"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৩ || আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অনুভূতি

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

"আসসালামু আলাইকুম"

জ রোজ বৃহস্পতিবার

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিস্টাব্দ ।


হ্যালো ,

আমি @rahimakhatun

কে মন আছেন সবাই ?আশা করি সকলে ভালো আছেন। আমি ও বেশ ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আমি আজকে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি আজকে আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি শেয়ার করবো । আশা করি ভালো লাগবে। সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ।



308746419_422369063255960_9176459259705610288_n.jpg

স্কুল নিয়ে লিখবো ,আর স্কুল ফ্রেন্ড এর ছবি দিবো না তা কি হয়। আমরা সেই ক্লাস নার্সারি থেকে এস এস সি অব্দি এক সাথে একই স্কুল এ পড়েছি। ঐদিন আমাদের একটা পার্টি প্রোগ্রাম ছিল ,তাই সবাই আবার অনেক দিন পর এক সাথে হওয়ার সুঝোগ পেলাম।

ভূমিকাঃ

আমি আজ "আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা ২৩অংশগ্রহণের জন্য আমার স্কুল জীবনের তিক্ত অনুভূতি নিয়ে লিখবো । প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আমাদের সকলের প্রিয় দাদা @rme দাদাকে বাংলা ভাষার একটি প্লাটফরম আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।তারপর আমাদের প্রিয় এডমিন ভাইদের কে এমন সুন্দর সুন্দর ভিন্ন রকমের প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।

309286944_1153519971962649_7580952173001999927_n.jpg

আমার মনে হয় সবার জীবনে সেরা অনুভূতি গুলা স্কুল লাইফেরই হয়। অনেক বছর এক সাথে থাকা অনেক মজা করা। স্কুলের বিভিন্ন অকেশনে ফ্রেন্ডরা এক সাথে হওয়া আরো কত কি। এমন কি ঝগড়া হওয়া তো আছেই।ভালোর পাশাপাশি তো তিক্ততা আসছেই। আমি ছোট বেলা থেকে যেই স্কুলে পড়তাম তার নাম ছিল বিনিময় বিদ্যা নিকেতন কিন্ডার গার্ডেন। আমাদের বাড়ির পাশেই। পাশে বলতে আমাদের বাসা থেকে দেখা যায়। এই স্কুলে কেন্দ্র করে অনেক স্মৃতি রয়েছে। আমি তো ভেবেই পাচ্ছি না কোনটা রেখে কোনটা বলবো। প্রথমেই শুরু করি আমার পাশের বাড়ির ফ্রেন্ড কে দিয়েই। তখন স্কুল ছিল ৭ টায়। অর্থাৎ ৭.৩০ এ ক্লাস হত। আর পিটি হতো ৭.১৫ মিনিটে। বাসা থেকে রেডি হয়ে ঘুম ঘুম চোখে যেতাম ফ্রেন্ড এর বাসায় ওর সাথে স্কুলে যেতাম। আমি যেয়ে দেখতাম ও ঘুম থেকে উঠেই নি। তখন যে ওর জন্য দাড়িয়ে অপেক্ষা করতাম ,এত মেজাজ খারাপ হতো কি আর বলবো। মাঝে রাগ করে একাই চলে যেতাম ,তা না হলে বলতাম ও যেন আমাকে নিতে আসে ,প্রতিদিন ওর জন্য অপেক্ষা করতে পারবো না।

308925042_484385146904997_7220867438304664038_n.jpg

এই হচ্ছে আমার সেই ঘুম পাগল ফ্রেন্ড পাশাপাশি বাসা কিন্তু অনেক দিন পর দেখা হলো।

আগে আগে স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করতাম তা না হলে সামনে বসা যাবে না ,অনেক সময় স্কুলের গেইট খোলার আগেই গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম। আর গেইট খুলতো ক কার আগে যেয়ে সামনে বসতাম। তখন ছিল আরেক ঝামেলা স্মৃতি নামে এক ফ্রেন্ড ছিলো ওর ছিল দুইটা ব্যাগ ওর ছিল। ওর দাদি ছুটির পর ব্যাগ রেখে যেত। তাই ওর জন্য কেউ সামনে বসতে পারতো না। মনে মনে এই দাদিকে কে কত বোকা দিতাম। বেশ রাজি ছিল ওনার ভয়ে আমরা কেউ কিছু বলতে পারতাম না। যার কারণে ও পরে এসেও আগে বসতো। অনেক দুষ্ট ছিল মানুষের খাতা ছিড়ে ফেলতো। রাবার ,পেন্সিল নিয়ে যেত ওর দাদির ভয়ে কীয় কিছুই বলতো না। আজও চোখে ভাসে তার চেহারা। আমার বেশ জানতে ইচ্ছা করে তিনি কি আজ ও বেঁচে আছেন কিনা ,স্মৃতি সাথে অনেক দিন কথা কিংবা দেখা হয় না। সেই দিন গুলো বেশ মিস করি। আবার আসি @siddiqua কথা। একবার ক্লাসে কোন এক কারনে@siddiqua শান্তার সাথে আমার খুব রাগারাগি হয়।আসলে একটা কথা নিয়ে কেউ একজন আমাদের সাথে ঝামেলা বাধিয়ে দেয়,যার কারনে স্কুলেই খুব ঝগড়া হয়।যদিও আর এই জন্য কখনো সরি বলতে পারিনি।জানি না তুই মনে রেখেছিস কিনা, যদি মনে রাখিস আর কষ্ট পেয়ে থাকিস, আমি অনেক সরি রে।

