কলেজের বন্ধুদের সাথে গেট টুগেদার ।। 10% for shy-fox

in hive-129948 •  3 years ago 

◾️ ১৩ মে
▪️ শুক্রবার


আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সকলে খুব ভালো ও সুস্থ আছেন। বিগত দুই সপ্তাহ ধরে আমার ভার্সিটিতে এক্সাম থাকার কারণে আপনাদের থেকে কিছুটা দূরে চলে গিয়েছিলাম। পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে স্টিমিটে কোন প্রকার লেখালেখি করতে পারিনি। গতদিন এক্সাম শেষ হয়েছে। আজ থেকে ইনশাল্লাহ আবার আগের মতো এক্টিভ থাকার চেষ্টা করবো।

আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি আমার কলেজ বন্ধুদের নিয়ে একটি গেট টুগেদার এর স্মৃতি। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।

কলেজ জীবন শেষ করেছি আজ থেকে পাচ বছর আগে। সেই স্মৃতি বিজড়িত জায়গা ও প্রানের বন্ধুদের সাথে খুব একটা দেখা হয়ে উঠে না। দেখা হলেও সবাইকে এক সাথে পাওয়া যায় না। এবার রমজানের শেষ ১০ দিনের আগেই ভার্সিটি বন্ধ পেয়ে বাসায় চলে যাই। হুট করেই আমি আমার বন্ধু রাব্বি ও বিজয় মিলে প্ল্যান করে ফেলি এবার আমাদের কলেজের বন্ধুরা মিলে ঘাটাইল একটি ইফতার মাহফিল ও গেট টুগেদার এর আয়োজন করবো। কলেজের সব বন্ধুরা এখানে আসতে পারিনি। তবুও যারা আশে পাশের দূরত্বে থাকি তাদের সবাইকে মেসেঞ্জারে জানানো হয়। সবাই মোটামুটি জয়েন করতে চায়। তো এভাবেই মেসেঞ্জারে সবার সাথে আলোচনা করে প্লেস ঠিক করা হয় এবং খাবার আইটেম ও চাদা নির্ধারণ করা হয়।

আমাদের কলেজ ছিল ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ। সেনানিবাস এর ভিতরে কলেজ থাকার কারণে আমরা সেদিন ভিতরে যেতে পারিা সাধারনত তাদের নিয়ম অনেক স্ট্রিক্ট হয়ে থাকে। আমাদের ব্যাচের গাইড টিচার ম্যামকে কল দিলে হয়তো তিনি পারমিশন নিয়ে দিতে পারতেন। এটা যেহেতু পুরো ব্যাচের গেট টুগেদার ছিল না তাই আমরা আর ভিতরে যাইনি। এর পরে ইনশাল্লাহ পুরো ব্যাচ মিলে গেট টুগেদার করবো।

২৭ রমজানের দিন আমাদের গেট টুগেদার এর দিন ঠিক করা হয়। সেই দিন দুপুর তিনটার দিকে আমি আর আমার তিনজন বন্ধু মিলে বাইক নিয়ে বের হয়ে পড়ি ঘাটাইল এর উদ্দেশ্যে। আমাদের বাসা ধনবাড়িতে। ধনবাড়ি থেকে ঘাটাইল প্রায় ২৫ কিলোর মত রাস্তা। যেতে বেশি একটা সময় লাগে না। ঐ দিন আগে আগেই সবাই বের হয়েছিলাম।

1.jpeg

আমি আমার বন্ধু পারভেজ, অংকন ও মামুন মিলে ২ বাইক নিয়ে বের হয়ে পড়ি। মধুপুরে আমাদের আরও ২ জন বন্ধু বাইক নিয়ে অপেক্ষা করছে। আমরা গেলে ওরাও আমাদের সাথে একসাথে যাবে। রাস্তা একদম ফাকা ছিল।

2.jpeg

মধুপুর গিয়ে আমরা এক জায়গায় একটু ব্রেক নেই। তারপর সোহাগ ও নাবিল এসে আমাদের সাথে যোগ হয়। পরে আমরা সেখানে আর দেরি না করে আমাদের ভেন্যুতে চলে যাই।

3.jpeg

8.jpeg

আমাদের ভেন্যু ঠিক করা হয়েছিল ঘাটাইল এর টি-জংশন এ অবস্থিত টপ-টেন রেস্টুরেন্ট এ। আমরা যখন কলেজে পড়তাম তখন এসব রেস্টুরেন্ট ছিল না। নতুন হয়েছে। ঘাটাইল এর বন্ধুরা মিলে এটি বুকিং দিয়েছিল।

