আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি।
সৃষ্টিকর্তা প্রতিটা সন্তানের জন্য এমন একজন অভিভাবককে বানিয়ে দিয়েছেন, যে অভিভাবক নিঃস্বার্থভাবে তার সন্তানকে দেখাশোনা করে। মা শব্দটি যেন মধুর আর এই মা শব্দের মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সুখ। মায়ের ভালোবাসার মধ্যে সৃষ্টিকর্তা এমন ভালোবাসা সন্তানের জন্য দিয়েছেন,যা পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। এত মমতা ভালবাসা যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এই মায়া-মমতা ভালোবাসার জন্য পৃথিবী আজ শান্তিময় হয়েছে।
একজন নারী যখন মা হয়। তখন তাকে হাজার কষ্ট সহ্য করতে হয়। আর এই কষ্ট সহ্য করেই একজন নারী মা হয়। আর মা হাজার কষ্ট করে তার সন্তানের জন্য, কোন দিন সেই কষ্টের বিনিময় কোন কিছু চায় না, কোনদিন বলল না বাবা তোর জন্য আমার এত কষ্ট হয়েছে, এত দুঃখ পেয়েছি বিনিময় আমাকে কিছু দিতে হবে।মারা কখনোই বিনিময় কিছু চাইনা, প্রত্যেকটা ভালোবাসার মধ্যে আশা-আকাঙ্ক্ষা চাহিদা রয়েছে, কিন্তু পৃথিবীতে একমাত্র মায়ের ভালবাসা যে ভালবাসার মধ্যে কোনও আশা-আকাঙ্ক্ষা চাহিদা থাকে না। এটি নিস্বার্থভাবে ভালবেসে যায়। আর এই নিঃশর্তভাবে ভালোবাসা শুধু মায়ের কাছেই রয়েছে।
- আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার মায়ের মহৎ কিছু ঘটনা শেয়ার করতে চাচ্ছি, আশাকরি আমার মায়ের এই ঘটনা গুলোর সাথে আপনাদের মায়ের অনেকেরই ঘটনা মিলে যাবে।
আমি যখন ক্লাস ফাইভে পড়ি তখন আমি একবারে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তখন আমি সবাই বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি হয়তো আর বাঁচবো না, এই দুনিয়া থেকে হয়তো আমাকে বিদায় নিতে হবে এটা সবাই মনে করেছিল। তখন আমাকে চিকিৎসা করার জন্য ঢাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই হাসপাতলে আমাকে ১৪ হাসপাতালে র্ভতি থাকতে হয়।
সব সময় মা আমার পাশে ছিল। মা আমার জন্য সারাক্ষণ সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করত। তার চোখ দিয়ে শুধু পানি পড়তো, সে সবসময় আমার সেবা করতো, তার খাওয়া-দাওয়া গোসল কিছু নেই। এ দুনিয়ার কোনো চিন্তা-ভাবনা তার মধ্যে নেই। তার মধ্যে শুধু আমাকে নিয়ে চিন্তা ছিল। সে আমাকে তার জীবনের চাইতেও বেশি ভালবাসে। আমি তখন মায়ের ভালোবাসার দিকে তাকিয়ে শুধু চোখ দিয়ে জল বের করে দিয়েছে, তা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা।
- এমনকি আমার চিকিৎসার জন্য মা তখন তাহার অনেক স্বর্ণের অলংকার ছিল, সেই অলংকারগুলো সব বিক্রি করে আমার চিকিৎসার খরচ চালিয়েছে। শুধু কানের দুল দুইটা সাথে ছিল।
হসপিটালে ১৫ দিন পরে আমি যখন মোটামুটি সুস্থ হয়ে গেলাম, তখন আমার মায়ের আনন্দের সীমা ছিল না। সে অনেক খুশী হল, আমাকে সাথে নিয়ে বাড়িতে আসলো এবং আমাদের বাড়ির আশেপাশে সবাইকে দাওয়াত করে আনন্দে সাথে তাদের খাওয়ালো। আমি সুস্থ হয়েছি তাই, মা খুশি দেখে তখন আমার খুবই ভাল লেগেছিল। মাকে আমি সেদিন সবচাইতে বেশি খুশিতে দেখে ছিলাম।
তখন আমি মাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করলাম মা আমার জন্য এত কষ্ট করেছ, তোমার কখনো একটুও কষ্ট হয়নি। তুমি এত খুশি কেন। আমার মা বলল কিসের কষ্ট এতদিন আমি যা করেছি সেটা আমার এক বিন্দু পরিমাণ এখন মনে নেই, আমি শুধু এখন আমার ছেলেকে কাছে পেয়েছি। তাই আমার খুবই খুশি এবং আমার অনেক ভালো লাগছে। তাই সবাইকে দাওয়াত করে খাওয়াবো।
আমার প্রতি আমার মায়ের ভালোবাসা এরকম ছোট-বড় আরো অনেক ঘটনা আছে যা বলে শেষ করা যাবে না। মা এর ভালোবাসা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা আর এই ভালোবাসা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা নিজে হাতে দিয়েছে। সেজন্য মায়ের ভালোবাসার কোন তুলনা হয় না।
দেখতে দেখতে অনেক বছর পার হয়ে গেল, মা সবসময় আমাদের ভালোবাসা দিয়ে গেলো। কখনো বিনিময় কিছু চাইতে দেখলাম না, মা আজও কিছু চায়নি আমার কাছে। শুধু চায় আমি যেন ভালো থাকি, আমি দূরে কোথাও গেলে সেখান থেকে যদি বাড়ি ফিরে তাহলে সে আমার আগে খোঁজ করে।যে আমি কেমন আছি,আমি খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো করছে কিনা, কিন্তু বাড়ির অন্যান্য মানুষ গুলো ঠিক বলে যে তোমার চাকরির কি খবর। কত টাকা কামায় করছ, কবে চাকুরি করবা। এই প্রশ্নগুলো মার মুখে কোন দিনও শুনতে পেলাম না।
আমি যখন এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষা দিব, তখন আমার রেজিস্ট্রেশন করতে কিছু টাকার খুবই প্রয়োজন ছিল, হঠাৎ করে টাকার প্রয়োজন হওয়ার কারণে ম্যানেজ করতে পারছিলাম না।তখন বাবার কাছে টাকা চাওয়ার মতো অবস্থা ছিলো না।মা তার নিজের সেই কানের সোনার দুলটি আমাকে দিয়ে বলে-এটা বিক্রি করে তুমি তোমার পরীক্ষার ব্যবস্থা করো। আমি বারবার না করলাম। মা শুনলো না।মার শেষ সোনার দুলটি আমি সেদিন নিতে চাইনি। কিন্তু মা জোর করে আমার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমার হাতে তুলে দেয়।
আমার সেদিন খুবই কষ্ট হয়েছিল, কিন্তু মায়েরা আদেশে আমি সেদিন দুলটি বিক্রি করে পরীক্ষা দেই এবং পরীক্ষাতে আল্লাহর রহমতে আমি ভাল রেজাল্ট করি। আর সেদিনই আমি ওয়াদা করেছিলাম আমার জীবনে প্রথম ইনকামের টাকা দিয়ে আমি আমার মায়ের জন্য এই দুল বানিয়ে দেবো।
সৃষ্টিকর্তা আমার সেই মনের আশা পূরণ করেছে। আমি স্টিমেটয়ে কাজ করে প্রথমে যে টাকা উপার্জন করে ছিলাম। সেই টাকা দিয়ে আমি আমার মায়ের জন্য দুল বানিয়ে দিয়েছি।তাই স্টিমেটয়ের প্রতি আমার অনেক কৃতজ্ঞ।আমার মায়ের প্রতি আমার সেই ইচ্ছাটা আমি পূরণ করতে পেরেছি স্টিমেটয়ের মাধ্যমে।তাই আমি স্টিমেটকে খুবই ভালোবাসি।আর স্টিমেটয়ে কাজ করে আমার খুবি ভালো লাগে।
তাই আমি সবাইকে বলব আপনাদের মা আপনাদের কাছে মহারানী।আর মহারানীকে কখনো কষ্ট দেবো না।মা সবসময় সর্বোচ্চ দিয়ে সন্তানের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যায়। আমাদের উচিত শেষ বয়সে মায়ের পাশে থাকায় এবং মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলা।
- আমার মার জন্য সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি। আপনারা সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন। আমার মা যেন সুস্থ থাকে এবং ভালো থাকে আমি যেন আমার মাকে সারাজীবন ভালবাসতে পারি। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Twitter link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মায়ের ভালোবাসার বিকল্প কিছুই হয় না। টাকা দিয়ে কখনও এই ভালোবাসা কেনা যায় না। মাকে নিয়ে সুন্দর একটি আর্টিকেল লিখেছেন আপনি। খুব ভালো লাগলো। পৃথিবীর সকল মা সুস্থ থাকুক সুন্দর থাকুক এই কামনা করি সব সময় ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মায়ের ভালোবাসা ছাড়া আমি মূল্যহীন গল্পটি সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। মায়ের ভালোবাসা ছাড়া শুধু আপনি নয় আমরা সবাই মূল্যহীন। মায়ের ভালোবাসার অবদানটা আমাদের সত্যি পুরন করার নয়। মা তো মাই। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি গল্প উপস্থাপন করার জন্য। শুভকামনা রইল ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন মা শব্দটির মাঝে পৃথিবীর সব সুখ মিশে রয়েছে। এই পৃথিবীতে মা একমাত্র আপনজন। একমাত্র মাই পারে নিঃস্বার্থভাবে সন্তানকে ভালবাসতে। মায়ের ভালোবাসা ছাড়া জীবন সত্যিই অপূর্ণ। ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর ভাবে এই পোস্টটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এত সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করেছেন, সেজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit