াজ২ টি
রসুন১ টি
কাঁচা লঙ্কা৮ টি
লবণপরিমাণ মতো
হলুদ১ চামচ
জিরে গুঁড়ো১ চামচ
চিনিহাফ চামচ
সাদা তেলপরিমাণ মতো

রন্ধন প্রণালী:


IMG_20231004_113141.jpg


প্রথমেই নিয়ে নিয়েছি আমার প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলি - পুঁই শাক,কাতলা মাছের মাথা ,বাগদা চিংড়ি, কুমড়ো, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা লঙ্কা, লবণ, হলুদ ,জিরে গুঁড়ো , চিনি আর সাদা তেল।


IMG_20231004_113406.jpg


এবার আলু , কুমড়ো আর পুঁই শাক টুকরো টুকরো করে কেটে নিয়েছি। পেঁয়াজ কুচি কুচি করে নিয়েছি, রসুন খোসা ছাড়িয়ে নিয়েছি আর কাঁচা লঙ্কা কেটে নিয়েছি।


IMG_20231004_113449.jpg


এবার ধুয়ে রাখা মাছের মধ্যে দিয়ে দিয়েছি, সামান্য পরিমাণে লবণ আর হলুদ । তারপর সেটাকে মাছের সাথে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছি মাছ ভাজার জন্য।


IMG_20231004_113605.jpg


তারপর কড়াইতে দিয়ে দিয়েছি পরিমাণ মতো তেল । তেল গরম হয়ে গেলে তাতে লবণ আর হলুদ মাখিয়ে রাখা মাছের টুকরো গুলোকে দিয়ে দিয়েছি। আর ভাজা হয়ে গেলে সেগুলিকে একটি পাত্রের মধ্যে তুলে নিয়েছি।


IMG_20231004_113724.jpg


এরপর কড়াইতে দিয়ে দিয়েছি কুচানো পেঁয়াজ ভাজার জন্য। পেঁয়াজ ভাজা হয়ে গেলে সেটিকে একটি পাত্রের মধ্যে নামিয়ে রেখে দিয়েছি। তারপর কড়াইতে আলু আর কুমড়ো দিয়ে দিয়েছি ভাজার জন্য। আলু আর কুমড়ো ভাজা হয়ে গেলে তাতে দিয়ে দিয়েছি রসুন বাটা। সেটাকেও ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে নিয়েছি।


IMG_20231004_113855.jpg


তারপর দিয়ে দিয়েছি পরিমাণ মতো লবণ আর হলুদ ।তারপর সেটাকে আলু আর কুমড়ো সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিয়ে দিয়েছি কেটে রাখা পুঁই শাক । সেটাকেও বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নিলাম। তারপর দিয়ে দিলাম কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কার টুকরো।


IMG_20231004_113944.jpg


এরপর দিয়ে দিয়েছি সামান্য চিনি। তারপর ভেজে রাখা কাতলা মাছের মাথা দুটিকে ছোটো ছোটো করে ভেঙে কড়াইতে দিয়ে দিলাম, সাথে দিলাম ভেজে রাখা চিংড়ি মাছের টুকরো গুলিকে। সেটাকে কড়াইতে বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নিয়ে দিয়ে দিলাম জিরে গুঁড়ো।


IMG_20231004_114119.jpg


সব মসলা গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে দিলাম সামান্য পরিমাণে জল । তারপর ১৫ মিনিট মতো ঢাকা দিয়ে রাখলাম। ঢাকনা খুলে দেখলাম রেসিপিটি প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে । তখন ওপর দিয়ে ছড়িয়ে দিলাম ভেজে রাখা পেঁয়াজের টুকরো গুলোকে। আর এভাবেই তৈরি হয়ে গেল আমার আজকের রেসিপি।


IMG_20231004_114629.jpg

IMG_20231004_120810.jpg

IMG_20231004_120746.jpg


এরপর একটি বাটিতে নামিয়ে, সেটিকে পরিবেশন করে দিলাম।


পোস্ট বিবরণরেসিপি
ডিভাইসrealme 8i
ফটোগ্রাফার@pujaghosh
লোকেশনবারাসাত

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

কাতলা মাছের মাথা দিয়ে পুঁই শাকের চচ্চড়ি দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে দিদি। সাথে চিংড়ি মাছ অ্যাড করেছেন দেখে মনে হচ্ছে খেতে আরো বেশি মজার হয়েছে। সত্যি দিদি আপনার রান্না দারুন হয়েছে।

অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে। আপনার সুন্দর প্রশংসনীয় মন্তব্য পেয়ে অনেক খুশি হলাম।

এই দুপুর বেলা এত লোভনীয় খাবার কেউ বুঝি শেয়ার করে দিদি। এমনিতেই পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা আর তাই আপনার তৈরি কাতলা মাছের মাথা দিয়ে পুঁইশাকের চচ্চড়ি দেখে আমার পেটের ক্ষুধা বেড়ে গেল। মনে হচ্ছে গরম গরম ভাতের সাথে এই রেসিপি খেতে পারলে ভীষণ স্বাদ পাওয়া যাবে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য খুব মজাদার একটি রেসিপি বেছে নিয়েছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। রন্ধন প্রণালীর প্রতিটি ধাপ শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দিদি।

গরম গরম ভাতের সাথে আসলেই এই রেসিপিটি খেতে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল ভাই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অনেক সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

দিদি, এই প্রতিযোগিতায় আপনার অংশগ্রহণ টা দেখে আমার কাছে সত্যি অনেক বেশি ভালো লেগেছে। সবাই ইউনিক ইউনিক রেসিপি তৈরি করছে যেগুলো দেখে আমি তো বেশ মুগ্ধ হলাম। আপনি কাতলা মাছের মাথা দিয়ে পুঁইশাকের চচ্চড়ি রেসিপি তৈরি করেছেন দেখে আমার তো জিভে জল চলে এসেছে। রেসিপিটা তৈরি করার পদ্ধতি অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন দেখে আরো ভালো লাগলো।

হ্যাঁ ভাই ,আমিও দেখলাম এই প্রতিযোগিতায় সবাই অনেক অনেক ইউনিক রেসিপি তৈরি করেছে। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

কাতলা মাছের মাথা দিয়ে পুঁইশাকের চচ্চড়ি রেসিপিটি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো আমার কাছে। আমার তো কাতলা মাছ এবং পুঁইশাক দুটোই খেতে ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি কাতলা মাছ আমার অনেক পছন্দের। আপনিও অনেক সুন্দর ভাবে তৈরি করে প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করেছেন। প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন।

আমার কাছেও আপনার মত কাতলা মাছ এবং পুঁই শাক দুটোই খেতে খুব ভালো লাগে ভাই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

আমার তো পুঁইশাকের চচ্চড়ি দেখেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় পুঁইশাকের চচ্চড়ি আমি অনেক খেয়েছি। আর আমার পুঁই শাকের চচ্চড়ি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। কাতলা মাছের মাথা দিয়ে কিন্তু এভাবে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। ভাবতেছে আপনার রেসিপিটি দেখে একদিন তৈরি করব কেমন হয় খেতে। আপনার রেসিপি অনেক ভালো লাগলো। প্রতিযোগিতার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

পুঁই শাকের চচ্চড়ি আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি রেসিপি আপু, আমি প্রায়ই এটি খেয়ে থাকি। হ্যাঁ আপু, বাড়িতে একবার তৈরি করে দেখবেন ,এইভাবে কাতলা মাছের মাথা দিয়ে পুঁই শাকের চচ্চড়ি খেতে আশা করি ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে।

পুঁই শাক আমারও খুবই পছন্দের। আর এভাবে মাছ দিয়ে রান্না করলে খেতে বেশ ভালোই লাগে। তবে পুইশাক এবং মিষ্টি কুমড়া এভাবে একসাথে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপিটা দেখে লোভনীয় লাগছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। সুস্বাদুও মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

আমার মত পুঁই শাক আপনারও খুব পছন্দ জেনে ভালো লাগলো আপু । ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

আপু প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনি কাতলা মাছের মাথা দিয়ে পুঁইশাকের চচ্চড়ি করেছেন। এভাবে রান্না করলে খেতে ভীষণ ভালো লাগে। মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়িতে এরকম রান্না হয়ে থাকে। রান্নার ধাপ গুলো খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, আপনার সুন্দর প্রশংসনীয় মন্তব্যের জন্য।

আপনার রেসিপির কালার টা অনেক সুন্দর এসেছে। রেসিপিটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা খেতে সুস্বাদ হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

ঠিক বলছেন আপু প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি করার রেসিপি গুলো খুবই মজার হয়। যেহেতু স্পেশালভাবে প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি করা হয় তাই। দেখে তো মনে হচ্ছে খেতে খুবই মজার হয়েছিল। যেহেতু আপনি কাতাল মাছের মাথা দিয়ে তৈরি করলেন। তাছাড়া খুব সুন্দর করে চিংড়ি মাছ দিয়ে ডেকোরেশন করলেন। অনেক ভালো লাগলো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।

হ্যাঁ আপু, প্রতিযোগিতার রেসিপি গুলো সত্যিই অনেক মজার হয়। ধন্যবাদ আপনাকে ,আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

এত এত রেসিপি শুধুই দেখছি কিন্তু খেতে আর পারছি না। বেশ আফসোস হচেছ। পুইঁশাক কিন্তু আমার খুব প্রিয়। আর এর সাথে কাতলা মাছের মাথা দিয়ে এত দারুন একটি রেসিপি করেছেন দেখে তো মাথা টা ঘুরে যাচেছ। যাক দারুন ছিল আপনার উপস্থাপনাও। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।

পুঁই শাক আমার মত আপনারও খুব প্রিয় জেনে ভালো লাগলো আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।