চাঁদপুর থেকে ঢাকায় ফেরা || আরো একবার লঞ্চ এ ভ্রমন। পর্ব - ২ (শেষ পর্ব)

in hive-129948 •  2 years ago 

হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।



আশা করি সবাই ভাল আছেন, তো আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার চাঁদপুর থেকে লঞ্চ এ করে ঢাকায় ফেরার গল্পের ২য় পার্ট। আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন

Orange Modern Gradient Travel Vlog Youtube Thumbnail (2).png

ক্যানভা প্রো দিয়ে বানানো।

images (17).jpeg

লঞ্চ ছেড়ে দেওয়া সময় মতন।

আগের পর্বে যেখানে শেষ করেছিল সেখান থেকেই শুরু করছি এখন। তো আমি মোবাইলে গেম খেলতেছিলাম। গেম খেলতে খেলতে ভাবলাম হয়তো লঞ্চ একটু দেরিতে ছাড়বে। কিন্তু ইঞ্জিন ছাড়ার শব্দে অবাক হলাম। একদম সঠিক সময়ে লঞ্চ ছেড়ে দিলো। প্রথমে একটু ব্যাক এ দিলো। তারপর লঞ্চ ঘুরিয়ে ফেললো। আমি ভাবলাম কিছু ফটোগ্রাফি করা যাক। চলে গেলাম লঞ্চ এর সাইডে। সেখান থেকে ভালো ভিউ পাওয়া যায়। তখন দেখলাম একটি লঞ্চ আসতেছে ঘাটের দিকে।


IMG_20220508_052225.jpg

চাঁদপুর ঘাটের দিকে এগোতে থাকা লঞ্চ


আপনারা যারা আমার ঈদ এ বাড়ি ফেরার গল্প গুলো পড়েছেন তারা হয়তো জানেন যে আমি এই নাম এর একটি লঞ্চ এ করেই গ্রামে গিয়ে ছিলাম। তবে সেটি ছিলো সোনার তরী ২ । আর এটি শুধু সোনার তরী। তবে দুই লঞ্চ একই মালিক এর।এই লঞ্চ সম্ভবত ২য় ট্রিপ। কারণ আমি যে লঞ্চ এ এসেছি তার নাম রফ রফ। আর সেটি ছিলো অইদিন এর প্রথম ট্রিপ। মানে প্রথম ট্রিপই ধরেছিলাম আমি। তো লঞ্চ চলার সময় কিছুক্ষন সাইড বেঞ্চ এ বসে সময় কাটাচ্ছিলাম। সময় কাটাচ্ছিলাম বলতে সাইড দিয়ে নদীর পাশের প্রকৃতি উপভোগ করছিলাম। যারা এখনো লঞ্চ জার্নি করেন নি তারা হয়তো এই মজাটা জানেন না।


IMG_20220508_051935.jpg

একটি সেলফি তুলেছিলাম সাইড থেকে


প্রথম দিকে একটু গরম লাগতেছিলো। আমার সেলফি দেখলেই বুঝতে পারবেন। এটার অবশ্য কারণ আছে। আমি যেদিকে বসেছিলাম। সেদিকে নিচ বরাবর লঞ্চ এর ইঞ্জিন ছিলো দুইটা। হ্যা বলতে ভুলে গেছি আমাদের চাঁদপুর যাওয়ার সব লঞ্চ এর ইঞ্জিন এখন ২ টি করে। মানে দুইটি ইঞ্জিন দুইটি প্রপেলার ঘুরায়। এতে স্পিড পাওয়া যায় বেশি। যদিও পুরো স্পিড ব্যবহার করেনা। কারণ লঞ্চ অনেক বড় তো। বেশি স্পিড এ গেলে বড় ঢেউ এর সৃষ্টি হয়। যা নদীর পাড়ের ক্ষতি করে। মাঝে মধ্যে যা নদী ভাঙ্গন এর কারণ হয়েও দাঁড়ায়। কি পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করতে পারে লঞ্চ তা একটু পর ছবি দিবো দেখতে পাবেন। তো আমি ভাবলাম একটু নিচ থেকে ঘুরে আসি । কিছু ছবি তোলাও হবে লঞ্চ এর । তাই চলে গেলাম নিচে।


IMG_20220508_071805.jpg

লঞ্চ এর একটি ইঞ্জিন ও জেনারেটর


উপরে যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন প্রথম টা একটা ইঞ্জিন। আর মাঝে ওটা ছিলো জেনারেটর। আরো একটা ইঞ্জিন আছে যেটা ক্যামেরাতে দেখাতে পারিনি। এই দুই ইঞ্জিন এর পাওয়ার অনেক। আর জেনারেটর পুরো লঞ্চ এর বিদ্যুতের ব্যবস্থার কাজ করে। এই ইঞ্জিন এর প্রচুর শব্দ হয়। পাশ দিয়ে গেলে অনেক সময় আমি কান চেপে ধরে যাই। কারন প্রচুর সাউন্ড উৎপন্ন হয়। চলে গেলাম পিছনের দিকে। এবার দেখাবো অই দুই ইঞ্জিন এর মাধ্যমে ঘোরা প্রোপেলার দুইটি কি পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। দেখে অবাক হয়ে যাবেন। নিচের ছবি দুইটা দেখুন।


IMG_20220508_071735.jpg

IMG_20220508_071748.jpg

প্রোপেলার ঘুরায় পানির ঝাপ্টা


দেখুন কি পরিমাণ শক্তি থাকলে এমন পানির ঝাপ্টা মারতে পারে । কারণ দুইটা ইঞ্জিন। আর খেয়াল করে দেখুন পিছনে অনেক দূর পর্যন্ত এই শক্তি থাকে। এ জন্যই পুরো শক্তি ব্যবহার করা হয়না লঞ্চ এর ক্ষেত্রে। আরো একটা ছবি দিচ্ছি দেখুন তাহলে বুঝতে পারবেন আরো ভালো করে।


IMG_20220508_071814.jpg

স্পিডে লঞ্চ চলার কারণে সৃষ্ট ঢেউ।


দেখতেই পেলেন লঞ্চ এর দ্বারা সৃষ্ট ঢেউ। যদিও এখানে ফোন দিয়ে ছবি তুলেছি তাই ছোট দেখাচ্ছে। তো যাই হোক ছবি তোলা শেষে আমি উপরে চলে গেলাম। সেখানে বসে রইলাম আমার পাতানো বিছানায়। একটু পর টিকেট বিক্রেতা আসলো। আমি আমার জন্য একটি ডেক এর টিকিট নিয়ে নিলাম। ডেকের টিকিট এখন ১৫০ টাকা করে।

IMG_20220508_090302.jpg

তারপর অপেক্ষা ঢাকা পৌছানোর। মোট ৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট লাগলো চাঁদপুর থেকে ঢাকা পৌছাতে। লঞ্চ ঘাটে ভিরার পর সেখান থেকে নেমে আমি হেঁটে ভিক্টোরিয়া পার্কে চলে আসলাম। তারপর সেখান থেকে বাসে করে আমাদের এলাকায় আসলাম। তারপর রিকশা নিয়ে বাসায় পৌছে হাফ ছেড়ে বাচলাম।


এই ছিলো আমার দুই পর্বের লঞ্চ জার্নির শেষ পর্ব। আরো ছবি ছিলো আরো কথা ছিলো। কিন্তু এই পোস্ট আর বড় করতে চাচ্ছিনা। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। শুভেচ্ছা রইলো।



░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░

New Project.gif

⋆ 🎀 𝒞😍𝓃𝓃𝑒𝒸𝓉 𝑀𝑒 🏵𝓃 🎀 ⋆
Discord | Twitter | Facebook
Steemit |Instagram | Youtube |
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট ,বেশ দীর্ঘ জার্নি করেছেন ভাইয়া।তবে আপনি যেহেতু লঞ্চ এ করে ফিরেছেন সেহেতু নদীর বুকে বেশ সময় কাটিয়েছেন।আমার খুব ভালো লাগে নদী ,কারণ নদীর পাড়ে আমার শৈশব কেটেছে।আছড়ে পড়া ঢেউগুলির সুন্দর ছবি তুলেছেন, ধন্যবাদ ভাইয়া।

দূরত্বের হিসেবে ৩.৫ ঘন্টা অনেক কম। আগে যেতে ৪-৫ ঘন্টা লাগতো। এখন দ্রুতো যাওয়া যায়।

