আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা- ২২ | আমার জীবনে প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

"আসসালামু আলাইকুম"

জ রোজ বুধবার

৩১ই অগাস্ট ২০২২ খৃস্টাব্দ


হ্যালো ,

আমি @rahimakhatun

কে
মন আছেন সবাই ?আশা করি সকলে ভালো আছেন। আমি ও বেশ ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আমি আজকে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি আজকে আমার জীবনে প্রথম মোবাইল ফোনের অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো । আশা করি ভালো লাগবে। সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ।



ভূমিকাঃ

আমি আজ "আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা ২২অংশগ্রহণের জন্য আমার প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো । প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আমাদের সকলের প্রিয় দাদা @rme দাদাকে বাংলা ভাষার একটি প্লাটফরম আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।তারপর আমাদের প্রিয় এডমিন ভাইদের কে এমন সুন্দর সুন্দর ভিন্ন রকমের প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।
source
এইবারের প্রতিযোগিতা আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেকের সুন্দর সুন্দর অনুভুতি প্রকাশ পেয়েছে। আসলে এখন মোবাইল সবার হাতে হাতে দেখা গেলেও একটা সময় এমন ছিল না। হাতে গুনা কয়েক জনের হাতে মোবাইল থাকতো। আগে মানুষ বেশির ভাগ ল্যান্ড ফোন কথা বলতো তাও সবার বাসায় ছিল না। তখনই আমার মনে হতো বাসায় যদি একটা ল্যান্ডফোন থাকতো তাহলে একটু ল্যান্ডফোনে কানে দিয়ে সেই ভাব নিতে পারতাম। একটা সময় ল্যান্ডফোনে কানে নিয়ে ছবি তোলার একটা অন্য রকম ভাব ছিলো। যাই হোক তখন আমি খুব সম্ভবত ক্লাস সিক্স কি সেভেনে পড়তাম, তখন আমার ভাইয়া ইন্টার প্রথম বর্ষে পড়ে। আমার দুলাভাই বিদেশ থেকে প্রথম মোবাইল ফোন পাঠায় ভাইয়ার জন্য। তখন তো মহা খুশি আমরা। ভাইয়া যখন মোবাইল রেখে বাহিরে যেতো ,তখন ফোনটা কেবল ধরতাম। তখন তেমন কোনো আইডিয়া ছিল না। ভাবতাম যদি বাটনে চাপ দিলে নষ্ট হয়ে যায় তাই। কয়েকদিন যাওয়ার পর আস্তে আস্তে কিছু শিখলাম। এই যেমন কেউ ফোন দিলে রিসিভ করা। তারপর রিংটোন বাজানো। আমার বেশি ভালো লাগতো বাটনে চাপ দিলে একটা টিট টিট শব্দ হতো সেটা। প্রায় করতাম বিনা কারণে ডিজিট চাপতাম। আর সাপের গেমস তো আসেই। সাপ যত বড় হতো ততই এক্সসাইডনেস কাজ করতো। একদিন হলো কি ফোনে গেমস খেলতে খেলতে অনেক গরম হয়ে গিয়েছে ,কি করবো ভাইয়ার ভয়ে ফোন ফ্রিজের উপরের চেম্বারে রেখে দিলাম ,ঠান্ডা হওয়ার জন্য ফ্রিজে রাখতাম তার হিসাব নেই ,মাঝে মাঝে আমার দেখাদেখি ভাইয়া ও দেখতাম ফ্রিজে রাখতো। যাই হোক আমি যখন এস.এস.সি দেই ,তখন বাবা বলেছিলো ভালো রেজাল্ট করলে ফোন কিনে দিবে ,তো ভালো রেজাল্ট করলাম ,কলেজেও ভর্তি হলাম। একদিন হঠাৎ বাবা অফিসে থেকে আসলার সময় দেখলাম কি যেন একটা বক্স নিয়ে আসলো। আমরা হাতে দিলো বক্স খুলে তো আমি খুশিতে আত্মহারা। কিউট একটা লাল রঙের samsung এর ফোল্ডিং সেট। তখন ৬ ঘন্টার চার্জ দিতে হবে তাই দেখতে পারি নি। ছয় ঘন্টা চার্জ দেওয়ার পর নিয়ে হাতে মোবাইল নিয়ে বসলাম। একটা সময় প্রচুর Fm রেডিও শুনা হতো। আমি আগেই দেখে নিলাম আমার ফোনে কিভাবে রেডিও চালানো যায়। আগে হেডফোন ছাড়া মোবাইল রেডিও ও করা যেত না।যাই হোক সেই ভাব মোবাইল আবার হেডফোন সব মিলিয়ে। ফোনটা বেশ যত্ন করে রাখতাম। ফোনটাই কোন ময়লা হলে ,তাতে হালকা স্যাভলন লাগিয়ে কটন দিয়ে খুব যত্ন করে মুছতাম। ফোল্ডিং সেট তো একবার মোবাইলের ফোল্ডিং খুলি আবার বন্ধ করি। কলেজে নিয়ে যেতাম না ,যদি ফোনটা চুরি হয়ে যায় তাই। কলেজে যাওয়ার সময় কত জায়গায় যে লুকিয়ে রেখে যেতাম যেন চোর আসলে নিতে না পারে ,আর মা কেও বলে যেতাম দেখে রাখতে। একদিন বায়লোজি পরিক্ষার জন্য পড়তে পড়তে দেরি হয়ে গিয়েছিলো ,তখন রাত ১.৩০ কি ২ টা মশারি টাঙিয়ে মোবাইল হেডফোন লাগিয়ে রেডিও শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পরেছিলাম। হঠাৎ কেমন জানি জালানার পাশে কেমন জানি আওয়াজ হলো ,পরে চোখ খুলে দেখি জালানার পাশে কি যেন দাঁড়িয়ে আসে আমি তো ভয়ে শেষ ,আমি দেখছিলাম মশারি কেটে লাঠি ঢুকিয়ে হেডফোন পেচাচ্ছে ,যে ফোনটা নিয়ে যাবে ,আমি চেষ্টা করেও চোর বলে চিৎকার করতে পারছিনা ,আমি শুধু মা কেই ডাকতে পারলাম। মা বাবা দৌড়ে এসে লাইট অন করে দেখে লাঠির মধ্যে হেডফোন পেঁচানো ,যাই হোক ঐদিন মোবাইলটা বাঁচাতে পেরেছি ,আর পর আরো সাবধানে রাখা শুরু করলাম। একদিন আমার নানুর অসুস্থ্যতার কারণে মা হসপিটালে যাবে ,কিন্তু মায়ের হাতে মোবাইল নেই ,ওই দিকে নানুর সাথে মাকে হসপিটালে থাকতে হবে। মায়ের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ফোন তো লাগবেই। তখন ওই মুহুতে আমি মায়ের কাছে ফোনটা দিয়ে দেই ,আর বারবার বলি যেন ঠিকভাবে যত্ন করে রাখে। পরে খুব সম্ভবত তিন দিনের মাথায় আমার ফোনটা চুরি হয়ে যায় আমার শখের ফোন। বাসা থেকে ফোন দেই মাকে কিন্তু সুইচ অফ দেখাচ্ছে। পরে বাবার কাছ থেকে জানতে পারি ফোনটা চুরি হয়ে গিয়াছে। কিন্তু তখনও আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না আমার শখের ফোন চুরি হয়ে গিয়েছে।কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে বলি যেন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় ,আমি হাসপাতাল খুঁজে দেখবো,বাবা আমাকে সান্তনা দিয়ে বললো নিয়ে যাবে ,কিন্তু ঐদিন রাতে আমরা খবর পাই নানু মারা গিয়েছে। পরে আর আমার হাসপাতালে যাওয়া হলো না। ওই দিন রাতেই নানুকে মাটি দেওয়ার উদ্যেশে গ্রামের বাড়ি নেওয়া হয়। কেন জানি আমার আজ ও ঐ ফোনটার জন্য মায়া এবং দুর্বলতা কাজ করে ,এখনো ও আমি ভুলতে পারি না। যাই হোক সেই ভাব মোবাইল আবার হেডফোন সব মিলিয়ে। ফোনটা বেশ যত্ন করে রাখতাম। ফোনটাই কোন ময়লা হলে ,তাতে হালকা স্যাভলন লাগিয়ে কটন দিয়ে খুব যত্ন করে মুছতাম। ফোল্ডিং সেট তো একবার মোবাইলের ফোল্ডিং খুলি আবার বন্ধ করি। কলেজে নিয়ে যেতাম না ,যদি ফোনটা চুরি হয়ে যায় তাই। কলেজে যাওয়ার সময় কত জায়গায় যে লুকিয়ে রেখে যেতাম যেন চোর আসলে নিতে না পারে ,আর মা কেও বলে যেতাম দেখে রাখতে। একদিন বায়লোজি পরিক্ষার জন্য পড়তে পড়তে দেরি হয়ে গিয়েছিলো ,তখন রাত ১.