হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
আমার বাংলা ব্লগ মানেই যেনো একটির পর একটি প্রতিযোগিতা। আবারো একটি নতুন প্রতিযোগিতা এসে গেলো। প্রতিযোগিতা হবে আর আমি পার্টিসিপেট করবোনা তা কি করে হয়। এবার পারফিউম নিয়ে প্রতিযোগিতা। পারফিউম নিয়ে আমার অনেক মজার কাহিনী রয়েছে। ভাবলাম এই সুযোগে তাহলে শেয়ার করাই যায়। তো চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে মুল টপিক এ চলে যাই।
ছোট বেলা তে পারফিউম নিয়ে তেমন আগ্রহ ছিলোনা। শুধু আমারই না আমি মনে করি বেশিরভাগ মানুষ এরই পারফিম নিয়ে তেমন আগ্রহ থাকেনা ছোট বেলাতে। সর্বপ্রথম পারফিউম এর পাল্লায় পরি ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে থাকা কালে। আমাদের এইদিকে একটা দোকান হয় যার নাম ১ টু ৯৯। মানে এখানে ১ থেকে ৯৯ টাকার মধ্যে অনেক জিনিশই পাওয়া যেতো। স্কুল থেকে ফেরার সময় একদিন সেখানে ঢুকলাম। দেখলাম অনেক গুলো ছোট ছোট বডি স্প্রে আর পারফিউম এর বোতল। আমি পরের দিন টাকা নিয়ে এসে একটি বডি স্প্রে নিয়ে গেলাম। কিন্তু সেটা শুধু গায়ে দিলে যখন দেই তখনই ঘ্রাণ থাকতো। আমি তো বডি স্প্রে মেরে সেই ভাব নিয়ে রাস্তায় বেড় হতাম। যে সবাই ঘ্রাণ পাচ্ছে। ওমা কিছুক্ষন পর আমি নিজেই পাইনা ঘ্রাণ মানুষ আর কি পাবে। আহা কতো ভাব টাই না নিতাম মেয়েদের সামনে যেয়ে।
যাই হোক এভাবে পারফিউম এর কাছে ছেকা খেয়ে আমার পারফিউম এর সাথে ব্যক্তিগত পরিচিতি হয়। একবার ঈদ এ অনেক টাকা জমিয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে এক্স এর একটা বডি স্প্রে কিনে ছিলাম। তখন আমি ৭ম শ্রেনিতে পড়ি। আর আমাদের স্কুল এর ছেলে মেয়েদের আলাদা শিফট ছিলো। মেয়েদের সকালে আর ছেলেদের দুপুর থেকে। মেয়েদের শেষ হলেই আমাদের শুরু হয়। আমি বডি স্প্রে টা মেরে মাঞ্জা মেরে চলে যেতাম আগে ভাগে। টার্গেট আমার দামি পারফিউম এর ঘ্রাণ মেয়েদের বোঝানো। কতো বার যে স্যার দের দৌড়ানি খেয়েছি বলার বাইরে। আহ কিন্তু কোনো মেয়ে পটলোনা। যদিও পটানোর চিন্তা ছিলোনা। টার্গেট থাকতো আমার দামি পারফিউম এর ঘ্রাণ যাতে পায় সবাই। এভাবেই আমি পারফিউম এর সাথে এগোই।
আমি ৭ম শ্রেনি থেকেই নিয়মিত পারফিউম ব্যবহার করতাম। এক এক বার এক এক পারফিউম। বেশি ভালো লাগতো ফগ এর পারফিউম গুলো। এমন কি আমার নানা ভারত এর বর্ডার থেকে পারফিউম আনতো আমি সেগুলো নিতাম। প্রতিবার ঈদ এ গ্রামে গেলেই আমার নানাকে দিয়ে পারফিউম আনাতে হতো। আমাদের দেশি গুলো কোনটা আসল কোনটা নকল তেমন বুঝতে পারতাম না। তাই নানাই ছিলো আমার ভরসা।
এইতো গত বছর রোজার ভিতর একবার আতর টাইপ পারফিউম ব্যবহার করার সৌভাগ্য হয়। এতেই আমি আতর এর প্রেমে পরে যাই। যদিও আতর আগের থেকেই ভালো লাগতো। তবে বেশি ভালো লাগা বলতে কথা আছেনা একটা সেটাই হয়। তবে আমাকে গিফট দেওয়ার মতন কেউ নাই যে পারফিউম গিফট দিবে। তাই ভাবলাম নিজেকেই গিফট দেই। উপরে যে ছবিটা দিয়েছি সেটা আমি কিনেছিলাম গত বছর। এক সাথে ৫ রকম এর আতর। এখানের বেশির ভাগ পারফিউম টাইপ আতর। তাই ঘ্রাণ গুলো সেই লাগে আমার কাছে। এই বক্স থেকে যে পারফিউম ই ব্যবহার করতাম না কেনো সবই ভালো লাগতো আমার কাছে। আতর টাইপ পারফিউম এর এমন প্রেমেই পরে গেলাম যে প্রায়ই আমি আতর অর্ডার করতাম অনলাইন থেকে। একবার তো প্রায় ২০ বোতল আতর অর্ডার করি। তারপর কিছু বন্ধুদের দেই। কিছু আমার নানু কে দেই। কিছু আমার খালামনি আর কাজিন দের দেই। পারফিউম শুধু নিজে ব্যবহার করেই যে শান্তি এমনটা না। অন্যদের গিফট করতে পারলেও ভালো লাগে।
এখানে যে আতর টি দেখতে পাচ্ছেন এটি পারফিউম টাইপ আতর ছিলো। এর নাম কুল ওয়াটার । মানে অমায়িক ঘ্রাণের আতর বলা যায়। ঘ্রাণ নিলেই যেনো পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। একটা সমুদ্রের পরিবেশ এর ভিতর আছি এমন একটা অনুভব হয়। তবে এটার একটা সমস্যা হচ্ছে এর স্থায়ীত্ব একটু কম অন্য গুলোর চেয়ে। তবে ৪-৭ ঘণ্টা থাকে। এটি আমার খুব পছন্দের। এটি এবার রোজাতে অর্ডার দিয়েছিলাম। এখন এটি বেশি ব্যবহার করা হয় আমার।
এবার যে আতর নিয়ে কথা বলবো এটি গ্রিন লাভ। নাম শুনেই মনে হচ্ছে ভালোবাসা ভালোবাসা ফিলিংস। আসলেও তাই। এটা লাগালে যেনো ভালোবাসার এক অনুভূতি পাওয়া যায়। খুবই ঠান্ডা ঘ্রাণ এই আতর এর। আমার অনেক পছন্দের আতর এটি। তবে এটি আমি ব্যবহার করেছি ১ বার মনে হয়। পরে আব্বুকে গিফট করেছি। কারণ ঘ্রাণ অনুভব করে মনে হয়েছিলো আব্বু খুব পছন্দ করবে। তাই আমার পছন্দ হওয়া সত্যেই আব্বুকে দিয়েছি। আব্বু খুশি হয়েছিলো। এতেই আমার খুশি। আর বললাম না আতর পারফিউম লাগালে যেমন ভালো লাগে। তেমনি গিফট করতেও অনেক ভালো লাগে।
এরপরই পছন্দের লিস্ট এ রয়েছে আমার এই দুইটি আতর। একটির নাম ইরানি বাখুর। অন্য একটির নাম হচ্ছে আমির আল উদ। শুক্রবার জুম্মার দিন আসলেই আমি এক এক শুক্র বার এই দুইটি আতর ব্যবহার করি। এই দুই আতর এর ঘ্রাণ অনেক কড়া। জামায় লাগিয়ে যদি বেড় হন তাহলে যেদিক দিয়েই হেঁটে যাবেন সবাই পাবে। এমন আতর টাইপ পারফিম লাগিয়ে কোথাও যেতে কিন্তু ভালোই লাগে।
এই বক্স এ ৫টি আতর ছিলো যার দুইটার বিবরণ দিয়েছি। বাকি ৩ টাও আমার অনেক পছন্দের। কোথাও ঘুরতে গেলে বাকি ৩ টা ব্যবহার করি। এগুলোর নাম হচ্ছে এস্কেপ , সেন্সুয়াল আর গুচ্চি রাশ। এগুলোর মধ্যে আমার সব থেকে প্রিয় হচ্ছে গুচ্চি রাশ। তবে কষ্টের বিষয় হচ্ছে এটি শেষ হয়ে গেছে। আর আমি যেখান থেকে আনাতাম তারা ইম্পোর্ট করতে পারছেনা। এটি তুরস্ক এর আতর। আতো মিস্টি ঘ্রাণ। সত্যি প্রাণ জুড়িয়ে যায় এর ঘ্রাণে। যদি কখনো ব্যবহার করেন তাহলে বুঝবেন কি জিনিশ এটা।
তো এই ছিলো পছন্দের পারফিউম নিয়ে আমার অনুভূতি। কেমন হলো কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। শুভেচ্ছা রইলো সবার জন্য।
বেশ অনেকগুলো নিয়েই আলোচনা করেছেন দেখছি।পড়ে ভালোই লাগলো।
ধন্যবাদ অংশগ্রহণের জন্য।আশা করি ভালো কিছু হবে💚
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বি ভাইয়া। সব গুলো আমার পছন্দের পারফিউম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit