বোনের সাথে ঘুরাঘুরির শেষ দিন

in hive-129948 •  10 months ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। প্রতিদিনের মতো আজও আমি নতুন একটি ব্লগ শেয়ার করছি।আমার ফুফাতো বোনের সাথে ঘুরাঘুরি করেছি অনেক। সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

received_1058619225415898.jpeg

আপু আসার দ্বিতীয় দিন আমরা কোথায় যাব সেটা আগের দিন রাতে ঠিক করে রেখেছিলাম। সবাইকে বলে রেখেছিলাম যারা যারা ঘুরতে যাবে তারা যেন সকাল সকাল উঠে পড়ে। কারণ পরের দিন যেখানে ঘুরতে যাব সেখানে ঘুরতে অনেকটা সময় লেগে যাবে। আবার বাসায় এসে দুপুরের খাবার খেতে হবে কারণ আম্মু আজকে অনেক ধরনের রান্না করবে পোলাও মাংস রোস্ট। ঘুরতে ঘুরতে সবাই টায়ার্ড হয়ে যাবে এসে ভারী খাবার খাব এটাই সবার প্ল্যান ছিল।

আপুর অসুস্থতার জন্য রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না এজন্য আমরা সবাই চিন্তা করছিলাম যে আপু রাতে যদি ঠিকমতো না ঘুমায় তাহলে পরের দিন কিভাবে ঘুরবে। কারণ ওখানে তো ঘুরে ঘুরে সবটা দেখতে হবে। পরের দিন আল্লাহর রহমতে ঘুম থেকে উঠে শুনলাম আপু অনেক সুন্দর ঘুমিয়েছে এবং আমি ওঠার আগে আপু চা আর ভাপাপিঠা খেয়ে নিয়েছে। যেটা আপুর অনেক বেশি পছন্দের। এক কাপ চা আর একটা ভাপা পিঠা হলে আপুর আর কিছু সকালে চায় না। এবার আমি ঘুম থেকে উঠে সবাইকে তাড়া দিচ্ছিলাম যাতে সবাই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে না এবং আমার কথা মত নাস্তা শেষ করে মোটামুটি রেডি হয়ে নিয়েছে সকাল দশটার মধ্যে। এরপর আবারও আমরা একটা বড় অটো রিক্সা ঠিক করলাম কারণ সবাই একসাথে মজা করতে করতে যাব। আর যে দুই একজন বাকি থাকবে তারা মোটরসাইকেলে যাবে আমার ভাইয়ের সাথে।
IMG-20240111-WA0009.jpg

IMG-20240111-WA0001.jpg

আমরা আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে এস কে এস ইন রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছিলাম। এখানে ঘুরতে একজন প্রতি দুইশ টাকা টিকিট কাটতে হয় এবং ভিতর আলাদা আলাদা আরো অনেক কিছু আছে যেটা আলাদা টিকিট কাটতে হয়। এখানে আমি এর আগেও ঘুরতে গিয়েছিলাম তবে এখন আরও অনেক বেশি সুন্দর করেছে সবার কাছে শুনেছি এবং অনেক কিছু সংযোজন হয়েছে যেটা আমার দেখা হয়নি। তাই আপুর সাথে ঘুরবো এটা চিন্তা করে গিয়েছিলাম। আমরা প্রায় ৭ জন গিয়েছিলাম এখানে গিয়ে প্রথমে আমার মেয়ে তো অনেক খুশি কারণ এখানে বাচ্চাদের খেলার জন্য নানা রকম সরঞ্জাম রয়েছে যেটা অন্য কোথাও এর আগে আমার মেয়ে দেখেনি । সে এগুলো পেয়ে তো মহা খুশি। খুব সুন্দর সুন্দর গান বাজছিল এবং গানগুলো অনেক সুন্দর ছিল এখানে এইটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে।

এদের নিজস্ব একটি রেডিও স্টেশন ও আছে যেটা গাইবান্ধা প্রথম। এখানে নানান ধরনের প্রোগ্রাম হয় এবং ভালো লাগে শুনতে ।বাচ্চারা তো সুইমিংপুল অনেক বেশি পছন্দ করে ওখান থেকে বেরিয়ে সবাই গেল সুইমিং পুলের দিকে। ওখানে গিয়ে আমরা হালকা একটু নাস্তা করে নিয়েছি কারণ আসতে আসতে সবার একটু ক্ষুধা লেগে গিয়েছি। ওখানে বসে আমরা বিশ্রামও নিয়েছি কারণ বেশ খানিকটা হেঁটেছি এবং ওখানে বসে চারপাশটা দেখতে বেশ ভালই লাগছিল বাচ্চারা তো সুইমিংপুলে নামার জন্য অস্থির হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এত ঠান্ডা মধ্যে আমি নিষেধ করেছি সবার জ্বর সর্দি ধরে যাবে তখন আর ঘোরাঘুরি করা হবে না।

IMG-20240119-WA0004.jpg

IMG-20240119-WA0002.jpg

IMG-20240119-WA0001.jpg

এখানে যেটা দেখলাম একটু পরপর বিভিন্ন জায়গার বিভিন্ন ধরনের নাম দেয়া আছে যে নাম গুলো অনেক বেশী সুন্দর এবং ইউনিক।নানান ধরনের ফলের গাছ বাঁশের ঝাড় হাজার হাজার গাছ লাগানো আছে যেগুলোর নাম হয় হয়তো আমরা অনেকেই শুনি না বা জানিনা। এরপর আবার আমি হাট ছিলাম গল্প করছিলাম। তবে বেশ রোদ উঠেছিল সেদিন আর বাচ্চারা চারপাশে ঘুরছিল আর ছবি তুলছিল। আসলে জায়গাটা এত বেশি সুন্দর যেটা সেটা বলে বোঝানো যাবে না। সবচেয়ে যেটা বেশি ভালো লেগেছে যে এত বেশি পরিষ্কার এত বড় রিসোর্ট কিন্তু কোথাও কোন ময়লা নেই কোথাও কোন অপরিষ্কার নেই। সব একদম ঝকঝকে তকতকে। এখানে একটা ঝুলন্ত ব্রিজ আছে যেটার ছবি আমার কাছে নেই।

IMG-20240119-WA0007.jpg

IMG-20240119-WA0005.jpg

এখানে থাকার জন্য যে রুমগুলো রয়েছে সেগুলো বিভিন্ন রেঞ্জের আছ। রুম থেকে বেরিয়ে বাইরে থেকে যেটা দেখা যায় রুম থেকে বেরিয়ে পুকুরের উপরে বারান্দা যা অনেক বেশি সুন্দর। এত পরিকল্পিতভাবে রিসোর্ট তৈরি করা হয়েছে যেখানে ভিতরেএকটি পরিবার এসে সারাদিন খুব সুন্দর সময় কাটাতে পারব। হ্যাঁ, এত ধরনের গাছ এত ধরনের ফুল লাগানো আছে যেটা দেখলে সবার মন ভালো হয়ে যাবে। আমরা তো গিয়েছিলাম ডিসেম্বরে ৩০ তারিখ। ভিতরে কনসার্টের আয়োজন করা হচ্ছিল এবং কনসার্টের জায়গাটাও বেশ খানিকটা বড়। সবমিলিয়ে আমার কাছে এবং সবার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। যা বলে বোঝানো যাবে না এর মধ্যে ঘড়ির কাঁটায় ঠিক দুপুর২ টা বেজে গেছে। এবার আমাদের বাসায় যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে এবং বাসা থেকেও ফোন আসা শুরু হয়েছে যাতে আমরা তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যাই।

IMG-20240119-WA0006.jpg

কি আর করা এবার আমরা তাড়াহুড়ো করে সবাই বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দে। যেভাবে এসেছিলাম একইভাবে সবাই গল্প করতে আবারো সবাই বাসায় গিয়েছি। সবাই অনেক বেশি টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিলাম ফ্রেশ হয়ে সবাই তাড়াহুড়ো করে খেয়ে নিয়েছি।

আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ধন্যবাদ সবাইকে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপুসহ তাহলে খুব ভালো ইনজয় করেছেন। আর রিসোর্ট টা তো অসাধারণ দেখতে। জায়গাটা এত পরিছন্ন যে মনে হয় না এটা আমাদের দেশের কোন জায়গা। আসলে বড় জায়গাগুলো খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। যেখানে গেলে মন ভালো হয়ে যায়। আর আপনার মেয়ে তো দেখছি অনেক খুশি হয়ে গিয়েছে সেখানে গিয়ে। খুব ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্টটা পড়ে।

আসলেই অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি আপু। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল আপু।

এস কে এস ইন রিসোর্ট দেখতে তো অনেক সুন্দর। পরিবার নিয়ে বেশ সুন্দর সময় উপভোগ করেছেন। এমন জায়গায় ঘুরতে যেতে সবাই পছন্দ করেন। আপনার তোলা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে আপু। আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এতো সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। ভালো থাকবেন।

গাইবান্ধার এস কে এস ইন রিসোর্ট টি খুবই চমৎকার করেছে। আমারও খুব যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সময়ের অভাবে যাওয়া হয়নি। আমার সাথের অনেকে গিয়েছিল। তাদের ছবি দেখেছিলাম। তাছাড়া ভালো কাজ করেছেন আপু শীতের মধ্যে বাচ্চাদেরকে সুইমিং পুলে নামতে না দিয়ে। কারণ এই ঠান্ডার মধ্যে সর্দি কাশি লেগে যেতে পারতো। বোনের সঙ্গে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন বোঝা যাচ্ছে।

একবার সময় করে দেখে যেতে পারেন ভালো লাগবে আপু।অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার একটা মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।