ঈদ শেষ এবার ঢাকা ফেরার পালা || লঞ্চ ভ্রমন

in hive-129948 •  2 years ago 

হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।



সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা জানেন আমি গ্রামে গিয়েছিলাম বেড়াতে। তো ঈদের ছুটি শেষ। ঢাকা ফিরে এলাম। আজ আপনাদের সাথে ঢাকায় ফেরার অনুভূতি শেয়ার করবো আমি।



IMG_20220717_061531.jpg

লঞ্চ এ বসে আমি আর আমার কাজিন।


ব্যস্ত শহর ঢাকায় ফেরা।

গ্রামে তো অনেক দিন বেড়ালাম। এখন ঢাকা ফেরার পালা। এইবার ঈদ এ সব থেকে কম বেড়ালাম। গ্রামে গিয়েছিলাম গত মঙ্গল বার। আর ব্যাক করলাম এই রবিবার। ৫ দিন ও বেড়াইনি ঠিক মত। যাই হোক। সোম বার যেহেতু আমার ভার্সিটি খোলা। তাই ঠিক করলাম রবিবার সকাল ভোরে রওনা দিবো। সাথে আমার চাচাতো ভাই নিলয় ও যাবে আমার সাথে। তবে ও ছিলো ওদের বাড়ি। আমি ছিলাম নানু বাসায়। ইচ্ছা ছিল ভোর ছয়টার লঞ্চে রওনা দিব। সেই হিসেবে আমার ঘুম থেকে উঠতে হবে ভোর চারটা বাজে । আমি এলার্ম দিয়ে রাখি অনেক গুলো একসাথে যাতে কোনো এলার্ম মিস না হয়। যেই ভাবা সেই কাজ ঘুমিয়ে গেলাম একটু তাড়াতাড়ি যথারীতি এলার্ম বাজলো চারটার দিকে। তবে আমি ঘুম থেকে উঠতে উঠতে সাড়ে ৪ টা বেজে গেলো। আমার কাজিন আমাকে কল করলো। আমি বললাম রেডি হচ্ছি। তখন গোসল করে রেডি হয়ে নিলাম। ৫ টা বেজে গেলো সব কিছু গুছিয়ে বের হতে। নানু আমাকে এগিয়ে দিতে আসলো মেইন রাস্তা পর্যন্ত। যদিও আমি আসতে না করেছিলাম। কারণ ভোর বেলা। কিন্তু নানু তো। মন কি আর মানে। তাই এগিয়ে দিয়ে গেলো। ইতিমধ্যে নিলয় ঘাটের কাছাকাছি পৌছে গিয়েছে। আমি সিএনজি করে ঘাটে চলে গেলাম।

IMG_20220717_054138.jpg

ঘাটে ঢুকতেই দেখি অনেক ভিড়। আমাদের যাওয়ার কথা ছিলো রফ রফ লঞ্চ এ করে। দেখলাম ভালোই ভিড়। তাও যেতে তো হবেই। ভিতরে ঢুকে গেলাম। ভিতরে যেয়ে দেখি অনেক মানুষ। আমি পেছনের দিকে ২ তালায় চলে গেলাম। সেখানেও অনেক ভিড়। আসুলাম ২য় শ্রেনির টিকেট কাটতে। কিন্তু দেখি সব সিট এর টিকেট শেষ। তখন নিলয় আর আমি ভাবতে থাকলাম এই ভিড় এর মধ্যে যাবো কিনা। পরের লঞ্চ আবার ৪৫ মিনিট দেড়িতে। মানে এই লঞ্চ ছাড়বে ৬ টায়। আর পরে যেটা সেটা ছাড়বে ৬ টা ৪৫ এ। ভাবলাম না আরামেই যেতে হবে। তাই লঞ্চ থেকে নেমে গেলাম। নতুন যে লঞ্চ এ উঠবো সেটির নাম সোনার তরি-৪।

IMG_20220717_060909.jpg

এই লঞ্চ টির গঠন একটু অন্য রকম ছিলো। অন্যরকম বলতে ছবি তেই দেখতে পাচ্ছেন। তো আমি লঞ্চ উঠতেই দেখি একটা ফাকা দিয়ে টিকেট বিক্রি করছে। দেখলাম ২৫০ টাকা করে টিকেট। কি আর করার নিয়ে নিলাম টিকেট। দুইটা টিকেট কাটলাম। ভিতরে ঢুকে দেখি প্রথম শ্রেনি ছিলো এটি। ভালোই লাগলো। কারণ প্রথম শ্রেনি হচ্ছে এসি সহ। ভিতরে ঢুক্তেই শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো এসির হাওয়াতে। যদিও আবহাওয়া ঠান্ডা ছিলো সেদিন হালকা বৃষ্টি হওয়াতে। ভিতরে ঢুকতেই সামনে দেখলাম আমাদের দুইটি সিট। আমরা বসে গেলাম ব্যাগ রেখে। তারপর আমি আর নিলয় সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। বলতে ভুলে গেছি নানু একটু মুরগির মাংস দিয়েছিলো বাটিতে করে। কারণ ভাত খেয়ে আসিনি। আর ঘাট থেকে পরটা কিনে নিয়েছিলাম খাওয়ার জন্য। সেগুলো দিয়ে দুই ভাই মিলে নাস্তা করলাম। তখন ৬ টা ১০ বাজে মাত্র। ভাবলাম অনেক সময় আছে। আমি লঞ্চ থেকে বের হলাম কিছু ছবি তোলার জন্য। আর মাঠা খেলাম নেমেই।

IMG_20220717_061146.jpg

মাঠা বিক্রেতা। যদিও অতটা স্বাস্থ সম্মত ছিলো না। তবুও খেলাম লোভ এ পরে। কারন অনেক মানুষ খাচ্ছিলো। মনে মনে ভাবলাম পেট খাড়াপ হলে সবারই হবে। খালি একলা আমার না। হাহাহা। সাথে আশে পাশের আরো কিছু ছবি তুলে নিলাম আমি। কারন ছবি তুলতে আমার খুবই ভালো লাগে যে। তো যাই হোক কিছু সময় বাইড়ে থেকে লঞ্চ এ চলে গেলাম। কারণ এসির নিচে থাকার কারনে বাইরে আসার পর একটু গরম লাগছিলো। ভিতরে গিয়ে কিছুক্ষন ছোট ভাই এর সাথে গল্প করলাম। আবার কিছুক্ষন গেম খেল্লাম আমি। একটু পর লঞ্চ ছেড়ে দিলো। একদম ৬ টা ৪৫ এ ছেড়েছে। মানে যথাযত সময়ে। ভালো লাগলো অনেক।

IMG_20220717_061204.jpg

লঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার পর দিলাম এক ঘুম। এক ঘুমে ২ ঘন্টা কেটে গেলো। সাধারনত সাড়ে ৩ ঘন্টা লাগে ঢাকায় যেতে। ভাবলাম বাকি দেড় ঘন্টা কিভাবে কাটাবো। সিট গুলো একটু ছোট হওয়াতে মাথা লাগিয়ে হেলান দিতে কষ্ট হচ্ছিলো। তাই আর কি করা ফোন বের করে নাটক দেখা শুরু করলাম। গ্রামে যাওয়ার আগে যেগুলো নামিয়েছিলাম। একটা নাটক দেখতে দেখতে ৪৫ মিনিট চলে গেলো। তখন ভাবলাম আর কি করা যায়। একটু ফেসবুক ব্রাউজ করলাম। তারপর দেখলাম সামনে টিভি চলতেছে লঞ্চ এ। নাটক ছিলো তখন। আগের নাটক ভালো লাগেনি। তাই দেখিনি।

IMG_20220717_094232.jpg

হঠাত একটা মুভি দিলো ওনারা। সেই মুভি দেখতে থাকলাম। তারপর দেখি কিছুক্ষন পর ঢাকার ব্রিজ দেখা যায়। অবাক হলাম কারণ সময় হয়নি তখনো। পরে লঞ্চ ঘাটে ভিরলো। আমরা নেমে গেলাম। হিসাব করে দেখলাম ৩ ঘন্টা ১৫ মিনিট লেগেছে আজকে। মানে লঞ্চ ভালো স্পিডেই এসেছে। হয়তো স্রোত এর দিকে চলেছিলো তাই দ্রুত আসছে। তারপর সেখান থেকে নেমে বাসে চরে বাসায় চলে আসলাম।

তো এই ছিলো আমার লঞ্চ ভ্রমন এর কাহিনী । আশা করি ভালো লেগেছে আপনাদের কাছে। কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।



░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░

New Project.gif

⋆ 🎀 𝒞😍𝓃𝓃𝑒𝒸𝓉 𝑀𝑒 🏵𝓃 🎀 ⋆
Discord | Twitter | Facebook
Steemit |Instagram | Youtube |
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

আজ পর্যন্ত আমি লঞ্চ ভ্রমণ করিনি। লঞ্চ ভ্রমণ করার প্রবল আগ্রহ আমার মধ্যে বিরাজ করে। সে রকম মুহূর্ত তৈরি করাটা একটু কষ্টকর হয়ে গেছে। ইনশাল্লাহ খুব শীগ্রই সময়টা আসবে।

লঞ্চ ভ্রমনের অনেক সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

শুভ কামনা রইল।

করতে পারেন লঞ্চ ভ্রমন। ভালো লাগবে খুব। যদি ঢাকায় থেকে থাকেন তাহলে সদরঘাট থেকে চাঁদপুর একটা কুইক টুর দিয়ে আসতে পারেন।

যখন বাইরে থাকতাম ঈদে বাড়ি আসার আনন্দের চেয়ে বাড়ি ছাড়ার কষ্টটা বেশী অনুভব করতাম ।
আমার লাইফে কখনো লঞ্চে চড়ার সুযোগ হয়নি লঞ্চ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও খুব কম । তবে আপনার কাছ থেকে লঞ্চ ভ্রমনের বিবরণ শুনে বেশ ভাললাগলো ।
ধন্যবাদ এমন সুন্দর অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করার জন্য ।

এটা ঠিক। কাছের মানুষ গুলোকে ছেড়ে আসতে একটু কষ্টই লাগে। তবে কি আর করা ভাই। মানিয়ে নিতে হয় আমাদের।

ঈদে আনন্দ উপভোগ করে আবার কর্মস্থলে ফিরে আসতেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। খুব চমৎকার মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন লাঞ্চ ভ্রমনে। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। এত চমৎকার পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

জ্বি ভাইয়া। যদিও চাকরী করিনা। তাও ঢাকায় ফিরতেই হয়।

ঈদ সীমিত সময়ের জন্য মানুষের জীবনে আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে। তবে ঈদের আনন্দে আনন্দিত হয়ে মুখরিত হয় চারি দিক। সীমিত কিছুটা দিনের জন্য হলেও সে আনন্দ অনেক বেশি। যাইহোক ঈদের ছুটি শেষে সব মানুষ নিজ কর্মস্থানে ফিরে গেছে। ঠিক তেমনি আপনি আপনার কর্মস্থানে ফিরে গেছেন। দোয়া করে যেন ভালোভাবে পৌঁছে আপনার কাজ পুনরায় শুরু করতে পারেন।

হুম। মনে রাখার মত হয় ঈদের আনন্দ গুলো। খুবই ভালো লাগে এই কয়দিন।

এই ব্যস্ত শহরে তোমাকে আবারও স্বাগতম, ভালোই ঘোরাঘুরি করা হয়েছে গ্রামে এখন আবার কর্ম জীবনে ফিরতে হবে।

হ্যা বন্ধু ফিরে আসলাম আবার এই ব্যস্ততম জীবনে।