৩০ কি ২ টা মশারি টাঙিয়ে মোবাইল হেডফোন লাগিয়ে রেডিও শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পরেছিলাম। হঠাৎ কেমন জানি জালানার পাশে কেমন জানি আওয়াজ হলো ,পরে চোখ খুলে দেখি জালানার পাশে কি যেন দাঁড়িয়ে আসে আমি তো ভয়ে শেষ ,আমি দেখছিলাম মশারি কেটে লাঠি ঢুকিয়ে হেডফোন পেচাচ্ছে ,যে ফোনটা নিয়ে যাবে ,আমি চেষ্টা করেও চোর বলে চিৎকার করতে পারছিনা ,আমি শুধু মা কেই ডাকতে পারলাম। মা বাবা দৌড়ে এসে লাইট অন করে দেখে লাঠির মধ্যে হেডফোন পেঁচানো ,যাই হোক ঐদিন মোবাইলটা বাঁচাতে পেরেছি ,আর পর আরো সাবধানে রাখা শুরু করলাম। একদিন আমার নানুর অসুস্থ্যতার কারণে মা হসপিটালে যাবে ,কিন্তু মায়ের হাতে মোবাইল নেই ,ওই দিকে নানুর সাথে মাকে হসপিটালে থাকতে হবে। মায়ের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ফোন তো লাগবেই। তখন ওই মুহুতে আমি মায়ের কাছে ফোনটা দিয়ে দেই ,আর বারবার বলি যেন ঠিকভাবে যত্ন করে রাখে। পরে খুব সম্ভবত তিন দিনের মাথায় আমার ফোনটা চুরি হয়ে যায় আমার শখের ফোন। বাসা থেকে ফোন দেই মাকে কিন্তু সুইচ অফ দেখাচ্ছে। পরে বাবার কাছ থেকে জানতে পারি ফোনটা চুরি হয়ে গিয়াছে। কিন্তু তখনও আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না আমার শখের ফোন চুরি হয়ে গিয়েছে।কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে বলি যেন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় ,আমি হাসপাতাল খুঁজে দেখবো,বাবা আমাকে সান্তনা দিয়ে বললো নিয়ে যাবে ,কিন্তু ঐদিন রাতে আমরা খবর পাই নানু মারা গিয়েছে। পরে আর আমার হাসপাতালে যাওয়া হলো না। ওই দিন রাতেই নানুকে মাটি দেওয়ার উদ্যেশে গ্রামের বাড়ি নেওয়া হয়। কেন জানি আমার আজ ও ঐ ফোনটার জন্য মায়া এবং দুর্বলতা কাজ করে ,এখনো ও আমি ভুলতে পারি না। প্রায়ই ভাবতাম এই বুঝি আমার ফোনটা দিয়ে যাবে। আসলে কিছু কিছু জিনিসের প্রতি অন্য রকম মায়া কাজ করে। আমি হয়ত এখন তখনের চেয়ে দামি ফোন ব্যবহার করিকিংবা করবো ,কিন্তু প্রথমটির স্থান সব সময় সবার উপরেই থাকবে । তখন আমার কাছে ঐটাই শেষ্ট ছিল। প্রথম ফোন ছিল তাই অন্য রকম অনুভুতি ছিল। লিখতে লিখতে হঠাৎ মন খারাপ হয়ে গেলো ,পুরোনো অনুভুতি মনে পরে।

যাই হোক আজ এই অব্দি ,আবার আসবো অন্য কোনো দিন ,অন্য কোন ব্লগ নিয়ে ,সেই অব্দি ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায়।

ধন্যবাদ সবাইকে

Banner.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

চমৎকার স্মৃতি আপনার প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতিতে। তবে খুব দুঃখ লাগলো, ফোনটিও চুরি হয়ে গেল সাথে নান্নু হয়েও মারা গেল। আসলেই প্রিয় জন ও প্রিয় বস্তু হারানো খুবই দুঃখজনক। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

আসলেই খারাপ লাগার ঘটনা গুলো সব এক সাথেই হয়েছিল।

আপনার প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি পড়ে ভাল লেগেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মোবাইল চুরি হয়ে গেল শুনে খারাপ লাগছে। আমার প্রথম মোবাইলটিও পকেটমার নিয়ে গিয়ছিল। ধন্যবাদ আপু।

আসলে প্রিয় জিনিস গুলো এমনই হয়। ধন্যবাদ।