308626713_832126034612126_9953610892216989_n.jpg

শান্তা আর আমি এক সাথে।

স্কুলে যখন বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম হতো ,তখন আমি ছোট বেলা থেকেই চেষ্টা করতাম অংশগ্রহণ করার জন্য। এই যেমন বিভিন্ন কনটেস্ট এ অংশগ্রহণ করার মত। পুরস্কার পাই বা না পাই অংশগ্রহণ করতাম। একবার দলীয় নাচের প্রোগ্রামে নাম দিয়েছিলাম। দলীয় যেহেতু নাচের প্রোগ্রাম সেহেতু যারা যারা এক সাথে নাচবো তারা তারা এক সাথে স্কুলই অনুশীলন করতাম। তো সবাই মুটামুটি ঠিকঠাক করে নাচতে পারি। তো যেদিন আমাদের প্রোগ্রাম সবাই সেজেগুজে এক সাথে মিলিতো হলাম। সেই আমাদের নাচের পর্ব আসলো ,স্টেজে উঠলাম যে যার জায়গা মত দাঁড়ালাম। আমার তো এত মানুষ দেখে বেশ ভয় এবং লজ্জা লাগছিলো। যখন গান অন করলো আমি ভয় এবং লাজ্জায় সব ভুলে গেলাম। সেই দিন একটা তাল ও দিতে পারিনি। সবাই নাচ শেষে সে কি বোকা আমাকে। হা হা

308652769_496509365355483_1786850700464478577_n.jpg

সবগুলা ফ্রেন্ড এক সাথে ,আমাদের স্কুলের সামনে একটা রেস্টুরেন্ট হয়েছে। অর্থাৎ স্কুলের সামনেই ছবিটা তোলা।

লাষ্ট একটা কথা না বললেই নয়।আমি যখন ক্লাস ফাইভে পরি।তখন বৃওি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কোচিং করতাম কয়েকজন এক সাথে।আমাদের সিট পড়েছিলো বেশ দূরের স্কুলেই। খুব সম্ভবত সকাল বিকাল করে তিনদিন পরীক্ষা দিয়ে ছিলাম।বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করার পর সেই কাংঙ্খিত দিন চলে আসলো।রেজাল্ট দিবে সকাল ১০.৩০ টায়।আগের দিন তো ঘুমই হয়নি। কি হবে কি হবে করে।মোটামুটি উওেযনা কাজ করছিলো।আমি আর বাবা সহ একসাথে গেলাম। তো প্রথমেই তো কমিটি এরা বেশ বক্তব্য দিচ্ছে আমি তো মনে মনে বলছি এত কথা বলার কি আছে,কখন ঘোষণা দিবে,সেই অপেক্ষায় আছি।তাঁরা ঘোষণা দিল যে ৫ জন বৃত্তি পেয়েছে। তাঁর মধ্যে আমার নাম ও আছে।আমি তো বেশ খুশি।তাঁরা একজন একজন করে ডাকছে আর পুরষ্কার দিচ্ছে। পুরষ্কার বলতে খামে কিছু টাকা দিচ্ছে। তো আমিও গেলাম হাতে একটা খাম ধরিয়ে দিল বের করে দেখি প্রায় চারশত টাকার মত।আমি করেছি বাবার হাতে না দিয়েই নিজের কাছে টাকা রেখেছি এই দিকে কমিটিদের কথা এখনও শেষ হয়নি,তাই আমরা বাসায় যেতে পারছি না,তারপর কে যেন কি বলে আমার হাত থেকে প্যাকেট নিলো বললো দেখি তো।আমিও দিলাম।যাই হোক খাম টা আবার ফিরত দিল পরে বাবা আর আমি খাম নিয়ে বাসায় এসে দেখি খামে কোন টাকা নেই। দেখে যেমন ভয় হচ্ছে মা বকবে বলে আর কষ্ট লাগছে কেন বাবার কাছে আগেই খাম টা দিলাম না।এটাই ছিলো আমার সবচেয়ে তিক্ত অনুভুতি।

পরিশেষে:

