নিজের মনের কথা শুনুন অসাধ্য সাধন সম্ভব হতে পারে

in hive-129948 •  7 days ago  (edited)
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

smile-1390958_1280.jpg

ছবির উৎস

একজন চরিত্রবান মানুষ সর্বদাই সমাদৃত তার গুণ,কাজের মাধ্যমে তিনি সকলের মন খুব সহজেই জয় করেন।ছোট থেকে আমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে নিজেকে একজন চরিত্রবান মানুষ হিসেবে যাতে গঠন করতে পারি।এই এই শিক্ষাটা আমরা প্রত্যেকে পরিবার,স্কুল,কলেজ গুলো থেকেই পেয়ে থাকি।একটি জাতি গড়তে শিক্ষকের গুরুত্ব থাকে অপরিসীম।একজন শিক্ষক শুধুমাত্র পারেন একজন ছাত্রকে পুরোপুরি মানুষ তৈরি করতে।তার মধ্যে জ্ঞান, নীতি নৈতিকতার উদ্ভব ঘটাতে । জীবনে চলার পথে আমরা অনেক ধরনের শিক্ষকের দেখা পাই। কখনো কখনো এমন শিক্ষক পাই যে ,তাদের ঋণ নিজের শরীরের চামড়া কেটে জুতা তৈরি করে দিলেও হয়তো শোধ করা যায়না।আবার এমন কিছু শিক্ষক ও পেয়ে থাকি যাদের কথা শুনলেই মন খারাপ হয়ে পড়ে।

পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানীয় পেশা ধরা হয় শিক্ষক কে তারপর ডাক্তার। কেননা এই দুই পেশার মানুষ জাতি গড়তে এবং একটি প্রাণ ঝরে যাওয়া বাঁচাতে ভূমিকা রাখে সৃষ্টিকর্তার পর।আজকে আপনাদের মাঝে সত্য ঘটনার আলোকে একটি গল্প শেয়ার করব।আপনারা বুঝতে পারবেন একজন চরিত্রবান শিক্ষকের সান্নিধ্যে গেলে জীবনে কতটা আগানো যায়।পৃথিবীতে সৎ,চরিত্রবান মানুষের খুব একটা কদর হয়তোবা থাকেনা।কারণ তারা তো নিজেদের ঢাক নিজে বাজাতে পারেন না।মার্কেটে নিজেকে কিভাবে উপস্থাপন করতে হয় সেটাও তারা জানেন না।অন্যদিকে দুশ্চরিত্র লোকরা এই বিষয়গুলো খুব ভালো পারেন এজন্য তাদের জনপ্রিয়তা খুব বেশি থাকে।

রাইদা নামের একটি মেয়ে স্কুলে বরাবর ইংলিশে খারাপ করতো।তার সব বিষয়েই এ প্লাস মার্ক থাকতো কিন্তু ইংলিশে ৬০-৭০ মার্কস এর বেশি উঠতো না।এভাবেই অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত গেল।তারপর একজন নামকরা শিক্ষকের কাছে পড়তে গেল মেয়েটি।ওই শিক্ষক ইংলিশের জন্য অনেকটা জনপ্রিয় স্কুলে।স্কুলের সবাই ওনার কাছেই বেশি পড়তো।ওই স্কুলে তিন , চারজন টিচার ছিলেন তার মধ্যে তিনি বেশি পড়াতেন এবং জনপ্রিয়।অন্যরাও পড়াতেন কিন্তু তার মতো ঐভাবে জনপ্রিয়তা নেই তাদের।যখন পড়তে গেল মেয়েটি তার খুব একটা ভালো লাগলো নাবিশেষ করে স্যারের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ,কথাবার্তা,যেমনটি একজন আদর্শবান শিক্ষকের থাকার কথা তেমনটি তার নেই।মেয়েটি মনে করত যেই লোকটি তার কাজের জায়গায় নিজের ব্যক্তিত্ব বজায় রাখেন না, তিনি নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষ নয়।কিন্তু সবাই যেহেতু তার কাছে পড়ছে আর এইভাবেই মেয়েটি এক বছর পড়ে।যখন বোর্ড পরীক্ষা হয় মেয়েটির রেজাল্ট ইংলিশে এ মাইনাস চলে আসে।অর্থাৎ খুব একটা ইমপ্রুভ হয়নি।আগেও যা ছিল এখনো তাই।আসলে মেয়েটি স্যারের কাছে খুব একটা প্রশ্ন করতে পারতো না হয়তো কোনো কারণে বা মেয়েটির তার আচরণ পছন্দ হতনা ।

নবম শ্রেণীতে মেয়েটির বন্ধু - বান্ধবী সবাই সাইন্স নিল।আর ওই টিচারের কাছেই পড়তে গেল।কারণ জনপ্রিয় আর তাদের আর পড়া ভালো লাগতো।কিন্তু মেয়েটির ভালো লাগতোনা।তখন ওই স্কুলের আরও একজন স্যার ইংলিশ পড়ানো শুরু করলেন রেগুলার।তিনি সব আর্টস এর স্টুডেন্ট পড়াতেন বেশি।তার স্টুডেন্ট সংখ্যা ৭০ এ গিয়ে দাঁড়ালো। রাইদা মেয়েটিও শুরু করলো তার কাছে পড়া।যেহেতু তার বেসিক দুর্বল ছিল।তাই মোটামুটি এখানে সে ভালোই বুঝত পড়া।আর কিভাবে ইংলিশে ফ্রি হ্যান্ডে লেখা যাবে রাইটিং পার্ট গুলো সেই বিষয় গুলো স্যার বুঝিয়ে দিতেন।তাছাড়া গ্রামার সাইড ও বেশ ভাল করে বুঝিয়ে দিতেন।মেয়েটি ইংলিশে অনেকটা ইমপ্রুভ করলো এবং এসএসসি তে এ প্লাস পেল।ওই ৭০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মেয়েটি একা এ প্লাস পেয়েছিল।তারপর থেকে তার ইংলিশ বিষয়টি খুব ভালো লাগতে শুরু করলো।সবধরনের ভীতি কেটে গেল মন থেকে এবং মেয়েটি এখন ইংরেজি বিভাগে পড়াশুনা করছে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।মেয়েটি সেদিন তার মনের কথা মত পছন্দের স্যারকে বেছে নিয়েছিল।আর আমাদের মন সবসময় আমাদের ভালোর দিকেই ধাবিত করে।অন্যরা কি করছে সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে নিজের মনের কথা শুনলে অসাধ্য সাধন ও সম্ভবপর হয়ে ওঠে।মেয়েটি যেমন তার পিছনের সব রেকর্ড ভেঙে দিতে পড়েছিল ইংলিশ সাব্জেক্টে।পৃথিবীতে কোনো কিছু অসাধ্য নয় যদি আপনি একজন চরিত্রবান লোকের সান্নিধ্যে যেতে পারেন যাকে আপনি মন থেকে পছন্দ করেন।এজন্যই হয়তোবা বলা হয় বিদ্বান ব্যক্তি দুর্জন হলে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date -15th November,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Twitter_Banner_24.3.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আসলেই একজন শিক্ষক তার শিক্ষা দ্বারা একজন স্টুডেন্টের ভাগ্য পরিবর্ত করতে পারে।তবে অব্যশই শিক্ষকের আচার আচরন স্বভাব ভালো হতে হয়,চরিএহীন শিক্ষক বেশিদিন তার সাফল্য ধরে রাখতে পারে না।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

জি একদম ধন্যবাদ আপনাকে।

রাইদা এর উদাহরণ দিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে লিখেছেন আপনি। আপনার লেখা আমার মনে ধরেছে। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন বিষয়গুলো। আমি মনে করি এই জাতীয় পোস্টগুলো অনেকের জন্য উপকারে আসে।

ধন্যবাদ আপু।

সমাজ গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। সেই বিষয়ের উপরে আপনি উদাহরণস্বরূপ একটি দারুণ গল্প শেয়ার করলেন। আসলে শিক্ষক যদি তার জায়গা থেকে নেমে যায় তবে সব থেকে আগে ক্ষতি হয় সমাজের। বাকি সমস্ত কিছু চললেও শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। তাই শিক্ষকের ভূমিকা সমাজে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা।

জি একদম,সমাজ গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম ধন্যবাদ ভাইয়া।

আসলেই শিক্ষা ছাড়া কোন কিছুরই মূল্য নেই৷ যদি একজন শিক্ষক চরিত্রহীন হয় তাহলে তার সেই শিক্ষার কোন ধরনের মূল্যই থাকেনা৷ সেই
শিক্ষা অর্জন করার ক্ষেত্রে যে সকল পদক্ষেপ গুলো রয়েছে সেগুলো কোনোভাবে কোনো ধরনের কাজে আসে না৷ তাই একজন শিক্ষক যেরকম পারে একটি শিক্ষিত জাতি গড়ে দিতে ৷ তেমনি শিক্ষকের যদি কোন ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে তার সেই যোগ্যতা বেশিদিন টিকে থাকে না৷ ধন্যবাদ আজকের এই সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