আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই? সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি। ঈদের পরবর্তী সময়ে সবার ঈদ কেমন কাটলো সে বিষয়ে অনেক অনেক পোস্ট দেখতে পারব এটা তো মোটামুটি নিশ্চিত। এখন আমি পোস্ট লিখছি, ঘড়িতে বাজে প্রায় সাড়ে ছটা। আজকের সারাটাদিন স্বাভাবিক অন্যান্য কোরবানির ঈদের মতই কেটেছে। কেমন কাটলো সে বিষয়েই শেয়ার করতে আসলাম আপনাদের সাথে।
ছোটবেলার ঈদগুলো সবচেয়ে সুন্দর ছিলো। মনের মধ্যে একরাশ আনন্দ নিয়ে ঈদের আগের দু'চার দিন থেকে শুরু করে ঈদের পর এক সপ্তাহ পর্যন্ত কাটিয়ে দিতাম মজা মাস্তিতে। বড় হওয়ার সাথে সাথে ঈদের আনন্দটা অনেকটাই কমে গেছে। ছোটবেলায় প্রিয় আত্মীয়-স্বজনরা সবাই ঈদ সালামি দিত কিন্তু এখন কেউই আর ঈদ সালামি দেয়না। ছোটদেরকে আরও ঈদ সালামি দিতে হয় আমার পক্ষ থেকে। তবে আনন্দের একটা জায়গা হলো আমার বড় আপু। আমাকে এখনো ঈদ সালামি দেয়। যাই হোক আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠেছিলাম বেশ ভোরে। আমাদের ঈদগাহ ময়দানে নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল সকাল ৯ টায়। সেই অনুপাতে গোসল খাওয়া-দাওয়া করে আমরা সবাই রেডি হয়ে নিলাম। এবার সময় ঈদ সালামি দেয়ার। ছোট সবাইকে ঈদ সালামি দিয়ে একটা তৃপ্তি অনুভব করলাম।
আমি আমার ছোট ভাই, আমার বাবা আর চাচাতো ভাইয়েরা সবাই একসাথে গেলাম ঈদগাহ ময়দানে। নামাজ শুরু হতে হতে সাড়ে নয়টা বেজে গেছিল। আজকে আকাশ টা ছিল একদম পরিষ্কার। তীর্যকভাবে সূর্যের আলো এসে পড়ছিল মাটিতে। প্রচন্ড তাপ ছিল রোদের। কিন্তু তেমন কোন কষ্ট অনুভব করছিলাম না৷ সৃষ্টিকর্তার জন্যই তো আশা। তার নিকট এসে এই কষ্ট কি কষ্ট মনে হয়!!
নামাজ শেষ করে কবর জিয়ারত করে পরিচিত যাদের সাথে দেখা হল তাদের সাথে কোলাকোলি করলাম। এটা ঈদের আনন্দের মধ্যে একটা বড় অংশ। এরপর দ্রুত ঈদগা ত্যাগ করলাম, কারণ কোরবানির ঈদে প্রচুর কাজ থাকে বাড়িতে। আমরা সবাই বাসায় আসলাম, বাসায় এসে ড্রেস চেঞ্জ করলাম। এরপর চলে গেলাম আমাদের বাড়ির পেছনের উঠানে। আমার আপন চাচা ২ জন এবং আমার চাচাতো চাচারা মোট ৭ জন সবাই একই জায়গায় এসে কোরবানি দেয়। বিষয়টি অনেক মজার। সমস্ত চাচাতো ভাইয়েরা এবং চাচারা একজন আরেকজনের কোরবানির কাজগুলো করতে হেল্প করে। সবাই একে অপরের হেল্প করার জন্য কাজগুলো বেশ সহজেই হয়ে যায়। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি আমার চাচারা সবাই একসাথে এইখানে কোরবানি দেয়।
এই দিনটাতে মাজায় গামছা বেঁধে লুঙ্গি পরে কাজে নেমে পড়তে হয় আমারও। একদিনের কসাই যেটাকে বলে। কোরবানির সবচে বড় সৌন্দর্য টা তো আপনারা সবাই জানেন। অনেক গরিব মিসকিন আছে যারা সারা বছর ভালো কিছু খেতে পারে না। এই দিনে অনেক অনেক মাংস পেয়ে তৃপ্তি করে খেতে পারে। আসলে কুরবানির অর্থ হচ্ছে ত্যাগ। আর আল্লাহর নামে পশু কোরবানি দিয়ে সেটা গরীব মিসকিনদের মাঝে এক ভাগ বন্টন করে দেওয়াটা অনেক বড় সৌন্দর্য এবং তৃপ্তির একটা ব্যাপার।
যাই হোক, আজ অনেক কাজ করতে হয়েছে। অবশেষে মাংসগুলো প্রসেস করে ভাগবাটোয়ারা সম্পূর্ণ করে আমি ফ্রেশ হয়ে রুমে চলে আসছি। রুমে এসে প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছিল কারণ সকালে এলাট্রল খেয়েছিলাম। বিছানায় আজ নতুন চাদর পাড়া। ওর উপর বেশ আরাম করে চার হাত-পা ছড়িয়ে দিয়ে ঘুমের কোলে ঢলে পড়লাম। ওমা.. ঘুম থেকে উঠে দেখি বিকেল পাঁচটা বাজে। মেজর অত্যধিক গরম। ভেবেছিলাম কষা মাংস খাব। সেটা তো আর হলো না হতচ্ছারা ঘুমের জন্য। কি আর করবো, ওভাবেই খেয়ে নিলাম দুপুরে রান্না করা সেই মাংস দিয়ে চারটে ভাত। এইতো এখন ঢেকুর তুলছি আর পোস্ট লিখছি। আসলে প্রত্যেকটা কুরবানির ঈদই এমন যায়। সারাদিন তেমন কোথাও যাওয়া হয়না, কারণ কাজ কর্মে একটু ক্লান্ত থাকে শরীর। তবে আজকে আমরা সন্ধার পরে বের হব।
