অনুগল্প "ভালোবাসার ব্যর্থ প্রতিশ্রুতি"

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)


Copyright Free Image Source : PixaBay


বৈশাখীর বাড়ির সামনে ট্যাক্সি থেকে নেমেই অর্ক বেশ কিছুটা অবাক হয়ে গেলো । বাড়িরটার বেশ ছন্নছাড়া চেহারা হয়েছে । পাঁচ বছর আগেও এমনটি ছিল না । বাড়ির মেন গেট পেরিয়ে কিছুটা এগোলেই দু'পাশে প্রচুর ফুলের কেয়ারি ছিলো এক সময় । আর বাড়ির সদর দরজার দু'পাশে ছিল অনেকগুলি ফুলের টব । কিছুই এখন আর নেই । লনে শুধু প্রচুর ঘাস জন্মেছে ।

দীর্ঘদিন রঙ না করা সাবেকি ঢঙে করা বিশাল বাড়িটা আজকে যেন জীর্ন হয়ে ধুঁকছে । বৈশাখীর ভাই এখানে থাকে না । দিল্লিতে এক বড় বেসরকারি হসপিটালের ডাক্তার সে । আলতো করে কলিংবেলের সুইচে আঙুল রাখলো অর্ক । কয়েক মুহূর্তের দ্বিধা । এরপরে বেল বাজালো । একবার বাজিয়েই wait করতে লাগলো ।

বেশ কিছুক্ষন সময় অতিবাহিত হলো । এমন সময় দরজা খুলে গেলো । বৈশাখীর মা দাঁড়িয়ে । উনি অর্ককে ভেতরে আসতে বললেন ।

ঢুকেই প্রকান্ড ড্রয়ইং রুম । সোফায় বসে বছর তিনিকের একটি মিষ্টি মেয়ে খেলা করছে বৈশাখীর বাবার সঙ্গে । অর্কের সাথে কুশল বিনিময় হলো বৈশাখীর বাবার । মেয়েটাকে একটু গাল টিপে আদর করলো অর্ক । তারপরে জানতে চাইলো বৈশাখী কোথায় ।

বৈশাখীর মা জানালেন বৈশাখী তার রুমেই আছে ।

একটু ইতস্তত করে অর্ক সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে বৈশাখীর রুমের দরজায় নক করলো । এক মুহূর্তের অপেক্ষা । সহসা দরজা খুলে গেলো । ধীর পায়ে বৈশাখী এসে দাঁড়িয়েছে খোলা দরজার ওপারে ।

নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো শুধু দু'জন দু'জনের দিকে । এতো কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছে দু'জনে তবু মনে হচ্ছে দু'জনের মধ্যে এক সমুদ্র দূরত্ব রয়েছে আজ । হাতে হাত রাখার, বুকে জড়িয়ে ধরার কোনো অধিকার নেই আজ তাদের কারোরই ।

বেশ কিছুক্ষন পরে নীরবতা ভাঙ্গলো বৈশাখীই । ক্লান্ত ভগ্ন স্বরে বললো - "ভেতরে এসো ।"

ধীরপায়ে রুমে ঢুকলো অর্ক । বৈশাখী রুমের আলো কিছুটা বাড়িয়ে দিলো । অর্ককে বেডে বসতে দিয়ে নিজে একটি চেয়ার টেনে তার সামনে বসলো । কিছুক্ষন নীরবতা । অর্ক লক্ষ করলো বৈশাখীর চোখের কোলে এখনো জল, দুই গালে জলের রেখা এখনো মুছে যায়নি ।

সীমাহীন এক নৈঃশব্দ্য ঘিরে রইলো দু'জনকে । সহসা দু'জনেই সব কথা হারিয়ে ফেলেছে । জীবনের সব কথা ফুরিয়েছে যেনো, কিছু নেই বলার, কিছু নেই শোনার । বেশ কিছুক্ষন পরে বৈশাখীই কথা বললো -

"অনেক রোগা হয়ে গিয়েছো তুমি ।"

জবাবে মৃদু স্বরে অর্ক বললো -

"তুমিও তো অনেক রোগা হয়ে গিয়েছো ।"

প্রত্যুত্তরে বৈশাখী কিছুই বললো না শুধু একটু বোকাটে হাসি দিলো । সেই হাসিতে যে কী এক সীমাহীন বেদনা লুকিয়ে ছিলো তা অর্কের চোখে ধরা পড়লো । সহসা অর্ক বৈশাখীর নরম কোমল শীর্ণ হাতটা নিজের হাতের মুঠিতে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে ফেললো । বৈশাখীও আর নিজেকে সামলাতে পারলো না । ঝাঁপিয়ে পড়ে অর্কের বুকে মাথা রেখে ডুকরে কেঁদে উঠলো । এই তার পরম আশ্রয়স্থল যা সে জেদের বশে ত্যাগ করেছিল সেদিন ।

অর্ক বাধা দিলো না । কাঁদুক । বৈশাখী কাঁদুক । কেঁদে কেঁদে যদি মনটা হালকা হয় । সে নিজেও তো কাঁদছে । বাঁধভাঙা অশ্রুর জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে তার দুই গাল । এক সময় দু'জনেই নিজেদেরকে সামলে নিলো । চোখ মুছে ধরা গলায় বৈশাখী বললো -

"তোমার বিয়ে কবে অর্ক ? আমাকে তো এখনো কার্ড দিলে না ?"

সহসা যেন ইলেকট্রিক শক খেলো অর্ক -

"তুমি তুমি ...."

-"জানলাম কি করে তাই ? পারো আমার ছোট বোন হয় । ছোট মাসির মেয়ে । তোমাকে কোনোদিন বলা হয়নি ।"

-"কি বলছো কি তুমি ? তুমি সব জানো ?"

-"হ্যাঁ, অর্ক আমি জানবো না তাই কি হয় ? গত পাঁচটি বছর ধরে আমি তোমার খোঁজ খবর খেয়াল সবই রেখেছি । তুমি রাখোনি । চাইলেই পারতে রাখতে তুমি । কিন্তু, আমি যে অন্যায় করেছি তাতে তুমি আমার খোঁজ খবর রাখবে না সেটা আমিও মেনে নিয়েছিলাম । তাই কোনোদিনও রাগ অভিমান হয়নি । কিন্তু, কষ্ট হয়েছিল খুব । বিশ্বাস করো । খুব কষ্ট ।"

কী বলবে অর্ক ! সে শুধু খোঁজ নেয়নি বৈশাখীর এই জন্য যাতে বৈশাখীর জীবনে অতীত কখনো ছায়া না ফেলতে পারে । তার সংসারে যেন কোনো আঁচ না পড়ে । অর্ক চেয়েছিলো বৈশাখী সুখে থাকুক । সে জন্যই সে কোনোদিনও বৈশাখীর খোঁজ নেয়নি । বড়লোকের ছেলে, আমেরিকায় সেটলড, ভালো জব করে । সুতরাং, সহজ সরল অর্ক ভেবেই নিয়েছিল যে বৈশাখী সুখেই আছে ।

অর্ক কিছুই বললো না তাই । শুধু মাথা নিচু করে নীরব রইলো । আবার নীরবতা গ্রাস করলো দু'জনকে । নীরবতা ভঙ্গ করে সহসা বৈশাখী বললো -

"যাই তোমার জন্য চা-টা কিছু আনি । কতকাল পরে তুমি এলে বোলো ?"

চেয়ার ছেড়ে উঠতে গেলেই বৈশাখীর হাতটি হঠাৎ অর্ক ধরে জোর করে নিজের পাশে এনে বসালো -

"মৌ, আমি তোমাকে আবার চাই আমার জীবনে । আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই ।"

"মৌ", কতকাল পরে এই ডাকটা শুনলো বৈশাখী অর্কর মুখে । তার বুকের ভেতরটা উথাল পাথাল করছে । খুব, ইচ্ছে করছে অর্ককে বুকে জড়িয়ে আদরে আদরে ভরিয়ে দিতে । কিন্তু, তার মাসতুতো বোনের কি হবে তাহলে ? অন্য কোনো মেয়ের সাথে যদি অর্কর বিয়ে ঠিক হতো তবে, সে অর্কর আজকের প্রস্তাবে সাড়া দিতো অনায়েসেই । কারণ, সে অর্ককে ছাড়া জীবনে আর কোনো পুরুষকে তো ভালোবাসেনি । আর ভালোবাসার মানুষটার সাথে ঘর করতে কোন মেয়েই না চায় ?

-"না, তা আর হয় না অর্ক ।", খুব ধীর স্বরে বললো বৈশাখী ।

"কেন হয় না মৌ ? কেন ?", অর্ক কেঁদে ফেললো ।

"যে নীড় নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেখানে আর ফিরে আসতে নেই । তাকে পরিত্যাগ করে নতুন করে অন্য কোথাও ভালোবাসার নীড় বাঁধতে হয় । পারো আমার বোন হয় । সে সব কিছুই জানে । তাকে এই বিয়েতে রাজি করিয়েছি আমি । তবে, সে তোমাকে সত্যি সত্যিই ভালোবাসে । তোমার একটু আগের পাঠানো মেসেজটা পেয়ে মেয়েটা খুব কেঁদেছে । আমি তাই তোমার কাছে আমার ভালোবাসার ভিক্ষা চাইছি । ভিক্ষা দাও আমাকে । আমার বোনকেই তুমি বিয়ে করে সংসার করবে । দেবে না কথা ? প্লিজ, সোনা !"

কাঁদতে কাঁদতে অর্ক বললো - "আর তুমি ?"

"আমার জন্য ভেবোনা তুমি । আমি তো এখন বাবা-মায়ের কাছেই থাকবো । আর আমি তো এখন আর একা নই । তুমি আছো, পারো আছে । আমি ঠিকই থাকবো । অন্তত বেঁচে তো থাকবো । মেয়েটাকে মানুষ করতে পারলেই আমার ছুটি ।"

বৈশাখীর বুকের ভেতরটা একটা জমাট বাঁধা বরফের পিন্ড এখন । নিজের প্রিয়তমকে অন্যের হাতে তুলে দিতে কয়টা মেয়েই পারে ! বৈশাখী পেরেছে । তবে, এই আঘাত সে আর সামলাতে পারবে না, সে কথা খুব ভালো করেই জানে । অর্কের জন্য সব চাইতে বেশি কষ্ট হচ্ছে । এত ভালোবাসে ছেলেটা তাকে, আর সে শুধু বঞ্চনাই করে গেলো তাকে । ব্যর্থ জীবন তার । সব কিছুতেই চরমভাবে ব্যর্থ বৈশাখী ।

অনেক রাতে বাড়ি ফিরে এলো অর্ক । ঘুমের আগে মোবাইলে মেসেজ চেক করলো অর্ক । দুটি মেসেজ এসেছে । একটি বৈশাখীর, আরেকটি পারমিতার । আগে বৈশাখীর মেসেজ চেক করলো ।

"প্রিয়তম তোমায় আমি ত্যাগ করেছি, কিন্তু, প্লিজ আমায় ত্যাগ করো না । জানি কিছুদিন পরে তুমি অন্যের হয়ে যাবে, তারপরেও আমারই থাকবে ।"

পারমিতার মেসেজ চেক করলো এরপরে অর্ক কাঁপা কাঁপা হাতে -

"তুমি শুধু আমার । শুধুই আমার । আর কারো নও । আর যেন কখনোই দিদির বাড়িতে যেতে না দেখি ।"

রুমের লাইট অফ করে দিলো অর্ক । তার এখন বড্ড আঁধার প্রয়োজন । নিজেকে হারাতে চায় নিকষ কালো আঁধারের বুকে -

"এই করেছ ভালো, নিঠুর হে
নিঠুর হে, এই করেছ ভালো

এমনি ক'রে হৃদয়ে মোর
তীব্র দহন জ্বালো, নিঠুর হে"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

তিনজনের দিক থেকে চিন্তা করলে কাহিনীটা তিন রকমের হবে এবং দোষ গুলো ঠিক আলাদা ভাবে তিনজনেরই হবে। কিন্তু দিনশেষে এভাবেই কিছু ভালোবাসার মৃত্যু হয়। আর কিছু ভালোবাসার জয় হয়, খুব সুন্দর লিখেছেন দাদা।

দাদা কি বলবো!! গল্পটি পড়ার সময় আমারেই ভেতরটা কেঁপে উঠছিল। এখনো এরকম সত্য ভালবাসা খুবই কম দেখা যায় তবে হাজারো মানুষের মধ্যে একজন মানুষ এভাবে ভালবাসতে পারে। তাদের ভালোবাসার মানুষ গুলো এভাবেই দুরে চলে যায় কিন্তু ভালোবাসা যেন আরো বাড়তেই থাকে। তেমন কিছু বলতে পারছি না তবে গল্পটি পড়ে সত্যিই অনেক আবেগী হয়ে গেলাম। অনু গল্পটি পড়ার সময় শুধুমাত্র মন থেকে একটি কথা ভাবছিলাম, এরকম পরিস্থিতি যাতে অন্য কোন মানুষের জীবনে কখনোই না আসে। অর্ক যখন বৈশাখীকে জড়িয়ে ধরলো, সত্যি বলতে সেই যন্ত্রণা বেদনা যেন সব কিছুকেই হার মানাতে বাধ্য । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি অনুগল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য

সত্যিকারের ভালোবাসা আসলে এমনটাই হয়ে থাকে । কোনদিনও তাকে না যায় ভোলা, না যায় মোছা । শুধু ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে এসে কাঁদিয়ে দিয়ে যায় ।

দাদা কোন ভাবে কি অর্কর সাথে বৈশাখীর মিলন করা যায় না?? সত্যি দাদা গল্পটি শেষ করেছেন কিন্তু কেন জানি সে রকম স্বস্তি পাচ্ছি না! কেন জানি মনে হচ্ছে আমার জীবনের সাথে এটি ঘটে গিয়েছে। দাদা এই গল্পের শেষে অর্ক এবং বৈশাখের মিলন চাই। আরো একটি পর্ব চাই দাদা। অর্ক এবং বৈশাখীর মিলন চাই দাদা, সত্যি বলতে খুবই কষ্ট লাগছে বৈশাখের জন্য।

দাদা কি গল্প উপহার দিচ্ছেন ২৫ বছর আগের ভালোবাসা আবার জাগিয়ে তুলেছেন। স্মৃতির পাতায় ধুলো জমা পড়ে গিয়েছে। তবুও কেন জানি গল্পটা একেবারেই সুস্পষ্ট করে দিয়েছে। ভালোবাসা এমন একটা জিনিস চাইলে জোর করে কেউ নিতে পারে না। আর চাইলেও ভাগাভাগি করা যায় না। অর্ক পরমিতা ভালোবাসা যেন আঁকড়ে ধরেছে। সকলকে কারো হারানোর ভয়ে কারনা পাওয়ার আশা কাউকে জেনেশুনে দূরে ঠেলে দেওয়া ত্রিভুজ প্রেম কাহিনী অসাধারণ ছিল। আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম। ভালোবাসা অবিরাম দাদা।

বাব্বা, আপনার পুরোনো প্রেম ছিল নাকি এমনটা ? ২৫ বছর আগের ভালোবাসা ?? মানে তখন কতটুকু ছিলেন ? বাচ্চা বয়সের প্রেম ছিল, তাই না ?

15 16 ছিল দাদা, ওই প্রেম ভালোবাসা এইতো জীবনটাকে তছনছ করে দিলো দাদা। এখন চোখে শুধু সরিষার ফুল দেখি।

বৈশাখী মেয়েটিকে খুবই খারাপ ক্যারেক্টারের মেয়ে মনে হচ্ছে। নিজের বোনকে অর্কর সঙ্গে বিয়েতে রাজি করিয়ে তারপর নিজের সব দুঃখের কাহিনী অর্কের কাছে বলার কি দরকার ছিল? সে যদি অর্ককে আবার ফিরে পেতে চায় তাহলে কেন বোনকে এ বিয়েতে রাজি করালো। দুটি মানুষকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিল বৈশাখী। অর্ক কে মুক্ত করে দিয়ে আবার কোনো না কোনোভাবে পিছন থেকে টেনে ধরে রাখল ম্যাসেজটি দিয়ে। অর্ক এখন কি করে সেটাই দেখার অপেক্ষায়।
পরবর্তী পর্ব দাদা খুব তাড়াতাড়ি দিবেন প্লিজ। অসম্ভবভাবে প্রেমে পড়ে যাচ্ছি গল্পটির।

আপনার একটু বোঝার ভুল হচ্ছে । বৈশাখী নিজের সব কিছু বিলিয়ে দিলো । সে চাইলেই অর্কের প্রস্তাবে সম্মত হতে পারতো । কিন্তু, সে রাজি হয়নি । কতটা মহৎ অন্তঃকরণ থাকলে এমনটি সম্ভব , ভাবুন । আর অর্ককে চিরতরে পর করে দেয়ার আগে শুধু সে নিজের গোপন জমানো ব্যাথাটুকু অর্কের সাথে শেয়ার করতে চেয়েছিলো । তাই, অর্ক বাড়িতে আসতে সে বাধা দেয়নি ।

এটাই তো শেষ পর্ব । আরো পর্ব লিখবো কি করে ?

শেষ করে দিলেন 😭😭? আরও বাড়ানো যায় না? ভালোই তো লাগছিল পড়তে।

আমার কাছে বৈশাখীকে একটুও মহৎ মনে হয়নি। কারণ সে একবারও চিন্তা করল না যে অর্ক নতুন একটি জীবনে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। তাকে এখন এরকম দুঃখের কথা বলে কষ্ট দেওয়ার কোন মানে হয়না। অর্ক কথা একবারও সে চিন্তা করেনি।

এখন থেকে নতুন গল্প লিখবো । ভূত, রহস্য, রোমাঞ্চ আর এডভেঞ্চার । ওগুলোই ভালো পারি । তাও, আপনাদের অনুরোধ চার চারটি প্রেমের গল্প লিখে ফেললাম । হে হে :)

নেহি। আরো চাই আরো চাই প্রেমের গল্প। লিখতে হবে লিখতে হবে। তা না হলে কিন্তু আন্দোলনে যাবো।

মা গো মা । মাথায় আসে না প্রেম পীরিতির গল্প । কি যে করি ।

আপনার মাথায় আসে না এই কথা বিশ্বাস করতে বলেন? যে কিনা ঘর ভর্তি .....এর স্বপ্ন দেখে।

পুরোটা বললেন না যে ,

"আমি স্বপ্ন দেখি ঘর ভর্তি প্রেমিকার। ...."

আসলেই অনেক কাছের মানুষ, অনেক সময় অনেক দূরত্বের হয়ে যায়।কাছে থাকলেও জরিয়ে ধরা যায় না।সমাপ্তি বেশ সুন্দর হয়েছে,প্রথম অংশে বৈশাখীকে বেশ স্বার্থপর মনে হয়েছিলো।কিন্তু সে আসলে তা নয়।আসলে বৈশাখী চাইলে অর্ককে ধরে রাখতে পারতো,বেশি ভালেবাসেই বলে কম্প্রোমাইজ করে গেলো বোনের জন্য।ভালোবাসা গুলো এমনই হয়।তবে এটা সত্যি রাগ এবং জিদ মানুষের অনেক ক্ষতির কারন হয়ে দাড়ায়।ভালো ছিলো।একদম সুপার গল্প।ধন্যবাদ আশা করি সামনে এই রকম আরো গল্প পাবো।

হুম বৈশাখী খুবই মহৎ হৃদয়ের একটি মেয়ে । গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই আনন্দিত হলাম ।

মহৎ ছিলো বিদায় তো অর্কর শেষ আবদার প্রত্যাখ্যান করলো।কিন্তু শেষের ম্যাসেজ আবার কি দিলো।দুজনের ম্যাসেজের কথা কি করে মানতো অর্ক?.হা হা

ভাবুন ভাবুন।... শেষের মেসেজটার মধ্যে এক অপরিসীম প্রেম লুকিয়ে আছে । আসলে কি বলতে চেয়েছিলো বৈশাখী তার লাস্ট মেসেজে ?

এখানে দইটা হতে পারে,বৈশাখী বলতে চেয়েছে তাকে ফিরিয়ে দিতে না অথাৎ সে চায় পারমিতাকে সে বিয়ে করুক, তার কথা রাখুক।আর না হয় আরেকটা বলবো না🤪🤪।

দাদা গল্পটির দ্বিতীয় পার্ট টিও বেশ চমৎকার লেগেছে । বাস্তবতা আসলে অনেক কঠিন। দুজন দুজনকে এতো ভালোবাসা সত্বেও সময়ের ব্যবধানে দুজনের দূরত্বটা এত বেড়েছে যে কাছে থেকেও অনেক দূরে চলে গিয়েছে। যার কারণে কাছে থেকেও দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরতে পারছে না ।বৈশাখী অর্ক দুজনই দুজনকে অসম্ভব ভালোবাসে । আবার নতুন করে দু'জনের সংসার বাধা উচিত ছিল ।এভাবে ভালবাসার মানুষকে ছেড়ে কখনো সুখী হওয়া যায় না। দুদিক থেকে দুজনেই মনে হচ্ছে অর্ক কে টানছে। বৈশাখীর লাস্ট ম্যাসেজটি পড়ে মনে হচ্ছে অর্ক কে ছেড়ে দিয়েও ছেড়ে দেয়নি ।এখন এটাই দেখার শেষ পর্যন্ত অর্ক কি করে ?আরো একটি পর্ব চাই।ধন্যবাদ দাদা।

এই মেরেছে, আরো পর্ব ? কি করে লিখবো ? কাহিনী যে শেষ । তবে আপনার ভাবনাটি চমৎকার ছিল একদম । অর্কর উচিত ছিল জোর করে হলেও বৈশাখীকে বিয়ে করা । বোকা, আলে ভোলা অর্ক ভালোমানুষটির মতো সব মেনে নিলো । আর দুটি হৃদয়কে শেষ করে দিলো । আমার তো রাগ হচ্ছে সব চাইতে অর্কের উপর । শয়তান একটা । আর সব চাইতে কষ্ট হচ্ছে বৈশাখীর জন্য । বেচারি মেয়েটা ভালোবেসে শুধু দুঃখই পেয়ে গেলো ।

জানিনা আপনি কি করে লিখবেন?তবে শেষে দুইজনের মিল চাই।মিলিয়ে দিতেই হবে।তবে অর্ক মোটেই খারাপ নয়।খুবই ভালো ছেলে।

অর্ককে আমি চিনি । মিটমিটে ভাম একটা । ভিজে বেড়ালটি সেজে থাকে । আহারে বেচারি বৈশাখী । খুবই ভালো মেয়ে । কি করে ভোলা যায় তাকে ? বলুন তো । আর অর্ক দিব্যি ভুলে বসে আছে ।

আপনি কি??হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছি।অর্ক কে আর একটা খারাপ কথা যদি বলেছেন??বৈশাখী বরং ফাজিল মেয়ে।ছেড়েও ধরে রাখে।

বৈশাখী মোটেও ফাজিল মেয়ে নয় । তার মতো ভালো মেয়ে আজকের দিনে খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর । তা জানেন ?

আর অর্কটা হলো একটা স্বার্থপর বেঈমান ছেলে ।

অর্ক কি কারণে স্বার্থপর আর বেঈমান বুঝতে পারলাম না।সে তো ছুটে গিয়েছিল বৈশাখীর কাছে।

দাদা কি মন্তব্য করব বুঝতে পারছিনা একেবারে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। এটা ভেবে খুব খারাপ লাগছে গত পর্বে আমি বৈশাখী সম্বন্ধে একটু বাঁকা মন্তব্য করেছিলাম। আসলে বৈশাখী এখানে অনেক উদার মনের পরিচয় দিয়েছে। বিয়ের আগে অর্ক কে ডেকে তার এই কথাগুলো বলার পেছনে আমি খারাপ কিছু দেখছি না। কারন বিয়ের দিন অথবা বিয়ের পরে জানতে পারলেই অর্কর সমস্যা বেশি হত। আসলে সত্যি কারের ভালোবাসা কখনও পাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বৈশাখী তার সত্যিকারের ভালোবাসার প্রচন্ড আবেগ থেকে শেষের মেসেজটি লিখে ফেলেছে। খুব ভালো লেগেছে দাদা এরকম গল্প আরও চাই।

হুম, আপনার চিন্তাভাবনার সাথে আমার নিজের চিন্তা ভাবনারও যথেষ্ঠ মিল খুঁজে পাচ্ছি । গল্পটিতে আপনি বৈশাখীর প্রেমটাকে উপলব্ধি করতে পেরেছেন ।

দাদা আমার মাথায় আসছে না এটা শুধু আপনার দ্বারাই সম্ভব। আমি শুধু চাই একটা সুন্দর পরিসমাপ্তি। এভাবে তো তিনটি জীবন কষ্ট পেতে পারে। দিনশেষে দেখা যাবে কেউ সুখী নেই।

দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালোবাসা নিয়ে আপনি খুবই সুন্দর একটি গল্প আজকে আমাদের উপহার দিলেন। আপনার গল্পটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে, বিশেষ করে বৈশাখীর চরিত্রের গল্পটি আমার আরও বেশি ভালো লাগছে। কারণ বৈশাখী খুবই মহৎ একটি মেয়ে, ভালোবাসা প্রতি এবং দায়িত্বের প্রতি বৈশাখীর সুন্দর চরিত্র উপস্থাপন করেছেন। ভালো লাগলো আপনার গল্পটি দাদা।

আমি বুঝলাম না বৈশাখী অর্কের কাছে ফিরে যাবে না তাহলে কেন অর্কের সাথে আবার যোগাযোগ করলো ওর বোনের সাথে বিয়ে ঠিক করে দিয়ে আবার ওর সাথে যোগাযোগ করে আবার বলছে যে তুমি সারা জীবন আমারই থাকবে এটা কি করে সম্ভব। অর্কর পারমিতাকে আপন করে নেওয়া উচিত আমি মনে করি ও সব জেনে শুনেই ওকে ভালোবেসেছে। সামান্য একটি ভুলের জন্য বৈশাখী অর্ক কে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো ভালোবাসার মানুষকে এভাবে হুট করে ছেড়ে যাওয়া অতটা সহজ নয়। খুব ভালো লাগলো দাদা গল্পটি এই ধরনের গল্প আরো চাই দাদা এই গল্পগুলি পড়তে অনেক বেশি ভালো লাগে।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



আমার মনে হয় অর্ককে বৈশাখীকেই গ্রহণ করা উচিত, কারণ এটি ছিল তাদের প্রথম প্রেম এবং তারা এখনো একে অপরকে গভীর ভালোবাসে। আর পারমিতাকে বিয়ে করলে তারা তো কেউ সুখী হতে পারবে না, কারণ অর্কের হৃদয় জুড়ে রয়েছে বৈশাখী। আর বৈশাখী ও আবার নতুন করে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবে।

যখন গল্পটা পড়ছি তখন আমি সিএনজি করে বাড়ি ফিরছিলাম, হুট করে গল্পের সমাপ্তি এমন ভাবে টানলেন ভাই , যেন মাঝ পথেই ধাক্কা খেয়ে গেলাম।

ভালোবাসা গুলো যে কেন এমন হয় বুঝে উঠতে পারি না । এক প্রাণ দুটো হৃদয়, কি একটা অবস্থা ।

বেশ ধাক্কা দিলেন ভাই ।।

অন্তর নিংড়ানো ভালোবাসা যাঁর জন্য, তাকে একটুখানি কাছে পেতে, একটুখানি হাতটা ধরতে, একটুখানি কান্নার জলে তার বুক ভেজাতে মনের গহিনে কষ্টের ঢেউ গুলো আরো অনেক বেশি উত্তাল হয়ে ওঠে।

যে বাঁধা দুজনকে আটকে রেখেছে, সে বাঁধা কষ্টের ঢেউ এর কাছে টিকবে তো?? এ যন্ত্রণা সইতে পারবে তো বৈশাখী আর অর্ক?? এই দর্শনটা তাদের কাছে পাবার আকাঙ্ক্ষা আরো অনেক বাড়িয়ে দেবে।

তবে গল্পের ইন্ডিং টা অসাধারন হয়েছে। পাঠকদের মাঝে বিশাল একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। তবে সম্পূর্ণ এই গল্পটাতে অনেক কিছু শেখার ছিল। ভালোবাসার মানুষটাকে আগলে রাখতে হবে যতই ঝড় আসুক। রাগ অভিমান সব কিছুই ভালোবাসার অংশ। কিন্তু সেগুলো কে আঁকড়ে ধরে ভালোবাসাকে তুচ্ছ করাটা সত্যিই সারাজীবনের কান্নার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আহারে ভালবাসা,
ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যাকে ভুলা যায় না জীবনেও, যদিও তার থেকে হাজারগুন ভালো মানুষ পাওয়া যায় না কেন। ভালোবাসার মানুষ শুধু ভালোবাসারই থাকে। তার জায়গা জীবনে অন্য কাউকে কখনোই দেখা যায় না।
তবে আমার জীবন সার্থক, হাজার কষ্টের ফলে পেয়েছি ভালোবাসার মানুষকে।

