তিন ডাকাতের গোবর ডাকাতি গল্প

in hive-129948 •  last month 

আসসালামু আলাইকুম


এটি আমার প্রথম পোস্ট "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে। আমার নাম রাথিন হাসান মোন। কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন স্টুডেন্ট ।

Gobor-Dakati.jpg

গল্পের কিছু তথ্য

গল্পের নামতিন ডাকাতের গোবর ডাকাতি
লেখিকাফাতেমাতুজ জোহরা সেতু
পরিচালনারাথিন হাসান মোন
চ্যানেলগল্পের দিন
ভয়েজ (ছেলে)রানা কুমার ঘোষ
ভয়েজ (মেয়ে)ফাতেমাতুজ জোহরা সেতু
দেশবাংলাদেশ

গল্প

৩ ডাকাত একদিন দুপুরে,
ডাকাত সরদারঃ এই শোন । ডাকাতের বাজারে লাল বাতি জলে জাচ্ছে। খুব সিগ্রি একটা বড় ডাকাতি করতে হবে। বুঝলি?

মস্তানঃ ঠিক বলেচেন সরদার। ওসব পকেট মেরে , লোকের ধান চুরি করে আর মজা লাগছে না।

ছ্যাঁচড়াঃ এই মজা কি রে আবার । ডাকাতি খেলছিস নাকি খাচ্ছিস যে মজা লাগবে?

মস্তানঃ এই ডাকাতির তুই কি বুঝিস রে । সুধু তো ওই লোকের পকেট কাটা, উথন থেকে লুঙ্গি চুরি করা এসব এ করিশ। ডাকাতি হচ্ছে একটা শিল্প বুঝলি। এ হল এক ঐতিহ্য। আমাদের পরদাকাতেরা ছিল খান্দানি ডাকাত। আগে থেকে চিঠি দিয়ে বলত অমুক তারিখে ডাকাতি করতে আসব। লোকেরা ভয়ে কাঁপত। আর এখনকার ডাকাতি কেমন চোরের লেভেলে চলে জাচ্ছে।

ছ্যাঁচড়াঃ সরদার ও কিন্তু আমাকে অপমান করছে।

সরদারঃ তোরা কি আখন নিজেদের মদ্ধে মারামারি করবি ? যা মারামারি করার এত সখ হলে একজন আরেকজন কে মেরে ফাতিয়ে দে। যেটা কথা বলার মত সুস্থ থাকবে সেটার কথা শুনব।
(জিভ এ কামর)
শোন একটা বড় ডাকাতি করব এবার। ওই জমিদার বাড়িতে ডাকাতি করতে হবে। যা অর্থ পাব ওই দিয়ে সাড়া বছর একদম আয়েশ করে চলে যাবে।

Screenshot_57.png

মস্তানঃ আজ্ঞে সরদার। বলচিলাম যে আমি কাল রাতে এক সপ্ন দেকেচি।

সরদারঃ এহ ! মাথা ভরা গবর নিয়ে আবার সপ্ন ও দেখিস । তা কি দেখলি তুই ? গবরে সাতার কাটছিস?

মস্তানঃ উহ হু ! কি যে বলেন সরদার। একদব গন্ধ গন্ধ হয়ে গেলো। আমি দেক্লুম যে গাব্বার ডাকাত আমার সপ্নে এলো। এসে বললেন, ( দূর দূর মে জাব ভি কই ছোটে বাচ্চে স নেহি শাকতে, উস্কে মা কেহতে হে সো যা বেটা নেহি তো গাব্বার অ্যাঁ জায়েগা। আর তোরা কিনা চুরি করে সেটার না ম ডাকাতি বলে চালিয়ে দিস? লোকে তোদের ভয় পায়না মটে।

ছ্যাঁচড়াঃ তা তুই কি বলছিস ? এখন ভয় দেখাবার জন্য কি ভুতের কাপর পরে সাদা রঙ মেখে ভয় দেখাতে দেখাতে ডাকাতি করব ?

হু হু হু আমরা হলাম ভুত আমাদের সব দিয়ে দে বলছি নইলে ঘার মটকাবো এরম করে ?

মস্তানঃ ওরে না রে। চিঠি দিয়ে তারপর সদর দরজা দিয়ে জেয়ে ডাকাতি করতে হবে। নইলে কেমন জেনো মজা লাগছে না
সরদারঃ ওসব চিন্তা ছার। এখন আর আগের দিন নেই রে। এখন এমন করতে গেলে নিশ্চিত গনপিতুনি খেতে হবে। মানুষ এখন অনেক চালাক হয়ে গেছে। সুধু এই মস্তান টার মাথায় ই গবর ভরা।

ছ্যাচড়াঃ গবর থেকেউ তো সার হয় তোর তো নাই।

মস্তানঃ এই ছ্যাঁচড়া থাম বলছি নইলে কিন্তু এক লাথি দিয়ে উত্তর কোরিয়া পাঠিয়ে দেব।

Screenshot_58.png

মস্তান রাত্রি বেলা বসে বসে একটা চিঠি লিখে দিন তারিখ দিয়ে জমিদার বাড়িতে দিয়ে এলো।
মস্তানঃ এহ ! চালাক না ছাই। আমার চেয়ে বেশি চালাক কেউ আছে নাকি ! সাহস নেই তা বলবে না। এবার ডাকাতি হলে খান্দানি ডাকাতি ই হবে।

দিন যেতে যেতে ডাকাতির দিন ঘনিয়ে আসছিল। জমিদার তার পাহারাদার এক জরুরি কাজে সহরে গিয়েছে। বাড়িতে জমিদারের বউ আর ছেলে বেশ চিন্তায় পরে গেলো এই সমস্যা থেকে কি করে বাচবে। জমিদারের বউ এর এক বুদ্ধি মাথায় এলো।


Screenshot_59.png

বউঃ এই খোকা শুনছিস ? এক কাজ করতো। যা ওই গোয়াল থেকে গোবর নিয়ে আয় তো বেশি করে।

খোকাঃ গোবর দিয়ে কি হবে মা ?

বউঃ তোর মাথায় মাখব। তাহলে তোর চুল গজাবে।

খোকাঃ মা কি যে বলছ? গোবর মাথায় কেন দেব।

বউঃ মস্করা করছি তোর সাথে বোকা ছেলে। যা নিয়ে আয় ,বলছি কি করব।
খোকা গিয়ে গোবর নিয়ে এলো

খোকাঃ এই নাউ মা।

জমিদারের বউ কলসি এনে তাতে গোবর ভরে রাখল। আর উপর দিয়ে কিছু নকল মহর সাজিয়ে অন্দরমহলে রেখে দিল।

মাঃ নাহ একটা কলসি খালি রয়েছে , এটা কি করে ভরব ? খোকা বলছি গোয়ালে কি আর গোবর ছিল?

খোকাঃ না মা আর তো ছিল না।

মাঃ তাহলে কি করে হবে ? একটা কেমন খালি লাগছে এটাও ভরতে পারতে ভাল হত।
খোকাঃ দাউ তো মা আমাকে দাউ আমি একটা বেবস্থা করছি। দু থালা বিরিয়ানি খেয়েছি তা তো আর ব্রিথা যেতে দেয়া যায় না।

এই নাউ মা

বউঃ উহ হু কি গন্ধ হয়েছে রে। চলবে চলবে এতেই কাজ চলবে। তোদের ডাকাতির সখ মেতাচ্ছি দারা। চিঠি দিয়েছে তাতেউ বানান ভুল ছিল ৫ টা । ওরা আবার আসবে আমার ঘরে ডাকাতি করতে ।

মা আর ছেলে মিলে সব কলসি এমন করে সাজিয়ে রাখল জেনো তাতে মহরে ভরা।
ডাকাত রা চলে এলো।

সরদারঃ এই ধিরে ধিরে আয় কেউ জেনো টের না পায়।

ছ্যাঁচড়াঃ জি ওস্তাদ।

মস্তানঃ না ওস্তাদ আজ আপনি যাই বলুন আমি খান্দানি ডাকাতি ই করব। একদম হাক ছেরে ডেকে ভয় দেখাতে হবে। নইলে গাব্বার সিং গুরু রাগ করবে যে।

সরদারঃ এই না না। একদম ই না।

মস্তান চিৎকার করে ডাক সুরু করল।

হ্যাঁ রে রে রে রে………।। কে কোথায় আছিস? যা আছে বের করে নিয়ে আয় যদি জানে বাচতে চাশ। নইলে কিন্তু একদম উলটো করে ঝুলিয়ে রাখব।


Screenshot_62.png

খোকাঃ না না আমাদের মারবেন না। ওই যে আমাদের অন্দর মহলে সব রাখা আছে নিয়ে জান। আমাদের ছেরে দিন।
মস্তানঃ আর কিছু কথাউ লুকিয়ে রাখিস নি তো ?

