হারিয়ে যাওয়া কিছু স্মৃতিঃ পাখি গুলো নেই আর।

in hive-129948 •  2 years ago 

হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।



lonely-2051508_1920.jpg

Image by José Manuel de Laá from Pixabay

বাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের পোস্ট। কি খবর আপনাদের সবার? আজ একটু চিল মুড এ আছি। আসলে স্যালারি পেলে একটু চিল মুড এই থাকা যায়। যদিও বাসায় আসার পর টাকা ভাগাভাগি শেষ। তবুও এক মাস কষ্টের পর বেতনটা হাতে পেলে সত্যি দারুণ লাগে। যাই হোক। হারিয়ে যাওয়া কিছু জিনিশ নিয়ে কথা বলবো আজ। যেগুলো খুবই মিস করি এখন। মাঝে মধ্যে তো ভেবেই বসি যে কিছু বছর আগেও সব কিছু কেমন ছিলো আর এখন দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছে। সব দিক থেকেই চিন্তা করে দেখুন। সব কিছুই যেনো আগের মতন নেই।



spring-bird-2295434_1920.jpg

Image by Jill Wellington from Pixabay

আমি জানি যে সময় পরিবর্তনশীল। কিন্তু সময়ের সাথে পরিবেশের যে পরিবর্তন গুলো ঘটছে সেগুলো যেনো একটু বেশিই। আগের দিন গুলাকে এত্তো পরিমানে অনুভব করি যা হয়তো লিখে বা বলে প্রকাশ করতে পারবোনা। সে দিন গুলোর কথা ভাবলে মাঝে মধ্যে তো চোখের পানি চলে আসে। আগের দিন গুলো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত ছিলো। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে জাগলেই শুনতে পেতাম শালিক পাখির হাক। মাঠে যেয়ে দাড়িয়ে থেকে ওদের দেখতাম। ওরা যখন খাবার খুজতো কি সুন্দর করে দুই ঠোট দিয়ে কাগজ বা পলিথিন থাকলে সরিয়ে নিতো। অবাক হয়ে শুধু তাকিয়ে দেখতাম। আরো কতো রকম এর পাখি দেখতে পেতাম। দোয়েল পাখি দেখলে বেশি ভালো লাগতো আমার। মাঝে মাঝে তো টুনটুনি পাখিও দেখতে পেতাম। তবে বেশি ভালো লাগতো বাবুই পাখি। আমার ফুফুর বাসার ওইদিক যখন ছিলাম সেখানে এক পাশে ছিলো খেজুর গাছ। আর অপর পাশে ছিলো বিশাল বিশাল অনেক গুলো তালগাছ। বাবুই পাখি গুলো নিজেদের ঘর নিজেরাই তৈরি করতো। আমি শুধু অবাক হয়ে দেখতাম। কম করে হলেও ১৫-২০ টা বাসা ছিলো ওদের। খেজুর গাছ এর থেকে পাতা ছিড়ে চিকন করে বুনন করতো তাদের ঘর। এমন কতো হয়েছে যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের একটি ঘর তৈরি করা দেখেছি কয়েকদিনে।

bird-9950_1920.jpg

Image by Gabi from Pixabay

ঝড় হলে দেখতাম পাখি গুলো অনেকটাই অসহায়। বাতাসে যখন তাল গাছের পাতা গুলো দুলতো তখন পাখির বাসা গুলো ও দুলতো। আমি তো অনেকবার ঝড় এর সময় আমি নিচে যেয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। এমনো কয়েকবার হয়েছে যে ঝড়ে পাখির বাসা ছিড়ে নিচে পরেছে সেটা পেয়েছি। অবাক হয়ে তাদের বাসার বুনন গুলো পরখ করতাম। ভাবতাম ওদের কি বুদ্ধি। কি সুন্দর বাসা বানিয়েছে নিজেদের জন্য। একবার তো বাচ্চাও পেয়েছিলাম একটি বাসাতে। যদিও মরে গিয়েছিলো সে বাচ্চা। তবে বিশ্বাস করেন সে দিন গুলোর কথা মনে পরলে আমার কান্না আসে এখন। এখন আর বাবুই পাখির দেখা পাইনা। এখন আর ওদের বাসা দেখতে পাইনা। যখনই ভাবি বিষয় গুলো খুবই খারাপ লাগে আমার কাছে। এই পোস্ট লিখার সময় ও আমার চোখে যেনো পানিতে ভরে গেলো। সেই দিন গুলো কতই না সেরা ছিলো। অথচ এখন তো শহরে আমি কাক ও দেখতে পাইনা খুব একটা। খুব একটা বলতে কখনো তো মাসেও দেখিনা একবার। যেমন শেষবার কবে দেখেছি সেটাই মনে নাই। হারিয়ে গিয়েছে সব। কাকদের নিয়ে কত মজার কাহিনি রয়েছে আমার। সেটিও সে সময় কার।

halcyon-1352522_1920.jpg

Image by footiechic from Pixabay

বড় বড় গাছ গুলোতে কাক গুলো বাসা বানাতো। মোটা মোটা তার দিয়ে। অনেকে ওদের বাসা ভেংগে বিক্রি করে দিতো। জিনিশটা খুবই খারাপ লাগতো আমার। তবে ছোট ছিলাম তাই তেমন কিছু বলতে পারতাম না। কাক রা খুব ভিতু জানেন? আমি ওদের খুব ভয় দেখাতাম। এই ধরুন গুটলির মতন দুই আংগুল সাজিয়ে ওদের দিকে তাক করলেই ভয় পেয়ে যেতো। মাঝে মধ্যে তো ভাব করতাম যে মাটি থেকে ইটের টুকরো কুড়িয়ে ওদের দিকে মারবো। আর তখন দেখতাম উড়ে চলে যেতো। যদিও আবার কিছুক্ষন পর এসে পরতো। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে আমি কাকের বাচ্চাও পেলেছি। বড় কাক গুলোর মুখতো ছিলো কালো। তবে বাচ্চা কাকের মুখ থাকতো গোলাপি। খুব অবাক হতাম আমি। কিন্তু সে দিন গুলো যেনো শুধুই স্মৃতি এখন। আর দেখতে পাইনা সে দিন গুলো। পাখির মধ্যে শুধু চড়ুই পাখির দেখা মেলে মাঝে মধ্যে। তবে শালিক, বাবুই, ময়না, টিয়া, ঘুঘু , দোয়েল, টুনটুনি ওদের আর দেখতে পাইনা। গ্রামে গেলেও খুব একটা দেখতে পাইনা। শহরে তো নাই। তবে একটা জিনিশ খেয়াল করেছি। মোবাইল নেটওয়ার্ক এর টাওয়ার গুলো আসার পর থেকেই পাখি কমতে শুরু করেছে। কে জানে হয়তো কিছু পাখি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে এর জন্য। এটা ভাবতেই বুক ফেটে যায় আমার। যদি একদিন ঘুম থেকে উঠেই আবার সেদিনে ফিরে যেতাম। সত্যি খুবই ভালো লাগতো।


তো এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট এ। আশা করি ভালো লেগেছে আপনাদের। কেমন হলো জানাবেন।



░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░

break .png

Purple Yellow Black Neon SciFi YouTube Banner (800 × 260 px) (800 × 250 px).gif

break .png

আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।

break .png

Banner.png

break .png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

গ্রামের দিকেও এখন পাখির সংখ্যা অনেক কম। আগের মতো আর তাদের কিচিরমিচির শব্দও শুনতে পাই না। সত্যি দিনগুলো আমি নিজেও অনেক মিস করি। আগে তাল গাছের নিচে গেলেই দেখতাম বাবুই পাখির নিপুন শীল্পে তৈরি সেই বাসা। কিন্তু এখন দূরবীন দিয়ে খুজেঁও পাওয়া যায় না।

আর বেতন পাওয়ার জন্য অভিনন্দন ভাই। আসলেই এই আনন্দ প্রকাশ করার মতো না।।

হুম ভাই সেটা বললাম। তাও কম হলেও দেখা যায় মাঝে মাঝে ডাক শুনলেও ভালো লাগে। কিন্তু ঢাকায় সেটাও নাই। কাক পর্যন্ত দেখিনা।

আগে তো জোরা শালিক দেখলে মনে হতো আজ সারাদিন খুব ভালো যাবে,এখন জোরা তো দূরের কথা একটা শালিকও তেমন দেখা যায় না।আমি যে শেষ কবে কোকিল দেখেছি তাই মনে করতে পারছি না।আসলেই পাখিগুলো প্রায় বিলুপ্ত এর পথে।পাখিদের বাসা বুনার সময় চোখে পরলে আমি প্রায় তাকিয়ে থাকতাম কি বুদ্ধি করে তারা বাসা বানাতো।সৃষ্টিকর্তা তাদের কত বুদ্ধি দিয়েছে। এখন আর পাখির বাসা দেখি না।তবে বেশ অবাক লাগলো আপনি কাকের বাচ্চা পেলেছেন জেনে।লিখাগুলো ভালো লিখেছেন। তবে স্যালারি পেয়ে আমাদের খাওয়ানো উচিত ছিলো😉😉।ধন্যবাদ

হ্যা আপু ঠিক বলেছেন। এখন আর তখনকার দিনের মতন শান্তি নাই। চলে আসেন ট্রিট দিবোনে।