আমার ছেলের প্রথম বসন্ত

in hive-129948 •  8 months ago 

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগবাসি কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই সুস্থ আছেন। ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনকার মতো আজো আমি আবারো নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার ছেলে ও পরিবারের সাথে পহেলা ফাল্গুনের দিনটি কেমন গেল সেটি নিয়ে। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

পহেলা ফাল্গুন নিয়ে বা ভালোবাসা দিবস নিয়ে আমার তেমন কোন প্ল্যান ছিল না। আর ছোট বাচ্চা নিয়ে তো কোন কিছু করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই এবার কোন প্ল্যান করিনি। প্রতিদিনকার মতো যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠি ঠিক একই সময় ঘুম থেকে উঠেছিলাম। পরিবারের সকলের সাথে ভালো মুহূর্ত কাটানো যায় যেকোন সময়।ভালো মূহুর্ত কাটাতে বিশেষ দিনের প্রয়োজন পড়ে না। তারপরেও বিশেষ দিনগুলোতেএকটু অন্যরকম ভাবে কাটাতে আমরা এখন সবাই পছন্দ করি। সকাল সকাল আমার হাজবেন্ডের কাছ থেকে ভালো ভালো কয়েকটা কথা শুনে ভালোবাসার দিনটি শুরু হয়েছিল। তারপর আমার হাজব্যান্ড অফিসে যাওয়ার সময় দেখি কেউ দরজা নক করছে। দরজা খুলে আরো কয়েকজন আমার ভালো লাগার মানুষের সঙ্গে দেখা হল দরজা খুলে দেখি বউদি । বউ দির হাস্যজ্জল মুখখানা দেখলাম। গত রাতে দাদা এসেছেন দাদা ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা হিসেবে কিছু ফুল দিয়েছেন। বৌদি সরাস্বতি পূজায় যাওয়ার জন্য রেডি হয়েছেন খুব সুন্দর একটা শাড়ি ও পড়েছিলেন চমৎকার লাগছিল দেখতে।

এরপর আমি আমার স্বাভাবিক নিয়মে বাসার সব কাজ শেষ করে বস লিখতে বসেছি এরমধ্যে দেখে আমার হাসবেন্ড অফিস থেকে চলে এসেছে এবং অন্য দিনের চেয়ে একটু বেশি হাসি খুশি ছিল। আমি সেদিকে এত বেশি খেয়াল করছিলাম না। একটু পর এসে বলছে সবাই সেজে শাড়ি পরে ঘুরছে।তুমিও শাড়ি পর।শাড়ি পড়তে আমারও ভালো লাগে। তবে আমার যেহেতু ছোট বাচ্চা তাই শাড়ি পড়তে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু পরে চিন্তা করে দেখলাম আজকের এই বিশেষ দিনে সেই সামান্য জিনিসটি চেয়েছে সেটাও যদি না করি তাহলে কেমন দেখায়।তাই দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে বাচ্চাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে আমি শাড়ি পরার চেষ্টা করছিলাম শাড়িটা এমন একটা শাড়ি বের করেছিলাম যাতে করে আমি আমার ছেলেকে সামলাতে। তা না হলে সমস্যায় পড়ে যাব। মোটামুটি আমার শাড়ি পড়া শেষ হতে না হতেই ছেলেমেয়ে দুজনেই ঘুম থেকে উঠে গেছে আর আমার মেয়ে তো আমাকে শাড়ি পরা দেখে মহা খুশি হয়ে গেছে সে বারবার জিজ্ঞেস করছে মা তুমি কেন শাড়ি পরেছ। তোমাকে শাড়ি পড়ে অনেক সুন্দর লাগছে। নানান ধরনের কথা এরপর সে বায়না ধরেছে সে নিজেও শাড়ি পরবে। এবার বাধ্য হয়ে শাড়ি পরিয়ে দিলাম এরপর আমরা ছেলে ছেলে ও মেয়ের সাথে কিছু ছবি তুলেছি। সন্ধ্যার পরে সারপ্রাইজ হলাম আমার হাজব্যান্ড বাইরে থেকে হেঁটে আসার সময় সবার জন্য ফুল নিয়ে এসেছে।

আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছিল যখন আমার ছেলেকে হাসব্যান্ড ফোন দিচ্ছিল তখন সে খুব সুন্দর ভাবে হাত দিয়ে ফুলটি ধরেছে এবং ফুলের দিকে তাকিয়ে ছিল। যে ছবিটি আমি সবার প্রথমে শেয়ার করেছি। এই ছবিটি আমাদের কাছে সেদিনের সবচেয়ে প্রিয় ছবি। আমার মেয়ে ও তো মহাখুশি বাবার কাছ থেকে শুনবে ফুল পেয়ে। আমার মেয়েও ছিল যেন ভালোবাসা কাকে বলে তার বাবা তাকে যে ফুলটি দিয়েছিল সে তার ছোট ভাইকে সেই ফুলটি দিয়ে দিচ্ছিল। বলছিল আমার লাগবে না সব ভাইয়ারই থাক। সে তার ভাইকে কত ভালোবাসে।এত ছোট মানুষ তারপরেও ভাইকে কত ভালোবাসে আমার মেয়ে তার সবকিছু তার ছোট ভাইকে দিয়ে দিতে চায়। এরই নাম বোধহয় ভালোবাসা। কত নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। আমার ছেলের বয়স যেহেতু চার মাস একদিন বয়স। তাই তার জীবনের এটি প্রথম বসন্ত প্রথম ভালোবাসা দিবস। প্রথম ভালবাসা দিবসের মা, বাবা, বোন থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছে।বিদায় নিচ্ছি।ধন্যবাদ সবাইকে।

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

সত্যিই ভালোবাসার কোন দিবস হয় না তারপরও এই বিশেষ দিনগুলোতে পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটাতে সবাই চায়। আপনার ছেলের জীবনে প্রত্যেকটা বসন্ত এভাবে সুখময় হয়ে আসুক এই কামনাই করছি। ধন্যবাদ ভাবি পরিবারের সাথে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile