শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি ভ্রমণ। (পর্ব -১)

in hive-129948 •  2 days ago 

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ০৪ মার্চ,মঙ্গলবার, ২০২৫ খ্রিঃ

কভার ফটো


1000029467.jpg

কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।আজ আমি আপনাদের সাথে একটি ভ্রমণ পোস্ট শেয়ার করব। ভ্রমণ করতে তো আমরা সবাই ভালোবাসি। ভ্রমণ করতে ভালবাসলেও বাড়ির লোকের অনুমতি না থাকায় কোথাও তেমন একটা ঘুরতে যাওয়া হয় না। তবে কুষ্টিয়ার মধ্যে কিংবা কুষ্টিয়ার আশেপাশে সুযোগ হলে ঘুরতে চলে যায়। এই তো কিছুদিন আগেই ঘুরতে গিয়েছিলাম কুষ্টিয়া রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি। সেখানে গিয়ে কি রকম সময় কাটালাম সেটাই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব।



শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার একটি অন্যতম পর্যটক স্থল। এটি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। এই জায়গাটিকে ঠাকুর স্মৃতি জাদুঘর বলা হয়। এটি প্রায় ১১ একর জায়গা নিয়ে অবস্থিত। এই কুঠিবাড়ির এরিয়ার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি পুকুর এবং বিভিন্ন ধরনের গাছপালা। ঘরটির মধ্যে রয়েছে ১৫ টি কক্ষ। কুঠিবাড়ি ঘুরতে যাওয়ার জন্য বেশ জনপ্রিয় একটি জায়গা। সুন্দর ছায়াঘেরা একটি জায়গা হওয়ায় লোকজনের সমাগম বেশি থাকে। যেহেতু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে তার জমিদারীর সময়ের কিছুটা সময় পার করেছে সেজন্য এটি ঠাকুরবাড়ি নামে খ্যাত। এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের জিনিস রয়েছে।

1000029458.jpg
বেশ কিছুদিন ধরে ভাবছিলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িতে বেড়াতে যাব। কিছুতেই যাওয়া হয়ে উঠছিল না। তারপর আমরা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে কুঠিবাড়ি যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তারপরে যাওয়ার দিন আমরা মাত্র চার জন মিলে কুঠিবাড়ি গিয়েছিলাম। আগের দিন রাত্রেই আমরা যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছিলাম। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে বারোটা নাগাদ আমরা বের হয়ে পড়ি ঠাকুর বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে। কুষ্টিয়া থেকে বাস ধরে যাওয়া যায় আবার নদী পার হয়েও যাওয়া যায়। নদীতে যেহেতু এখন চর পড়ে গিয়েছে সেজন্য অনেকটা পথ হেঁটে যেতে হতো। হেঁটে যাওয়ার ভয়ে আমরা বাসে করে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিই।

1000029459.jpg
বাসে করে আমাদের কুঠিবাড়ি যেতে এক ঘন্টা মত সময় লেগেছিল। এক ঘন্টার মধ্যে আমরা কুঠিবাড়িতে পৌঁছে গেলাম। এর আগেও আমি একবার কুঠি বাড়িতে গিয়েছিলাম।প্রথমেই আমরা কুঠিবাড়িতে প্রবেশ করি। এখানে প্রত্যেকের প্রবেশ মূল্য ছিল ৩০ টাকা করে। ৩০ নাকি ৫০ আমার ঠিক মনে পড়ছে না। তবে এ রকমই কিছু একটা এমাউন্ট নিয়ে ছিলো।আমরা টিকিট কেটে চারজন মিলে প্রবেশ করি কুঠিবাড়িতে। আমরা ঢুকে দেখতে পাই অনেক লোকের সমাগম ঘটেছে সেখানে। অনেক স্কুল থেকে অনেকে এসেছে শিক্ষা সফরে।

1000029470.jpg

1000029471.jpg

আমরা যখন কুঠিবাড়িতে প্রবেশ করেছিলাম তখন ছিল প্রচন্ড রোদের তাপ। সেজন্য আমরা প্রথমেই কুঠিবাড়ির মধ্যে প্রবেশ না করে চলে যাই পুকুর পাড়ের দিকে। বড় পুকুর পাড়ের চারিপাশে সুন্দর সুন্দর বসার জায়গা রয়েছে। খুবই শান্ত পরিবেশ এখানে। আমরা সেখানে গিয়ে প্রথমেই বসে পড়লাম। প্রকৃতিতে বসন্ত এসে গেছে। চারিদিকে গাছগুলোতে পাতা ঝরে পড়েছে। বইছে মৃদু মধু বাতাস। আমরা সবাই মিলে সেখানে বসে গল্প করছিলাম। পুকুর ধারে আড্ডা দিতে দারুন লাগছিলো।

1000029472.jpg

1000029473.jpg
আমরা যখন পুকুর ধারের দিকে যাচ্ছিলাম তখনই একপাশ থেকে কুঠিবাড়ির একটি ফটোগ্রাফি করে নিয়েছিলাম। রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির এই কালার কম্বিনেশনটা আমার কাছে খুব ভালো লাগে। যাই হোক, আমরা পুকুর পাড়ে গিয়ে বেশ খানিক সময় উপভোগ করলাম। আমি তো কোথাও গেলেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার কেন জানি না খুব খারাপ লাগছিল। সেজন্য আমি পুকুর পাড়ে বসে ছিলাম। যারা শিক্ষা শহরে এসেছে তারা সবাই মিলে ভীষণ মজা করছিলো।তাদের মজার দেখতে আমার কাছে খুব ভালো লাগছিল। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম পুকুর পাশের চারপাশটা ঘুরে দেখার। পুকুর পাড়ে চারপাশটা ঘুরে দেখতে শুরু করলাম। পুকুর পাড়ে চারপাশ দিয়ে ঘুরতে কত যে ভালো লাগছিল আর কি বলবো।

1000029474.jpg

1000029477.jpg

1000029476.jpg

হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়লো এক ঝাঁক সাদা হাঁস। সাধারণের হাঁসগুলো জলের মধ্যে দেখতে চমৎকার লাগছিল। একসাথে অনেকগুলো হাঁসের ফটোগ্রাফি করেছিলাম কিন্তু এখন আর সেগুলো খুঁজে পাচ্ছি না। পুকুরের চারপাশে ঘোরাঘুরি শেষে আমরা রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির দিকে আসলাম। তখন অলরেডি লাঞ্চের সময় হয়ে গিয়েছে। লাঞ্চের সময় হয়ে যাওয়ায় আমাদেরকে ভিতরে প্রবেশ করতে দিলো না। আমরা তখন আর কি করবো? আমরাও তখন লাঞ্চ করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা সেখানে গিয়ে কি কি লাঞ্চ করলাম এবং পরবর্তী সময় গুলো কিভাবে কাটালাম পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
আজ এই পর্যন্তই।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ০৭ ফেব্রুয়ারি২০২৫ খ্রিঃ
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
1000029649.png1000029651.png1000029650.png

image.png

রবীন্দ্র কুঠি বাড়িতে গিয়ে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। পুকুর পাড়ের জায়গাটা অনেক মনোরম বসে গল্প করার জন্য পারফেক্ট। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের কুষ্টিয়াতে থাকতেন এটা কিন্তু আমাদের জন্য অনেক রকমের গৌরবের বিষয়। তার এই সুন্দর কুঠিবাড়ি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক অনেক মানুষ এসে উপস্থিত হয়ে থাকে এখানে। আজকে আপনি রবি ঠাকুরের কুঠিবাড়ি আমাদের মাঝে ভ্রমণ করে দেখেছেন দেখে ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার ফটো ধারণ করা।

দিদি আপনার ভ্রমন পোস্টের মাধ্যমে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িটি দেখা হলো আর পাশাপাশি জানা ও হলো।সময়টা আপনাদের চারজনের সুন্দর কেটেছে এটা বলতে পারি।গরম খুব বেশী তাই ভেতরে না গিয়ে বাইরের পরিবেশে ঘোরাঘুরি করে সময় কাটালেন।ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে পেয়ে জায়গাটির বিষয়ে ধারনা পেলাম।কখনো যাওয়া হয়নি।আশা আছে বেঁচে থাকলে যাওয়ার।ঘুরতে ঘুরতে লাঞ্চের সময় হয়ে যাওয়াতে লাঞ্চ করতে গেলেন।আশাকরি পরের পর্বে দেখতে পাবো।

রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দেখছি খুবই সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন। আজকে আপনি প্রথম পর্বটা এত সুন্দর করে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। এই পর্বের মাধ্যমে অনেক সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফিও শেয়ার করেছেন। সব মিলিয়ে খুব দারুণ লাগলো আর আজকের এই পোস্ট। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের জন্য।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকো জন্মেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার সমস্ত জমিদারি ছিল শিলাইদহে। আর সেখানে বসে তিনি অসংখ্য লেখা সৃষ্টি করেছিলেন। তাই শিলাইদহ তার জীবনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। শিলাইদহে থাকবার সময় তার মধ্যে তীব্রভাবে লালনের প্রভাব দেখা যায়। সেই শিলাইদহের কুঠিবাড়ির ছবি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখে খুব ভালো লাগলো বোন।