আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৪ || ফেলে আসা জীবনের বন্ধুত্বের স্মৃতি।

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।



"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৪"

আমার বাংলা ব্লগ মানেই যেনো একটির পর একটি প্রতিযোগিতা। আবারো একটি নতুন প্রতিযোগিতা এসে গেলো। প্রতিযোগিতা হবে আর আমি পার্টিসিপেট করবোনা তা কি হয় নাকি। স্কুল জীবনে ফেলে আসা কিছু বন্ধুর কথা মনে পরে গেলো এই প্রতিযোগিতার পর। তাই ভাবলাম এই ফাকে স্মৃতিচারণ ও হবে সাথে আপনাদের সাথে শেয়ার করাও হয়ে যাবে। তাই ভাবলাম লিখতে বসে যাই।

Light Purple Creative The Good And Bad Of Online Schools Presentation (3).gif

ক্যানভা প্রো দিয়ে বানানো।


ফেলে আসা জীবনের বন্ধুত্বের স্মৃতি

আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন বন্ধুত্ব কি তাহলে আমি বলবো বন্ধুত্ব হচ্ছে সব চেয়ে সেরা একটি সম্পর্ক। যেখানে বন্ধুর জন্য অনেক কিছুই করা যায়। দিলে তো প্রাণটাও দিয়ে দেওয়া যায়। বন্ধুত্বের সম্পর্ক আমার কাছে অন্যান্য সম্পর্কে থেকে একটু আলাদা এবং শীর্ষে। জীবনে অনেক বন্ধু আসে যায়। তবে কিছু বন্ধু রেখে যায় অনেক অনেক স্মৃতি। কিছু বন্ধুরাতো জীবনের শেষ পর্যন্ত সাপোর্ট করে যায়। আমার মতে বন্ধুত্ব গড়ার সব চেয়ে ভালো সময়টা হচ্ছে স্কুল জীবন। কারণ সেখানে একই সাথে ১০ বছর এর মতন থাকা যায়। এঁকে অপর কে ভালো মত চেনা যায়। ভালো সম্পর্ক তখনই তৈরি হয়। আজ আপনাদের সাথে আমার স্কুল জীবনের একটি বন্ধুকে নিয়েই কথা বলবো। যার সাথে খুবই অল্প সময়ে খুবই ভালো একটি বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়েগেছিলো। জানিনা এখন সে কেমন আছে কোথায় আছে । তবে দোয়া করি সে যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক। জানিনা কখনো দেখা হবে কিনা। তো চলুন শুরু করি আমার সেই স্মৃতি -

children-4894710_1920 (1).jpg

Image by Joshua Choate from Pixabay

সময়টা তখন ২০০৮ সাল। সবে আমি আগের স্কুল ছেড়ে নতুন স্কুল এ ভর্তি হয়েছি। তখন আমি তৃতীয় শ্রেনীতে ভর্তি হয়েছি আরকি। ক্লাসে যেতাম কাওকেই চিনতাম না। দু একদিন যাওয়ার পর দেখতাম একটা ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। মানে আমরা হয়তো আগের থেকে পরিচিত এমন মনে হতো। এভাবেই আরো কিছুদিন যাওয়ার পর একদিন ওর সাথে বসি। তারপর ধীরে ধীরে পরিচিত হই। এর পর বুঝলাম আমরা আরো ছোটো বেলায় যখন এক বাসায় থাকতাম ওরা ছিলো আমাদের প্রতিবেশি। তবে তখন আমাদের সাথে যোগাযোগ ছিলোনা। এভাবেই আমরা প্রতিদিন এক সাথে বসতাম। খুব ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে যায় আমাদের দুজন এর মধ্যে। আমরা কেউ স্কুল মিস দিতাম না। একদিন যদি কেউ মিস দিতাম তো আরেকজন এর খুবই খারাপ লাগতো। প্রতিদিন আমরা স্কুল এর টিফিন শেয়ার করে খেতাম। তারপর ওদের বাসায় যেয়ে কতো দুস্টামি করেছি দুজন মিলে তা বলার বাইরে।


sunset-1807524_1920.jpg

Image by Sasin Tipchai from Pixabay


এভাবে চলতে থাকে আমাদের দিন গুলো। খুব মজা করতাম দুই বন্ধু মিলে। ওর নাম ছিলো ইয়াছিন। মসজিদ এ নামাজ পরতে গেলেও ওর সাথে দেখা হতো। ওর কাছ থেকে অনেক গুলো দোয়াও শিখেছিলাম আমি। তো একদিন বলে যে ওর বাবার ট্রান্সফার হয়ে গেছে চলে যাবে। আমার শুনে খুবই খারাপ লাগছে। কি আর করবো। খুবই কষ্ট পেয়েছি। এর মধ্যেই আমাদের পরীক্ষার পরে গ্রীষ্মের ছুটি দিয়ে দিলো। আমি গ্রামে চলে গিয়েছিলাম। তখন অবশ্য মোবাইল ফোন এতোটা সহজলভ্য ছিলোনা।

