"আমড়া কাঠের ঢেঁকি"...

in hive-129948 •  3 years ago 

সবাই কেমন আছেন?আশা করি সকলে ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি।আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার নিজের মন থেকে বলা কিছু কথা শেয়ার করব। আশা করি আপনারা বর্তমান পরিস্থিতির সাথে মিলিয়ে কথাগুলো বুঝতে পারবেন।

Bleeding-Heart20160314074451.jpg

Image

গ্রামের মানুষেরা প্রতিনিয়ত একটা কথা বলে থাকেন।কথাটা হলো "আমড়া কাঠের ঢেঁকি"। বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে তারা এই কথাটা ব্যবহার করে থাকে।এটা দ্বারা তারা বুঝাতে চাই ঢেঁকি তৈরির জন্য আমড়া কাঁঠ মোটেও উপযোগী নয়।আমড়া কাঁঠ খুব নরম এবং অল্পতেই ভেঙ্গে যায়।যার কারণে কোনো কাজে আমড়া কাঁঠ ব্যবহার করা হয় না।কাউকে যদি এই কথাটা বলা হয়। তার মানে সেই লোকটা ওই কাজের জন্য উপযোগী না।সেজন্য তাকে বলে থাকে "আমড়া কাঠের ঢেঁকি"। আসলে এখানে দোষ আমড়া কাঠের না।দোষ আমাদের বিচার বিবেকের।আমরা যদি কোনো কাজ করার ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ নিই তাহলে এমন কোনো সমস্যা হবে না।যে সকল কাঁঠ দিয়ে ঢেঁকি নির্মাণ করতে হয় তা দিয়ে যদি আমরা ঢেঁকি নির্মান করি তাহলে কিন্তু আমাদের কোনো সমস্যায় পরতে হবে না।ঠিক একই রকম ভাবে যে কাজের জন্য যে দক্ষতা সম্পূর্ণ লোক নিয়োগ করা দরকার তাকেই নিয়োগ করা উচিত।

আমাদের সমাজে যদি কোনো লোক কাজ করতে না পারে তাহলে মানুষ তাকে নিয়ে বিভিন্ন কথা বলে।হয়ত তার সামনে বলে না,কিন্তু পিছনে ঠিকই বলে।আসলে কাজটা না পারা কারণ তার না।বরং সে ওই কাজের জন্য উপযুক্ত লোক নয়।ওই কাজ অন্য লোকের।সে জন্য যার কাজ তাকে দিয়েই করাতে হবে।এখন আমরা যদি একজন রাজমিস্ত্রি দিয়ে কুমোরের কাজ করাতে চাই তাহলে কিন্তু সম্বব না।আমাদের দেশে আজ কোনো কিছু বিচার না করে দেওয়া হচ্ছে চাকরি। যার ফলে দেশের অবকাঠামো দূর্বল হয়ে যাচ্ছে।আজকে হাজার হাজার শিক্ষিত যুবক বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।তারা যোগ্যতা থাকা সত্ত্যেও কোনো চাকরি পাচ্ছে না।যারাও পাচ্ছে তাদের গুনতে হচ্ছে অনেক টাকা।আঠারো -বিশ হাজার টাকার চাকরি করার জন্য দিতে হচ্ছে সাত থেকে আট লক্ষ টাকা।তারপরেও চাকরি পাওয়া যাচ্ছে।

দেশে যদি যোগ্যতা অনুযানী চাকরি দেওয়া হতো, তাহলে আজ হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার যুবক পরিবারের বোঝা হয়ে থাকত না।সকল ক্ষেত্রে বেকার থাকার কারণে তাদের হতে হচ্ছে লাঞ্চিত, শুনতে হচ্ছে হাজারও কথা।পরিবারের যেন সে এখন একটা বড় বোঝা হয়ে গেছে।পরিবার থেকে সব সময় বলতে থাকে, এতো টাকা দিয়ে তোকে পড়াশুনা করাইয়ে লাভ কি হলো আমাদের।এতো বছরের পড়াশুনা করানো টাকাগুলো পানিতে চলে গেল।তখন সে কোনো জবাব দিতে পারে না।আজ শুধু যে চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য তা নয়।সকল ধরনের সরকারি কাজের ক্ষেত্রেও দেখা যায় একই বৈষম্য। সেখানে টাকা দিলে কাজ আগে হয় না হলে কয়েক দিন ধরে ঘুরতে হয় তাও পাওয়া যায় না।আসলে আমাদের দেশে যদি সঠিক ভাবে মানুষকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়া হতো তাহলে আজ দেশে এত দূরনীতির চাদর দ্বারা ঢাকা থাকতো না।

আজ বাংলাদেশের বেশির ভাগ গরিবেরা এই ধরনের সমস্যায় বেশি ভূগছেন।তাদের সন্তানেরা লেখা পড়া করেও চাকরি পাচ্ছে না।যার কারণে গ্রামের মানুষেরা বিভিন্ন ধরনের কথা শুনাচ্ছেন।কেউ আমড়া কাটের ঢেঁকি তো কেউ অলস বেকার বলছে।আজ সারা দেশে বেকার যুবকেরা যেন এক অভিশাপের মতো।তাদের সাথে দেওয়া হয় না কোনো মেয়েকে বিয়ে।ভালোবাসার মানুষটাকে অন্য জায়গায় চলে যেতে দেখেও তার কিছু করার থাকে না।কারণ সে তো বেকার।যার কারণে মুখ দিয়ে কিছু বলতে পারে না।মনের ভিতরে জমে রাখে শত কষ্ট।যেটা বয়ে বেড়াতে হয় সারাটা জীবন।

কথাগুলো কেউ খারাপ দিকে নিবেন না।আমি বাস্তব প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরে আমার মতামতগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।কতগুলো বছর শত কষ্টের মাঝে লেখাপড়া করেও আজ শিক্ষিত যুবকরা হয়ে আছে আমড়া কাঠের ঢেঁকি। তাদের যেনো কোনো কাজেই ব্যবহার করা হয় না।তারা যেনো পরিবার, দেশ ও জাতীর অভিশাপ হয়ে আছে।


Cc:
@justyy
@rme
@amarbanglablog
@curators
@hafizullah


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার পোস্টটি পড়লাম। ভালো লাগল। আপনার সম্পর্কে আরো জানতে আগ্রহ প্রকাশ করি। আপনার পরিচয় পোস্টে মেনশন করবেন।অনুরোধ রইল। ধন্যবাদ

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আর আমি আমার পরিচয় পোষ্ট কয়েক দিন আগেই করেছি।আপনে চাইলে দেখতে পারেন।

নির্মম কিছু সত্য কথা তুলে ধরেছেন ভাই, হ্যা এটাই বর্তমান বাস্তবতা যা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

ধন্যবাদ ভাইয়া। আমার পোষ্টটা পড়ার জন্য এবং আপনার মূল্যবান মতামত জানানোর জন্য।

সময় উপযোগী কথাবাত্রা। আসলে এইরকমই হয়ে আসছে। যাইহোক ভাল লিখেছেন।

ধন্যবাদ আপু।আপনাকে আপনার মতামতটা জানানোর জন্য।