ভালোবাসার জয় হোক। ১০% লাজুক শেয়ালের জন্য।

in hive-129948 •  3 years ago 

IMG_20220409_234734.jpg

আসসালামুয়ালাইকুম /আদাব
কেমন আছেন সবাই, আশা করি সবাই ভালো আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। পরীক্ষার ব্যস্ততার কারণে আমার প্রিয় পরিবার @amarbanglablog এ থাকতে পারিনি। মনে হয় জীবনটা পরীক্ষা ময় হয়ে গেছে গত দু মাস থেকে শুধু পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। যাই হোক আমি সেদিকে যাচ্ছিনা। আমরা বিভিন্ন গল্পে অনেক সময় স্বামী ভক্ত বেহুলার কথা পড়েছি। সাপে কাটা লক্ষিন্দর কে বাঁচানোর জন্য গাঙ্গুড়ের জলে ভেলা ভাসিয়ে ছিলেন। ঠিক তেমনি একজন ভালবাসার বাঁধনে জড়িয়ে রাখা এক বেহুলার কথা বলবো। গল্পটা লিখতে গিয়ে অনেকবার থেমে গেছি অনেকবার হাত কেপেছে তবুও লিখেছি। তাহলে শুরু করা যাক

IMG_20220409_234811.jpg

সবেমাত্র ইফতার করে রেস্ট নিচ্ছিলাম। হঠাৎ একটা অপরিচিত নাম্বারে কল আসলো কন্ঠের ওপাশ থেকে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে কেউ একজন রক্তের জন্য আকুতি জানাচ্ছে। ভাবছেন আমার নাম্বার কোথায় পেলো? আমাদের ক্যাম্পাসের একটি সংগঠন আছে নাম বাধন সেখান থেকে নাম্বার সংগ্রহ করেছে এ সংগঠনটি রক্ত নিয়ে কাজ করে। ফোন দিয়ে বলল দ্রুত শ্যামলী কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার আসার জন্য। মাত্র ইফতার করেছি শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দিয়েছি কি আর করা রওনা দিলাম শ্যামলীর উদ্দেশ্যে। হল গেট পেরিয়ে নীলক্ষেত গিয়ে বাসে উঠলাম কিন্তু ঢাকা শহরের ভয়ানক জ্যাম আমাকে অনেকক্ষণ রাস্তায় আটকে রাখলো।

IMG_20220410_001041.jpg

যেতে যেতে দশটা বেজে গিয়েছিলো। হাসপাতালে গেলে আমি আ্যবনরমাল হয়ে যাই। মনে হয় আমি অনেক সুখী মানুষ আল্লাহ আমাকে অনেক ভালো রেখেছেন। এরপর রক্তের গ্রুপ ক্রসিং করতে হবে আমাকে অপেক্ষা করতে বলল 15 মিনিট পর আমার ক্রস ম্যাচিং করে আমার রক্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলো। আসলে রক্ত দেওয়া একটা মহৎ কাজ মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। রক্ত দেয়ার পর রোগীর সম্পর্কে জানতে পারলাম। যখন খোঁজ নিলাম তখন আমার চোখ কপালে উঠলো আমি রীতিমত শিহরিত হয়ে গেলাম।

IMG_20220410_001119.jpg

যে রোগীকে রক্ত দিলাম সেই রোগীর কিডনি দুটোই বছরখানেক আগে ড্যামেজ হয়ে গেছে। বাসা আমাদের এলাকাতেই, ঢাকায় যখন তার পাশে তেমন কেউ ছিলনা তখন তার পাশে ছিল তার বউ। তারপর সব সময় তার সাথে ছায়ার মত ছিলো কিন্তু কোনোভাবেই রোগী আর সুস্থ হয় না। পরে যখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করল তখন দেখা গেল তার দুটো কিডনি বিকল। সবার মধ্যে কান্নার রোল পড়ে গেলো।এখন রোগীকে বাঁচাতে হলে একমাত্র উপায় কিডনি পরিবর্তন করা। কিন্তু কিডনি দেবে কে? এমন কেউ নেই যে তাকে স্বইচ্ছায় কিডনি দেবে। হঠাৎ তার বৌ বলল সে নিজেই কিডনি দিবে। এটা শুনে সবাই হতভম্ব কেউ বিশ্বাস করতে পারছিল না। আসলে কারো জন্য কি কেউ কিডনি দিতে পারে। সকলের কৌতুহলকে ছাপিয়ে তার বউ নিজের একটি কিডনি দিয়ে দিলো নিজের আসন্ন বিপদ জেনেও। ভাবা যায় এই সময়ে এসেও একটা মানুষের প্রতি একটা মানুষের কতটা ভালোবাসা থাকলে তার নিজের কিডনি দিয়ে দেয়। ভালবাসার জয় হোক। ভালোবাসা দিয়ে সবার জীবন ভরে উঠুক পৃথিবীটা সুন্দর হোক সকল অপরাধ মূলক কাজ গুলো হেরে যাক ভালোবাসার কাছে।
বিষয়ভালোবাসার জয় হোক
বর্ণনা@rahman44
লোকেশনw3w
ডিভাইসনোটফাইভ

IMG_20211219_150308.jpg

আমি @rahman44 বাংলাদেশ থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। মানবিকতার এক চিরায়ত দৃষ্টান্ত @amarbanglablog কমিউনিটি। দুটি দেশ কিন্তু একই সূত্রে আবদ্ধ আমরা। ভালোবাসা চিরদিন বেচে থাকবে মানুষ হিসেবে আমাদের মাঝে।

ধন্যবাদ সবাইকে

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রথমে আপনাকে সাধুবাদ জানাই ভাইসারাদিন রোজা থাকার পর ও নিজে কষ্ট করে গিয়েছেন রক্ত দেওয়ার জন্য।খুব ভালো লাগলো আপনার এই কাজটি। তবে সব শেষে মুগ্ধ হলাম নিজের কিডনি দিয়ে সে তার স্বামীকে। আসলে এরকম কাজ দেখা যায় না। দুনিয়াতে কেউ কারো নয়। তবে স্বামীর প্রতি বউয়ের ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম ভাই। নিজের কিডনি দান করেছে স্বামীর জন্য। এক কথায় অসাধারণ। তাদের ভালোবাসা সারাজীবন টিকে থাকুক এই ভাবে। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এরকম সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্য করার জন্য

লোক টার স্ত্রী লোকটি কে খুব ভালোবাসে তাই নিজের জীবনে রিক্স নিও একটি কিডনি দান করে দিয়েছে। আপনিও লোকটিকে রক্ত দিয়ে হেল্প করেছেন আপনি তার মহত্ত্বের পরিচয় দিয়েছেন। গল্পটি বেশ ভালো লেগেছে। আমিও বলি ভালবাসার জয় হোক।

ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্য করার জন্য

স্বেচ্ছায় রক্তদানে বেঁচে থাকুক হাজার প্রাণ। রক্তদান একটি মহৎ উদ্যোগ। রোজা থাকার পরেও রক্তদান করায় আন্তরিক ধন্যবাদ। মানবিক এমন লেখনী নিশ্চয়ই অনেকের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে।

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য

জীবনে ভালোবাসাটা যে কিরূপে আসে তা হয়তো আমরা কখনো ভাবতেও পারবো না। এই গল্পগুলো আমরা সচরাচর টিভিতে কিংবা নাটকে দেখে থাকি। কিন্তু এরকম ভালোবাসা যে সত্যিকারে হতেও পারে সেটা আমরা খুব কমই ভাবি। আর তার একটি প্রমাণ হলো আপনার এই ঘটনা। তবে সবচেয়ে বড় কথা আপনার এই মহৎ কাজ আমাকে খুব মুগ্ধ করেছে।

এখনকার সো কল্ড লাভ গুলো শুধু নাটক সিনেমা আর ফেসবুকেই মানায় আপু আর আসল ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে হাসপাতালে কিংবা খবরের কাগজে।

Getting started on steem can be super hard on these social platforms 😪 but luckily there is some communities that help support the little guy 😊, you might like school of minnows, we join forces with lots of other small accounts to help each other grow!
Finally a good curation trail that helps its users achieve rapid growth, its fun on a bun! check it out. https://plug.sh/somlanding/