খোকাঃ না না । আপনাদের থেকে লুকিয়ে রেখে মারা পরবার কোন সখ নেই। আপ্নারা সব নিয়ে জান। আপনাদের জন্য সব গুছিয়ে রেখেছি।
মস্তান। অ্যাঁ অ্যাঁ এ আবার কেমন লক। টা ভাল। এত ভয় যখন পেয়েছিস। নিশ্চয়ই কিছু লুকিয়ে রাখিস নি। যাই সব নিয়ে যাই।


Screenshot_63.png

৩ ডাকাত মিলে সব নিয়ে ফিরে গেলো। যাবার পথে,

মস্তানঃ দেখলেন সরদার কেমন ভয় দেখালাম। আগে থেকে চিঠি দিয়েছিলাম বলেই তো কোন কষ্ট করতে হল না। সব গুছিয়ে রাখা জিনিশ সুধু নিয়ে চলে এলাম। কেমন খেলা দিলাম বলুন।

এই মহর দিয়ে আমি একটা ঘোড়া কিনব। কিনে সাড়া গ্রাম ঘুরে বেরাব।

ছ্যাঁচড়াঃ হ্যাঁ আর পাহারাদার তোকে দেখতে পেলে পেদানি দিয়ে উলটো গাধার পিঠে চরিয়ে দেবে। আমি এই মহর দিয়ে একটা ঘর করব। তারপর একটা ফুটফুটে লাল বউ আনবো। বয়স পেরিয়ে জাচ্ছে এবার নিজের একটা হিল্লে করার দরকার।

সরদারঃ তোর আবার এত সাঙ্গা করার সখ ছিল জানা ছিল না যে । শাদি করা ভাল কাজ। আমিও ভাবছি এবার ওই বিধবা কনক চাপাকে বিয়ের প্রস্তাব টা দিয়েই দেব। বয়স ৫০ তাতে কি হয়েছে। এখন যেভাবে ডাকাতি করি সরিরে আমার অনেক জোর। কিন্তু কেমন জেনো একটা গন্ধ পাচ্ছিস না?
মস্তানঃ মনে হয় অনেকদিন এই মহর আটকে রাখা ছিল তাই ছাতা পরে গেছে।


Screenshot_64.png

ডাকাত রা কলসি গুল নিয়ে ঘরে বসল।

মস্তানঃ সরদার আমাকে কিন্তু বড় ভাগ টা দেবেন। আমি না থাকলে কিন্তু এত সহজে এসব ডাকাতি করা যেত না।

সরদারঃ বুদ্ধির মাথা খেয়েছিস নাকি ? বড় ভাগ টা সব সময় সরদার ই নেয়।

ছ্যাঁচড়াঃ ওর কোথায় কান দেবেন না সরদার। আপনি বরং সমান ভাগ করুন

সরদার একটা কলসির মদ্ধে হাত ঢুকিয়ে দিল আর গন্ধ আরও বেরে গেলো। সরদারের বুঝতে বাকি রইল না যে সে কিসের ভেতর হাত দিয়েছে।

সরদারঃ বুঝলি মস্তান। তোর বুদ্ধির জন্নই তো এই ডাকাতি হল। নে সব কিছু তকেই দেব। সব তোর।

ছ্যাঁচড়াঃ কি বলছেন সরদার। সব ওকে দিয়ে দেবেন ?

সরদারঃ হ্যাঁ। নে নে তোর কলসিতে হাত দিয়ে দেখ কত ভাল ডাকাতি হল।

মস্তান যেই না হাত দিলে আরও দুরগন্ধে ভরে গেলো। এবার সরদার তার কলসিটা নিয়ে মস্তানের মাথায় ঢেলে দিল।

ছ্যাঁচড়ার ও বুঝতে বাকি রইল না। সেও বাকি কলসি গুল ওর মাথায় ঢেলে দিল।

ছ্যাঁচড়াঃ নে এবার মজা লাগছে তো। নে আরও বেশি করে মজা নে।

গল্পটির মূল শিক্ষা হলো


বুদ্ধির চেয়ে বুদ্ধিমত্তা বেশি মূল্যবান: মস্তান চিঠি দিয়ে ডাকাতির ঘোষণা দিয়ে অনেকটা চালাকির পরিচয় দিলেও, জমিদারের বউয়ের বুদ্ধিমত্তা তার চালাকিকে হার মানিয়েছে। তাই শুধু বুদ্ধি নয়, সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াই প্রকৃত বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।


Screenshot_65.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!