আমার ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া একটি মজার ঘটনা - হাত ভেঙে যাওয়া"

in hive-129948 •  3 years ago 


Copyright Free Iamge Source


প্রতিনিয়ত ছোটবেলার স্মৃতি হাতড়ে মজার মজার কিছু ঘটনা আপনাদের সামনে হাজির করে চলেছি । এর আগে আমার "কুকুরের কামড় খাওয়া" এবং চৈত্র মাসে "কাঁচা আমের গুঁটি চুরি করে খাওয়ার" দুটি ঘটনা শেয়ার করেছি । এবার শেয়ার করতে চলেছি আমার ছোটবেলার আরো একটি দুরন্তপনার মজার ঘটনা - কি ভাবে আমার ডান হাতের হাড় দু'টুকরো হয়, সেই ঘটনা ।

এখনো সে সব দিনের কথা মনে পড়লে অনাবিল হাসিতে হৃদয় পূর্ণ হয়ে ওঠে । এই হাত ভাঙার ঘটনা ঘটে যে বছর আমি কুকুরের কামড় খাই ঠিক তার পরের বছর । ক্লাস টু খুব সম্ভবত । ছ'বছর বয়সের ঘটনা ।

আমার বাবা ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে একটি মা-বাপ্ মরা ছোট ছেলেকে মাঠ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং নিজের ছোট ভাইয়ের মর্য্যাদা দান করেন । সেই ছেলেটি ভিন বর্ণের হওয়া সত্ত্বেও আমাদের ফ্যামিলি থেকে কোনোরকমের আপত্তি ওঠেনি কখনো, বরং আমার ঠাকুর্দা নিজের ছোট ছেলের মতোই করে তাকে মানুষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । আমাদের ছিল যৌথ ফ্যামিলি । বিশাল পরিবার । বাবারা পাঁচ ভাই চার বোন । নতুন আরেকটি ভাই হিসাবে সেই ছেলেটি আমাদের ফ্যামিলিতে স্থান পেলো । ফলে, বাবারা হলো ছয় ভাই এবং চার বোন । মোট এগারোটা ঘর ছিলো আমাদের বাড়িতে । দাদু জীবিতবস্থায় হেঁশেল পৃথক হয়নি । তাঁর মৃত্যুর পরে সবাই আলাদা হয়ে যায় । আমার বাবা আমাদেরকে শহরে তাঁর নিজের কাছে নিয়ে যান ।

বড় হয়ে মায়ের কাছে শুনেছি মায়ের বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ি প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা । কাজের লোক, চাকর-বাকর, রাখাল-মুনিশ সব মিলিয়ে ছিল ১৫-১৬ জন আর যৌথ ফ্যামিলির লোক ছিল প্রায় ৪০-৪৫ জন, মানে সব মিলিয়ে ৫০-৬০ জন লোকের পাত পড়তো প্রতিদিন বাড়িতে । লম্বা টানা বারান্দায় দুপুরে সার সার পাত পড়তো । তিন বৈঠকে । আগে খেয়ে নিতো বাড়ির বয়স্ক, বাচ্চারা এবং বাবা-কাকা-জেঠুরা । এরপরে বাড়ির কাজের লোক, চাকর-বাকর এবং সবার শেষে বাড়ির মা-কাকীমা-বড়মা'রা ।

এহেন যৌথ ফ্যামিলিতে অনেকদিন পরে শোনা গেল সানাইয়ের রোশনাই । বাবার সব ভাই বোনের বিয়ে অনেক আগেই হয়ে গিয়েছিলো । বাকি ছিল শুধু বাবার সেই পালিত ভাই । আমার বাবাই অনেক খুঁজে ক্ষত্রিয় বর্ণের একটি ফ্যামিলির সন্ধান বের করেন । এবং সেই ফ্যামিলির বড় মেয়ের সাথেই আমার সেই কাকুর বিয়ে ঠিক হয় । বিয়ে তো হয়ে গেলো । এরপর কাকীমাকে নিয়ে আমরা চলে এলুম বাড়ীতে । আমার মনে আছে, অনেক খুঁজে একটি পাল্কীতে করে বউ নিয়ে রীতিমত শোভাযাত্রা করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল ।

বৌভাতের দিন । সকাল থেকেই আমাদের যৌথ ফ্যামিলিতে আনন্দের হুল্লোড়, বিশেষ করে আমাদের ভাই বোনেদের মধ্যে । আমার সমবয়সী কাজিনরাই ছিল প্রায় ৮-১০ জন । এরপরে আমার চার পিসিমাদের বাড়ি থেকেও এলো এক গাদা আমার সমবয়সী ভাই বোন । সারাক্ষন হৈ হুল্লোড়, চেঁচা-মেঁচি, দৌড়াদৌড়ি আর কত রকমের যে খেলাধুলা তার ঠিক নেই ।

আমার এক কাজিন ছিল বিশাল মোটাসোটা । আমার ছোট কাকার ছেলে । প্রায় আমার সমবয়সী । তার ডাক নামটাও ছিল তার চেহারার অনুরূপ - ভোঁদো । আমি তখন একেবারে আমার ছেলে টিনটিনের মতোই রোগা-পাতলা । আমার ডাক নাম ছিল তখন "ছোট্ট", পরে এটা চেঞ্জ হয়ে যায় অবশ্য । দারুন জোরে ছুটতে পারতাম । তো, হঠাৎ করেই আমাদের মধ্যে শুরু হলো দৌড়ের কম্পিটিশন ।

বাজি ধরে দৌড় । তাই সবাই প্রাণপণে ছোটার চেষ্টা করছি । এমন সময় কলিশন । ভোঁদো-র সাথে আমার । এত জোরে এসে আমি ভোঁদোকে ধাক্কা দিলাম যে সংঘর্ষের শব্দ উঠলো একটা । আর ভোঁদো-র বিশাল ওজনদার শরীর যেমন ছিলো তেমনই থাকলো, কিন্তু রোগা পাতলা বেচারি আমি প্রায় সাত হাত দূরে ছিটকে গিয়ে পড়লাম । ধপ্পাস ।

পড়ার গতিবেগে এবং আঘাতের অভিঘাতে আমার হাঁটু ভাজ হয়ে উপুড় হয়ে পড়ে গেলাম ধুলোতে । বেকায়দায় ডান হাতটা পড়লো পেটের তলে, আড়াআড়ি ভাবে । সবাই ছুটে এলো কাছে । আমার আর এক কাকু (আমার বাবার কাজিন) দৌড়ে এসে আমাকে কোলে তুলে নিলো । এবং তখনই আমি আবিষ্কার করতে পারলাম যে আমার ডান হাত আর আমি নাড়াতে পারছি না ।

চললো পাখার বাতাস, তেল-জলের মালিশ অনবরত । কিন্তু মালিশ করতে গেলেই ব্যাথায় চিৎকার করে উঠি । তখনই আমার ছোটকাকা সন্দেহ প্রকাশ করলো যে হাত ভেঙেছে । বাবা একটু পরেই এলো । তাঁর তখন প্রচুর কাজ । বৌভাতের বাড়ি - কাজের চাপ তো থাকবেই । আমার অবস্থা দেখে প্রথমে মারতে এলো, পরে অবশ্য আমার চোখে জল দেখে আর মায়ের ধমকে বাবা মারার কাজটা মুলতবি রেখে আমাকে আমার এক কাকার জিম্মায় রেখে নিজের কাজে চলে গেলো ।

রাত্রে কিছুই খেতে পারলাম না ব্যাথার চোটে । সারারাত ঘুমোলাম শামিয়ানার তলে একটি খাটে । অতি প্রত্যুষেই আমার ছোট কাকা আমাকে নিয়ে শহরে গিয়ে এক্সরে করিয়ে হাতে ব্যান্ডেজ পরিয়ে নিয়ে এলো । ব্যান্ডেজ পরা ডান হাত ঝুলতো আমার গলা থেকে দড়ি দিয়ে । প্রায় একটি মাস ব্যান্ডেজ ছিলো হাতে । এই একটি মাস স্নান করা থেকে খাওয়া দাওয়া, ঘুম এসব কিছুই হতো মায়ের কোলে । মা'কে কাছ ছাড়া করতে চাইতাম না একটি মুহূর্তও । আর একটি ভারী মজার ঘটনা ঘটেছিলো । আমার এত রোগা পাতলা শরীর দেখে ডাক্তার ভিটামিন এর বোতল দিয়েছিলো মোট ছয়টি, দুই মাসের জন্য । কি ছিলাম আর কি হলাম । ছিলাম নেংটি আর এখন হস্তী ।

প্রায় এক মাস পরে ব্যান্ডেজ কেটে আমার ডান হাতটাকে ফিরে পেলাম ।


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Amazing

দাদা গত কয়েকদিন থেকে আপনার ছোটবেলার ঘটনা পড়ছি,, সত্যিই অনেক মজা পাচ্ছি। আসলে আমি ভাবতাম যে হয়তো আমার ছোটবেলায় এরকম দুরন্ত কেটে ছিল কিন্তু না দেখি এখন সবারই ছোটবেলা চরম দুরন্ত ছিলো এবং সকলেই অনেক ধরনের দুষ্টুমি করে ছিল। এরকম বাজি করে দৌড়ানো হয়নি তবে কম্পিটিশনে অনেকবার দিয়েছিলাম তবে হ্যাঁ প্রত্যেকটা দলের মধ্যে একটু নাদুস-নুদুস কেউ থাকে। তবে আপনি ৬-৭ হাত দূরে পরে গিয়েছিলেন তা সত্যি অবার করা বিষয় ছিলো।

ছিলাম নেংটি আর এখন হস্তী ।

দাদা এটি বেশ মজার কথা ছিল।আপনার গল্পগুলো সত্যিই অনেক মজার যদিও হাত ভাঙার গল্পটি একটু দুঃখজনক।ছোটবেলায় সকল গ্রামের বাচ্চাদের জীবন মনে হয় কিছুটা এমন হয়।কোনো না কোনো কিছু ভাঙার গল্প জীবনে থাকবেই।ধন্যবাদ দাদা।

এত জোরে এসে আমি ভোঁদোকে ধাক্কা দিলাম যে সংঘর্ষের শব্দ উঠলো একটা । আর ভোঁদো-র বিশাল ওজনদার শরীর যেমন ছিলো তেমনই থাকলো, কিন্তু রোগা পাতলা বেচারি আমি প্রায় সাত হাত দূরে ছিটকে গিয়ে পড়লাম । ধপ্পাস ।

বেশ মজার ছিলো দৃশ্যটা তাইনা, আমি কল্পনা করেই হাসতে হাসতে শেষ, আহারে পাতলা হলে কি কষ্ট হা হা হা । বেশ মজার ছিলো আপনার ছোটবেলাটা বেশ বুঝতে পারছি এখন।

ভোঁদো-র সাথে আমার । এত জোরে এসে আমি ভোঁদোকে ধাক্কা দিলাম যে সংঘর্ষের শব্দ উঠলো একটা । আর ভোঁদো-র বিশাল ওজনদার শরীর যেমন ছিলো তেমনই থাকলো, কিন্তু রোগা পাতলা বেচারি আমি প্রায় সাত হাত দূরে ছিটকে গিয়ে পড়লাম । ধপ্পাস ।

বিশ্বাস করেন দাদা আমি কতোটা মজা পেলাম আপনার এই গল্প পড়ে বিশেষ করে এই লাইন গুলো। হাসতে হাসতে মরে গেলাম। হাহাহাহাহাহা
ভোঁদো,,,,,,, এই নামটা শুনলেই হাসি পাচ্ছে আমার। হাহা অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।

এমন একটা মোটা তাজা ট্রাকের সাথে ধাক্কা খেয়ে কিভাবে ছিটকে পড়লেন, এটা ভাবতেই হাসি চলে আসছে। 😄😄😁😁

দাদা আপনার শৈশব স্মৃতির সাথে আপনার পরিবারের অনেক মজার গল্প পড়ে ভালো লাগলো। আসলে বর্তমান সময়ে যৌথ পরিবার আর খুব একটা দেখা যায়না। শৈশব বড় সুন্দর ছিল। তবে আপনি আপনার কাজিন ভোঁদো দাদার সাথে দৌড় কমপিটিশনে গিয়ে আপনার হাত ভেঙেছে এটা যেনে খারাপ লাগলো। আপনার ছোটবেলার গল্প পড়ে খুবই ভালো লেগেছে দাদা। আশা করছি এরকম মজার মজার সব গল্প আবারো শেয়ার করবেন। এই প্রত্যাশা করছি দাদা।

আপনার ছোটবেলা আসলে খুবই রঙ্গীন এবং আনন্দময় কেটেছে যৌথ পরিবারের সঙ্গে ।যৌথ পরিবার এখন তো আর দেখাই যায় না ।এখনকার ছেলেমেয়েরা যৌথ পরিবারের আনন্দটা আসলেই অনেক বেশি মিস করে।যদি আপনার হাত ভাঙ্গার ঘটনাটা পড়ে একটু খারাপ লেগেছে।একমাস আপনার হাতে ব্যান্ডেজ ছিল নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট পেয়েছেন। ধন্যবাদ আমাদের সাথে আপনার ছোটবেলার এই ঘটনাটা শেয়ার করার জন্য।

ছবিটা দেখে ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেলে।

দাদা আমি শুনেছিলাম উচ্চবর্ণের হিন্দুরা নিম্নবর্ণের হিন্দুদের কে বাড়ির সীমানাতেই প্রবেশ করতে দিতেন না সেখানে আপনার দাদু নিম্নবর্ণের এক ছেলেকে তার সন্তানের মর্যাদা দিয়েছিল ভাবতেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। আর এত বড় যৌথ পরিবারের কথা এখন তো কল্পনাও করা যায় না। শৈশবে আপনার দস্যিপনার যেইসব গল্প একটু একটু করে শুনতে পাচ্ছি তাতে বলতেই হয় আপনি ছিলেন বিচ্ছু সরদার হাহাহাহা।

আপনার ছোটবেলার কাহিনীর সাথে আমার ছোটবেলার কাহিনীর অনেক মিল রয়েছে। আমারও ছোটবেলায় একবার পা ভেঙে গিয়েছিল । যদিও ছোটবেলায় আম্মু আমাকে ততটা কষ্ট বুঝতে দেয়নি তারপরও সেই পা ভাঙ্গার কথা মনে পড়লে অনেক কষ্ট লাগে।

ভোঁদো নাম শুনে আমি হাসতে হাসতে শেষ। তবে বেশি মজা পেয়েছে আপনার বাবা যখন আপনাকে পিটাতে চেয়েছিল হাহাহাহা।

ছিলাম নেংটি আর এখন হস্তী ।

এটা খুব মজার ছিল শেষে এত সুন্দর একটা বিনোদন দিয়ে দিলেন দাদা কি আর বলবো। আসলে অনেক কষ্টের মুহূর্ত হলেও আপনি এমনভাবে প্রকাশ করেছেন যা সত্যি সবাই খুব হাসি মুখেই নিয়েছে বিষয়টা।

ছিলাম নেংটি আর এখন হস্তী ।

এটা পড়ে হাসতে হাসতে শেষ আমি।

হাত ভাঙ্গা ভয়ংকর হলেও কাহিনী বেশ মজার।যা দারুণ কাহিনী,পড়ে হাসতে হাসতে শেষ আমি।

প্রথমে হাত ভাঙার ঘটনাটি শুনে খুব দুঃখ লেগে ছিল ।তবে যেভাবে হাত ভেঙেছিল, সেই ঘটনাটা যখন পড়লাম তখন বেশ হাসি লাগছিল । যাইহোক এখন তো যৌথ পরিবারের কথা চিন্তাই করা যায় না । তবে আপনার বাবা-কাকারা যে এতগুলো মানুষ একসঙ্গে পরিবার নিয়ে থাকতেন এবং একসঙ্গে এতগুলো মানুষের খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত হতো এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ।ভাই সময়ের পরিবর্তনে সবকিছুই যেন, পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে । বর্তমানে তো পরিবারগুলো দিন দিন ছোট থেকে একদম ক্ষুদ্রাকার হয়ে গিয়েছে । ভালো লাগলো আপনার অতীত ঘটনা জেনে । শুভেচ্ছা রইল ভাই , আপনার জন্য ।

দাদা আপনার শৈশবের স্মৃতি গুলো পড়তে বেশ চমৎকার লাগে ।দারুন মজার ছিল আপনার গল্পটি ।আপনি শৈশব টাকে অনেক ইনজয় করেছেন ।আপনার গল্পগুলো পড়লেই বোঝা যায় ।বেশ ভালো লাগে পড়তে। আরো নতুন নতুন আপনার শৈশবের গল্প পড়তে চাই দাদা ।তাড়াতাড়ি আমাদের জন্য লিখে ফেলুন। ধন্যবাদ আপনাকে।

ভোঁদো-র সাথে আমার । এত জোরে এসে আমি ভোঁদোকে ধাক্কা দিলাম যে সংঘর্ষের শব্দ উঠলো একটা । আর ভোঁদো-র বিশাল ওজনদার শরীর যেমন ছিলো তেমনই থাকলো, কিন্তু রোগা পাতলা বেচারি আমি প্রায় সাত হাত দূরে ছিটকে গিয়ে পড়লাম । ধপ্পাস ।

দাদা আপনার ছোট বেলায় হাত ভাংঙার গল্প টি একটু দুঃখজনক। তবে পুরো গল্প টি পড়ে অনেক মজাই পেলাম। গ্রামে কাটানো দিন গুলো সত্যি অসাধারণ। তাও আবার অনেক বড়ো পরিবারের সাথে কাটিয়েছন।কাজিনদের সঙ্গে অনেক সুন্দর ঘন মহত্ত্ব কাটিয়ে দিয়েছেন। তবে একটা কথা কি দাদা আপনি বিশাল ফ্যামিলির সন্তান যেনে আমি খুবই আনন্দিত এ রকম পরিবার এখন খুব কমেই দেখা যায়। ৫০-৬০ জন লোকের পাত পড়তো প্রতিদিন আমি তো শুনেই অবাক
ধন্যবাদ দাদা।

আগেকার সময়গুলো সত্যি খুব মজার ছিল। বাপ-চাচা সকলে একসাথে যৌথ পরিবারের থাকতো। কোন একটা অনুষ্ঠান আয়োজন হলে পরিবারের সকলে একসাথে হত। আগের সময় যৌথ পরিবার গুলা আমার কাছে খুবই ভাল লাগত কিন্তু বর্তমানে এখন আর কেউ যৌথ পরিবারের থাকতে চাই না।

দাদার এই ছোটবেলাই হাত ভেঙে যাওয়ার ঘটনাটি পড়ে খুবই মজা লেগেছে।

আমার ডাক নাম ছিল তখন "ছোট্ট"

দাদার এই নামটি সত্যি খুব ফানি।

নেংটি আর হস্তী কথাটা অনেক মজা পেলাম।ভালো ছিলো।আচ্ছা দাদা আপনাট ঐই কাজিনটা কি এখনও মোটা।একেই বলে প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে 😉😉।ধক্কা মরার কারনে নিজই পরে গেলেন।ধন্যবাদ

বাহ দাদা বেশ মজার গল্প হলেও শেষে কিন্তু দুঃখের হয়ে গেলো। আপনাদের পরিবার তাহলে অনেক বড় ছিল। একসাথে ৪৪-৪৫ জন খেতে বসতেন। এরকম যৌথ পরিবার এখন আর দেখা যায়না তেমন। আমারো একবার হাত ভেঙে গিয়েছিল গাছ থেকে পড়ে। তবে দুদিন পড়েই ভালো হয়ে গেছি।

আপনারা আগে একান্নবর্তী পরিবার ছিলেন। আপনার বাবার কাজ এবং সেটা পরিবার মেনে নেওয়ার বিষয়টি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। আমার সঙ্গেও একবার এইরকম ঘটেছে। ঐ ভোঁদোর মতোই মোটা আমার এক বন্ধু আমার পায়ের উপর পড়ে গিয়েছিল। যদিও আমার পা টা ভাঙছিল না কিন্তু ভালো চোট পেয়েছিলাম। যাইহোক আপনি দেখছি ছোটবেলা বেশ ভালো দুষ্টো ছিলেন। এবং দুষ্টু ছেলেদের ছোটবেলা হাত পা ভাঙা কুকুর কামড়ানোর রেকর্ড বহু পুরানো হাহাহা।।

আমার ডাক নাম ছিল তখন "ছোট্ট"ছোটবেলায় সকল আদরের সন্তানদের নাম ডাকা হয় আপনি নিশ্চয়ই পরিবারের মধ্যে ছিলেন তাই তো আপনাকে সবাই নামে ডাকত। কিন্তু ভোঁদার সাথে যখন আপনি ধাক্কা খেয়ে কয়েক হাত দূরে পড়ে গেলেন তখন একদিকে হাসি পেয়েছে আরেকদিকে কষ্ট লেগেছে হাসি পেয়েছে এই ভেবে যে লোকটা এতই স্বাস্থ্যবান ছিল যে যার সাথে ধাক্কা খেয়ে আপনি তাকে একচুল নড়বি পারেন নাই বরং আপনি দূরে গিয়ে করেছেন এবং আপনার হাত ভেঙে গেছে। এত ছোট বয়সে হাত ভেঙে গেলে একটু কষ্ট হয় একটু না বিশাল কষ্ট কারণ যে সময় আপনার দুরন্তপনা সেই সময়টা যদি হাত ভেঙে যায় তাহলে বেশ অসুবিধায় হয়ে যায়। আর আমরা যখন অসুস্থ হয়ে পড়ি আমাদের সেবা করার জন্য আমাদের পরম ভালোবাসার একজন মানুষ। তিনি আমাদের মা। আপনার পরবর্তী দুরন্তনা গল্প অপেক্ষায় রইলাম।

দাদা আপনার এই পোস্ট পড়ে আমার ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আমাদেরও যৌথ পরিবার ছিল। আমার সব চাচা চাচি সবাই মিলে একত্রে একই বাড়িতে থাকতাম আমরা। আসলে আমরা তখন অনেক আনন্দে দিন কাটাতাম। অনেক মানুষের খাওয়া-দাওয়া হতো একসাথে। দাদা আপনার লেখাগুলো যখন পড়েছিলাম তখন আমার নিজের বাড়ির কথা বারবার মনে পড়ছিল। যদিও সময়ের বিবর্তনে এখন সবাই যৌথ পরিবার ভেঙ্গে ছোট পরিবার গঠন করেছে। আপনি যেমন আপনার সব কাজিনদের সাথে অনেক আনন্দ করতেন এবং খেলাধুলা করতেন তেমনি আমিও আমার সব কাজিনদের সাথে অনেক আনন্দে সময় কাটাতাম। আপনার লেখাগুলো পড়ে পুরনো স্মৃতির মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম দাদা। তবে যাই হোক শেষের দিকের লেখাগুলো পড়ে আপনার হাত ভেঙে যাওয়ার ঘটনাটি জেনে মন খারাপ হয়ে গেল। আসলে ছোট বেলার এসব দুর্ঘটনা গুলো অনেক সময় মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ছোটবেলার গল্প আমাদের মাঝে এভাবেই শেয়ার করবেন এই কামনা করছি দাদা। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো দাদা।❤️❤️❤️

দাদা আপনাদের সেই বাড়ীটি কি এখনও আছে কিনা জানি না। তবে খুবি আনন্দ পেয়েছি এই পুড়ো ঘটনাটি পরে। আনন্দ বলতে হাত ভাঙ্গা বাদে সব ঘটনা গুলো ভাল লেগেছে। আপনার পা তারপর হাত । দুরন্ত পানার একসের। আমার ছোটবেলায় টিউবয়ের হাতল চাপ দিয়ে গিয়ে ছুটে গিয়েছিল। লেগেছিল থুতনিতে ব্যাস তিনটে শেলাই। হা হা হা। ভাল থাকবেন দাদা । শুভেচ্ছা।

প্রায় এক মাস পরে ব্যান্ডেজ কেটে আমার ডান হাতটাকে ফিরে পেলাম ।
দাদা আপনি যে আপনার হাত ফিরে পেয়েছেন সেটাই অনেক। অনেকে তো হারায় ফেলে চিরদিনের মত।তবে দাদা গল্পটি পড়ে বুঝতে পারলাম আপনি ছোট বেলায় খুব চঞ্চল ছিলেন।আপনাকে গল্পটি পরে ভালই লাগলো।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

ঘটনাটা এখনকার হিসেবে হয়ত একটু ফানি লাগছে, কিন্তু তখনকার হিসেবে যদি বিবেচনা করি তাহলে খুব খারাপ। এমনিতেই বিয়ে বাড়ি তার উপর এত্তগুলো সমবয়সী মানুষজন। তাদের সাথে না মিশে হাত গলার সাথে ঝুলিয়ে রাখা! উফ খুব বিরক্তিকর। তবে অনেক বছর পর আজ যেমন আপনি স্মৃতিটাকে মনে করছেন, তেমন মনে করলে হৃদয় পুলকিত হয়ে যায়।

ধন্যবাদ দাদা ছোটবেলার এই সব ঘটনাবহুল মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য। এর মাধ্যমে যে আমরা শুধু একজন সফল মানুষের দুর্দান্ত শৈশবকে জানতে পারি তাই নয়, নিজেদের ফেলে আসা দিনগুলোও মনে পড়ে যায়।

দাদা আপনি যে খুবই দুরন্ত ছিলেন সেটা আপনার লেখা থেকে জানতে পেরেছি। কিন্তু আপনার উপর দিয়ে যে এতো ঝড় ঝাপটা গিয়েছে সেটা আগে বুঝতে পারিনি। তবে আপনি ছোটো বেলায় যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন সেটা আমার কিছু দিন আগে হোলো। হাত পা ভাংগালে যে কি পরিমান খারাপ লাগে সেটা এবার বুঝতে পেরেছি।

দাদা আপনার ছোট্ট বেলার গল্পগুলো শুনতে সত্যিই ভালো লাগছে। তবে হাতের হাড় ভেঙে দুই টুকরো হয়েছিল জেনে ভীষণ খারাপ লাগছিল। যাক হাত ফিরে পেয়েছেন আর সুস্থ হয়েছেন জেনে খুশি হলাম। আর দোয়া সবসময়ই করি আর কখনো যাতে এরকম কোন অঘটন যেনো আর না ঘটে।