দ্বিতীয় পর্ব কতদিন পর পেলাম।
অনেকটা সময় আপনি নদীর বুকে লঞ্চের মধ্যে ছিলেন। আমার মনে হয় সে সময়টা আপনি খুব ভালোভাবে উপভোগ করেছেন। লঞ্চে যেহেতু আমি কখনো উঠিনি তাই লঞ্চ এর ইঞ্জিন ও জেনারেটর দেখার তো প্রশ্নই ওঠে না। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখে নিলাম। আর প্রোপেলার ঘুরায় পানির ঝাপ্টার ছবিটি অসাধারণ হয়েছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার লঞ্চ যাত্রার অনুভূতি ও ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

হুম আপু। দিবো দিবো করে দেওয়া হচ্ছিলোনা। তাই লিখেই ফেললাম। কমেন্ট করেনা তেমন কেউ তাই লিখতেও মন চায়না।

  ·  2 years ago (edited)

আমি কখনো লঞ্চে উঠিনি।আর আমার উঠার ইচ্ছাও নেই ভাইয়া খুব ভয় লাগে।আমি সাঁতার ও জানিনা যদি এক্সিডেন্ট হয় সাঁতার কাটব কিভাবে 😢।যাইহোক আপনি খুব ইনজয় করেছেন,দীর্ঘ সময় আপনি লঞ্চ এ ছিলেন।।আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।অনেকের খুব সখ লঞ্চে উঠার।আল্লাহ সবাইকে
এস সকল এক্সিডেন্ট থেকে হেফাজত করুক।

আরে ভয় নেই। উঠেই দেখেন একদিন৷ লঞ্চ জার্নির মতন মজার জার্নি আর নেই।

অনেক দীর্ঘ সময় লঞ্চে ভ্রমন করেছেন ভাই। আমার এখনও লঞ্চে ভ্রমন করা হয়ে উঠলো না। অবশ্য পানিতে ভ্রমন করতে একটু ভয়ই লাগে আমার। সাতার না পারা এর বড় কারন। হাহা। ভাল ছিল আপনার আজকের পোস্টটি। ধন্যবাদ

অত বেশিনা৷ বরিশাল এর মানুষ তো পুরো একদিন লঞ্চ এ থাকে। সে হিসেবে আমাদের অনেক কম সময় লাগে।

ভ্রমন প্রায় প্রতিটি মানুষেরই পছন্দ। শত ব্যস্ততার মাঝে ভ্রমন যেন মনের মাঝে প্রশান্তি তৈরি করে।আর লঞ্চে ভ্রমন তো খুবই উপভোগের বিষয়।

ঠিক বলেছেন ভাই৷ ভ্রমন আমাদের সব সময়ই অনেক প্রশান্তি জাগায়।

জীবনে আমি প্রথম লঞ্চে যখন তখনের অনুভূতি বেশ দারুন ছিলো।চাঁদপুরেই গিয়েছিলাম।যদিও একটু আকটু ভয়ও পেয়েছিলাম।তবে বেশ ভালো লেগেছে।ভালোই লাগলো কথাগুলো পড়তে। ধন্যবাদ

ভয়ের কিছু নেই আপু। মৃত্যু যেখানে লিখা সেখানেই তো হবে যেভাবেই হোক না কেনো।

গাড়ির থেকে লঞ্চে ভ্রমন করতে আমার অনেক ভালো লাগে। কেননা লঞ্চে ইচ্ছেমতো শোয়া যায় এরপর যে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে থাকা যায়। আপনি আজকে আপনার চাঁদপুর থেকে ঢাকা লঞ্চে যাওয়ার ভ্র্মন এর কাহিনী শেয়ার করেছেন ভাই খুবই ভালো লাগলো। আর লঞ্চের ইঞ্জিনের কাছে খুবই গরম হয়। এখনতো গরমকাল তাই গরম একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক।

হুম। লঞ্চ এ ইচ্ছেমতন ঘোরা যায়। ভালোই লাগে অনেক।

চাঁদপুর থেকে ঢাকা ফেরার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনি খুব সুন্দর মত পার করেছেন। যেটা দেখে অনেক ভালো লাগলো। এত সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

ভাইয়া অমিও চাদঁপুর দুইবার ভ্রমন করেছি। লঞ্চ ভ্রমন করতে আমার অনেক ভাল লাগে। মন চাই বার বার লঞ্চ ভ্রমন করতে। একবার ঢাকা থেকে লঞ্চ করে কুয়াকাটা যাবো ইনশাআল্লাহ।