গল্পের কিছু তথ্য
গল্পের নাম | তিন ডাকাতের গোবর ডাকাতি |
---|---|
লেখিকা | ফাতেমাতুজ জোহরা সেতু |
পরিচালনা | রাথিন হাসান মোন |
চ্যানেল | গল্পের দিন |
ভয়েজ (মেয়ে) | ফাতেমাতুজ জোহরা সেতু |
দেশ | বাংলাদেশ |
- সোর্স : নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল✅
গল্প
একদেশে থাকতো এক বুড়ি। এ কুল ও কুল তিন কুলে বুরির কেউ ছিল না। বুড়ি কোন রকমে তার দিন কাটাত। পাড়া প্রতিবেশিরা মাঝে মাঝে খাবার দিলে তবেই বুড়ির পেটে খাবার জুটত। কিন্তু একদিন সারাবেলা ফুরিয়ে গেলো কিন্তু কনও খাবারের সন্ধান করতে পারলো না।খুদার জালায় বুড়ি রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগলো।
বুড়িঃ আজ সারা দিন কিচ্ছু খেতে পাইনি। ভীষণ খুদা পেয়েছে। পেটে একটুও দানাপানি পড়েনি। কার কাছে খাবার চাইব। কেউ ই তো আজ খাবার দিলো না। যাই দেখি কাউকে রাস্তায় পাই কি না। পেলে একটু খাবার চেয়ে নেবো।
ঠিক তখনই রাস্তা দিয়ে একজন লোক জাচ্ছিল।
লোকঃ কি গো বুড়ি, এই ভর সন্ধে বেলায় কোথায় চললে গো।
বুড়িঃ আর বলিশ নে গো। সারাদিন কেউ একটু খেতে দিলো না। গায়ে তো অতো জোর নেই যে কাজ করে খাব। তা বলছি তুই আমাকে কিছু খেতে দে না রে। বড্ড খুদা পেয়েছে যে।
লোকঃ বুড়ি মা মাফ করবে। আমার কাছে যে এখন কিছুই নেই। সারাদিন বাজারে বসে বেচা বিক্রি হয়নি মটে। যা একটু হয়েছে তা দিয়ে বাড়ি গিয়ে আমার ৩ ছেলেমেয়েকে খাউয়াব। এটা তোমায় দিলে আমার বাচ্চারা না খেয়ে থাকবে যে।
বুড়িঃ ঠিক আছে। তবে জা। আমি দেখি কথাউ যদি খাবারের সন্ধান পাই।
বুড়ি হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে এলো কিন্তু খাবারের কনও সন্ধান পেলো না। যেতে যেতে বুড়ি এক বড় গাছের নিচে গিয়ে বসলো। আর কিছুতেই সে হেটে যেতে পারছিল না।
বুরিঃ কি কপাল নিয়ে যে বেচে আছি কে জানে। খিদের জালায় আর নরতে পারছি না। আজ রাত টা হয়ত না খেয়েই থাকতে হবে। না খেতে পেরে আজ আমার প্রান যাবে। কেউ কি নেই আমাকে একটু খেতে দেবে। আজ যদি আমার কেউ থাকতো তবে নিসচই আমাকে এভাবে না খেয়ে মরতে হত না।
ঐ গাছে বসে ছিল এক পাখি। পাখি টি হথাত বুড়ির সামনে এসে এক জাদুর বুড়ি তে পরিনত হল। গাছের আরাল থেকে সে সব কথা শুনছিল। বুড়ির কষ্টের কথা শুনে তার ভীষণ মায়া হল। সে বুড়িকে গিয়ে বলল,
জাদুর বুড়িঃ ও বুড়ি শুনছো। তোমার এত দুঃখ। শুনে আমারও ভীষণ কষ্ট হল গো। তা তোমাকে খেতে দেবার কি কেউ নেই।
বুড়ি ঃ না গো কেউ নেই যে আমায় একটু খেতে দেবে। বছর খানেক আগে এক কালাজরে আমার পরিবারের সকলেই মরেছে। কেন যে আমি বেচে গেলাম কে জানে। ওদের সাথে আমি মরে গেলেউ তো হত।
জাদুর বুড়িঃ ছি ছি এভাবে বলছ কেন। সান্ত হউ সান্ত হউ। তোমাকে আর কষ্ট করতে হবে না বুড়ি। আমি তোমাকে এক জাদুর হারি দিচ্ছি। এই হারি নিয়ে গিয়ে তুমি আগুনের উপর বসিয়ে যা খেতে চাইবে তাই রান্না হয়ে যাবে। তোমাকে খিদের জন্ত্রনায় আর ভুগতে হবে না।
বুরি ঃ এ মা এ কি করে সম্ভব ! যা বলব তাই রান্না হবে ! বাজার সদাই কিছু লাগবে না ?
জাদুর বুড়িঃ না গো কিচ্ছুতি তোমার লাগবে না। নাউ এই জাদুর হারি নিয়ে তুমি বাড়ি ফিরে জাউ। একবার পরখ করে দেখো তবে সব বুঝতে পারবে।
বুড়ি জাদুর বুড়ি র থেকে হারি নিয়ে বাড়িতে ফিরল। চুলার উপর হারি চরিয়ে দিয়ে সে বলে উঠল
জাদুর হারি জাদুর হারি
খুলব যখন ঢাকনা
ভাত মাংস চাই খেতে
হয়ে যা রান্না
ঢাকনা খুলতেই হারি থেকে মাংস ভাত রান্না হয়ে গেলো। বুড়ি সেদিন রাতে পেট ভরে খেয়ে ঘুমতে গেলো।
এরপর থেকে বুড়িকে আর খাউয়া নিয়ে কষ্ট করতে হত না। বুড়ি রোজ হারি চরিয়ে যা বলত তাই রান্না হয়ে যেত আর বুড়ি মন ভরে বিরিয়ানি, আলুর দম, বড় মাছ যা খেতে চাই সব খেত। এমন করে যেতে যেতে বুড়ি ভাবল এই হাড়ির খাবার যদি বিক্রি করা যায় তাহলে অনেক বরলক হয়ে যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। বুড়ি একটা খাবারের হোটেল দিলো। সেখানে সেই জাদুর হাড়ির সুস্বাদু খাবার বিক্রি করে বুড়ি অল্প দিনেই বেশ বরলক হয়ে গেলো। একদিন এক ছোট বাচ্চা এসে বুড়ির কাছে খেতে চাইল।
বাচ্চাঃ ও বুড়ি মা আমায় একটু খেতে দাউ না গো।
বুড়ি ঃ তা কি খাবি।
বাচ্চাঃ একটু ভাত আর যা দেবে তাই খাব। বড্ড খুদা পেয়েছে। সকাল থেকে কিচ্ছু খাইনি। মা ছাড়া আমার কেউ নেই। মা ভীষণ অসুস্থ। কদিন ধরে খাবার যগাতে পারছে না। তোমার ঘরে তো অনেক খাবার বুড়ি মা। আমার আর আমার মার জন্য একটু খাবার দাউ না গো।
বুড়ি ঃ তা খাবার খাবি পয়সা দিতে পারবি তো !
বাচ্চাঃ পয়সা কোথায় পাবো গো। পয়সা তো আমার কাছে নেই। তুমি আমায় এমনি একটু খাবার দাউ না। যখন তুমি খেতে পেতে না আমার মা তখন তোমায় কতবার খেতে দিয়েছে।
বুড়ি ঃ হু মরন। খেতে দিয়ে ছে হুহ । সেদিন গেছে। এখন আমি কারও কাছে চেয়ে খাই না। পয়সা নেই আবার খাবার দাউ। যা ভাগ এখান থেকে। আর এ মুখ হবিনা।
বাচ্চাঃ বুড়ি মা এমন করছ কেন গো। একটু খেতে দিলে তোমার কি এমন ক্ষতি হবে।
বুড়িঃ ক্ষতি তো হবেই। আমার পয়সা খোয়া যাবে। যা তো যা। আমাকে বিরক্ত করিশ না।
বাচ্চাটা কাদতে কাদতে সেই গাছের ধার দিয়ে যাচ্ছিল। গাছের ধারে বসে সে বলতে লাগলো,
বাচ্চাঃ কি এমন হত একটু খেতে দিলে। আমি এখন আমার মায়ের জন্য খাবার কোথায় পাবো। আমার মা কে কি আর আমি বাচাতে পারব না! কি হবে এখন
গাছ থেকে জাদুর বুড়ি সব কথা শুনতে পেলো। সে মনে মনে একটা ফন্দি আঁটল। বুড়ি জাদুর হাড়ি পেয়ে যে এত লভি হয়ে গিয়েছে তা জানতে পেরে জাদুর বুড়ি র ভীষণ রাগ হল। সে ভাবল বুড়ির এই লভের সাস্তি তাকে দিতে হবে। জাদুর বুড়ি এক অসহায় মহিলার বেশ ধরে সেই বুড়ির হোটেলে গেলো।
মহিলাঃ ও বুড়ি শুনছো।
বুড়ীঃ হ্যাঁ বল কি চাউ।
মহিলাঃ আমার অনেক বিপদ গো। বাড়িতে আমার বাচ্চাকে একা রেখে এসেছি। ঘরে একটুও চাল নেই। আমার বাচ্চাটাকে সারাদিন কিছু মুখে তুলে দিতে পারিনি। আমাকে একটু খাবার দেবে বুড়ি
বুড়িঃ খাবার নেবে পয়সা দিতে পারবে তো
মহিলাঃ পয়সা তো নেই।
বুড়িঃ পয়সা ছাড়া আবার এত খাউয়া কিসের। কার মুখ দেখে যে ঘুম ভাঙছে কে জানে। একজনের পর একজন সুধু চেয়ে খেতে চাইছে। মরন। শোন তোমাকে আমি বিনে পয়সায় খেতে দিতে পারব না। তোমার বাচ্চাকে অন্য কোথাও থেকে খাউয়াও যাও।
মহিলাঃ অন্য কোথায় যাবো গো। তুমি একটু খাবার দাউ না। একটু খেতে দিলে নিসচই তোমার অসুবিধে হবে না।
বুড়িঃ উফফ যাও তো এখান থেকে। কত্থেকে এসে খেতে দাও।
জাদুর বুড়ি এবার তার আসল রুপ এ ফিরে এলো। জাদুর বুড়ি কে দেখে বুড়ি চমকে উঠল।
বুড়িঃ জাদুর বুড়ি তুমি
জাদুর বুড়িঃ হ্যাঁ আমি। তোমাকে অসহায় ভেবে হাড়ি দিয়েছিলাম। তুমি তার এমন অপব্যাবহার করেছ। তুমি লভ করেছ।
বুড়িঃ আমি ইয়ে মানে।
জাদুর বুড়িঃ থাক আমি নিজে চোখে দেখেছি তুমি জাদুর হাড়ি পেয়ে কি করে মানুষের সাথে দুরব্যাবহার করেছ।
বুড়িঃ আমাকে ক্ষমা করো জাদুর বুড়ি । আর এমন টা হবে না।
জাদুর বুড়িঃ না তোমার লোভের ফল তোমাকে পেতে হবে। ঐ হাড়ি এখুনি আমি নিয়ে যাবো। তুমি আবার আগের মতো হয়ে যাবে।
বুড়িঃ না জাদুর বুড়ি আমাকে আবার আগের মতো করে দিয় না। খাবারের কষ্ট আমি বুঝি। লোভের বশে আমি অনেক বড় ভুল করেছি। আমি ভুলে গেছি আমার অতিতের কথা। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাউ। আমি আর কখনই এমন করবো না। আমি কথা দিচ্ছি আমি কাউকে খেতে দিয়ে আর কোনোদিন ও পয়সা চাইব না। আমাকে এবারের মতো ক্ষমা করে দাউ।
জাদুর বুড়িঃ তুমি যদি আবারো এমন করো!
বুড়িঃ আমি কথা দিচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করে দাউ।
জাদুর বুড়িঃ বেশ। এবারের মতো তোমাকে ক্ষমা করলাম। তবে আর কখনও এমন টা যেন না হয়।
এরপর থেকে বুড়ি ঐ হাড়ির খাবার আর বিক্রি করত না। ঐ হোটেলে যত অসহায় মানুষ আসত বুড়ি সবাইকে খাউয়াত। আর কাউকে ফিরিয়ে দিত না। বুড়ি তার ভুল বুঝতে পেরেছিল। আর কখনই সে লোভ করত না।
এই ছিল বুড়ি আর জাদুর হাড়ির গল্প। বুড়ির মতো লোভ করে নিজের অতিত কে ভুলে যাউয়া ঠিক নয়।
লেখা ও ফটোগুলো আপনার নিজের নয়, তাই এ ধরনের পোস্ট করা থেকে বিরত থাকবেন। কারণ স্প্যামিং কপিরাইট এবং এভিউজ এগুলো এ প্ল্যাটফর্মের জন্য ক্ষতিকর। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দুঃখিত আপু আপনি হয়তো পোস্টটি ভাল করে পড়েন নি। এই পোস্ট এর সকল লেখা ও ফটো আমার intellectual property অ্যান্ড Copyright আইন অনুযায়ী এর উপর আমার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। এই পোস্ট এর কোন Element স্প্যামিং, কপিরাইট এবং এভিউজ এর কোন টার মধ্যেই পরে না। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ইতিপূর্বে যে সকল কাহিনী আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করেছেন সেগুলোকে পুনরায় গল্প আকারে কমিউনিটিতে প্রকাশ করলে কোন ধরনের সাপোর্ট পাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কমিউনিটির মডারেটরদের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলো। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই পোস্ট করার আগে আমর এই বিষয়ে জানা ছিল না, Recently মডারেটর আমাকে এ বিষয়ে অবগত করেছেন। আগামীতে এই বিষয় গুলো Avoid করবো। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit