আমার বাংলা ব্লগ।
মামাতো ভাইকে নিয়ে জায়গা রেজিস্ট্রি স্পেশাল একটা দিনের অনুভূতি।
আমি একজন কুমিল্লার বাসিন্দা। সে অনুসারে আমার ভূমি অফিস পড়েছে কুমিল্লা জেলা নাঙ্গলকোট থানার অধীনে। আমি বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম নাঙ্গলকোট থানা ও উপজেলার অফিসের আশেপাশেই। অনেকক্ষণ ঘুরে বেড়িয়েছিলাম ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের সাথে অন্য এক সময় শেয়ার করব। আজকে আমার অনুভূতি গুলো শেয়ার করলাম।
বন্ধুরা আমরা যে যার জায়গা থেকে সবাই মাথাভর্তি বোঝা নিয়ে জীবন যাপন করছি। হয়তো সারাদিন আমাদের সাংসারিক জীবন নিয়ে ভাবতে ভাবতে দিন চলে যায়। আবার অনেকের সকালটা শুরু হয় মাথাভর্তি চিন্তা এবং কর্ম জীবনের ব্যস্ততা এবং সংসার জীবনের নানান ঝামেলার বোঝা মাথায় নিয়ে দিন কাটাতে হয়। তেমনি মাঝে মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু দুর্ঘটনা আরো অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন করে ফেলে। আর সেই বিপদ গুলো হয়তো উপরওয়ালা আমাদেরকে, আমাদের মঙ্গলের জন্যই দিয়ে থাকেন, হয়তো আমরা বুঝিনা।
তেমনি হঠাৎ করেই অতিরিক্ত তীব্র গরমের পর শুরু হয়ে গেল তীব্র বন্যা। যা আমাদের বাংলাদেশের সিলেট বাসীর জন্য খুবই দুঃখের এবং ভয়াবহতা নিয়ে আসে। যদিও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেকেই ছুটে চলেছে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে। অসহায় দুস্থ মানুষের দ্বারে দ্বারে, তবুও কেন জানি আমরা কিছু মানুষ অনেকটা স্বার্থপর। শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকার জন্য স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তবে এটা আমাদের জন্য আদৌ কি বোধগম্য নয়।
এটা কখনও ঠিক নয়। মানুষ মানুষের জন্য এ কথাটা আমাদেরকে মনে রেখেই জীবন-যাপন করতে হবে। একজন মানুষ আরেকজন মানুষের উপকারে না আসে তাহলে মনুষ্যত্ব কিসের। যাইহোক আমি আর সেদিকে যাচ্ছিনা চলে যাচ্ছি মূল বক্তব্য।
মামাতো ভাইকে নিয়ে জায়গা রেজিস্ট্রি স্পেশাল একটা দিনের অনুভূতি।
বিগত এক বছর আগে মামাতো ভাইয়ের সাথে এবং কি ছোট মামার ছেলে ওমায়ের সাথে মোবাইলে কথা বার্তার মাধ্যমে সেজো মামার ছেলে থেকে আমি একটা জায়গা ক্রয় করি। সে জায়গার পরিমাণ ছিল মাত্র সাড়ে ছয় শতাংশ। কিন্তু জায়গার যে মূল্য ছিল সেটা আমি তাদেরকে কথাবার্তা বলার দুই মাসের ভিতরে পরিশোধ করে দিই। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল, তবে একটু গরমিল ছিলো তাদের কিছু কাগজপত্রের ঝামেলা এবং কিসে কাগজপত্রগুলো যদি একসাথে না করে তাহলে রেজিস্ট্রি হবে না। সে ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি করতে হলে আর এস খতিয়ান, সিএস খতিয়ান,বি এস খতিয়ান এবং কি খারিজ বা দাখিলা কাগজ প্রয়োজন। আর সেগুলো ছিল না বিধায় পড়ে যায় বিপাকে।
তাদের সে কাগজপত্র যখন রেডি হল তখন দেখা দিল আরও একটা বড় বিপত্তি, যা আমার নিজের ক্ষেত্রে। বিভিন্ন ঝামেলার কারনেই এবং ঈদ চলে আসায় টাকা-পয়সা খরচ হয়ে যাওয়াতে আমার হাত একেবারে খালি হয়ে গেছিল। তবে জায়গা রেজিস্ট্রি করতে মামাতো ভাই কখনোই না করে নি। অল টাইম সে রেডি, কিন্তু একেক জনের এক কথায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়ে পড়ি। মামা না ফেরার দেশে চলে জাওয়ায় তার উত্তরসূরি হিসেবে মামাতো ভাই দুইজন, একজন থাকে জার্মানি আরেকজন থাকে বাংলাদেশে। রেজিস্ট্রি যদি দিতে হয় দুজনকে দিতে হবে, কিন্তু সমস্যা দাঁড়ালো তাদের দুজনকে একসাথে পাওয়াটা।
দু-তিন মাস পর যখন মামাতো ভাই আসলো তখন আমার সময় হচ্ছে না। আমি অফিস থেকে ছুটি নিতে পারছি না। তখন নিজের মাথায় মনে হয় যেন পুরো আসমনটা চেপে বসেছে। একদিকে হাত খালি টাকা নেই, অন্যদিকে মামাতো ভাই জার্মান থেকে এসেছে। করনার পরিস্থিতি তেমন ভালো না দেখে সেই তাড়াহুড়ো করে চলে যাবে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস যখন তার সাথে দিন তারিখ ঠিক করলাম তখন রেজিস্ট্রি অফিসার আর আসলো না সেদিন। ক্যান্সেল হয়ে গেল আমাদের রেস্ট্রাইক্ট তারিখ। আবার পুনরায় মামাতো ভাই চলে গেল জার্মান।
এতে করে নানান জনের নানান কথা নানান বুদ্ধির শুনতে শুনতে একপর্যায়ে পাগলের মত হয়ে গেছি। অবশেষে সবকিছু বাদ দিয়ে ব্যানটর বা দলিল লেখক এর সাথে বোঝাপড়া করলাম যে একজনের রাষ্ট্রের দিলে হবে কিনা। তখন সেই আমার থেকে জানতে চাইল প্রত্রিক সম্পত্তির পরিমাণ কেমন কতটুকু আছে। মামার বিশাল সম্পদের মালিক যেহেতু একজন দিলে হবে সমস্যা হবে না এটা করা যাবে। তখন আর আগে-পিছে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করলাম না। চিন্তাও করলাম না, নিজে বেশ কিছু টাকা জমিয়ে তখন মামাতো ভাইকে ফোন দিয়ে ডেট ফিক্সট করলাম।
পরবর্তীতে দেখা দিলো আরো বড় যন্ত্রণা, মামাতো ভাই নতুন চাকরিতে জয়েন করছে ফাহিম সে সময় দিতে পারবে না। তখন নিজের কাছে খুবই হতাশ মনে হচ্ছে এত কষ্ট করে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এখন ফাহিম সময় দিতে পারছেনা। ব্যাপারটা কেন জানি খুব হতাশাজনক লাগছে। না জানি কোন ঝামেলা হয়, তবে জায়গা সম্পদ এবং কি টাকা-পয়সা খুবই খারাপ একটা জিনিস। আর আমার টেনশন হচ্ছে যেখানে আমি জমির সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দিয়েছি শুধু রেজিস্ট্রি আমাকে বুঝিয়ে দিতে পারছেনা। আমার মাথায় কতটুকু টেনশন কাজ করছিলো।
অবশেষে অনেক রিকুয়েস্ট করে ফাহিমকে রাজি করিয়ে ফাইন কে সাথে নিয়ে গেলাম আমাদের কুমিল্লা জেলা নাঙ্গলকোট থানার ভূমি অফিসে। পৌরসভা অফিসে যাওয়ার আগে দলিল লেখক এর সাথে কথাবার্তা বলে কাগজ পাতি সব কিছু রেডি করি এবং কি শেষ পর্যন্ত জায়গাটা রেজিস্ট্রি হয়ে গেল। এবং তেমন বেশী সময় লাগেনি, রেজিস্ট্রি হওয়ার পর নিজের প্রতি নিজের খুবই আনন্দবোধ কাজ করছিল। তাই চিন্তা করলাম আমি আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুদের সাথে আমার অনুভূতি গুলো শেয়ার করি।