ইফতার আয়োজন

in hive-129948 •  7 months ago 

আসসালামু আলাইকুম,

কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয়ই সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আছি। আজ আবারও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আজকের ব্লগটি ও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

রমজান মাসে কাছে আত্মীয়স্বজন বন্ধু-বান্ধব পাড়া প্রতিবেশী সকলকে ইফতার করাতে পারলে কি যে শান্তি লাগে তা বলে বোঝানো সম্ভব না। আমি কয়েকজন মেহমানকে আমার বাসায় দাওয়াত করেছিলাম ইফতার করানোর জন্য। ছোটবেলায় এই রমজান মাসে প্রত্যেকটা দিন খুব আনন্দ করতাম। প্রত্যেক দিন কারো না কারো বাসা থেকে ইফতার আসতো নয়তো আমাদের বাসা থেকে কারো বাসায় ইফতার দেওয়া হতো। রোজা রেখে বিকেল বেলা ক্লান্ত শরীরে সবার বাসায় ইফতার দিতে অনেক ভালো লাগতো। এখন কেমন যেন মনে হয় মানুষের মধ্যে এসে আন্তরিকতা গুলো আর নেই সেই মুহূর্তগুলো আর ফিরে আসে না মাসের প্রত্যেকটা দিনই যেন একটা উৎসবের আমেজ কাজ করতো।

ছোটবেলায় রোজা রাখতে চাইলে বাবা-মা অনেক সময় নিষেধ করত তারপরেও সেহেরির সময় যখন খেতে ডাকতো তখন উঠতে চাইতাম না। বারবার বাবা ডেকে ঘুম ভাঙ্গিয়ে সেহরি করাতো। কারণ সেহেরি না করলে পরদিন সকালে উঠে কান্নাকাটি শুরু করবো এইটা ভেবে বাবা অনেক কষ্টে ঘুম পাড়িয়ে খাইয়ে দিত। এখন আমাকে আর কাউকে ডাকতে হয় না মোবাইলে এলার্ম আমাকে জেগে দেয়। এখন আমি হয়তো অন্য কাউকে ডেকে সেহরি করাই এটাই বাস্তবতা। একটা সময় আমাকে খাইয়ে দিতে হতো আজ হয়তো আমি অন্যকে খাইয়ে দিচ্ছি এটাই জীবনের নীতি। তবে সেই দিনগুলো খুব মিস করি আমি। ছোটবেলার দিনগুলোর কথা ভেবে এখনো চোখের কোনায় পানি জমে যায়।

যাই হোক এখন আসি মূল কথায়। আমি রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে কয়েকজন মেহমানকে আমার বাসায় ডেকেছিলাম ইফতার করানোর জন্য আছে সেই দিনের কিছু মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

যেহেতু রমজান মাস এজন্য আমি চেষ্টা করেছি খাবারগুলোকে এমন ভাবে নির্বাচন করতে যাতে কারো কোন প্রবলেম না হয়। ইফতারের পরে আমি সবার জন্য বিরিয়ানি বানিয়েছিলাম। যেহেতু বিরিয়ানি একটু তেল জাতীয় খাবার এজন্যই ইফতারিতে ভাজাপোড়া কম রেখেছিলাম। ফলের পরিমাণটা বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। ইফতারের শরবত ছাড়াতো চলে না। তবে আমি অন্য সবার থেকে একটু ভিন্ন ধরনের শরবত বানিয়েছিলাম। আমি বানিয়েছিলাম শশার শরবত। যারা খেয়েছে সবাই অনেক ভালো বলেছে। এরপরে ইফতারে নাশপাতি, খেজুর,ছোলা, বাদাম, কিসমিস, আঙ্গুর,কমলা,কলা,গাজরের লাড্ডু, টমেটো, পেয়ারা, বেগুনি,আলুর চপ এসব দিয়েছিলাম।


মেহমানরা ঠিক ইফতারের আগ মুহূর্ত এসেছে এবং আমি ইফতার টেবিল আগেই রেডি করে রেখেছিলাম এজন্য আর সমস্যা হয়নি।সবাই টেবিলে বসে গিয়েছে ইফতার শেষ করে সবাই নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে চলে গেছে। এর মধ্যে আমি বাকি খাবারের জন্য টেবিলটা সেট করে ফেলেছিলাম। ইফতারের পরে খাওয়ার জন্য আমি যেহেতু বিরিয়ানি বানিয়েছিলাম তার সাথে আলুর ডিমের জালি কাবাব বানিয়েছিলাম সালাদ বানিয়েছিলাম আর ডিমের কোরমা বানিয়েছিলাম। রোজা রেখে সবাই একটু মুখরোচক খাবার পছন্দ করে সেটার কথা চিন্তা করে আমি এই খাবারগুলো বানিয়েছি এবং খেয়ে সবাই অনেক ভালো বলেছে।

খাবার খাওয়া শেষে সবাই যার আগ মুহূর্তে আমার হাতে দুটো ব্যাগ ধরিয়ে দেয়। আমি তো অবাক হয়েছি একটু তারপর ভিতরে খেয়াল করে দেখি আমার ছেলের জন্য তারা কিছু গিফট এনেছে। আমার ছেলের কিছু ড্রেস একটা ব্লু কালার গাড়ি এনেছে। যেটা আমার ছেলে দেখে খুবই পছন্দ করেছে এবং ড্রেস গুলো অনেক বেশি সুন্দর হয়েছিল। সবাইকে পবিত্র। মাসে মন ভরে খাওয়াতে পেরে আমারও মনটা ভালো হয়ে গেছে এই ভালো লাগাগুলো আসলে কোন কিছুর সাথেও তুলনা করা যায় না।

এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি পরবর্তীতে আবার নতুন কিছু নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ধন্যবাদ সবাইকে।

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাহ্ চমৎকার। আপু আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর একটি ইফতারির আয়োজন করেছেন। আপনার ইফতারের আয়োজন দারুন হয়েছে। আসলে আপু আপনি বেশ সুন্দর আইটেমে একটি ইফতারের আয়োজন করেছেন। আসলে আপু সারাটা দিন রোজায় থাকার পরে যখন ইফতারি নিয়ে বসে যায় তখন তার মজটাই আলাদা। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

Posted using SteemPro Mobile

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপনার ইফতার আয়োজন সম্পর্কের পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে আপু ছোটবেলায় রোজা রাখার সেই দিনগুলির কথা এখন বেশ ভালো রকম মনে পড়ে। যা হোক আপনার ইফতার আয়োজনে অত্যন্ত সুস্বাদু স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গুলো দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

আমার পোস্ট টি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

Posted using SteemPro Mobile

এই সময় সবাই বাড়িতে চলে আসে। তার পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন সবাই মিলে একসঙ্গে ইফতার করার মজাই আলাদা ।ছোটবেলার কথা কি বলবো মা যখন সেহরি খাওয়ার জন্য ডাকতো না সকালে উঠে এমন কান্নাকাটি করতাম যেই স্মৃতিটা সবারই রয়েছে। খুবই ভালো লাগলো দেখে নিজের পরিবার আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ইফতারের যে আয়োজন করেছেন। অনেক সুন্দর মুহূর্ত ছিল। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

এতো সুন্দর গঠন মূলক মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।ভালো থাকবেন।

Posted using SteemPro Mobile

রমজান মাসে আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন মানুষকে ইফতারি অথবা সেহরি করাতে পারলে নিজের কাছেও অনেক ভালো লাগে। তাছাড়া রমজান মাসে ইফতার এবং সেহরি হলো রোজাদারদের জন্য অনেক বড় একটি নিয়ামত। একজন রোজাদারকে ইফতারি করাতে পারলে রোজা রাখার সমান সওয়াব হয়। আপনাকে দেখলাম অনেক আইটেম দিয়েই মেহমানদেরকে ইফতারি করিয়েছেন। তারা যাওয়ার সময় আপনার ছেলের জন্য বেশ কিছু গিফট দিয়ে গেছে। বিষয়টি খুবই ভালো লেগেছে।

Posted using SteemPro Mobile

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার মন্তব্য টি করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আসলেই আপু রমজানে কাছের মানুষগুলোকে মন ভরে ইফতার করাতে পারলে ভালই লাগে। ‌ আপনি আপনার কাছের কিছু মানুষজনকে বাসায় ইফতারের দাওয়াত দিয়েছেন। সবাই মিলে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আপনার ছেলের জন্য তো সবাই খুব সুন্দর গিফট এনেছে। ভালো লাগলো মুহূর্তগুলো দেখে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

আমার পোস্ট টি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

Posted using SteemPro Mobile

image.png

একদম ঠিক বলেছেন আপু রমজান মাস আসলেই ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়। আর হারানো সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়লে দুই চোখের কোনে জল চলে আসে। আপু আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। দারুন লিখেছেন আপনি।

আমার অনুভূতি গুলো যে আপনি উপলব্ধি করতে পেরেছেন এজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে এই রমজান মাসে আপনারা সবাই মিলে যেভাবে ইফতারের বিভিন্ন খাবারের ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তা দেখে আমার খুব লোভ হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যে আমি আবার বাংলাদেশের ঘুরতে গিয়ে আপনাদের সাথে ইফতার করে আসি। আর পুরনো স্মৃতিগুলো সব সময় আমাদের মনে পড়লে সেই দিনগুলোর জন্য আমাদের মনটা খারাপ হয়ে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার এই ইফতারের সময় গুলো পোষ্টের মাধ্যমে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

চলে আসেন ভাইয়া এর চেয়ে আরও ভালোভাবে খাওয়াবো আপনাকে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করলেন আপু। আপনি ঠিক বলছেন আগে রমজানের দিন আসলে সবাই সবাইকে দাওয়াত করে খাওয়াতো। এখনের মানুষের মধ্যে অনেকটা আন্তরিকতা কমে গেছে বললে চলে। আপনি বেশ সুন্দর আয়োজন করলেন ইফতারিতে মুখরোচক খাবারের। ইফতারিতে মুখরোচক খাবার না হলেই জমে না আপু। অনেক ভালো ভালো খাবার খাওয়ালেন। খুব সুন্দর গিফট ফেলেন আপনার বাবুর জন্য। মুহূর্তটি পড়ে অসাধারণ ভালো লেগেছে।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া ইফতার মুখরোচক না হলে জমে না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার একটা মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

রোজা রাখতে চাইলে আমার মাও নিষেধ করতে আপু। তবুও আমরা রোজায় থাকতে চাইতাম সেহরিতে ডাকলে উঠতে চায়তাম না ।যদিও উঠতাম অল্প একটু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম । আসলেই সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়লে অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপু ইফতারের আয়োজনের মাধ্যমে সেই ছোটবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

মানুষকে খাওয়াতে পারার মাঝে অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করে। আপনি ছোটবেলার স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন আপু। তবে আগের সেই বন্ধন আসলেই এখন আর নেই। তবে আপনার দারুণ দারুণ আয়োজন দেখে বেশ ভালো লাগলো। বিশেষ করে শশার শরবত এর বিষয় টি ইন্টারেস্টিং লাগলো। রেসিপি শেয়ার করবেন আপু।

Posted using SteemPro Mobile

বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন ইফতারি তৈরি করে শেয়ার করেছেন। আপনার বাড়িতে ইফতারের জন্য মেহমান এসেছিল আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম। ইফতারির মধ্যে লেবুর শরবত তৈরি দেখে আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগছে। আসলে রমজান মাসে সারাদিন না খেয়ে থেকে সব থেকে শরবত খেতে বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করা যাবে।

Posted using SteemPro Mobile