রিয়েল হিরো||

in hive-129948 •  last year 
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আশা করছি আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।


entrepreneur-593358_1280.jpg

ছবির উৎস


আজকে আমি আপনাদের সাথে একজন রিয়েল হিরোকে নিয়ে লিখতে যাচ্ছি।আপনারা আবার সিনেমার হিরো ভাববেন না কিন্তু বন্ধুরা।বাস্তব জীবনেও এমন অনেকে আছে যাদের জীবন অতোটা মসৃণ নয়।তারপরেও একজন মানুষ হাজার প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজের স্বপ্ন কিভাবে পূরণ করে।আর তারপর তার কাছের প্রিয় মানুষগুলোর মরণব্যাধি তে আক্রান্ত হওয়া এবং পৃথিবী থেকে বিদায় নিজের চোখের সামনে দেখে।এই রিয়েল হিরোর নাম অভি।তার আরো এক নাম আছে পিরু।বর্তমান তিনি একজন বিসিএস কর্মকর্তা।আমার তার সাথে পরিচয় হওয়ার সুযোগ হয়েছিল আইসিটি পড়ার সুবাদে সেই ২০১৭ সালে।তখন অবশ্য তিনি বিসিএস কর্মকর্তা ছিলেন না।ফরিদপুরের একজন পরিচিত আইসিটি শিক্ষক ছিলেন সেই সময়টাতে।

তিনি ছিলেন ভূমিহীন কৃষক পরিবারের সন্তান।অন্যের জমিতে চাষ করে তাদের সংসার চালাতেন তার বাবা,ভাই।পরিবারের অবস্থা খুব একটা ভালো না হওয়া সত্বেও তার মনে ছিল প্রচণ্ড আকাঙ্খা তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়বেন ।পরিবার এবং তার প্রচেষ্টায় তিনি পড়াশুনা চালিয়েছিলেন।শুধুমাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফর্ম তুলেছিলেন অর্থের জন্য ।আল্লাহর রহমতে তিনি রাজশাহী বিশববিদ্যালয় থেকে এপ্লাইড ফিজিক্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশুনা করেন।যখন প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করতেন তখন তার প্রায় সকালের নাস্তা করা হতোনা অর্থের জন্য।তিনি দুবেলা ২৭ টাকায় খাবার খেতেন দুপুর আর রাতে।মাঝে মাঝে তার বড়ো ভাইয়ের সাথে রাজমিস্ত্রির কাজও করেছেন।এভাবে তিনি তার পড়াশুনা শেষ করেছিলেন।পড়াশুনা শেষ করে আসার কয়েক বছর টিউশন করেন ফরিদপুর শহরে।আর বেশ সুনাম অর্জন করেন আইসিটি শিক্ষক হিসেবে।


যখন আমরা তার নিকট ব্যাচে প্রাইভেট পড়তাম,স্যার এর এতো স্ট্রাগলের গল্প আমাদের জানা ছিলনা।একটি বিষয় বলতেন যে তার মেসের খাবার না খেলে ভালো লাগেনা।তাই তিনি মেসে সপ্তাহে তিনদিন আর বাড়িতে তিনদিন থাকতেন।তার বাড়ি শহরেই কাছেই একদম।তখন তার স্ত্রীও ছিলেন যতদূর শুনেছিলাম।এই যারা মেসে থাকে তাদের এরকমই শুনি মেসের মায়া ছাড়তে পারেনা সহজে।সেই সময়টাতে তিনি চাকুরীর চেষ্টা করছিলেন আর টিউশন করছিলেন ফরিদপুর শহরে। তার পর ২০২০ সালের ৩রা আগস্ট এ তিনি প্রথম চাকুরিতে যোগদান করেন।আর সেদিন তার বাবার শরীরে ধরা পড়ে মরণব্যাধি ক্যান্সার।তারপর আবার তার বোনের স্বামী মারা যান এবং তাদের বাড়িতে ঠাই হয় তার। ঐ সময়ে বর্তমান সরকার তার বাবার চিকিৎসার খরচের জন্য আর্থিক সাহায্য করেন।কিন্তু চিকিৎসার ১৫ মাসেই মারা যান তার বাবা।তারপর তার সেই বোন এবং আরো এক ভাইয়ের শরীরে ধরা পড়া মরণব্যাধি ক্যান্সার।নিমিষেই তাদের সুখের দিন শুরু হওয়ার আগেই দুঃখের দিনে পরিণত হয়।এতো কষ্ট করে স্বপ্ন পূরণ করে প্রিয়জনদের নিয়ে সুখের সময় কাটাবেন।আর এই সময়ে তার প্রিয়জন হারানোর কষ্ট সহ্য করতে হয়।আমার দেখা একজন নিরহঙ্কার, সৎ,প্রকৃত রিয়েল হিরো অভি ভাই।


ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু । আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

❤️আল্লাহ হাফেজ❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

বাস্তব জীবনে অনেক মানুষ আছে। যারা হাজার প্রতিকূলতা জয় করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করে। তাদেরকে স্যালুট জানাই । একটা জিনিস কৃষি পরিবারের সন্তানই কিন্তু বিসিএস ক্যাডার হয়। কখনো মধ্যবিত্ত হয় সেটাও স্বাভাবিক কিন্তু বড়লোকের ছেলে কখনো ভালো পর্যায়ে যেতে পারে না । কারণ তারা অভাব বুঝতে পারে না। যারা নিজের সাথে সংগ্রাম করে চলে হাজার প্রতিকূলতা বাধা পেরিয়ে সামনে যেতে পারে তারাই অর্জন করে বিজয়। যারা মেসে থাকে না, তাদের কাছে কিন্তু একটা সময় ওটাই বাড়ি হয়ে যায়। ওটাই ভালো লাগা হয়ে যায়। আমি তো মেসে ছিলাম একমাস। আসলে একটা ফ্যামিলির মতো। অনেক ভালো লাগতো।বিপদ যখন আসে চারিদিক থেকে আসে। তার বাবার ক্যান্সার ধরা পড়লো। তার বোনের স্বামী মারা গেল আহা জীবন। যখন একটু সুখময় সময় আসে তখনই দুনিয়া থেকে আপনজন প্রিয়জন চলে যায়। সৃষ্টিকর্তা তাকে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দিক

Posted using SteemPro Mobile

জি,ধন্যবাদ আপনাকে।

আপু, অভি ভাইয়া জীবন কাহিনী পড়ে খুব ভালো লাগলো। তবে তার জীবনের মোড় ঘুরতে না ঘুরতেই তার জীবনে প্রিয়জনদের হারানোর ব্যথা সহ্য করতে হয়েছে। আর এই ঘটনা সত্যিই বেদনাদায়ক। মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করুক, যাতে তিনি তার কষ্টের এই মুহূর্তটুকু মোকাবেলা করতে পারেন। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

অভি ভাইয়ার জীবনী পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। আসলে অনেক কষ্টের পর মানুষ যখন সুখের মুখ দেখতে পায়।তখন যদি তার জীবনের প্রিয় মানুষগুলো এক এক করে তার পাশ থেকে হারিয়ে যায়।তা মেনে নেয়া খুব কষ্টের।আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারন করার শক্তি দিন।অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ আপু।

আসলে পৃথিবীতে এমন কিছু কিছু মানুষ আছেন দুঃখ তাদের চির সঙ্গী হয়ে থাকে। যদিও সুখের আশায় সংগ্রাম করে যান। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে খুব সুন্দর একটি ভালো পর্যায়ে চলে যান। কিন্তু তারপরেও এরকম অগ্নি পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে থাকতে হয় সারা জীবন। তবে সবকিছু নিজের হাতে শক্তভাবে হ্যান্ডেল করলেন। আপনার কথাই যতটুকু বুঝতে পারলাম আসলে রিয়েল হিরো বলতে হয় অভি ভাইকে। অনেক ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

একদম ঠিক বলেছেন,কিছু মানুষের চির সঙ্গী থাকে এই দুঃখ।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।