সারাক্ষন হৈ হুল্লোড়, চেঁচা-মেঁচি, দৌড়াদৌড়ি আর কত রকমের যে খেলাধুলা তার ঠিক নেই

যত পড়ছি ততই আনন্দ পাচ্ছি। আমাদের নিজেদের বাড়িতে এরকম অবস্থা না থাকলেও মামা বাড়িতে এরকম ৪০/৫০ জনের বেশি মানুষের রান্না হত কাজের লোকজন সহ। সেখানে গেলেও অনেক কাজিনদের সাথে ঠিক এভাবে করে খেলাধুলা হৈ-হুল্লোড় আড্ডা চলতই। মুঝিয়ে থাকতাম কখন মামাবাড়ি যাব।

আমার মনে আছে আমি একবার আমার এক মামাতো ভাইয়ের বিয়ের দিন রাতে হাতে বাজি রেখে ফুটিয়ে ফেলেছিলাম হই-হুল্লোড়ের মাঝে।

এই সিরিজটা দাদা চালিয়ে যান। নস্টালজিক হয়ে যাচ্ছি।

আমার হাঁটু ভাজ হয়ে উপুড় হয়ে পড়ে গেলাম ধুলোতে । বেকায়দায় ডান হাতটা পড়লো পেটের তলে, আড়াআড়ি ভাবে।

দাদা খুবই খারাপ লাগলো জেনে। দৌড়ের কম্পিটিশন এ আমিও অনেক আঘাত পেয়েছিলাম জীবনে। আর আপনি এখনও ফিট আছেন এটাই শেষ বলবো।

দাদা আপনার পুরানো স্মৃতি পোষ্টটি পড়ছিলাম আর আপনার শৈশবকালের জীবন স্মৃতি মনে মনে ধারণ করছিলাম আপনার অতিবাহিত জীবন অনেকটা আমার শৈশবকালের সাথে মিল আছে আপনার ফিরে দেখা স্মৃতির সাথে।

আমার অবস্থা দেখে প্রথমে মারতে এলো, পরে অবশ্য আমার চোখে জল দেখে আর মায়ের ধমকে বাবা মারার কাজটা মুলতবি রেখে আমাকে আমার এক কাকার জিম্মায় রেখে নিজের কাজে চলে গেলো ।

ছোটবেলায় গাছ থেকে পড়ে আমার হাত ভেঙে গিয়েছিল। এরপর আমার চিৎকারে আমার বাবা-মা সহ আশেপাশের সবাই চলে আসে। কিন্তু এই পরিস্থিতে আমার বাবাও বেশ রেগে মেগে আমাকে দু 'ঘা বসাতেই যাবেন ঠিক তখন আমার কান্নায় মায়ায় পড়ে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। এখনো সেই কথাটি মনে পড়লে বেশ হাসি পায়।

তবে দাদা আপনার ছোটবেলার সব দুষ্টুমিতে ভরা গল্প গুলো শুনতে খুবই ভালো লাগছে। দাদা আপনার ছোটবেলার এমন আরও অনেক ঘটনা শুনতে চাই। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

দাদা ছোটবেলার খুব মজার একটি ঘটনারও কি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন চাপ পড়ে ভীষণ উদ্বেলিত হয়ে গেলাম।মনে পড়ে গেল নিজের ছোটবেলার টি কত দুরন্ত পড়া ছিল আমার বাজে কত দুষ্টু ছিলাম কত চঞ্চল ছিলাম।আপনি ঠিক যেভাবে ছয় থেকে সাত হাত দূরে পড়ে গিয়েছিলেন সেটা সত্যিই অনেক অবাক করার মত একটি বিষয় ছিল।সর্বোপরি আপনার গল্প পড়ে অনেক মজা পেয়েছি এটাই আসল কথা। ভালোবাসা অবিরাম♥♥

@tipu curate 9