পাগল পার্ট-২

in hive-129948 •  last year 

Screenshot_20231210-221541_1.jpg

রক্তাক্ত রাজা উপুর হয়ে উঠনে পরে থাকে। এক সময় বাড়িতে অনেক লোক জমা হয়, সবাই বলাবলি করতে থাকে ছেলেটিকে ক্যান এভাবে মারা হলো। রাজাকে তো সবাই চিনে, মাঝে মাঝেইতো এখানে আসতো। ছেলেটি তো অন্য কেউ না, তার মামাতো ভাই। কিন্তু এ রাতে কি করতে আসছে এখানে! সবাই ছেলেটিকে সন্দেহ করতে শুরু করল।
ফাকা বাড়ি, ভাবি বাসায় নেই ইরার মা অনেক আগেই মারা গেছে। রাত বাজে ৯টা। এমন সময় রাজা তার বারিতে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে। এটা কেউ মেনে নিতে পারে না। নতুন বিয়ে হয়েছে মেয়েটির, মা মরা একটা মেয়েকে একা পেয়ে রাজা ধর্ষণ করতে চেয়েছিল। এটা সবার মুখে মুখে রটে যায়।
কিছুক্ষন পর ইরার বাবা বাড়িতে আসে। সব শুনে রাজাকে দাড় করিয়ে একটা বাশের সাথে বাধে, দুহাত দুদিকে বাধন দেয়, পাদুটো বেধে রাখে। রাজাকে দেখলে মনে হয় যেনো ঠিক কোনো কাকতাড়ুয়া দাড়িয়ে আছে। ইরার বাবা লাঠি দিয়ে অনেক সময় পেটালেন রাজাকে আর জিজ্ঞেস করেন ক্যান আসছিস এখানে।
ক্লান্ত রাজা কিছু বলে না, আর বলবেই বা কিভাবে মারের আঘাতে তার কথা বলার শক্তি হারিয়ে গেছে। দুচোখ দিয়ে তার নদী বয়ে যাচ্ছে। আজ এ নদী দেখার কেউ নেই, যে আসছে সেই মারছে তাকে। আজ যে সে ধর্ষণ মামলার আসামি সে।
রাত কেটে গেলো। সকাল ৮টা বাজে, দলে দলে মানুষ আসছে তাকে দেখার জন্য। দুচোখ লাল হয়ে গেছে তার, গায়ের জামা ছিরে গেছে। চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে, গায়ে কোনো শক্তি নেই। বাধা বাশে কাকতাড়ুয়ার মতো দাঁড়িয়ে আছে।
মিনু= চল বোন আমি আর এখানে থাকতে পারতেছি না।
রিপা= হুম চল।
মিনু= ইরার সাথে তার কতদিনের সম্পর্ক ছিলো জানিস।
রিপা= আমার জানা মতে ৩বছরের মতো হবে।
মিনু= ৩বছর! এতো দিন রিলেশন করে আবার অন্য জায়গায় বিয়ে করল কিভাবে!
রিপা= আমি কিভাবে বলি বল, তবে ইরা ওর বাবার ওবাদ্ধে কোথাও বিয়ে করবে না।
মিনু= তবে ছেলেটিকে ওভাবে কষ্ট দেওয়া তাদের ঠিক হয়নি।
রিপা= হুম।
একটু পর রাজার বাবা আসে। মেম্বার, চেয়ারম্যান ও এলাকার সকল মুরুব্বীরা একত্রিত হয়। রজাকে নামিয়ে মাটিতে বসতে দেওয়া হয়।
মেম্বার= কিরে কাল রাতে এখানে আসছিস ক্যান?
রাজা= (নিশ্চুপ)
মেম্বার= কি রে কথা বল।
রাজা= (নিশ্চুপ)
চেয়ারম্যান= এতো কোনো কথায় বলতেছে না, কি হইছে আপনি বলেন তো।
ইরার বাবা= কাল রাতে বাড়িতে কেউ ছিলো না, এমন সময় এই বেয়াদব টা আমার মেয়ের উপর নির্যাতনের চেষ্টা করে, আমার ছেলে বিষয়টি দেখতে পেয়ে আটকে দেয়। ওর এতো বড় সাহস হয় কিভাবে আমার মেয়েকে নির্যাতন করার!
চেয়ারম্যান= এই ছেলে? যা বলছে তা কি ঠিক?
রাজা= (নিশ্চুপ)
ইরার বাবা= ও আর কি বলবে? হাতে মুখে ধরেই তো এখানে বেধে রাখছিলাম।
চেয়ারম্যান= মেয়েটি কই? তাকে নিয়ে আসো।
ইরা কে নিয়ে আসা হলো। এক পাশে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে সে।
চেয়ারম্যান= এই মেয়ে ওর সাথে কি তোমার কোনো সম্পর্ক আছে?
ইরা= (নিশ্চুপ)
চেয়ারম্যান= (ধমক দিয়ে) কি হল জবাব দাও? ওর সাথে কি তোমার কোনো সম্পর্ক আছে?
ইরা= না।
চেয়ারম্যান= তাহলে কাল ও তোমার কাছে আসছিলো ক্যান?
ইরা= আমি জানি না।
চেয়ারম্যান= চলে যাও এখান থেকে। আর এই ছেলে এরা বলতেছে তা কি ঠিক?
রাজা=(নিশ্চুপ)
চেয়ারম্যান= কোনো কথায় তো বলে না। এ তো আসলে কাল মেয়েটার সর্বনাশ করতে আসছিলো। এ তো কোনো জবাব খুজে পাচ্ছে না।
হঠাৎ রাজার বাবা উঠে তাকে মারধর করতে থাকে। মার খেয়ে মাটিতে পরে কান্না কান্না করতে থাকে, আজ এই কান্নাই যেনো তার ভাষা। আর কি বা বলবে সে, যার জন্য সে সব কিছু করতে প্রস্তুুত ছিলো আজ সেই তাকে অসীকার করল।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ইমেজ সোর্স উল্লেখ করুন।

কোন ইমেজ সোর্স দিব ভাইয়া