অনুগল্প "যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন"

in hive-129948 •  2 years ago 


Copyright Free Image : PixaBay


প্রেমে পড়ার কথা ছিল না । অথচ তারা প্রেমে পড়লো । একে অপরের প্রতি ভালোবাসার মুগ্ধতায় তারা বিভোর হয়ে গেলো । দু'জনেই বিবাহিত, সংসারী । দু'জনেরই সন্তান আছে । দু'জন দু'জনেই নিজ নিজ স্বামী এবং স্ত্রীকে যথেষ্ঠ ভালোবাসতো । তা সত্ত্বেও তারা পরস্পরের প্রেমে পড়লো ।

ছেলেটি মেয়েটিকে অসম্ভব ভালোবাসতো, মেয়েটিরও ছেলেটির প্রতি ছিল নিখাদ প্রেম । শুধুমাত্র নিজেদের সংসারের কথা ভেবে তারা কোনোদিনও এক হতে চায়নি । কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না তাদের প্রেমের মধ্যে । ছিল শুধু তীব্রভাবে একে অপরকে ভালোবেসে যাওয়া ।

এত ভালোবাসা ছিল দু'জনের মধ্যে, অথচ একদিন চির বিচ্ছেদ এলো । মেয়েটি আজও ভাবে, তাদের ভালোবাসায় তো কোনো খাদ ছিল না, তবে কেন এমনটি হলো ? বিচ্ছেদের পর দীর্ঘ কুড়িটি বছর পার করেছে মেয়েটি নিঃসঙ্গতার এক অতল সমুদ্রে নিজেকে নিমজ্জিত রেখে। স্বামী, সন্তান, আত্মীয়-স্বজন থাকা সত্ত্বেও এক ভীষণ একাকীত্বের যন্ত্রনা তাকে কুরে কুরে খেয়েছে প্রতিদিন একটু একটু করে ।

মেয়েটি আজও জীবনের শেষ বেলায় এসে ভাবে, ভালোবাসা, বিশ্বাস, ভরসা এ শব্দ তিনটিই মিথ্যে তার জীবনে । যাকে সে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলো সেইই সবার আগে তার হাতটা ছেড়ে দিলো কি অনায়াসে । যাকে সে নিজের সবটুকু উজাড় করে ভালোবেসেছিলো কত সহজে সে তাকে ভুলে দূরে চলে গেলো । যাকে সে নিজের চাইতে বেশি বিশ্বাস করতো, আজ তারই কারণে বিশ্বাস শব্দটার প্রতি এক অপরিসীম ঘৃণার জন্ম নিলো ।

দু'বছর হলো স্বামীর মৃত্যুর পরে আরো বেশি অসহায়, আরো বেশি একা হয়ে পড়েছে মেয়েটি । বড় ছেলে তাকে বেশ যত্নেই রেখেছে । তাও দিন দিন কষ্টটা আরো বেড়েছে । আসলে মেয়েটি যে আজও ছেলেটিকে ভুলতে পারেনি । প্রত্যেকদিন সকালে ব্যালকনিতে এসে বসে মেয়েটি । দূরে ওই পাহাড়ের কোলে পাইন গাছ গুলির দিকে তাকিয়ে রয়, আনমনা হয়ে । আকাশ দেখে, মেঘে ঢাকা আকাশ, মেঘশূন্য সুনীল আকাশ । মাঝে মাঝে এক ঝলক হাওয়া এসে ভিজিয়ে দেয় তাকে ।

দার্জিলিঙের হাওয়া, জল ভরা, বড় তীব্র সে হাওয়া । ভেজা তীব্র ঠান্ডা সে হাওয়ায় প্রস্তর মূর্তির ন্যায় অপলক চোখে তাকিয়ে থাকে মেয়েটি । ভেজা হাওয়া তাকে আর নতুন করে কি ভেজাবে ? চোখের জলে তার সারা জীবনটাই তো ভিজছে ।

ছেলেটির সাথে তার প্রথম আলাপ হয় ফেসবুকে । ছেলেটি কবিতা লিখতো । মেয়েটি পড়তো । খুব দ্রুত তারা পরস্পরের হৃদয়ের অতি সন্নিকটে চলে এলো । ছেলেটির কবিতার চাইতে ছেলেটিকেই বেশি ভালো লাগতো মেয়েটির । শিক্ষিত, ভদ্র , মার্জিত ব্যবহার ছিল ছেলেটির । আর ছিল বিশাল বড় একটি মন তার । ছেলেটির অন্তঃকরণ ছিল নিস্কলুষ । সহজ সরল এই ছেলেটির প্রতি দিনে দিনে একটু একটু করে বিশাল একটা হৃদয়ের টান অনুভব করতে থাকে সে ।

একদিন তার সাথে কথায় কথায় বলে যে তার স্বামীর অসুখের জন্য তার মন উদ্বিগ্ন খুব । ছেলেটি সেদিন খুব মানসিক সাপোর্ট দেয় তাকে । এর দু'দিন পরে তার স্বামী কেমন আছে জানতে নক করে ছেলেটি । সে জানায় এখন সুস্থ আছেন তার স্বামী । তখনই সেই অদ্ভুত কথাটি বলে ছেলেটা -

"আপনার স্বামী দেখি আপনার পুরো হৃদয়টা জুড়েই রয়েছেন সব সময়, ম্যাডাম"

উত্তরে মেয়েটি বলে -

"আরো এক জন এখন আমার পুরো হৃদয়টা জুড়ে সব সময়ই থাকে, কি করবো তাকে ?"

ছেলেটি বুঝতে পারে কার কথা বলছে মেয়েটা । ভালোবাসা প্রকাশিত হয় অবশেষে । খুব ভালোবাসা ছিল তাদের মাঝে । তবে মেয়েটির মন ছেলেটি কোনোদিন সম্পূর্ণ বুঝতে পারেনি । তাই , মাঝে মাঝেই খুবই ছোট খাটো ব্যাপার নিয়ে তাদের মধ্যে মান-অভিমান হতো ।

ছেলেটির মন ছিল অনেক উদার । উন্নত চরিত্রের অধিকারী ছিল সে । তাই ফেসবুকের তার গ্ৰুপের সব মেয়েদের সাথেই খুবই ফ্রী ভাবে চলতো সে । আর এটাতেই সব চাইতে বেশি আপত্তি ছিল মেয়েটির । সে চাইতো ছেলেটি আর কোনো মেয়ের সাথে বিন্দুমাত্রও যেন কথা না বলে । কিন্তু, ছেলেটি আসলে শুধু মেয়েটিকেই ভালোবাসতো । আর বাকিরা ছিল তার বন্ধুর মতো ।

তবে, ছেলেটি পাগলামি করতো মাঝে মাঝে । মেয়েটির একান্তই ইচ্ছে ছিল তাদের শুধু মেসেঞ্জারে চ্যাট হবে । আর কিছুই না । কোনোদিনও দেখা হবে না, ফটো চালাচালি হবে না, অডিও কলে কথা হবে না, আর ভিডিও কলে কথা বলার তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না ।

অথচ এক দেখা করা ছাড়া আর সব কিছুই শেষমেশ হতেই হলো ছেলেটির জেদে । আর মেয়েটিও ছেলেটির সব জেদ মেনে নেয় । কারণ ছেলেটিকে আসলে কিছুই অদেয় ছিল না তার । ছেলেটি যদি প্রাণ চাইতো তাও দিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র ইতঃস্তত করতো না সে ।

তবে, মেয়েটির সংসারে যাতে কোনো আঁচ না লাগে এ জন্য ছেলেটি কোনোদিনও দেখা করতে চায়নি । তাদের ভালোবাসা ছিল পবিত্র । নিজেদের ফ্যামিলির প্রব্লেম যাতে না হয় কোনওদিন সেই জন্য তারা তাদের ভালোবাসাকে পূর্ণ বিকশিত হতে দেয়নি, স্যাক্রিফাইস করেছিল দুজনেই ।

মাঝে মাঝেই তাদের মধ্যে খুবই ছোটোখাটো ব্যাপার নিয়ে মান অভিমান হতো । এক আধবেলা কথা বন্ধ থাকতো । এরপরে আবার যে কে সেই । আসলে, কেউ কাউকে ছেড়ে বেশিক্ষন থাকতে পারতো না । মাসের মধ্যে ২-৩ দিন এমন হতো । এমনই এক শ্রাবণ মাসের সন্ধ্যায় একদিন সে এমন একটি জিনিস চেয়ে বসলো যে মেয়েটির তা দেওয়ার সাধ্য ছিলো না । বিনিময়ে নিজের প্রাণটুকুও দিতে তার বাধতো না । কিন্তু, এটা দেওয়া সম্ভব ছিলো না । অন্যায় আবদার ছিল ছেলেটির ।

ফলে আবার মান অভিমানে কথা বন্ধ ।

পরের দিন ভোরে মেসেজ করলো মেয়েটি । ওপাশটা নিরুত্তর । বেলা বাড়তে থাকলো সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ । কারণ, এ যাবৎ শ'খানেক মেসেজ করে ফেলেছিলো মেয়েটি । অথচ ওপাশটা একদমই নীরব । দিন গড়িয়ে রাত নামলো । মেয়েটা উদভ্রান্তের মতো কলের পর কল করে যেতে লাগলো । রিং হয়ে যায়, অথচ কেউ রিসিভ করে না ।

সারা রাত ঘুমোতে পারেনি মেয়েটি । বিছানায় শুধু ছটফট করেছে । ভোর হতেই আবার কল দিলো । এবার সুইচ্ড অফ পেলো । মেসেজ করলো । আনসিন শো করলো গতকালের মতো । তার শত শত মেসেজের রিপ্লাই তো দূরের কথা সেগুলো দেখাও হয়নি । দিন গড়াতে লাগলো আর মেয়েটি মানসিক ভাবে ভেঙে ছারখার হতে থাকলো । অবশেষে রাত নামলো । ফোন এখনো সুইচ্ড অফ ।

শেষ রাতে কাঁপা কাঁপা হাতে মেয়েটি শেষবারের মতো মেসেজ করলো ছেলেটিকে । আর মেসেজ করেনি । তবে কল করতো মাঝে মাঝে । সব সময়ই সুইচ্ড অফ পেতো । এভাবেই চিরকালের মতো হারিয়ে গেলো ছেলেটি মেয়েটির লাইফ থেকে । এই কি ভালোবাসা ? ভেবে পায় না মেয়েটি আজও । সে তো সব কিছু উজাড় করেই ভালোবেসেছিলো তাকে । তাহলে ছেলেটি কিভাবে এতটা নির্দয়, এতটা স্বার্থপর, এতটা নীচ হতে পারলো ? কোনো উত্তর খুঁজে পায়নি মেয়েটি গত কুড়িটা বছর ধরে ।

আজ এতো কথা মনে আসছে , কারণ একটি ছেলে তার সাথে দেখা করতে চেয়েছে । কাল সকালে এপয়েন্টমেন্ট । সে রাজিই হতো না । কিন্তু, রাজি হয়েছে কারণ ছেলেটি আসছে কলকাতা থেকে । তার প্রিয়তমের শহর । সেই কলকাতা । কুড়ি বছর আগে দার্জিলিঙের মেয়েটি প্রেমে পড়েছিল যে শহরের এক যুবকের । তার প্রিয়তম তো হারিয়েই গিয়েছে তার জীবন থেকে চিরতরে । তবু, তার স্মৃতির শহর, তার স্বপ্নের শহর কলকাতা থেকে একটি ছেলে তার সাথে দেখা করতে চেয়েছে, এটা জেনে রাজি হয়েছে সে ।

পরের দিন সকাল দশটা । মেয়েটি অপেক্ষা করছে তরুণ সেই অজ্ঞাতনামা ছেলেটির জন্য । ছেলেটির নামের সাথে তার প্রিয়তমের নামের একটি মিল আছে । বারেবারে সস্নেহে তরুণ যুবাটির কার্ডের পরে বৃদ্ধা মেয়েটি হাত বোলাতে লাগলো । একটু পরে সে এলো । বছর পঁচিশের এক তরুণ যুবা, প্যান্ট কোট, শার্ট পরিহিত ।

একপলক তার মুখের দিকে তাকিয়ে সহসা পাথর হয়ে গেলো মেয়েটি । এ কে ? এ যে তার সেই কুড়ি বছর আগের হারিয়ে যাওয়া প্রিয়তম । বয়সে শুধু আরো তরুণ, সদ্য যৌবনের লাজুকতা শুধু ছড়ানো মুখে ।

তরুণটি দ্রুত এগিয়ে এসে মাথা নিচু করে প্রণাম করলো । তারপরে, নিভৃতে একটু কথা বলার জন্য আবেদন জানালো । মেয়েটি জানালো কেউ এখানে এখন আসবে না, তুমি কথা শুরু করতে পারো । তরুণ ছেলেটি তখন কোটের পকেট থেকে একটা ছোট ডায়েরি আর একটা খাম বের করে তার হাতে দিলো ।

মেয়েটি কাঁপা কাঁপা হাতে প্রথমে খামটি খুললো । ভেতরে একটি ছবি । দ্রুত ছবিটি বের করে এনে অপলকে সেদিকে তাকিয়ে রইলো । কুড়ি বছর আগের হারিয়ে যাওয়া সে । চোখের কোল বাঁধ ভাঙা অশ্রুতে প্লাবিত হলো । হাতটি কাঁপতে লাগলো থর থর করে ।

দীর্ঘ দুই মিনিট পরে নীরবতা ভাঙলো তরুণ ছেলেটি ।

"আমার বাবার ফটো ।"

কাঁপা কাঁপা গলায় মেয়েটি বললো -

"তোমার বাবা এখন কোথায় ? কেমন আছেন উনি ?"

আবার বেশ কিছু নীরবতা । একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে ছেলেটি বললো -

"উনি আর আমাদের মাঝে নেই । কুড়ি বছর আগে এক রাতে হঠাৎ, ম্যাসিভ হার্ট এট্যাক । ঘুমের মধ্যেই চলে গেলেন উনি ।"

"আমি গত মাসে বাবার ব্যক্তিগত লাইব্রেরী গোছাতে গিয়ে এই ডায়েরিটা পাই । অন্যের ডাইরী পড়া উচিত নয় জেনেও আমি না পড়ে পারলাম না । আসলে আমি বাচ্চা বয়সে বাবাকে হারিয়েছি তো, সেভাবে তাকে কোনোদিনও পাইনি । তাই, বাবার জীবনের সব কিছুই জানার জন্য আমাকে ভীষণভাবে টানে ।"

মেয়েটি কিছুই আর বলেছে না । শুধু শুনেই যাচ্ছে । দু'চোখে শুধু তার অশ্রু নদী ।

"এই ডায়েরীটায় আমি নেই, আমার মা নেই । এমনকি বাবার নিজের কথাও নেই । আছে শুধু আপনার কথা । আমার মা শুধু বাবার স্ত্রী ছিলেন । আর আপনিই ছিলেন তার সব । ডায়রিটা প্লিজ পুরোটা পড়ে দেখবেন ম্যা'ম । শুধু বলবো, আমার বাবা আসলেই অনেক ভালো মানুষ ছিলেন । তার হৃদয়টা অনেক বড় ছিল । এভাবে যে একজন ছেলে একটি মেয়েকে এত তীব্রভাবে ভালোবাসতে পারে সেটি এই ডায়েরিটা না পড়লে বুঝতাম না আমি । এই ডায়েরিতেই আমি আপনার ঠিকানা পেয়েছি ।"

বিদায় নেওয়ার বেলায় মেয়েটি তরুণ ছেলেটিকে বললো -

"বাবা, ছোটবেলায় আমার ছবিকে তুমি মা বলে ডাকতে । ও বলতো আমাকে, আমার ছেলে তোমার ছবি দেখে মা মা বলে । আমি তোমার মা হয়েই তাই থাকতে চাই । তুমিও আমার আরেক ছেলে । এরপর থেকে সময় পেলেই এখানে চলে এসো । এটা তোমার নিজেরই বাড়ি ।"

গভীররাতে মেয়েটি ডাইরী খুলে পড়তে বসলো । মাঝে মাঝে চোখের জলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে । একটু একটু করে শেষ রাতে পড়া শেষ হলো তার । ডাইরির শেষ পৃষ্ঠায় কাঁপা কাঁপা হাতে সে লিখলো জীবনের অন্তিম লেখা ।

কুড়ি বছর আগে এক শ্রাবণ সন্ধ্যায় এই জিনিসটিই চেয়েছিলো সেদিন তার প্রিয়তম । দিতে পারেনি তাকে সেদিন । এক বুক অভিমান নিয়ে মানুষটি চলে গেলো তাকে ছেড়ে চিরতরে । ডায়রীর পাতায় তাই কুড়ি বছর আগে হোয়াটস্যাপ-এ পাঠানো তার লাস্ট মেসেজটিই লিখলো সে -

"প্রিয়তম, আমি রাজী । তুমি, প্লিজ ফিরে এসো । অনেক ভালোবাসি তোমায় । কী করে থাকবো আমি তোমাকে ছাড়া বলো ?"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank You for sharing Your insights...

god bless you

"যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন"

এক অস্পর্শ ভালোবাসা ভালোবাসতে হৃদয়ের মেলবন্ধন লাগে। দুটো ভালোবাসার অপূর্ণতা থেকে গেল। সত্যিই গল্পটি পড়ে নিজেকে অনেকটা ভাবিয়েছে। দূর থেকেও মানুষকে ভালোবাসা যায় যেটা এই গল্প সাক্ষী হিসেবে রয়ে যাবে। কিছু কিছু ভালোবাসা ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত কাহিনী রচনা করে চলে যায়। যেটা কখনো পূর্ণতা পায় না। আসলেই দাদা আপনার লেখা গল্পটি হৃদয় স্পর্শ করেছে ভালোবাসার অন্তিম বিষয়টি ভালোই উপলব্ধি করতে পেরেছি।

গল্পটি পড়ার সময় বার বার হারিয়ে যাচ্ছিলাম গল্পের মাঝে। অবশেষে মেয়েটির ভুল ভাঙলো।ছেলেটি তাকে ধোকা দেয়নি। তার ভালোবাসা নিয়ে এই পৃথিবী থেকে চলে গিয়েছে। মেয়েটি ভুল বুঝেছিল ছেলেটিকে। খুব চমৎকার লিখা।

অনুগল্প "যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন" অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও স্পর্শকাতর হলেও ভালোবাসা ছিল তাদের কঠিন থেকে কঠিনতম পবিত্র। এটাই হলো প্রকৃত ভালোবাসা। লেখকদের জন্য দীর্ঘায়ু ও শুভকামনা রইল।

মন্তব্য করার মতো ভাষা আমি হারিয়ে ফেলেছি। পুরো গল্প জুড়েই পেলাম বিরহের অদ্ভুত ছোঁয়া। অসাধারণ হয়েছে দাদা।

কিছু কিছু গল্প বলে কোন মন্তব্য করা যায় না।হয়ত এমন ভালোবাসা এখনও হয়,কিন্তু পারিবারিক, সামাজিক কিংবা ধর্মের জন্য আর এগাতে পারে না।এটা স্বপ্নের মত,কিছু কিছু স্বপ্ন অপূর্ন থেকে যায়।ভালো ছিলো।এ গল্পের মাঝে মাঝে হাজার হাজর প্রশ্ন আছে,যার উওর নেই। শেষটা বেশ ভালো ছিলো।ধন্যবাদ

এত অসাধারন একটি গল্প কি করে লিখলেন দাদা ?সত্যিই আজকের লেখাটা চমৎকার হয়েছে। পড়তে পড়তে আমার চোখের কোনে সত্যিই জল চলে এসেছে ।দিনের-পর-দিন মেসেজ করে, ফোন করে যখন একটি মানুষকে পাওয়া যায় না, তার সম্বন্ধে কোন কিছু জানা যায় না কতটা কষ্টের হতে পারে ?দীর্ঘ কুড়ি টা বছর কত কষ্টেই না মেয়েটি পার করেছে ।অবশেষে নির্মম সত্যিটা তার সামনে এসেছে। সত্যিই খুবই হৃদয়বিদারক ছিল।

দাদা আপনার লেখা অনুগল্পটি পড়ে কখন যে দু চোখের পাতায় জল চলে এসেছে বুঝতেই পারিনি। আসলে আমাদের বাস্তবতার কাছে আমাদের ভালোবাসা গুলো অনেক সময় অপূর্ণই থেকে যায়। আমরা জীবনে হয়তো তাকে অনেক ভালোবাসি তাকে পাওয়া হয় না। আর আমাদের জীবনের সাথে অন্য কেউ নিজের জীবন জড়িয়ে ফেলে। ভালোবাসার সেই প্রিয় মানুষটিকে না পাওয়ার যন্ত্রনা তখন আমাদের কুরে কুরে খায়। হয়তো অনেক ক্ষেত্রে আমরা আমাদের জীবন সঙ্গীকে পেয়ে খুশি নই। কিন্তু প্রিয় মানুষটির সাথে এক মুহূর্ত কথা বলার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে যায়। এ শুধু ভালোবাসার ব্যাকুলতা। এই অনু গল্পটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে দাদা। দারুন এই অনুগল্প লিখে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো দাদা। ❤️❤️❤️

দুই প্রান্তের ২ ভালোবাসার রাজরানী
সংসার নামের শিকল পরিহিত ছুটে যাওয়ার কোন সংখ্যা নেই
তবুও আছে হৃদয় উজাড় করা ভালোবাসা যেখানে কমতি ছিল না হৃদয়ের এতোটুকু আশা
দিন গেল রাত গেল গেল ২০টি বছর
ভালোবাসার অস্তিত্ব হারিয়ে গেল সাথে বিশ্বাস নামের পাঁজর
আখি দিয়ে অশ্রুধারা বয়ে যায় মাসের-পর-মাস
শেষ পরিণতি এটাই ছিল ভালোবাসার হয়েছে সর্বনাশ
স্বপ্নের শহর থেকে এসেছে রাজপুত্র হাতে তাহার ছোট্ট একটি খাম
অন্যায় আবদার অভিমানে চলে যাওয়া নিষ্পাপ ভালোবাসার প্রাণ
অশ্রু দিয়ে লেখা ছিল ভালোবাসা জার প্রমাণ।

দাদা ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যা সত্যি মানুষকে পাগল করে দেয়। আর সেই ভালোবাসার অনুভূতি গুলো মানুষকে কখন কোথায় নিয়ে যায় সেটা বুঝা খুব মুশকিল। ভালোবাসা এক সময় মানুষকে উন্মাদ পাগল বানিয়ে দেয়। আপনি এত সুন্দর একটি অনু গল্প লিখেছেন সত্যি অসাধারন ছিল। পড়ে খুবই ভালো লেগেছে যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। তাই আমার তরফ থেকে আপনার জন্য ছোট্ট একটি কবিতা উপহার স্বরূপ দিলাম। আর সেই কবিতা লিখা ছিল অন্তরে আমার দাদার নাম। ভালোবাসা অবিরাম দাদা।

দাদা গল্পের শেষে এসে মেয়েটির মতো আপনি আপনার পাঠকদেরও কাঁদিয়ে গেলেন। যদিও এরকম ভালোবাসা আমাদের সমাজ বা ধর্ম মেনে নেয় না। তারপরেও বলতে হয় এরকম ভালোবাসা পূর্ণতা পায় ওপারে। আসলে সত্যিকারে ভালোবাসায় শেষ পরিণতি এরকমই হয়। আমরা ইতিহাসে যতগুলো অমর প্রেম কাহিনী পড়েছি সবগুলোর পরিণতি না পাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

যাইহোক দাদা আপনারা অনু গল্পটি সত্যিই আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। যুবক ছেলেটি যখন আসছিল তখনও আমি বুঝতে পারিনি কি হতে চলেছে। শুরু থেকে আপনার গল্পটি এরকম হয়েছিল। একটি লাইন পড়লে পরের লাইন পড়ার জন্য আগ্রহ তৈরি হতো। লেখার মধ্যে অনেক মজা ছিল তাই চোখ সরাতে পারছিলাম না। চমৎকার এই গল্পটির জন্য ধন্যবাদ দাদা।

ভালবাসতে হলে ঠিক এরকম ভাবেই ভালোবাসা উচিত। ছেলেটি আর মেয়েটি ভালোবাসা দেখে আসলে আমি তাজ্জব হয়ে গেলাম এরকম ভালোবাসা কজনের ভাগ্যে জোটে বলেন। আর মেয়েটি যখন ছেলেটিকে তার ভালোবাসা প্রকাশ করেছিল সেটা আমার কাছে দারুণ লেগেছে, একেবারে অন্যরকম প্রকাশভঙ্গি ছিল।আর শেষ পর্যন্ত মেয়েটি সব জানতে পেরেছে এটাই বড় কথা। কি লিখেছেন দাদা এ ধরনের গল্প গুলো পড়তে আমার যে কি ভালো লাগে অসাধারণ লিখেছেন।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Thank You for sharing...

ভালোবাসার গল্প গুলো যে কেন এমন হয় বুঝি না বাবা । বিচ্ছেদ, ভালোবাসা অপেক্ষা সব কিছুই পারিপার্শ্বিক ভাবে জড়িয়ে আছে । তার পরেও জেনে বুঝেই হুট করে ডুবে যাই বা যাচ্ছে । ভালোবাসা যদি কথা বলতে পারতো , তাহলে হয়তো অনেক কিছুই জানা যেত ।

ভালোবাসা গুলো বেঁচে থাকুক হয় স্মৃতিতে নতুবা কারো ভাবনায় । বেশ লিখেছেন ভাই ।

I voted for your post ..

kindly support me ,,thx

https://steemit.com/@the-dream

Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

দাদা আজকে আপনার অনি গল্পটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো, তবে কষ্ট পেয়েছি আসলে ভালোবাসার মানুষটিকে না পাওয়ার খুবি কষ্টের। এটা কখনোই ভোলার নয়,এটা শুধু ভালোবাসার মানুষেই বুঝতে পারে। একজনকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসা থাকে যদি না পাওয়া যায় এবং তার সাথে যদি দীর্ঘদিন কথা না হয় তাহলে নানান প্রশ্ন মনের ভিতর জাগে, কিন্তু মন ব্যাকুল হয়ে থাকে তার সাথে কথা বলার জন্য,মেয়েটি দীর্ঘ 20 বছর অপেক্ষা করেছে, এই ভালোবাসার মানুষটিকে পাওয়ার জন্য। খুবি ভালো লাগছে গল্পটি।

সত্যিকারের ভালবাসা যে কতটুকু প্রাপ্তি আর শূন্যতা তৈরি করতে পারে তা আপনার গল্পটি না পড়লে বুঝতে পারতাম না। শেষের দিকে আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি 😕 ভালোবাসার গভীরতা মাপার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি 😔
বেঁচে থাকুক ভালোবাসা।

Thank You for sharing...

আসলে কি মন্তব্য করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। মাঝে দিয়ে ছেলেটির উপর রাগ হয়। কিন্তু শেষে কখন যেনো কেঁদে ফেললাম । জানিনা কেনো। শুরুর দিকে অবশ্য ভেবেছিলাম যে তাদের ভালোবাসাটাই ঠিক ছিলোনা। কিন্তু শেষে তাদের জন্যই কান্না পেলো।

Thank You for sharing...

প্রিয়তম, আমি রাজী । তুমি, প্লিজ ফিরে এসো । অনেক ভালোবাসি তোমায় । কী করে থাকবো আমি তোমাকে ছাড়া বলো ?

এতোদিন না হয় মেয়েটি ছিলো অভিমানে,দুঃখে বুক বেঁধে।কিন্তু এখন আর কি করে রইবে!দাদা আজকের গল্পটা খুব কষ্ট দিয়েই শেষ করলেন।
আরো গল্প নাই,ক্ষুদ্র পাঠিকার এ আর্জি।এতো দারুণ লিখেন,আরো পড়তে মন চায়।আর ভাবি সত্যিই কি এমন স্বার্থহীন ভালোবাসা এ পৃথিবীতে আছে!!

কি মন্তব্য করব তা বুঝে উঠতে পারছিনা, লাইনগুলো শুধু অনুভব করতে পারলাম, ২০ বছরের অমীমাংসিত ভালোবাসা। হঠাৎ করে অনুভব করতে পারলাম কম্পিউটারের মনিটরটা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে বুঝতে পারলাম চোখের কোনে সেই এক বিন্দু পানি।

Thank You for sharing...

বিচ্ছেদ সম্ভবত ভালোবাসাকে অমর করে দেয়। না পাওয়া থেকেই ভালোবাসার সবচাইতে চমৎকার গল্প গুলো তৈরি হয়। দারুন লিখেছেন দাদা

এই অনুগল্পটির কিছু অংশ আগের দুটি অনুগল্পের সঙ্গে মিল আছে।যেটি পড়ে বুঝতে পারলাম।তবে এত প্রেম ভালোবাসার মধ্যে কখনো মেয়েটি জানতে ও পারেনি যে তার প্রিয় মানুষ আর নেই।

এ যে তার সেই কুড়ি বছর আগের হারিয়ে যাওয়া প্রিয়তম ।

তাই কুড়ি বছর পর ও সে তরুণ ছেলেকে প্রিয়তম ভেবে বসেছিল।তবে শেষমেশ ডাইরীটি প্রমাণ করে দিল তাদের ভালোবাসায় কোনো খাদ ছিল না।আশা করি ডাইরিটা মেয়েটি পড়ে তার ভুল ভেঙেছিল এবং সে যে বিশ্বাসকে ঘৃণা করত তা আবার ফিরে পায় ।কিন্তু কাহিনীর শেষে একটু ব্যথাতুর।সুন্দর ছিল গল্পটি।ধন্যবাদ দাদা।

Thank You for sharing Your insights...

দাদা সত্যি বলতে গল্পটি পড়লাম তবে গল্প টি পড়ে আমার অনুভূতি প্রকাশ করাটা কঠিন কিন্তু কিছু মনের কথা লিখে দিলাম। ভালবাসা আসলে কি ? ভালবাসার কোন রং নেই তবে এই ভালবাসার কারনেই রং এর সৃষ্টি হয়েছে আমার মনে হয়। কাল্পনিক রং গুলো মাঝে মাঝে বেদনার নীল রং এ পরিনত হয় আবার ভালবাসায় লাল গোলাপের সৃষ্টি। তবে আমার মনে হয় ভালবাসা স্বর্গীয় সৃষ্টি। প্রতিটি সম্পর্কেই একসময় হয়তো ভাললাগা বা ভালবাসার অনুভূতি গুলো ভোতা হয়ে আসে আবার সামান্য বিচ্ছেদ কিংবা দূরে থাকা সেই ভালবাসাকে নতুন করে জাগিয়ে তোলে। ভাল থাকবেন ধন্যবাদ।

একজন লেখক তখনই সার্থক যখন তার তার গল্পটি পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সত্যি গল্পটি হৃদয় ছুঁয়ে দিয়েছে, কান্না ধরে রাখা অসম্ভব।

ছেলেটি যদি প্রাণ চাইতো তাও দিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র ইতঃস্তত করতো না সে।

এখানে ছেলেটির কষ্ট পাওয়ারই কথা, কারন সে যাকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসতো তাকে মেয়েটি ফিরিয়ে দিল। আর এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরেই ছেলেটির মৃত্যু ঘটেছে। আর অন্যদিকে যে মেয়েটি তার ভালবাসার জন্য নিজের প্রাণ দিতেও দ্বিধা বোধ করত না, হয়ত এমন কোনো কারণ ছিল যে কারণে সে তার চাওয়া টি পূর্ণ করতে পারেনি, হয়তো দুজনেরই এতে মঙ্গল ছিল। যাইহোক অসাধারণ লেখা, আপনার লেখার হাত দারুন, মনে হচ্ছিল বড় একজন সাহিত্যিকের গল্প পড়ছি। আর এভাবে চালিয়ে গেলে সাহিত্যিক কেও হার মানাবে। আশা করি এভাবে চালিয়ে যাবেন।

Thank You for sharing Your insights...

দাদা আজ মন থেকে বলতে ইচ্ছে করছে আপনি একজন সেরা গল্পকার।আপনার লেখা এই অনুগল্প যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন।পড়তে পড়তে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি দাদা।কি নিপুনভাবে আপনি এই গল্পের সমাপ্তি করলেন।সেই ডাইরিতে যেখানে ছেলেটির মায়ের কথায় ছেলেটির কথা কারোরই কথা লেখা ছিল না শুধু মেয়েটির কথায় লেখা ছিল।এরকম নিরব নিভৃতে হাজারো ভালোবাসা নিরবে ঝরে যায়।আহত পাখির মতো ছটফট করে।কুড়ি বছর আগে লোকটির মৃত্যুর কথা শুনে সত্যি বুকটা কেঁপে উঠছিল।♥♥

Okay

You're amazing

Aiit

খুবই আবেগ প্রবণ হয়ে গেলাম দাদা, সত্যি বলছি শেষের অংশটুকু পড়তে পড়তে নিজের কাছেই লেখাগুলো ঝাপসা হয়ে আসছিলো, চোখের কোনে জল উঁকি মারতেছিলো। ভালোবাসা সেটাই যেখানে পবিত্রতা থাকে, ভালোবাসা সেটাই যেখানে আকাংখা বলে কিছুর অস্তিত্ব থাকে না। আজকের গল্পটি সেই ভালোবাসার চিত্রই ফুটিয়ে তুলেছে।

ভালোবাসা সেটাই
যেখানে পবিত্রতার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে সর্বদা
ভালোবাসা সেটাই
যেখানে কামনার আকাংখা উহ্যমান থাকে সর্বদা
ভালোবাসা সেটাই
যেখানে বিশ্বাসের আবরণ মজবুত থাকে সর্বদা
ভালোবাসা সেটাই
যেখানে অন্তিম সময় পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে মায়া
ভালোবাসা সেটাই
যেখানে কখনো আসে না অবিশ্বাসের ছায়া।

Thank You for sharing Your insights...