আসলে কিছু কিছু অনুভুতি শেষ করতে চাইলেই শেষ করা যাই না। তেমনি স্কুল জীবনের অনুভূতি। সেই দিন যেদিন সবাই এক সাথে মিলিত হলাম কারো কথাই যেন শেষ হচ্ছিলো না। কোন দিক দিয়ে যে সময় চলে গেলো টের পাইনি। খুব মনে পরে স্যার ম্যাডামদের। তার শাসন গুলো তখন হয়তো তিক্ত মনে হইতো কিন্তু এখন বুঝি সবটাই আমাদের ভালোর জন্য। হয়তো তাদের জন্যই কিছুটা হলেও মানুষ হতে পেরেছি। মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি। মাঝে মাঝে মনে হয় আবার ছোট হয়ে যদি স্কুলে যেতে পারতাম। তাহলে মনে হয় খুব ভালো হতো।

যাই হোক আজ এই অব্দি ,আবার আসবো অন্য কোনো দিন ,অন্য কোন ব্লগ নিয়ে ,সেই অব্দি ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায়।

ধন্যবাদ সবাইকে

device Galaxy A13
LocationDhaka
Photograpy school friend
source

Banner.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার স্কুল জীবনের বান্ধবীদের সাথে এখনও এত ভাল সম্পর্ক এবং যোগাযোগ দেখে ভাল লাগল। আপনার স্কুল জীবনের মজার কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা এই পোস্টের মাধ্যমে জানলাম। আপনার টাকার খাম নিশ্চয়ই কেউ চুরি করার উদ্দেশ্যেই নিয়েছিল। যাই হোক স্কুল জীবনে বৃত্তি পাওয়া মানে একটি বিশাল বেপার ছিল, আপনি সে বৃত্তির টাকা পেয়েও হারিয়ে ফেলেছেন শুনে খারাপ লাগছে। ধন্যবাদ আপু।

হুম আমাদের এখনও যোগাযোগ হয় দেখা হয় কথা হয়।ভালো লাগে ওদের সাথে সময় কাটাতে। হুম বৃত্তির টাকাটা সে দিন নিয়ে গিয়েছিলো।ধন্যবাদ

আপনি ঠিক কথাই বলেছেন।
স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি থাকে যেগুলো কখনো ভোলা যায় না। সেসব স্মৃতি একবার মনে পড়লেই নিমিষেই মনটা খারাপ হয়ে যায়।
আর আপনার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল

হুম হুম কিছু কিছু স্মৃতি কখনোই ভুলা যায় না।আপনি আমার পোস্ট পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

আমারো প্রথম বৃত্তির টাকা ছিল ৪০০।তবে সেটি আম্মু এত সাবধানে রেখেছিল যে আজ পর্যন্ত আমার হাতেও সেটা আর আসেনি।আপনার পুরস্কার হারানো তে খারাপ লাগল অনেক।বেশ ভাল ভাবে আপনি আপনার অনুভূত গুলো তুলে ধরেছেন।শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।

আমার ও ৪০০ টাকা ছিলো।তবে আর কি বেশি ভাব নিতে গিয়ে রাখতে পারলাম না। হা হা। ধন্যবাদ

প্রথমে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিযোগিতায় আপনার তিক্ত অনুভূতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আসলে স্কুলজীবনে বুওি পাওয়া অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। আমি সারা জীবনে একটা বৃত্তি পাইনি। আপনার টাকা হারিয়ে ফেলেছেন এ বিষয়ে অনেক খারাপ লেগেছে।

হা হা।আসলেই ছোটবেলা গুলো বেশ ভালো ছিলো।পাবেন পাবেন সামনে বৃত্তি পাবেন।হা হা

কি বলেন আপু আপনার কাছ থেকে টাকার খামটা নিলো আবার দিয়ে দিল কেন নিল সেটাও জানলেন না। এত কষ্ট করে পড়ালেখা করে বৃত্তি পেয়েছিলেন। আসলে এটা তো টাকা নয় নিজের একটা সম্মান। আমিও আপনার মত ক্লাস ফাইভে সরকারি বৃত্তি পেয়েছিলাম। আর এই জন্য ক্লাস এইট পর্যন্ত তিন বছর টাকা পেয়েছি। আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণটা বুঝতে পারলাম।

আপু আমি জানিয়েছি খামটা নিয়ে টাকাটা নিয়ে গেছে, কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি আপু।

কবে তোর সাথে আমার ঝগড়া হয়েছে আর ঠিক মনে নাই ,তবে তোর যেহেতু মনে আছে তাই আমাকে একটা বার্গার ট্রিট দিয়ে সরি বলতে পারিস ,🙄🙄..তোর মনে আছে এখন ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় স্কুল থেকে প্লাস্টিকের জগ ,মগ দিয়ে দিয়েছিলো 🤣😂,,,,,তবে তোর পোস্ট পড়ে আমি সেই স্কুল জীবনে ফিরে গিয়েছিলাম ।ধন্যবাদ এতো সুন্দর করে ঘটনা গুলো বর্ণনা করার জন্য।

বার্গার খাওয়া ভালো না।আমি বান্ধবী হয়ে তোকে কেমনে খারাপ জিনিস খাওয়াই বল।🤪🤪