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। আর আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে এত সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার উপর দিয়ে ভীষণ রকম মানসিক চাপ চলছিল। কিন্তু যখন মামাতো ভাইকে দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করতে পেরেছেন তখন আপনার মাথা থেকে বিশাল বোঝা নেমে গিয়েছে। খুবই অস্বস্তিকর ও অশান্তিতে আপনি অনেকদিন পার করেছেন। তবে এই রেজিস্ট্রির মাধ্যমে আপনার সকল অস্বস্তি ও অশান্তি একদম দূর হয়ে গেছে। এখন যেহেতু আপনি জমির মালিক হয়ে গেলেন আপনার টেনশনও কমে গেল সেহেতু আমাদের সকলকেই মিষ্টি খাওয়ানো উচিত বলে মনে করছি। তাই মিষ্টি খাওয়া টা কিন্তু পাওনা থেকে গেল ভাই। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যা ভাইয়া এখন একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছি, অন্তত একটা ঝামেলা কমেছে। উৎসাহ দিয়ে সাথে থাকার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে ভাই বিপদ মানসিক চাপ সব সময় থাকবে। এগুলো নিয়ে জীবনকে চলতে হবে। আমি কিছুটা বিপদ মুক্ত হয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আর এই মূহূর্তটাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে ভাই এটা বড় ধরনের একটা বিপদ, ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে এটাই সবচেয়ে বড় কথা। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কথায় আছে না বিপদ যখন আসে চারদিক থেকে আসে। তবে আপনার এই ঘটনাটি পড়ে নতুন একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলাম। আপনার মামার হঠাৎ মৃত্যুতে জমি রেজিস্ট্রির কাজটা সম্পন্ন হলো না। আবার এদিকে মামাতো দুইটা ভাই দেশেতে নেই। একটা বিদেশে, একটা দেশে। যাদের একত্রিত করা আপনার এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। তাই আপনার কাজটা অসমাপ্ত রয়ে গেল দীর্ঘদিনের জন্য। তবে এর মধ্যে রয়েছে একটি শিক্ষণীয় বিষয়, যা অন্যদের সচেতন করবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি বিষয়টি ভালো করে ফলো করেছেন। আর সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করে উৎসাহ দেয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জমি জমা সংক্রান্ত বিষয় গুলো খুব কম বুঝি । যদিও এটি নিয়ে এখনও ঘাটাঘাটি করার প্রয়োজন পড়ে নি। আপনার মামাতো ভাইয়ের সাথে জমি রেজিস্ট্রি করার দিনের গল্পটি পড়লাম। অনেক কিছু সম্পর্কে ধারনাও পেলাম। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জমি সংক্রান্ত বিষয় বুঝলে সহজ, না বুঝিলে অনেক কঠিন, শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি আপনার মামাতো ভাইকে নিয়ে জায়গা রেজিস্ট্রি করতে নিয়ে গেছেন শুনে খুব ভালো লাগলো। আসলে এরকম অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের জীবনে থাকা দরকার। কারণ কখন কাকে কি কারনে দরকার লেগে যায় বলা যায় না। আপনার পোস্ট অনেক সুন্দর ছিল এবং কোয়ালিটিফুল পোস্ট ছিল। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit