অক্ষর কিভাবে এলো?

in hive-129948 •  3 years ago 

Capture.JPG

অক্ষর (Alphabet) বাংলায় যেমন অ, আ, ক, খ, এবং ইংরেজিতে A, B, C, D এগুলােইতাে অক্ষর। এই অর্থহীন টুকরাে টুকরাে সাংকেতিক চিহ্নগুলােকে কায়দা মতাে সাজিয়েই তৈরি করা হয় অথযুক্ত শব্দ। লেখা হয় মনের কথা, জ্ঞানের কথা।

পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র অনুসারে বিশ্বের প্রতিটি বস্তুই যেমন ক্ষুদ্রতম অণুর (Molecule) দ্বারা গঠিত, তেমনি ভাষার অনু হলাে অক্ষর। পদার্থের অণু আবিষ্কৃত হয়েছিলাে বিজ্ঞানীদের হাতে মাত্র হাজার বছর আগে। কিন্তু ভাষার অণু অক্ষর আবিষ্কারের ইতিহাস আরাে দীর্ঘকালের। মানব ইতিহাসের বিভিন্ন অগ্রগতির ধাপের সাথে অক্ষর আবিষ্কারের অগ্রগতিও এগিয়ে এসেছে ধীরে ধীরে। বহু সহস্র বছরের নানা পরিবর্তন বিবর্তনের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে আজকের অক্ষর বা বর্ণমালা। বহু হাজার বছর আগে সভ্যতারও আদিকালে, যখন মানুষ বাস করতাে পর্বত গুহায় তখন তারা মনের ভাব প্রকাশ করতাে ভিন্ন কায়দায়, নানা কৌশলে। তারা পর্বতের গায় ছবি এঁকে এঁকে মনের কথা বােঝাতো। যেমন— কোথাও পর্বতের গায় তারা অনেকগুলাে হরিণের ছবি এঁকে রাখতাে। তাতে বােঝা যেতাে এটি একটি হরিণ শিকার কেন্দ্র। এর আশেপাশে প্রচুর হরিণ পাওয়া। যায়। এটাও ছিলাে এক ধরনের লেখা। ভাষা বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন চিত্রলেখা (Picture writing)। এ ধরনের ছবি এঁকে লেখার প্রচলন দীর্ঘদিন ধরে চলেছিলাে প্রাচীন ব্যাবিলন, মিশর এবং চীনে। এই চিত্র লেখার বেশ উন্নতিও হয়েছিলাে কালক্রমে। পরবর্তী সময়ে এই চিত্রলেখার প্রচুর পরিবর্তন হয়েছে। কালক্রমে এমন হলাে যে তখন আর কোনাে কিছুকে বােঝানাের জন্য পূর্ণাঙ্গ চিত্র আঁকার দরকার হয়না। শুধু সাংকেতিক চিত্র একেই পুরাে জিনিসটি বােঝানাে হয়। যেমন- একটি পায়ের গােড়ালির ছবি আঁকা থাকলেই বুঝতে হবে এবার হাঁটতে হবে। এধরনের সাংকেতিক চিত্রধারা শব্দ বােঝানাের পদ্ধতির নাম দেয়া হয়েছে সাংকেতিক লেখা (Idea writing) বা আইডিয়ােগ্রাফিক (Ideographic)। কিন্তু এধরনের লেখাতে অনেক অসুবিধাও ছিলাে। কারণ অবস্থা এবং মানুষে মানুষে চিন্তাধারারও পার্থক্য থাকতে পারে। একটি সংকেত দ্বারা একজনে যা বােঝে, অন্য লােকে তা অন্যরকমও বােঝে নিতে পারে। যেমন- পায়ের গােড়ালির ছবি দেখে একজন হয়তাে হাঁটতে হবে বুঝতে পারে, অন্য লােকে হয়তাে পা দিয়ে লাথি মারাও বুঝতে পারে।

তাই ছবির দ্বারা সংকেত প্রদানের পদ্ধতিটি আবারাে পরিবর্তিত হতে লাগলাে। এবার প্রতীক তৈরি হলাে ধ্বনির সাথে সামঞ্জস্য রেখে। যেমন- আর্ম (Arm) শব্দটির প্রতীক হিসেবে ধরা হয় ইড (ld)। এখানে বাহুর ছবির সাহায্যে উচ্চারণের প্রতীক হিসেবে আর্ম এর পরিবর্তে উচ্চারণ বােঝানাে হবে ইড (ld)। এধরনের লেখাকে বলা হয় উচ্চারণধর্মী লেখা (Syllabic writing)। ব্যাবিলন, চীনা এবং মিশরীয়রা এ জাতীয় লেখায় বেশি অগ্রগতি লাভ করতে পারেনি। মিশরীয়রা ২৪টি সাংকেতিক ধর্মী ছবি তৈরি করে। এই ছবিগুলােই অক্ষরের পরিবর্তে ব্যবহৃত হতাে। তবে ৩, ৫০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে ভূমধ্যসাগরের পূর্বতীরে বসবাসকারী লােকেরাই বর্ণ বা অক্ষরের আবিষ্কারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তারাই সর্বপ্রথম অনুভব করেন যে একই উচ্চারণের প্রতীক সর্বক্ষেত্রে একইভাবে ব্যবহৃত হবে। তাই তারা সীমিত সংখ্যক কতগুলাে প্রতীক চিহ্ন তৈরি করে যেগুলাে এক একটি ধ্বনির পরবর্তে বসবে। এগুলােই হলাে অক্ষরের আদিরূপ। বিশ্বের প্রথম বর্ণমালা তৈরি হয় হিব্রু ভাষায়। হিব্রু ভাষাভাষীদের কাছ থেকে অক্ষর তৈরি করা শিখে ফিনিশীয়রা (Phoenicians)। ফিনিশীয়রা তাদের অক্ষর নিয়ে আসে গ্রীসে। গ্রীক ভাষা থেকে কালক্রমে অক্ষর রােমানদের নিকট আসে সামান্য পরিবর্তিত আকারে। তারপর রােমানরাই সারা ইউরােপে অক্ষরের প্রচলন করে। গড়ে ওঠে ভাষা। এটাই ছিলাে ল্যাটিন অক্ষর।

ল্যাটিন থেকেই এসেছে ইংরেজি অক্ষর। প্রাচীন ভারতবর্ষে অক্ষরের প্রচলন হয় দ্রাবিড়দের দ্বারা। তারাই ভারতবর্ষে আসার সময় অক্ষর নিয়ে আসে বহু হাজার বছর আগে। ব্রাহ্মলিপি পরিবর্তিত হয়ে তৈরি হয়েছে বাংলা অক্ষর।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এই কমিউনিটিতে পোস্ট করতে হলে আপনাকে সকল নিয়ম কানুন মেনে পোস্ট করতে হবে। এজন্য আপনাকে প্রথমে পরিচিতি মূলক পোস্ট করতে হবে। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

অনেক সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন, পড়ে ভালো লাগলো। তবে আমার বাংলা ব্লগে এই ধরনের পোস্ট গ্রহনযোগ্য নয়। আমার বাংলা ব্লগে পোস্ট করতে হলে কিছু নিয়ম জানতে হবে 👇

আমার বাংলা ব্লগে পোস্ট করতে হলে, সর্বপ্রথম একটি পরিচিতিমূলক পোস্ট লিখতে হবে।
আর অবশ্যই পোস্ট বাংলাতে হতে হবে।
পোস্টে অবশ্যই #abb-intro ট্যাগ ব্যাবহার করতে হবে। একটি পরিস্কার কাগজে আমার বাংলা ব্লগ, আপনার স্টিমিট আইডি এবং তারিখ লিখে সেই কাগজসহ আপনার ছবি তুলতে হবে। এই ছবির সাথে আরও নূন্যতম তিন চারটি ছবি এবং ২৫০ শব্দের একটি পরিচিতি মূলক পোস্ট লিখতে হবে। আপনার সম্পর্কে আরও তথ্য লিখতে হবে যেমন আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরিবার, জাতীয়তা, এলাকা সম্পর্কে সব তথ্য উল্লেখ করতে হবে। আপনাকে সঠিকভাবে ভেরিফিকেশন পোস্ট করতে হলে এই সকল নিয়ম মেনে আবার পোস্ট করতে হবে। আপনার পোস্টে রেফারার সম্পর্কে লিখতে হবে অথবা এই কমিউনিটির ব্যাপারে কোন 'মাধ্যম' থেকে জানতে পেরেছেন তা উল্লেখ করতে হবে অবশ্যই।
👇
আর আপনি পরিচিতি মুলক পোস্ট তখনি করবেন যদি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আপনার পরিচিত কোনো ভেরিফাইড মেম্বার থেকে থাকে। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।

তবে এই মুহুর্তে এই বাংলা ব্লগে নিউ মেম্বার নেয়া হচ্ছে না, আপনি আমাদের discord জয়েন করুন। নিউ মেম্বার নেয়ার সঠিক সময় discord এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।

আরও কিছু জানতে
জয়েন করুন আমাদের discord server এ
Discord link : ঃhttps://discord.gg/5aYe6e6nMW

নিচের লিংক টি ক্লিক করে দেখে নিতে পারেনঃ আমার বাংলা ব্লগ এর সর্বশেষ আপডেট নিয়মাবলী
👉 [লিংক] ঃ https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-29-sep-21

এইজন্য আমি এই কমিউনিটি লিভ দিয়ে দিলাম

আপনি নিজস্ব লেখা ব্যতীত অন্যের সামগ্রী এখানে শেয়ার করতে পারবেন না। & আপনি নিজের ফটো অথবা কঁপিরাইট ফ্রী ফটো ছাড়া আপনার পোষ্টের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন না।

আপনার পোস্টের লেখাগুলো শতভাগই চৌর্যবৃত্তি করা।
এ ধরনের post আমাদের কমিউনিটিতে রাখা হয় না। নতুন ইউজার হওয়ার কারণে শুধুমাত্র আপনার পোস্ট Mute করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আবার একই ধরনের কাজ করলে আপনার একাউন্ট কমিউনিটি থেকে ব্যান করা হবে।

কমিউনিটির নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22

যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।

Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493

Source:

https://easleytennislessons.com/how-to-lose-20kg-in-a-week/

https://www.techtunes.io/sci-tech/tune-id/889261