আজ ১৬ই আশ্বিন||১৪২৯ বঙ্গাব্দ,শরৎকাল||
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকে নতুন একটি লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আমার আজকের লেখার বিষয়টি হয়তো টাইটেল দেখেই বুঝতে পেরেছেন কিছুটা।
আজ ষষ্ঠী,ঢাকের বাড়ির মাধ্যমে শুরু হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবথেকে বড় পূজা, দুর্গা পূজা।বছর ঘুরে দেবীর আগমন।আগামী পাঁচদিন দেবী থাকবেন মণ্ডপে অর্থাৎ ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত।হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এই দিনগুলোতে তাদের সারা বছরের চাওয়া,পাওয়া,আনন্দ,দুঃখ দেবীকে জানান।
মূল ঘটনায় আসা যাক, ২০১০ সাল।তখন আমি পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি। আমি পঞ্চম শ্রেণীতে পড়তাম কেজি এবং প্রাইমারিতে।প্রাইমারিতে শুধু ভর্তি হয়েছিলাম।আর সপ্তাহে একদিন ক্লাস করতাম।আর কেজি স্কুলেই নিয়মিত ক্লাস করতাম।প্রাইমারিতে ভর্তি হয়ে থাকার কারণ সমাপনী পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিলনা আমাদেরকে স্কুল থেকে।ওই বছরই প্রথম পঞ্চম শ্রেণি চালু করেছিল আমাদের কেজি স্কুলে।আমাদের কেজি স্কুলে খুব অল্প কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী ছিল।তার মধ্যে পাঁচজন মেয়ে এবং ছেলে ছিল ১১ জন। তো আমাদের পাঁচজন বান্ধবীর মধ্যে খুবই মিল ছিল।এর মধ্যে আমাদের এক বান্ধবি হিন্দু ধর্মের ছিল। ওর নাম ছিল চৈতালি। আমি আর আখিমনি বাদে বাকি দুইজন গিয়েছিল আগের পূজায় চৈতালির বাড়িতে। কিন্তু আমাদের যাওয়া হয়েছিল না তখন আমরা চতুর্থ শ্রেণীতে পড়তাম।তো এবার পঞ্চম শ্রেণীতে যেহেতু এবার শেষ আমাদের স্কুল। ওর কথা যেতেই হবে।ওদের বাসায় না গেলে বন্ধুত্বই থাকবে না এরকম ব্যাপার।যেহেতু চৈতালির বাসা আমাদের স্কুল থেকে বেশ দূরে তাই কখনো যাওয়া হয়নি আমার এবং আখিমনির।ষষ্ঠীর দিন ক্লাসও তেমন হলোনা আমাদের।আখিমনির বাসা বেশ দূরে ছিল তাই বললো বাসায় আর না গিয়ে সোজা স্কুল থেকেই যাবে।আমার বাসা আবার স্কুল থেকে কাছেই ছিল এক কিলোমিটার এর কম হবে।আমরা তিনজন আগে আমাদের বাসায় গেলাম এবং চৈতালি আম্মুকে বললো,পরে আমরা তিনজন বেরিয়ে পড়লাম।
তারপরে আমরা একটা ভ্যানে তিনজন চৈতালির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।প্রায় এক ঘন্টা লাগলো আমাদের পৌঁছাতে।সকাল ১১ টাই আমরা পৌছালাম। চার কিলোমিটার মতো দূর ছিল চৈতালির বাসা।তারপর ওদের বাসায় পৌঁছানোর পর, কাকিমা আমাদের পূজার নাড়ু,মিষ্টান্ন খেতে দিলো।খেতে বেশ মজার ছিল।তারপর পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখলাম।চৈতালির সাথে ওর গ্রাম ঘুরলাম আমি এবং আখিমনি।বেশ শান্তশিষ্ট নিরিবিলি গ্রাম।আমাদের ভালোই লাগলো।পূজা মণ্ডপে মূর্তিগুলোকে লাল,নীল,সবুজ শাড়িতে এবং গয়না অসাধারণ দেখতে লাগছিল। ওর বাবা কাকারা মিলেই পূজার আয়োজন করেছিলেন নিজেদের উদ্যোগেই। এজন্য নিজেদের মত করে সাজসজ্জা করেছিলেন।সবকিছু মিলে বেশ দারুন লাগছিল দেখতে।এছাড়াও সাউন্ড সিস্টেম এর ব্যবস্থা করেছিলেন। বিভিন্ন গান শোনা যাচ্ছিল।আমরা তিনজন বেশ আনন্দ করলাম।তারপর বিকেল ৩ টাই আমরা রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।
আজ ষষ্ঠীর দিনে হঠাৎ করেই মনে পড়লো এতদিন আগের কথা। এখন আমরা পাঁচজন বান্ধবী পাঁচ প্রান্তে।পাঁচজনের কারও সাথেই কারও কোনো যোগাযোগ নেই।সর্বশেষ এইচএসসিতে থাকা অবস্থায় চৈতালি সাথে দেখা হয়েছিল। আমরা একই কলেজে পড়তাম। কিন্তু ও আর্টস আর আমি সাইন্সে ছিলাম।ক্লাস আলাদা হওয়ার জন্য আর চৈতালির বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর সেভাবে যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি।তবে স্মৃতিটুকুই শুধু ছিল।স্কুল জীবনের শুরুর দিকের বান্ধবীগুলো হয়তো এভাবেই হারিয়ে যায়।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আমার লেখাটি কেমন লাগলো কমেন্টটে অবশ্যই জানাবেন বন্ধুরা। আবার নতুন কোন লেখা নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের সামনে হাজির হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
দুর্গা পুজো উপলক্ষে আপনি আপনার বান্ধবীর বাসায় ঘুরতে গিয়েছেন শুনে অনেক ভালো লাগলো আপু। দুর্গাপূজার মণ্ডপ দেখতে আমার কাছেও ভালো লাগে। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের খাবার কিনতে পাওয়া যায়। ধন্যবাদ আপনাকে আপু এত সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি আপু। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পুজোর সময় আপনারা বান্ধবিরা মিলে আপনার বান্ধবীর বাসায় খুব আনন্দ করেছেন। আসলে আমার কখনো এভাবে কাছ থেকে পূজা দেখা হয়নি, যদি হত আপনার মত এমন কোন হিন্দু বন্ধু থাকতো তাহলে দেখতে পারতাম। আশা করছি আবারো কোন না কোন সময় আপনার এই বান্ধবীর সাথে দেখা হয়ে যাবে। এমন আমারও অনেক বন্ধু হারিয়ে গিয়েছে স্কুল পার হওয়ার পর 😑
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপনাকে আপু। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit