সুন্দরী তুমি কই ???

in hive-129948 •  2 years ago 

love-6757243_1280.jpg

হাজির হলাম নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে৷ কেমন আছেন বন্ধুগণ? আমি পুরো দুই মাস ধরে একটা বিষয় খুবই মিস করে আসছি। আর সেটি হচ্ছে সেই চিরচেনা বর্ষার দৃশ্য। আজকের পোস্টের টাইটেল "সুন্দরী তুমি কই" এটা দেয়ার কারণ হলো বর্ষাকালকে আমি নারীর সাথে তুলনা করে চিন্তা করতে পছন্দ করি। নারীর সৌন্দর্যের গভীরতা বর্ষাকালে মাঠে-ঘাটে পানির গভীরতা দুটোই দারুণ ভাল লাগার একটা বিষয়। অনেকের কাছে বর্ষাকাল বিরক্ত তিক্ত লাগতে পারে। কিন্তু আমার কাছে রোমান্টিক একটা সময় বর্ষাকাল। কিন্তু এ বছর সেই সুন্দরী বর্ষার বৃষ্টিকে আমি খুবই মিস করছি। তার চিরচেনা রূপ যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। মলিন হয়ে আছে আকাশ, বাতাস, মেঘের রাজ্য।

আজ ৭ তারিখ, মাস ভাদ্র । আষাঢ় শ্রাবণ এই দুই মাস হল বর্ষাকাল। বর্ষাকাল পেরিয়ে সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে ভাদ্র মাসে চলে এসেছি আমরা। কিন্তু প্রকৃতির আচরণ দেখে বোঝার উপায় নেই যে আমরা বর্ষাকাল ডিঙিয়ে শরৎকালে এসে ঠেকেছি । চিরচেনা বর্ষাকে সবসময় দেখেছি গত হওয়া গ্রীষ্মের উত্তপ্ততাকে মুষলধারে বৃষ্টির মাধ্যমে নিমিষেই শীতল করে দিতে। কিন্তু এবার কোথায় গেল সেই আর্যা বর্ষা ? কোথায় গেল সেই প্রিয় তমা বৃষ্টি?? এবার সুযোগ খুবই কম হলো তোমার স্পর্শে শরীরে শিহরণ জাগানোর । কপালের দিবোনা দোষ। তুমি এলেনা তোমার দোষ। তোমার সাথে আঁড়ি।

বর্ষাকাল এলেই আমার ছোটবেলার অনেক অনেক স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সেই সারাদিনের মুষলধারায় বৃষ্টির দৃশ্য। চারিদিকে ঘন কালোমেঘে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকে প্রায় সারাটা দিন। গ্রাম বাংলার ভাষায় এরকম পরিবেশে দু-তিনদিন স্থায়ী হলে তাকে 'আদল' বলে।

man-5846064_1280.jpg
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY

ছোটবেলায় বর্ষার সময় আম্মু বাড়িতে অনেক অনেক বাদাম ভাজি করে রাখত। সাথে আর ঝাল ও বানিয়ে রাখত। বৃষ্টি এলেই আমি আমাদের বারান্দায় গিয়ে ওই ভাজা বাদাম নিয়ে বসে পড়তাম। আর খেতে খেতে বৃষ্টি দেখতাম। আঁকিবুকি করতে পছন্দ করতাম। অনেক অনেক রং পেন্সিল ছিল আমার। যদিও আঁকিবুকিতে ছিলাম অষ্টরম্ভা। না পেরেও চেষ্টা করতাম পেন্সিল নিয়ে বসে যেতাম বারান্দায়। ভিতর থেকে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করত। আমি সবসময় গ্রাম অঞ্চলের সাজানো দৃশ্য অঙ্কন করতে পছন্দ করতাম। মাঝি নৌকা নিয়ে যাচ্ছে নদী দিয়ে, নদীর পাড়ে ছেলেপেলে ঘুড়ি উড়াচ্ছে, কৃষক ধান কাটছে, গাছে পাখি বসে আছে এইসব থাকতো আমার চিত্রের মধ্যে। যদিও সেই চিত্র কাউকে দেখিয়ে সাহস পেতাম না কারণ জঘন্য রকমের খারাপ হতো। কিন্তু আমার আঁকতে ভালই লাগতো।

সেই ছোটবেলা থেকেই বৃষ্টির প্রতি আমি মারাত্মক রকমের দুর্বল ছিলাম। আমাদের বাড়ির পাশে একটা মাঠ আছে ওই মাঠে একটা কালভার্ট আছে। মাঠের মাঝ দিয়ে রাস্তা থাকার জন্য কালভার্ট বানিয়ে রেখেছে, যেন ঐখান দিয়ে বর্ষাকালে পানি প্রবাহিত হতে পারে। বর্ষাকাল এলেই ওই জায়গাটা দিয়ে প্রচন্ড গতিতে পানি প্রবাহিত হতো। তখন কৃষকেরা জাল পেতে রাখত, আর প্রচুর মাছ ধরা পড়তো। গামলা গামলা মাছ সবাই কিনে নিয়ে যেত। এই দৃশ্যগুলো আমি এখন আর দেখিনা খুবই মিস করি। আমি গত বছর এই সময় এরকম একটা পোস্ট করেছিলাম যে আমাদের ওই মাঠের কালভার্টে এখন আর আগের মতো মাছ ধরা পড়ে না।

যাইহোক বর্ষাকালের বৃষ্টির মুহূর্তগুলো সত্যিই অনেক রোমান্টিক হয়। আমার মনে আছে ছোটবেলায় কোন একটা বর্ষার দুপুরে আমার চাচা দেখলাম মাঠে যাচ্ছে মাছ ধরতে, সাথে ছিলো একটা কোদাল। সবার মাছ ধরার মূহুর্ত গুলো দেখতেও ভালো লাগতো। ওই সময়ে আসলে আনন্দের মুহূর্ত গুলো বলতে এগুলোই ছিল। যত বয়স বেড়েছে বৃষ্টির মুহূর্তের আনন্দের ধরণ পরিবর্তন হয়েছে । কিন্তু সেই ভালোলাগাটা একটুও কমেনি।

আজ এই পোস্টটা যখন লিখতে শুরু করলাম তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। এক পশলা বৃষ্টি আমার বারান্দাটা হাল্কা ভিজিয়ে দিয়ে আবার থেমে গেল। কোথায় যে হারিয়ে যায় একটুখানি দেখা দিয়ে বুঝাই যায়না। আমিও বিদায় নিতে চাচ্ছি এখানেই। দেখা হবে আবার অন্য কোন পোস্টে। ভাল থাকবেন সবাই। আল্লাহ্ হাফেজ।



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

কিন্তু প্রকৃতির আচরণ দেখে বোঝার উপায় নেই যে আমরা বর্ষাকাল ডিঙিয়ে শরৎকালে এসে ঠেকেছি ।

ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। বৃষ্টি পছন্দ করে না এমন মানুষ খুবই কম আছে। তবে প্রতিবারের তুলনায় এবারে বৃষ্টি অনেক কম হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে ঋতুর পরিবর্তনের ধারা পাল্টে যাচ্ছে। আগে যেমন প্রকৃতির দিকে তাকালেই বোঝা যেত এখন কোন ঋতু এখন সেই উপায় নেই। প্রকৃতির সবকিছু যেন ভিন্ন রূপ ধারণ করেছে। ভাইয়া আপনার অনুভূতি তুলে ধরার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ❤️❤️

আজ সুন্দরী আসবে বলে আকাশ বেশ অন্ধকার হয়েছিল কিন্তু তার দেখা পেলাম না ☺️ হয়তো আসবে অঝর ধারায় আর আমাদের ভরিয়ে দেবে প্রশান্তিতে।

দারুন লিখেছেন ভাই। আর ছোটবেলার কথাগুলো আমাদের মনে করিয়ে দিলেন। আমি কিন্তু মোটামুটি ছবি আঁকায় ভালোই ছিলাম আর ছবিগুলো এখনো বাসায় টাঙানো আছে। আর মাছ ধরতে ভীষণ পছন্দ করতাম।
আপনার পোস্টটা পড়ে মোটামুটি ছোট বেলায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম।
ধন্যবাদ ভাই দারুন একটা পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য।

ভাই পুজার আগে আগে আপনার সুন্দরী চলে আসবে চিন্তা কইরেন না।আপনার শৈশব এর স্মৃতি অনেক মধুর।অনেক ভাল লাগল এটা জেনে।

বাহ! ভাইয়া আপনার কথাটি বেশ ভালো লাগলো যে আপনি বর্ষাকাল কে নারীর সঙ্গে তুলনা করেছেন 😊।
তবে ভাইয়া বর্ষাকাল আমার কাছেও বেশ ভালো লাগে। বর্ষাকালে বাইরের ঝুম বৃষ্টি দেখতে খুবই ভালো লাগে। গ্রামের বাড়িতে গেলে টিনের চালের সেই ঝুম বৃষ্টির আওয়াজ ও বেশ ভালো লাগে। কিন্তু এই দিনটিতে গ্রামের বাড়িতে চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। শহর এলাকায় খুব একটা গায়ে লাগেনা।

নারীর সাথে বৃষ্টির অসাধারণ তুলনা আপনার। সেসাথে একেবারে সত্য কথা উপস্থাপন করেছেন আপনি। বর্ষাকালে পানি নেই, বর্ষাকালে প্রতিদিন কোন না কোন সময় বৃষ্টি তো হবেই। তা না হলে বর্ষাকাল কি মানায় ? দীর্ঘদিন হচ্ছে বৃষ্টি নেই, আকাশে মেঘ নেই, প্রচন্ড রোদের তাপ, মাটি কৃষকের ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির হচ্ছে। জানিনা এবার প্রকৃতি কি করবে ? আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ে

নারীর সৌন্দর্যের গভীরতা বর্ষাকালে মাঠে-ঘাটে পানির গভীরতা দুটোই দারুণ ভাল লাগার একটা বিষয়।

কথাটা তো দারুণ বললেন ভাই। বর্ষাকাল আমারও অনেক ভালো লাগে। আমার আছেও বর্ষাকাল টা বেশ রোমান্টিক মনে হয়। তবে এবার বর্ষার তো কোন ছিটে ফোটাও টের পাওয়া গেল না 😩।।

সেই আক্ষেপ নিয়ে এই পোস্ট আসলে লেখা।

ভাই আপনার শেয়ার করা লেখাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। কারণ আমারও ছোটবেলার এমন কিছু রোমান্টিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। যখন ছোট ছিলাম তখন বৃষ্টির সময় সারাদিন লুডু কেরাম বোর্ড খেলতাম। নারী কে বৃষ্টির সাথে তুলনা একেবারে পারফেক্ট। বৃষ্টির সময় আমারও কারেন্ট জাল পেতে এবং আনতা দিয়ে মাছ ধরার অভ্যাস ছিল। অতীতকে মনে করিয়ে দেয়ার মত একটি লেখা পড়লাম।

আসলেই ভাইয়া, ছোটকালে বৃষ্টির মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দদায়ক ছিল। আমরা ছোট কালে বৃষ্টি হলে ফুটবল মাঠে কাঁদার মধ্যে ফুটবল খেলতাম। খেলার সেই আনন্দটাই আলাদা। যেটা মনে করলে এখনো মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। যাইহোক আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার বৃষ্টির অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। পড়ে ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

বর্ষাকাল সত্যি অনেক ভালো লাগে। আপনি যেমন বৃষ্টি হলেই ছবি আঁকতে আর বাদাম খেতে বসে যেতেন। তেমনি আমরাও অনেক আনন্দ করতাম। আসলেই আগের মতো বর্ষাকাল এখন আর নেই।আর বর্ষাকাল ই নেই আর মাছ কই থেকে আসবে।গল্প শুনি মাঠে মাছ পাওয়া যায়, আমার আব্বু বলে। কিন্তু দেখার সৌভাগ্য হয়নি এখনো। আপনার পোস্টেটি ভালো লেগেছে ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।