আজ আর লিখব না। সবার ঈদের দিনটি কেমন কাটলো অবশ্যই সবাই জানাবেন পোস্টের মাধ্যমে। সবাই আত্মীয়-স্বজনের সাথে আনন্দের সহিত ঈদ উদযাপন করুন। নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন নিজের পরিবারের প্রতি খেয়াল রাখবেন। এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ছোটবেলার ঈদগুলো সবচেয়ে সুন্দর ছিলো। ভাইয়া আপনার এই কথাটি একদম ঠিক। ছোটবেলায় যে ঈদগুলো পার করেছি তার আনন্দ এখনো মনে করলে ভীষণ ভালো লাগে। বড় হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ঈদের আনন্দ অনেকটা কমে গেছে। তবে আমার ছেলেমেয়েদের ঈদ আনন্দ দেখে সেই দিনের কথা খুবই মনে পড়ে যায়।ভাই ঈদের দিনটি আপনার বেশ কর্মব্যস্ততায় কেটেছে তা পোস্ট পড়েই বুঝতে পারলাম। হতচ্ছাড়া ঘুমের কারণে আপনার আর কষা মাংস খাওয়া হয়ে ওঠেনি। যাই হোক ভাইয়া ঈদুল আযহা ত্যাগের মহিমায় খুবই সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন যা পড়ে খুবই ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঈদ মোবারক শ্রদ্ধেয় ভাইজান। আপনি তাহলে এখনও বড় আপুর কাছ থেকে সালামি পান। আমি তো পায়না । তবে দুইবার আমাদের দাদার কাছ থেকে পেয়েছি আমি সহ আমার বাংলা ব্লগবাসী ❤️। আজকের আকাশটা অনেক উত্তপ্ত ছিল তবে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির জন্যই তো নামাজ আদায় করি। সবমিলিয়ে ব্যস্ততার মাঝেই ঈদের দিনটি পার করলেন ❤️
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই যত বড় হয়ে যাচ্ছি ঈদের সালামি পাবার পরিমাণটা ততটাই কমে যাচ্ছে। এই বছরে শুধুমাত্র আরএম ই দাদা আমাকে ঈদের সালামি দিয়েছে।
আপনার সমস্ত চাচারা একই জায়গায় কোরবানি দেয় বিষয়টি জেনে অনেক ভালো লাগলো। আমাদের এখানে আমরা পুরো মহল্লার সবাই একত্রিত হয়ে একটি জায়গায় কোরবানি দিয়ে থাকি খুবই ভালো লাগে আমার কাছে এই ত্যাগের বিষয়গুলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিকই বলছেন ভাই, এই ঈদের একটা বড় আনন্দ হচ্ছে কুরবানির পর সেগুলো কাটাকাটি করে প্রস্তুত করা। আমিও ঈদের দিন ব্যাস্ত ছিলাম কুরবানির কাজ নিয়ে। তবে সন্ধ্যার দিকে বের হইছিলাম বন্ধুদের নিয়ে। মজা মাস্তি শেষে রাত ১০ টার দিকে বাসায় ফিরি। তবে আজকে ঈদের দ্বিতীয় দিন আজকে ইনশাআল্লাহ ঘুরাঘুরি হবে। আর অবশ্যই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করবো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে ঈদের শুভেচ্ছা ভাই ঈদ মোবারক।
এটা মানতে পারলাম না ঈদের দিন কিন্তু আপনারা ঘুরতে যাননি এটা কেমন হলো। আপনার একদিনের কসাই রুপটা আমার দেখার খুব ইচ্ছা হি হি।।
এটা কিন্তু দারুণ ছিল। কষ্ট হলেও সত্য নেওয়ার সময় শেষ এখন সারাজীবন শুধু দিয়ে যেতে হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার ঈদ ভালোই কেটেছে তবে অনেকটা অলস।কারণ শহরে আসলে কারো বাসায় কেও আসে যায় না এ ঈদে।আর মাংস নিয়ে সামান্য যা কাজ।এরপর বাকি সময় ঘুম,খাওয়া আর একা বসে মোবাইল টিপা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই ঈদের শুভেচ্ছা জানাই ❤️
আসলে ছোটবেলায় একটা আনন্দ ছিল অন্যরকম কিন্তু এখন সব মলিন হয়ে গেছে। তবে পরিবারকে চেষ্টা করি যতটা সম্ভব আনন্দে রাখতে। এখন এটাই মুখ্য আনন্দ।
অনেক দোয়া রইল আপনার জন্য 💌
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit