দীর্ঘ দিন পর নিজের ক্ষেতের ভুট্টা তুললাম

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে দীর্ঘ দিন পর নিজের ক্ষেতের ভুট্টা তুলার অনুভূতি শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।

ধানের পাশাপাশি শুরু হয়ে গিয়েছে, ভুট্টা তোলার আমেজ।প্রতি বছরের তুলনায় এবছর ভুট্টার ফলন বেশ ভালোই হয়েছে।তবে, এটি সম্ভব হয়েছে শুধু মাত্র বৃষ্টি পাত না হওয়ার কারণে। বৃষ্টিপাত হলে হয়তো এতো পরিমাণ ভুট্টার ফলন হতো না। কেননা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ভুট্টা চাষের জন্য অনুপযোগী । সৃষ্টিকর্তা যা করেন, তা তার বান্দার মঙ্গলের জন্য করেন।এ বছর সকল কৃষকদের মুখে সোনার হাঁসি ফুটে উঠেছে।যারা ধানের পাশাপাশি ভুট্টা চাষ করেছে তারা একটু বেশি লাভবান হবে এ বছর।আর ধানের থেকে ভুট্টার দাম তুলনামূলক অনেক টা বেশি। মাঠের মধ্যে যাদের জমিজমা একটু বেশি তারা এ বছর অনেকটাই লাভবান হবে। কৃষকেরা তাদের মনের আনন্দে বাংলা গান গাইছে আর সোনার ফসল ঘরে তোলার জন্য কাজ করছে। বিশেষ করে গ্ৰাম এলাকা গুলোর মধ্যে কাজের চাপ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।কেউ ধান কাটা মাড়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আবার কেউ ভুট্টা ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

বেশ কিছুদিন ধরেই বাসায় ভুট্টা তোলার কথা চলছে, কিন্তু বেশ কয়েকটি সমস্যার কারনে ভুট্টা তোলা হচ্ছিল না । গতকাল ভাবলাম ভুট্টা গুলো তুলে নিয়ে আসা যায়। এরপর আমার আব্বু খুব সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আমাদের গ্ৰাম থেকে বেশ কয়েকজন কামলা কে বলে আসে । এরপর আমরা ভাত খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলাম ভুট্টা তোলার উদ্যেশে। আমাদের বাসা থেকে ভুট্টা ক্ষেতের দুরুত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে।এই পথ আমাদের কে হেঁটেই যেতে হয়, কেননা এই রাস্তার মধ্যে কোন ধরনের ভ্যান, রিকশা চলাচল করে না। কি আর করার, আমরা হেঁটে হেঁটেই ভুট্টা ক্ষেতের উদ্যেশে যেতে শুরু করলাম। বেশ কয়েক মিনিট হাঁটার পর আমরা আমাদের ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে চলে আসলাম।

ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে যেতে প্রায় দশ থেকে পনের মিনিট সময় লেগে গিয়েছিল। এর পর আমরা বস্তা নিয়ে ভুট্টা তোলার কাজ শুরু করলাম। কয়েকটি ভুট্টা তোলার পর ভুট্টা গুলো দেখে বুঝতে পারলাম, ক্ষেতের মধ্যে ভুট্টা অনেক ভালো হয়েছে। এতো সুন্দর ফলন দেখে আমার বাবা অনেকটা খুশি হয়েছিল। কেননা এবছর অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু বেশি ফলন হয়েছে। শুধু আমাদের এরকম ফলন হয়নি, এ বছর আমাদের মাঠের প্রত্যেকটি কৃষকের ক্ষেতের ভুট্টা ফলন অনেক সুন্দর হয়েছে। আসলে বৃষ্টিপাত না হয়ে আমাদের মাঠের ধান ক্ষেত এবং ভুট্টা ক্ষেত, উভয়েরই জন্য অনেক বেশি ভালো হয়েছে।

অল্প কিছু সময়ের মধ্যে আমরা অনেক পরিমাণ ভুট্টা উত্তোলন করলাম। একজন লোক ভুট্টা গুলো বস্তার মাধ্যমে জমি থেকে রাস্তার মধ্যে নিয়ে যাচ্ছিল। তার একটু বেশি বেশি কষ্ট হয়ে পড়ছিল, তার কষ্ট দেখে আমিও তাকে একটু সাহায্য করলাম।তার সাথে বেশ কিছুক্ষণ সময় ভুট্টা রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার কাজ করলাম। আসলে ভুট্টার ওজন প্রচুর।আর এই ভুট্টা গুলো বস্তায় ভরে রাস্তার মধ্যে নিয়ে যাওয়া একটুখানি কথা নয়। বেশ কিছুক্ষণ সময় ভুট্টা গুলো রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার কাজ করার পর অনেকটা হাঁপিয়ে গিয়েছিলাম। আসলে দীর্ঘ দিন পর কাজ করছিলাম, তাই একটু সমস্যা হচ্ছিল।এর আমি একটি বাগানের মধ্যে গিয়ে বসে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলাম।বিশ্রাম নেয়ার পর বেশ ভালো লাগছিলো।

বেশ কিছুক্ষণ সময় বিশ্রাম নেয়ার পর একটু ভালো লাগছিল। এখন আমি আবার আমাদের ভুট্টা ক্ষেতের মাঝে চলে আসলাম ভুট্টা তোলার জন্য। বেশ কিছু সময় ভুট্টা তোলার পর আমাদের মাঝে একজন ভুট্টার ব্যবসায়ী চলে আসে। এরপর আমি ভুট্টার ব্যবসায়ীর সাথে বেশ কিছুক্ষণ সময় কথা বললাম।সে মূলত ভুট্টা কেনার জন্য এখানে এসেছিলেন। আমি তার কাছে থেকে ভুট্টার দাম শুনে নিলাম।সে আমাকে বলে, কাচা ভুট্টা ৮২০ টাকা এবং শুকনো ভুট্টা একটু বেশি। আমি তাকে বিকাল বেলা আমাদের বাসায় চলে আসতে বলি। এরপর সে আমাদের কাছে থেকে চলে আসে। এখন আমি আবার ভুট্টা তোলার কাজ শুরু করলাম। বেশ কিছু সময় ভুট্টা তোলার পর আবার অনেকটা হাঁপিয়ে গিয়েছিলাম। প্রচন্ড রোদ উঠেছিল। এরপর আমি বাসায় চলে আসি। কেননা আমি রোদের মধ্যে থাকতে পারি না।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে রংপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।