প্রথমে টাইটেল দেখে ভেবেছিলাম সে আবার কোন সুন্দরী। এরপর দেখলাম সে আর কেউ নয় সে হচ্ছে বৃষ্টি সুন্দরী। বর্ষা কালকে নারীর সাথে তুলনা করেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। সত্যি ভাইয়া আপনার চিন্তাধারা আমাকে মুগ্ধ করেছে। ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মনে পড়ল ভাইয়া।

আহা টাইটেল দেখেই তো প্রেমে পরে গেলাম সুন্দরীর 😅,,, সুন্দরী এবছর বড্ড লুকোচুরি খেলছে সবার সাথে। স্থির ভাবে থাকতেই চাইছে না। একবার এখানে তো আরেকবার ওখানে,, হালকা হালকা পরশ বুলিয়ে চলে যাচ্ছে 🤪। এ যে কোন খেলা খেলে যাচ্ছে বোঝা মুশকিল । তবে আজ থেকে কয়েক বছর আগেও যে চিরযৌবনা রূপ খানা ছিল সেটা সত্যিই খুব মিস করি। এই বছর তো ফাঁকি আর ধোঁকা দিয়েই শেষ করে দিল। দেখা যাক সামনের বছর কি ভেলকি নিয়ে আসে 😉

টাইটেল দেখে সুন্দরীরে খুঁজতে বেরিয়ে পরতে নিয়েছিলাম 🤪। পরে ভাবলাম একটু সুন্দরীর বর্ণনা পড়ে নেই। পড়ে তো আমি অবাক ভাগ্যিস বের হয়নি😉😉।যাই হোক আসলেই আগের বর্ষাকাল এখন আর নেই, আগে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি থাকত,এমনকি রাস্তায় পানি উঠে যেত,আমাদের বাসার সামনে একটা ক্ষেত ছিলো,এটা বর্ষার পানিতে কানায় কানায় ভরে থাকতো মাছও আসতো প্রচুর।

সত্যি ভাইয়া এ বছর যে বর্ষা ঋতু কখন চলে গেল বুঝতে পারলাম না শুধু বুঝতে পারলাম প্রচন্ড রোদ সাথে প্রচন্ড গরম। কিন্তু সেই সুন্দরী বৃষ্টির কোন দেখা পেলাম না। ছোটবেলায় দেখেছি একটানা ৫-৬ দিন ধরে বৃষ্টি হতো। বৃষ্টিতে আমাদের দুই থেকে তিনটা পুকুর সব সময় ঘাটিয়ে যেত। পুকুরপাড় সুন্দর করে কেটে পুকুরের পানি বের করতাম। আরে পানির স্রোতে মাঠ থেকে উঠে আসতো বিভিন্ন ধরনের মাছ। তখন আমি আমার আব্বার সাথে জাল এবং অন্যান্য কৌশল অবলম্বন করে মাছ ধরতাম। এখনো বৃষ্টি হলে ছোটবেলার সেই মধুর দিনগুলো খুবই মনে পড়ে।

বর্ষাকালে পুকুরের মাছ যখন মাঠে চলে আসতো আর সকলে যখন এই মাছগুলো ধরতে যেত, এই দৃশ্যগুলো সত্যিই দারুণ ছিল।

জী ভাইয়া আগের দিনে বৃষ্টি আসলে বাপ চাচারা মাছ ধরতে যেত। আমি কত মামার সাথে মাছধরতে গিয়েছি তার কোন হিসাব নেই। বৃষ্টি আসলে আমার চোখের সামনে সেই সৃতি গুলো ভেসে উঠে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

মাঠ ঘাট থেকে মাছ ধরা কিন্তু খুব মজা।

বর্ষাকালকে আমি নারীর সাথে তুলনা করে চিন্তা করতে পছন্দ করি।

বাহ,টাইটেলটি তো বেশ সুন্দর দাদা।প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি কোনো মেয়েকে নিয়ে লিখবেন কিন্তু পড়ে বুঝলাম এটি বর্ষাকালকে নিয়ে লেখা।বাদাম ভাজি আমার ও খুব পছন্দ।এই বছর বৃষ্টি কোথাও নেই, ধন্যবাদ দাদা।

হাহাহা। এই জন্যইতো টাইটেল এরকম দিছি। 😜