||আজ-১৬ই, বৈশাখ||১৪৩০বঙ্গাব্দ,গ্ৰীষ্মকাল||
আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও আছি আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।আশা করছি আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।আমার আজকের ব্লগটি একটি নাটক রিভিউ।নাটক রিভিউ পোস্ট অনেকদিন পর নিয়ে এসেছি বন্ধুরা।তেমন একটা নাটক দেখা হয়না,এজন্য রিভিউ পোস্ট লিখা হয়না।এই নাটকটি এই ঈদে রিলিজ হয়েছে।মাত্র চারদিনে ২.২ মিলিনয়ন ভিউ।তাই বলা যায় নাটকটি বেশ ভালোই।তো চলুন শুরু করা যাক আমার আজকের রিভিউ পোস্ট।
স্ক্রিনশর্ট- ইউটিউব
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
নাটকের নাম | পোস্টম্যান |
---|---|
প্রযোজক | মাহমুদ মাহিন |
পরিচলনা | তানভীর মাহমুদ অপু |
মুখ্য চরিত্র | মুশফিক আর ফারহান,কেয়া পায়েল |
অভিনয়ে | মুশফিক আর ফারহান,কেয়া পায়েল,রাজু, কুন্তল, রওশন আলম,লাল মিয়া এবং আরও অনেকে |
প্রধান সহকারী | জহিরুল ইসলাম নিরব |
মুক্তির তারিখ | ২৪-০৪-২০২৩,বিকেল -৩ টা |
দৈর্ঘ্য | এক ঘন্টা সাত মিনিট |
ফটোগ্রাফার | মিরাজ খান |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
কাহিনী সারসংক্ষেপ
স্ক্রিনশর্ট- ইউটিউব
নাটক যেহেতু পোস্টম্যান কেন্দ্রিক।তার মানে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা চিঠি নির্ভর থাকবে এটাই স্বাভাবিক।অর্থাৎ তাদের একমাত্র যোগাযোগের ধারক ও বাহক পোস্টম্যান।গ্রামের বেশিরভাগ লোকই ছিলেন অশিক্ষিত।কারণ শিক্ষাব্যবস্থা একেবারেই দুর্বল ছিল গ্রামের। শুরুতেই আমরা দেখতে পাই পোস্টম্যান সোহেল রানা একটি সাইকেল নিয়ে মাঠের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।হঠাৎ তার বন্ধুর সাথে দেখা,তিনিও একজন পোস্টম্যান।তখন তার বন্ধু তাকে ডেকে বলে তাকে উপকার করার জন্য।গ্রাম থেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসেছে,তাই বাজার করতে হবে।তখন তিনি বলেন ঠিক আছে বন্ধু,তুইও আমার উপকার কর তাহলে। কাঁদায় পড়ে গিয়েছিল সে,তাই তাকে সাহায্য করতে বলেছিল।তারপর পোস্টম্যান সোহেল রানা,তার বন্ধুর চিঠিগুলো বিলি করতে গ্রামে যান।প্রথমেই দিলারা খাতুন দিলার বাড়ি যান।দিলারা খাতুন যেহেতু পড়ালেখা জানেন না,তাই তার চিঠি পড়ে দেন এবং দুই টাকা বকশিস পান।আর সেখানে গিয়েই পোস্টম্যান লুকিয়ে দেখেন দিলারাকে এবং তার প্রেমে পড়েন।
স্ক্রিনশর্ট- ইউটিউব
যেহেতু দিলারার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন সোহেল রানা।তাই এই এলাকায় চিঠি বিলির দায়িত্ব নিয়েছিলেন তার বন্ধুকে পটিয়ে।তার বন্ধুকে তিনি বলেছিলেন,তার এলাকায় চিঠি পড়লে দশ টাকা এবং লিখলে পনের টাকা পাওয়া যায়।কারণ ওই এলাকার লোকজনের কলিজা বিশাল বড়।এভাবে করে তার বন্ধু পটে গিয়ে এলাকা ঘুরিয়ে নিয়ে দেখেন সম্পূর্ণ মিথ্যা।তার এলাকায় ভালো ছিল।আরও বেশি টাকা পেতেন তিনি।তারপর তিনি তার বন্ধু সোহেল রানাকে দৌড়ে গিয়ে ধরেন।আবার যার যার এলাকায় সে সে চিঠি বিলি করতে থাকেন।
স্ক্রিনশর্ট- ইউটিউব
কিন্তু এভাবে চললে কি আর সোহেল রানার দিলারার সাথে দেখা হবে।এজন্য তিনি নতুন মতলব করেন,গ্রামের লোকজন এবং স্যার কে দিয়ে গ্রাম আবার পরিবর্তন করে নেন।অর্থাৎ তার বন্ধুর গ্রাম আবারও তিনি নেন,একদম পাকাপাকি ভাবে।এভাবে করে দিলারা কে চিঠি দিতে থাকেন সোহেল রানা নিজেই।কারণ চিঠি না পেলে দিলারা খাওয়া দাওয়া,গোসল বন্ধ করে দেন।দিলারা ভালো না থাকলে যে সোহেল ভালো থাকেন না।
স্ক্রিনশর্ট- ইউটিউব
এরই মধ্যে হঠাৎ করে দিলারার স্বামীর চিঠি আসে।সোহেল রানা দিলারা কে চিঠি পড়ে শোনান।সেখানে তার স্বামী তাকে ৮০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে আকামা করার জন্য।কারণ আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল তার।আর যদি টাকা না পাঠান তিনি অন্য সিদ্ধান্ত নিবেন।তারপর দিলারা তার নানাজানকে সব কথা বলেন। প্রথমে তার নানাজান আপত্তি করলেও দিলারার দিকে তাকিয়ে তিনি রাজি হন।পরের দিন দিলারা সোহেল রানাকে ডেকে চিঠি লিখেন এবং সেখানে টাকা পাঠানোর কথা আশ্বস্ত করেন তার স্বামী কে।যেহেতু শেষ সম্বল বন্দুক দিয়ে টাকা পাঠাবেন।সোহেল রানা তখন তাকে বলেন,এটা কি ঠিক হচ্ছে আপনাদের সব শেষ করে টাকা পাঠাবেন।মানুষটা আপনারে কোনো কিছু দেন না, খোঁজ নেন না তেমন।তখন দিলারা এই কথাগুলো শুনে রেগে চলে যান।
স্ক্রিনশর্ট- ইউটিউব
সোহেল রানা পরের দিন চিঠি নিয়ে আসেন,এসেই দেখতে পান দিলারার নানাজান তাদের ভিটেবাড়ি বন্দুক দিতে যাচ্ছিলেন।তখন চিঠি পড়া শুনে যেতে বলেন,তার নানাজানকে।তখন তিনি চিঠি পড়ে শোনান এবং তাতে লেখা ছিল টাকা পাঠানোর প্রয়োজন নেই।কারণ সমস্যা সমাধান হয়ে গিয়েছে।তার কিছুদিন পর সোহেল রানা হঠাৎ চিঠি সিল করতে গিয়ে দেখতে পান তালাকের নোটিশ।আর নোটিশটি ছিল দিলারা।এই কথাটি সোহেল রানা দিলারাকে না দিয়ে ছিড়ে ফেলেন।একইভাবে সোহেল রানা নিজের হাতে চিঠি লিখে নিয়ে দিলারাকে দিতেন এবং পড়ে শোনাতেন,তার স্বামীর চিঠির নাম করে।একদিন দিলারার নানাজান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান সোহেল রানার সাথে।তখন হঠাৎ তার স্বামীকে দেখেন দিলারা এবং দৌড়ে গিয়ে বলেন আপনি এখানে কবে আসছেন।আপনার সাথের মহিলা কে।তখন তার স্বামী বলেন,আমার স্ত্রী।তালাকের নোটিশ পাওনি?আমি তোমাকে তালাশের নোটিশ চিঠিতে পাঠিয়েছিলাম।তখন দিলারার নানাজান বলেন,ওর বাবা মা নাই বলে ওর সাথে যা ইচ্ছা করবি,আমি ওর নানা এখনও আছি।তারপর সোহেল রানা ওখান থেকে চলে যান।তখন দিলারা সোহেল রানার খোঁজ করেন।
স্ক্রিনশর্ট- ইউটিউব
পরের দিন,দিলারার বাড়িতে সোহেলের চিঠি নিয়ে আসেন অন্য একজন পোস্টম্যান।তিনি সোহেলের বন্ধু।তখন দিলারা কে চিঠি পরে শোনান,সেই পোস্টম্যান।চিঠিতে লেখা ছিল,দিলারা কে মাত্র দুটি চিঠি দিয়েছিল এতদিনে তার স্বামী।আর তালাকের নোটিশ আগেই তাকে জানানো ঠিক ছিল।কিন্তু পারেননি তিনি আরও অনেক কথা আছে, যা বলতে পারেননি।পরে,দিলারা ঘরে গিয়ে আরও চিঠি নিয়ে আসেন এবং হাতের লেখাগুলো মিলাতে বলেন পোস্টম্যান কে।পোস্টম্যান বলেন,এগুলো তো সোহেল ভাইয়ের লেখা।তখন দিলারা বলেন উনি কোথায় এখন,তিনি বলেন অফিসে মন খারাপ করে বসে আছেন।তখন দিলারা অফিসে যেতে চান তার সাথে।অফিসে গিয়ে দেখেন সোহেল রানা চাকুরী ছেড়ে দেন।তারপর ত্রিশ বছর কেটে যায় দিলারা খাতুন মারা যায়।সোহেল রানা তার নাতনিকে বলেন ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছুই হয়না।তাই আমি সেদিন তার সামনে দাড়িয়েছিলাম।এখানেই নাটক শেষ হয়।
স্ক্রিনশর্ট- ইউটিউব
আমার কাছে নাটকটি অনেক ভালো লেগেছে।নাটকটি গ্রাম কেন্দ্রিক হওয়ায়,গ্রামীণ জীবনের সকল দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নাটক তখনই ভালো লাগে,যখনই নাটকের গল্পগুলোতে ভিন্নতা নিয়ে আসা হয়।এই গল্পেও ঠিক তাই হয়েছে বর্তমান এবং শহর কেন্দ্রিক বিষয়কে নিয়ে নাটকটি করা হয়নি।এই নাটকটি থেকে বেশ কয়েকটি শিক্ষণীয় দিক দেখা যায়।প্রথমেই ছেলে,মেয়ে উভয়কেই শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা উচিত।মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে খোঁজ খবর নিয়ে বিয়ে দেওয়া উচিত।ভালোবাসার মানুষকে ভালো রাখা উচিত এবং তাকে ছেড়ে না যাওয়া যেকোনো পরিস্থিতিতে।নাটকটির গানও বেশ ভালো লেগেছিল আমার।আপনারা চাইলে সময় করে নাটকটি দেখে নিতে পারেন।
এই নাটকটিতে আমি ৯/১০ রেটিং দিলাম। |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
VOTE @bangla.witness as witness
বাহ্ খুব সুন্দর একটা নাটকের ভিডিও পোস্ট করেছেন তো আপনি। পোস্টম্যান নাটকটা আমি গতকালকে দেখেছিলাম একবার। আমার কাছে নাটকটা দেখতে ভীষণ ভালো লেগেছিল। তাই তো আপনার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে আজকে আবারো দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে। সম্পূর্ণ নাটকের রিভিউটা আপনি খুবই সুন্দর ভাবে লিখেছেন। জাস্ট অসাধারণ ছিল আপনার রিভিউ পোস্ট।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই নাটকটি আগে দেখেছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া।আবার কষ্ট করে আমার পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একটা নাটকের রিভিউ দিলে একদিক থেকে ভালই হয় নাটক দেখার একটা সুযোগ হয়। আমিও আগে মাঝে মাঝে দিতাম। আপনার নাটক রিভিউ ভালো হয়েছে। এর নাটকটি মনে হয় ভাল। এরকম গ্রামীণ নাটক আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর কেয়া পায়েলকে নাটকে ভালোই লাগছে। আপনার নাটকের কাহিনী পড়ে মনে হচ্ছে নাটকটি ভালো দেখার ইচ্ছা রইলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি আপু একদম ঠিক বলেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ফারহান আর পায়েলের জুটিটা আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। তারা একসাথে খুব সুন্দর সুন্দর নাটক করে থাকে এবং যে নাটক গুলো বাংলাদেশ জনপ্রিয়। আর এমন জনপ্রিয় একটি নাটক আজ আপনি আমাদের মাঝে রিভিউ করে দেখিয়েছেন। এই নাটকটা আমার কাছে চমৎকার মনে হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমারও এদের দুজনের নাটক ভালো লাগে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই নাটকটার কিছু ক্লিপ দুদিন আগেই দেখলাম। বেশ হাসি পেয়েছে। তবে পুরো নাটকটা এখনো দেখা হয়নি। আপনার রিভিউ করে বেশ ভালো লাগলো মনে হচ্ছে নাটকটা বেশ মজার হবে।আর মুসফিক ফারহান আমার পছন্দের একজন অভিনেতা। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit