ব্রেনকে ভালো কাজে অভ্যস্ত করুন

in hive-129948 •  2 months ago  (edited)
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

self-care-6886598_1280.jpg

ছবির উৎস

আজ থাক কাল করব,এই অভ্যাসটি যেন আমাদের অস্থিমজ্জায় মিশে আছে। আমাদের জীবনে সেই কালকের দিনটি কোনোদিনও আসেনা।আর এভাবেই চলে যাচ্ছে বছরের পর বছর।ক্যালেন্ডারের পাতায় ২০২৪ সাল টিও শেষ হতে চললো আর মাত্র ৫৩ দিন বাকি, এই বছরটি শেষ হতে।অনেকের হিসেবের খাতা শূন্যই রয়ে গেল এই বছরে আবার অনেকের খাতা পরিপূর্ণ।সময় খুব দ্রুত প্রবাহিত হচ্ছে সেকেন্ড,মিনিট,ঘণ্টার কাটা গড়িয়ে চলে যাচ্ছে একটি দিন,একটি সপ্তাহ,একটি মাস।আর এভাবে করেই ১২ টি মাস।সেদিন শুরু হলো ২০২৪ ,আজকে নভেম্বর মাস চলে।আর মাত্র একটি মাস পর আবার নতুন বছর।আমাদের অনেকেরই থাকে নতুন বছরে নতুন নতুন প্ল্যান।আর সেই প্লানগুলো খুব কম লোকই সফলতার সাথে বাস্তবায়ন করতে পারে।আর যেসব লোক তাদের প্ল্যান গুলোকে সফল রূপ দিতে পারেনা।তাদের ব্যর্থতার একমাত্র কারণ এটাই থাকে যে তারা লেগে থাকতে পারেনা।যেকোনো কাজে লেগে না থাকলে কখনোই কেউ সফল হতে পারে না।

মানুষের মস্তিষ্কে একটি অভ্যাস দাড় করাতে প্রায় ২১ দিন সময় লেগে যায়।আমরা বছরের শুরুতে যেই কঠিন প্ল্যান নিয়ে নামি।সেই প্ল্যানটি ২১ দিন পর্যন্ত খুব কম লোকেরই যায়।কোনোমতে তাদের রুটিন অনুযায়ী এক সপ্তাহ মত চলে একজন মানুষ।তারপর তার আগের অলস জীবনে সে ফিরে যায়।এর একমাত্র কারণ অবাস্তব রুটিন।আর অদ্ভুত ভাবে সেই রুটিন গুলোতে নিজের জন্য কোনো সময় থাকে না।পরিবার এবং বিনোদন ,খেলাধুলা,ব্যায়াম এই বিষয়গুলোকে তারা সময় নষ্টের একটি অংশ হিসেবে মনে করে।এরপর দেখা যায় এত কঠিন জীবন তার পক্ষে নির্বাহ করা কষ্টসাধ্য হয় সে আবারও আগের অনিয়ন্ত্রিত লাইফে ফিরে যায়।আমাদের যেকোনো জিনিস আগে মস্তিষ্ককে অভ্যস্ত করাতে হবে।তারপর সেই জিনিসটি সময়মতো আপনাআপনি হয়ে যাবে।প্রতিদিন একটানা কোনো কাজ করলে আপনার ব্রেন সেই টাইমে সিগন্যাল প্রেরণ করবে।আর আপনি সেই কাজে খুব আনন্দের সাথে লেগে পড়বেন।চলুন একটি মজার উদাহরণ দিই যেটা আমার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।

আপনাদের সাথে আমার পথচলার আড়াই বছর পূরণ হয়ে গেছে।এর মধ্যে ভেরিফায়েড মেম্বর হওয়ার দুই বছর প্লাস হয়েছে।আর ব্লগিং বিষয়টি আমার মস্তিষ্কে এমনভাবে সেট হয়ে গিয়েছে যে আমার দুপুরের মধ্যেই পোস্ট করতে হয়।আর যদিও বা অলসতা বা কোনো কারণে আমি পোস্ট না করতে পারি কোনোদিন।সেই দিনটিতে আমার আর পোস্ট করার আগ্রহ থাকেনা।আগ্রহ বলতে আমি কি বিষয় নিয়ে লিখব সেটাই আমার মাথায় আসেনা।আর উক্ত টাইম পোস্ট না করলে আমার সারা দিনটি যেন অস্থিরতায় কাটে মনে হয় আমি কোনো কাজ ঠিকভাবে করতে পারছিনা।অপরদিকে দুপুরের টাইমে আমার মাথায় ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা উদয় হয় নতুন নতুন ব্লগ সম্পর্কে।আমি নিজেই মাঝে মাঝে আশ্চর্যান্বিত হয়ে যায় এই ব্যাপারগুলোর জন্য।আমাদের ব্রেন কতটা অভ্যাসের দাস।ব্লগিং এর এই পুরো দুই বছরে অনেক ইউজার কে দেখেছি তারা আজ আর নেই কমিউনিটি তে।আমি জানিনা তারা কি করে থাকে প্রতিদিনের অভ্যাস এড়িয়ে।এই ব্যাপার গুলো কি শুধু আমার সাথে ঘটে নাকি আপনারা যারা আমার অনেক আগে থেকে এখানে রয়েছেন তাদের সাথেও ঘটে ?জানাবেন বন্ধুরা কমেন্টে।