ঈদ এর ছুটি কাটিয়ে যখন স্কুল খুললো আমি স্কুলে আসি। অনেকদিন পর বন্ধুটার সাথে দেখা হবে কিন্তু না ও তো আর আসেনা। এভাবে আরো ৩-৪ দিন চলে গেলো ও আর আসেনা। একদিন ভাবলাম যে ওদের বাসায় যেয়ে খোঁজ নিবো। গিয়ে দেখলাম । কিন্তু বাসা ছিলো তালা মারা। ভাবলাম হয়তো গ্রাম থেকে আসেনি এখনো। ওদের ও বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দুইদিন পর আমার অন্য এক সহপাঠি থেকে জানতে পারি ওরা চলে গেছে একেবারে। আমি ওই খবর শুনে কেঁদেই ফেলেছিলাম।


friend-3077835_1280.png

Image by Joshua Choate from Pixabay

আমার কাছে ওর কোনো স্মৃতি ছিলোনা। কোনো ফোন নাম্বার ও ছিলোনা। মানে যোগাযোগ করার মত কোনো পন্থাই ছিলোনা। খুবই ভেঙ্গে পরেছিলাম। অনেক অনেক চেস্টা করেছিলাম ইয়াছিন এর সাথে যোগাযোগ এর জন্য কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি প্রতিটা যায়গাতেই। নিজেকে নিজেই গালি দিচ্ছিলাম। কেনো যে ছুটিতে গ্রামে গিয়েছিলাম। ঢাকায় থাকলে অন্তত দেখা হতো। ওর কোনো একটা নাম্বার নিয়ে রাখতে পারতাম যোগাযোগ এর জন্য। কিন্তু কেনো যে গ্রামে যেতে গেছিলাম আমি। খুব মিস করি আমার সে বন্ধুটাকে। জানিনা ওর সাথে জীবনে আর কখনো দেখা হবে কিনা। এখন ও আমার মতই বড় হয়েগেছে। চেহারা দেখলে হয়তো চিন্তেও কষ্ট হবে। আমার এখনো ওর সেই ছোটবেলার চেহারাই মনে পরে। আমি জানি আমার মতন ও হয়তো আমাকে খুব মিস করে। কিন্তু দুজন এর কাছেই আমাদের যোগাযোগ করার মতন নাম্বার ছিলোনা।

বন্ধুটার সাথে যদি একদিন দেখা হতো সত্যি আমার খুবই ভালো লাগতো। কিন্তু সেটা আদো সম্ভব কিনা জানিনা। আমি যখন ফেসবুক চালাতে শিখি তখন ওর নাম দিয়ে দিয়ে সার্চ করতাম। সব গুলো প্রোফাইলে ঢুকে ঢুকে ছবি গুলো দেখতাম যে কোনো চেহারা যদি ওর সাথে মিলে যায়। কিন্তু পাইনা। ওর একটা আপু ছিলো ওনার নাম ছিলো শিল্পি। আমি ওই নামেও অনেক সার্চ করেছি । তবে কিছুই পাইনি। আমার সেই বন্ধুর জন্য আমি আজো ব্যাথিত। আল্লাহ যদি একবার আমাদের দুজন এর দেখা করিয়ে দিতেন। কতই না ভালো লাগতো।




তো এই ছিলো আমার ঘটনা। কেমন হয়েছে জানাবেন কমেন্ট করে। ধন্যবাদ সবাইকে।


░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░

New Project.gif

⋆ 🎀 𝒞😍𝓃𝓃𝑒𝒸𝓉 𝑀𝑒 🏵𝓃 🎀 ⋆
Discord | Twitter | Facebook
Steemit |Instagram | Youtube |

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

ফেলে আসা জীবনের বন্ধুত্বের স্মৃতি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনি খুব সুন্দর করে অতীতের স্মৃতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো কখনো ভুলা যায় না। যার বন্ধু নাই তার জীবন ছন্দহীন। সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

হুম ভাই। স্মৃতি মনে পরে আমিও আবেগ এ পরে গিয়েছিলাম।

আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার পুরনো দিনের বন্ধুত্বের স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আসলে পুরনো দিনের বন্ধু গুলোকে কখনোই ভোলা যায় না। আর সেই বন্ধুর সাথে কাটানো স্মৃতিগুলো অনেক মনে পড়ে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

একদম আপু। বন্ধু গুলাকে কখনোই ভুলা যায়না। কতই না মজা করেছি তাদের সাথে।

স্কুল জীবনে আপনার ফেলে আসা স্মৃতিটি উপরে অনেক খারাপ লাগলো ভাই। আসলে স্কুল জীবনে কিছু কিছু স্মৃতি থাকে যেগুলো কখনো বলার মতো না। সাথে কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়ে যায় যেগুলো মানুষ নিজের মনের ভিতর অজান্তে জায়গা করে নেয়। আর হঠাৎ করে সেগুলো মানুষ হারিয়ে গেলে নিজের অজান্তে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসে।
তবে ভাইয়া দোয়া করি যেন কোন একদিন আপনার সেই হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর দেখা পেয়ে যান।

হুম স্কুল জীবনের বন্ধু গুলাইতো বেশি আপন হয়। কারণ তাদের সাথে অনেকটা সময় কাটানো যায়।