প্রত্যেক সাধারণ শিক্ষার্থীর মাঝেই হতাশার ছাপ

in hive-129948 •  7 months ago  (edited)
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

young-people-3575167_1280.jpg

ছবির উৎস

আজকেও আপনাদের মাঝে জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম বন্ধুরা।আপনারা সবাই জানেন এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা আগের মতই রয়েছে।অর্থাৎ নেট কানেকশন আগের থেকে উন্নত হয়নি।অনেকটাই স্লো স্পিড এখন পর্যন্ত যার জন্য কমেন্ট পর্যন্তও করা সম্ভব হচ্ছেনা।আমি যেহেতু গ্রামের দিকে রয়েছি আমার এখানে নেট স্পিড একদমই নেই বললে চলে।শুধুমাত্র রাতের দিকে একটু পোস্ট এর কাজ টা করা সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়া অন্য সব কাজগুলো করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।আজকে দিনের বেলাতে মোটামুটি নেট কানেকশন ছিল তবে সেটা কমেন্ট করার মতো স্পিড না।শুধুমাত্র কয়েকটি অ্যাপস এ যাওয়া যাচ্ছিল।আজকে যদিও একটি অ্যাপস এর মাধ্যমে ফেসবুক এ যাওয়া গিয়েছিল কিন্তু সেটাও সীমিত পরিসরে বলা যায়।

তবে আজকে ফেসবুক থেকে আমাদের দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে মোটামুটি জানতে পারি।যেটা আসলেই ভয়াবহ একটি পরিস্থিতি একটি দেশের জন্য।শিক্ষার্থী থেকে সাধারণ মানুষের শহীদ সংখ্যা ৯০০ প্লাস এটা দেখে কোনোভাবেই নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।একটি দেশে শুধুমাত্র কোটা সংস্কার করতে যদি এত প্রাণ বিসর্জন দিতে হয় তাহলে সেটা স্বাধীন দেশ হিসেবে কেন পরিচিত।

macabre-7423948_1280.jpg

ছবির উৎস

১৯৭১ সালে আমাদের দেশ স্বাধীনতা লাভ করে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধের মাধ্যমে।ওই সময়টাতে সারা দেশে এরকম হত্যাকাণ্ড চলতো আর রেডিওতে সবসময় দেখাতো সিচুয়েশন নরমাল।আপনারা নিশ্চয়ই রেইনকোট গল্পটি পড়েছিলেন নবম দশম শ্রেনীর বোর্ড বইটিতে।সেই গল্পটির পুনরাবৃত্তি আমাদের দেশে হলো এবার।এই কয়টা দিন নেট কানেকশন ছিলনা এজন্য ফোনের দিকে খুব একটা ঝোঁক ও ছিলনা বলা যায়।দিনে ঘণ্টা অন্তর গিয়ে খবর দেখতে বসতাম দেশের পরিস্থিতি জানতে।কিন্তু খবরে সবকিছু দেখায়না পরিস্থিতি যায় থাক সিচুয়েশন নরমাল।তবে যেহেতু কারফিউ দেওয়া হয়েছিল তখনই ভেবেছিলাম সিচুয়েশন নরমাল হলে আর কারফিউ দিত না।কারণ একটি দেশে যখন সিচুয়েশন সরকারের নেতৃত্বের অর্থাৎ হাতে বাইরে চলে যায় তখনি দেশে এই কারফিউ আইন জারি করা হয়।

যেদিন প্রথম কারফিউ আইন দেওয়া হয় সেদিন বাসায় আসি আর এরপর এক সপ্তাহ প্রতিটি দিন টিভির নিউজের সামনে বসে থাকা।আমার মনে হয় বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ এভাবেই তাদের দিনগুলো পার করছিল।সবাই যদিও আন্দোলনে যোগ দিতে পারেননি দেশপ্রেম টা সবার মধ্যেই সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে ।আমার নিজেরও এই কদিন অস্থিরতায় কেটেছে আজ দেশের পরিস্থিতি কি গতকাল কি ছিল নিউজের অপেক্ষায় ছিলাম সারাদিন ঘুরে ফিরে টিভির সামনে গিয়ে বসছিলাম। কিন্তু কোনো সঠিক তথ্য পাচ্ছিলাম না।আর আজকে এত মানুষের শহীদ হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে মনের মধ্যে কেমন একটা অস্বস্তি কাজ করছে ।যারা শহীদ হয়েছেন তারাও এক সপ্তাহ আগে আমাদের মধ্যে ছিল।পৃথিবীতে মানুষের জীবন আনপ্রেডিক্টেবল।আজ আছি কালকে নাও থাকতে পারি।পৃথিবীতে সবচেয়ে অস্থায়ী কিছু থাকলে সেটা একমাত্র মানুষ ।

আসলে এই কোটা আন্দোলনে এতো মায়ের বুক খালি হলো এটা আসলেই মেনে নেওয়ার মতো ব্যাপার না।আর এই অপূরণীয় ক্ষতি কখনো পূরণ হবার নয়।আমাদের দেশটিতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার হলো ঠিকই তবে এটি যদি এত প্রাণের বিনিময়ে না হয়ে শুধুমাত্র সুষ্ঠু আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বিজয়ী হতো আমাদের দেশটি অনেকটা এগিয়ে যেত।আজকে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে দেখলাম সব শিক্ষার্থীর মুখে হতাশার ছাপ।অনেক শিক্ষার্থীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে যাদের মধ্যে তারা একদমই নির্দোষ ছিল শুধুমাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল এটাই তাদের অপরাধ।আমাদের কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছিল তারাও এখন চিকিৎসাধীন।এছাড়া এখনো অনেক ভাই বোন চিকিৎসারত রয়েছেন আর তাদের অবস্থাও এখন পর্যন্ত পুরোপুরি সংকটমুক্ত নয়।বাসার বাইরে গিয়ে নিউজে গুলো জানতে পেরে সত্যি অনেক খারাপ লাগছে দোয়া করি সৃষ্টিকর্তা আমাদের দেশের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর জীবন থেকে সব ধরনের বিপদ দূরে সরিয়ে দিক ।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date- 26th July,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

শিক্ষাজীবন মানেই হতাশার লাইফ। যতদিন না মনের মত শিক্ষা ব্যবস্থা পাওয়া যাবে এবং তারপর চাকরি পাওয়া যাবে হতাশায় চলতে থাকবে। আর বর্তমান যে পরিস্থিতি এতে যেন শিক্ষার্থীদের জীবনে এক অন্যরকম অন্ধকারের ছায়া নেমে এসেছে। তবে দোয়া করি এই সংকট কাটিয়ে উঠুক আবারও আগের মত সুন্দর শিক্ষার কার্যক্রম দ্রুত চালু হয়ে যাক আমাদের প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

একটা দেশের কোটা সংস্কার করতে গিয়ে যদি ৯০০ এর অধিক মানুষের প্রাণ যায়, তাহলে তো সেটা অবশ্যই খারাপ কথা আপু। আসলে এই কয়দিন যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব বেশি একটা ভালো না থাকার কারণে হয়তো খবর নিতে পারেননি দেশের। তবে এখন আস্তে আস্তে সব কিছুই খোলাসা হয়ে যাবে, যখন ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় আগের মত হয়ে যাবে। তবে এটা ঠিক কথা আপু, এই আন্দোলনে সামিল হতে গিয়ে অনেক মায়ের বুক খালি হয়ে গেছে যা অনেক দুঃখজনক।