আমার মনে হয় শুধু ব্লগিং না কর্মক্ষেত্র,পড়াশোনা সবকিছুতেই যদি আমরা অভ্যস্ত হয়ে যেতে পারি তাহলে আমাদের সেইকাজগুলোর জন্য ও ব্রেন ঠিক একইভাবে সিগন্যাল পাঠায়।তারপর আমরা সেই ক্ষেত্র গুলোতে সমান ডেডিকেশন এর সাথে কাজ করতে পারি।স্কুল লাইফে ভালো করার কারণ আসলে এগুলোই ছিল অভ্যস্ততা।আমাদের জীবন গোছাতে হলে অবশ্যই ধরাবাঁধা নিয়মের মধ্যেই নিয়ে আসতে হবে আমাদের প্রাত্যহিক রুটিন।আসলে নিয়মের মধ্যে না থাকলে মানুষ জীবনে পিছিয়ে পড়ে এটাই চিরন্তন সত্য।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে ইউজারগণ যেমন ভাবে তাদের এক সপ্তাহের একটিভিটি পর্যালোচনা করতে পারেন সাপ্তাহিক রিপোর্ট গুলোর মাধ্যমে ।ঠিক তেমনিভাবে নিজেদের কেও পর্যালোচনা করতে হবে পুরো সপ্তাহে একজন ব্যক্তি কতটুকু অগ্রসর করেছেন তার দৈনন্দিন কর্মে।সবশেষে বলব, নিজের ব্রেনকে অভ্যাসে পরিণত করতে বছর শেষের সময়টি সঠিকভাবে ব্যবহার করুন।আর নতুন বছরে যাতে একইভাবে নিজের অভ্যাসকে বজায় রেখে ভালো কিছু করতে পারেন, শুভকামনা সবার জন্য।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date -9th November,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Twitter_Banner_24.3.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

ব্রেন একটা বিরাট বিষয় আপু। আপনি সেই বিষয়টা খুব সুন্দর ভাবে তুলে আনলেন। ব্রেনে সুন্দর অভ্যাস করালে সেই অভ্যাস চলতেই থাকে। ঠিক যেভাবে আপনার পোষ্টের অভ্যাস হয়ে গেছে। আমারও প্রতিদিন কিছু কমেন্ট না করলে যেন শান্তি হয় না। খুব যথাযথভাবে আপনি বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন। এই বিষয়ে পাভলভের কথা মনে পড়ে গেল। যেখানে একটি কুকুরকে রোজ ঘন্টা বাজিয়ে খাবার অভ্যাস করানো হয়েছিল।

জি ভাইয়া অভ্যাস এমনি একটি বিষয়,ধন্যবাদ।

একদম ঠিক বলেছেন আপু সময় খুব দ্রুত না চলে যায়। এইতো সেদিন বছর শুরু হলো আর এখনই দেখতে দেখতে শেষ সময় চলে এসেছে। তাছাড়া আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা করি। কিন্তু সেগুলো আর বাস্তবায়ন করা হয় না। যাই হোক আপনার আজকের লেখাটি খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে।

আমার লেখাটি ভালো লেগেছে আপনার জেনে খুশি হলাম ,ধন্যবাদ।

অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনার লেখা সুন্দর একটি পোস্ট পড়ে। খুব সুন্দর ভাবে আপনি দারুন একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে পোস্ট লিখেছেন। আমাদের সকলের উচিত নিজের মস্তিষ্ককে ভালো কাজে ব্যবহার করার। প্রতিনিয়ত আপনি যে একটা অভ্যাস গড়ে তুলবেন সেই অভ্যাস আপনাকে দিনের পর দিন তাগিদ দিবে সেভাবেই। যাইহোক অনেকটা ভালো লাগলো এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন দেখে।

আমার লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম, ধন্যবাদ।

এটা কিন্তু সঠিক কথা যে ব্রেন হলো শয়তানের কারখানা। যে যে ভাবে পরিচালনা করবে ব্রেন তেমন কাজ করবে। তাই আমাদের উচিত ব্রেন কে ভালো কাজে পরিচালনা করা। ধন্যবাদ আপু এমন মূল্যবান একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

জি আপু একদম,ধন্যবাদ।

আপনি বেশ গোছানোভাবে বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে আপনার বিষয়বস্তু টি তুলে ধরেছেন। আসলেই আপু, মানুষ অভ্যাসের দাস! রুটিন মাফিক আপনার যেমন দুপুরের মাঝে পোস্ট করা হয় তাই দুপুরে নানা আইডিয়া ঘুরঘুর করে!! আমি এমন একটা অভ্যাস আজও গঠন করতে পারি নি! যদিও বারবার ভাবী প্রতিদিন পোস্ট করার অভ্যাস টি গড়ে তুলবো। তবুও নানা কারণে প্রতিদিন একইভাবে এক্টিভ থাকা হচ্ছে না। এর জন্য অবশ্য অলসতা এবং রুটিন না থাকা আসলেই বড় ভূমিকা পালন করে! আপনার পোষ্ট টি সার্বিকভাবেই ভালো লাগলো আপু।

একদিনে যে কোন অভ্যাস হয় না, যেহেতু অনেকটা সময় একইভাবে কাজ করা হচ্ছে তাই,ধন্যবাদ।

কথায় বলা অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। যদি আমরা কোন কাজ না করি তখন নানান বদ চিন্তা আমাদের মাথায় আসে। কিন্তু আমরা যদি একটা সুস্থ‍্য জীবন যাপন করি ভালো কিছু চিন্তা করি তাহলে অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব। আর দীর্ঘদিন ধরে এক কাজ করলে সেটা আমাদের মস্তিষ্কে সেট হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক বিষয়।।

আসলেই অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা, ভালো অভ্যাস করাটা জরুরি।