মাঝে মাঝে কিছু নিরবতা,
জীবনের অনেক শূণ্যস্থানকে আলোকিত করে দেয়,
মাঝে মাঝে কিছু নিঃসঙ্গতা,
জীবেরন অনেক যন্ত্রণাকে হালকা করে দেয়।
কিন্তু ভালোবাসার ক্ষত, ভালোবাসার যন্ত্রণা?
অন্ধকার কিংবা নিঃসঙ্গতা কখনো সেটাকে দূর করতে পারে না।

আমার দৃষ্টিতে এটাই কাংখিত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত ছিলো, অনেক কিছুই তার প্রত্যাশিত জায়গায় থাকতে পারে না, এটাই ভালোবাসার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

ভালোবাসা কি জিনিস আপনার গল্পগুলো পড়লেই বুঝতে পারা যায় । প্রতিটা মানুষ তার ভালোবাসার মানুষের জন্য সব কিছু করতে রাজি নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে তার জীবনের সকল সুখ এনে দিতেও রাজি। যেটা বৈশাখীর ক্ষেত্রে হয়েছে আসলে ভালবাসার কষ্টটা হৃদয় কে পুড়িয়ে দেয়। যেটা আপনার গল্প পড়ে উপলব্ধি করতে পেরেছি। সত্যিই আমাকে অনেকবার ভাবিয়েছে অনেক মুগ্ধ হয়েছি দাদা।

শেষটা গল্পের নায়ক চরিত্র দুইটানায় ফেঁসে গেল।তবে আমার মনে হয় তার সবথেকে ভালোবাসার মানুষের কথা রাখতে সে পারমিতাকে বিয়ে করবে কিন্তু পারমিতার শেষ কথাটি বোধহয় রাখা সম্ভব হবে না অর্কের।তাছাড়া বৈশাখী শেষমেষ বোনের জন্য নিজের ভালোবাসা দ্বিতীয় বার ফিরে পেয়েও ত্যাগ করলো।তবে একটা জিনিস ভালো লাগছে সে তার স্বামীর অত্যাচার থেকে বেঁচে গিয়েছে।অসাধারণ ছিল গল্পটি দাদা,ধন্যবাদ আপনাকে।

কি একটা পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিলেন। শেষ হইয়াও হইল না শেষ। দাদা যতদূর জানি কিশোর উপন্যাস গুলোর ব্যাপারে আপনার আগ্রহ আছে। সেখানে এমন একটি বিরহের প্রেমের উপন্যাস কিভাবে লিখলেন। ভেবে অবাক হচ্ছি। যাইহোক দ্বিতীয় পর্বটিও অসাধারণ হয়েছে। পরবর্তীতে অন্য কোন গল্পের অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা আপনার জন্য।

জানেন তো দাদা, কিছু কিছু লাইন মনে হয় নিজের জীবনের সাথে হুবহু মিলে গেছে। তবে আজ কালকের বাজারে ভালোবাসা ব্যাপারটা খুব সস্তা। হাতে হাত দিয়ে ঘুরলে, কাধে মাথা দিলেই ভালোবাসা যায়। ভালোবাসার জন্য নাকি স্পর্শের প্রয়োজন। সেদিক থেকে অর্ক হয়তো প্রকৃত ভালোবাসার উদাহরণ স্বরূপ। আবার শেষ বেলাতে বৈশাখী ও ভালোবাসার যথেষ্ট প্রমাণ দিয়েছে অর্ক কে পারোর কাছে ফিরতে বলে। তবে প্রতিশ্রুতি অনেক বড় একটা জিনিস। অর্ক তো এখন পারোর সাথে বিয়ের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমার মনে হয় সত্তিকারের ভালোবাসা তখনই সম্ভব হয়, যখন কেউ ত্যাগ করতে জানে।