টি-জংশন গিয়ে সবার প্রথমে যাই আমাদের ছাত্রাবাসে যেখানে দীর্ঘ দুইটি বছর আমরা থেকেছি। ছাত্রাবাসের নাম শহীদ ছাত্রাবাস। কত স্মৃতি পড়ে আছে সেই মেছটিতে। ভিতরে ঢুকার পরেই বুকের ভিতরে কেমন যেন একটি অনুভূতি কাজ করেতেছিল। যারা একসাথে থাকতাম সবার কথা মনে পড়ছিল খুব। একটা সেলফি নিয়ে নিলাম স্মৃতির পাতায় রেখে দেয়ার জন্য।

4.jpeg

তারপর সেখান থেকে বের হয়ে চলে যাই আমাদের টি-জংশন কলেজ রোডে। সবাই মিলে হেটে হেটে টিলা বাজার পর্যন্ত যাই। সবার সাথে দেখা হয়ে, কলেজ লাইফের অনেক মধুর মধুর স্মৃতির কথা মনে করে অনেক মজা করছিলাম আমরা। সবার মধ্যে অনেক ভাল লাগা কাজ করছিল।

5.jpeg

7.jpeg

16.jpg

ইফতারের কিছুক্ষন আগ দিয়ে আমরা চলে আসি রেস্টুরেন্টে ইফতার করার জন্য। রেস্টুরেন্টটি মোটামুটি ভালই সাজানো গুছানো ছিল।

9.jpeg

15.jpg

সবার সাথে আড্ডা দিতে দিতে টেবিলে খাবার চলে আসে। খাবারের আইটেম ছিল চিকেন খিচুড়ি, কাবাব, আপেল, পিঁয়াজু, বেগুনি, খেজুর, শরবত, কোক। খাবারের কোয়ালিটি ও স্বাদ অনেক ভাল ছিল।

17.jpg

11.jpeg

সবাই মিলে ইফতার করে আরও কিছু সময় সবার সাথে আড্ডা দেই। ঐদিন ছিল পবিত্র শবে কদর এর রাত। তাই বেশি সময় আর সেখানে দেরি না করে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় উদেশ্যে রওনা হয়ে গিয়েছিলাম।

এই ছিল ছোট পরিসরে কতিপয় কিছু বন্ধুদের নিয়ে আমাদের গেট টুগেদার এর গল্প। আপনাদের সাথে শেয়ার করে আমার স্মৃতির ওয়ালে লিখে রেখে দিলাম। আজ তবে এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

বিভাগ তথ্য
ডিভাইস রেডমি নোট ১০ প্রো
লোকেশন what3words Location

আমার পরিচয়

santo.jpg

আমি রকিবুল শান্ত। বর্তমানে ঢাকা সিটি কলেজে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টে অনার্স ৩য় বর্ষে লেখাপড়া করছি । আমি পজেটিভ চিন্তাধারার একজন মানুষ । সব সময় সিম্পল থাকার চেষ্টা করি। কোডিং করতে, মিউজিক করতে , বিভিন্ন বিষয় এর উপরে আর্টিকেল লিখতে বেশি পছন্দ করি। নিজের স্কিল বাড়ানোর জন্য প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখার চেষ্টা করি। ভালোবাসা পেলে ভালোবাসা দিতে কার্পণ্য করি না ।

শুভেচ্ছান্তে
@rokibulsanto


tnq.png

Mybanner.png


blogPng.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দেখেই বুঝতে পারলাম টপ টেন রেস্টুরেন্টেটি অনেক ভালো মানের। রেস্টুরেন্টের সামনে অংশ থেকে শুরু করে ভেতরের অংশটা দেখতে অসাধারণ লাগলো। যাইহোক পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে অনেকদিন পর গেট টুগেদারে ইফতার মাহফিল বিষয়টা রোমাঞ্চকর মনে হচ্ছে আমার কাছে। আসলে এই অনুভূতিগুলো প্রকাশ করার মতো না একটু দূরত্ব হলেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কখনো শেষ হয়ে যায় না। আশা করছি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে বেশ কিছু ভালো মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন। মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

জি ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন। বন্ধুত্বের সম্পর্ক কখনও শেষ হয় না। দোয়া করবেন যাতে একসাথে মিলে মিশে থাকতে পারি সবাই। অনেক অনেক ভালোবাসা আপনার জন্য এত চমৎকার গুছিয়ে একটি মন্তব্য আমার পোস্ট এ করার জন্য। ভাল থাকবেন আপনি। দোয়া রইল

ভাই অনেকদিন পর আমাদের পরিবারে আপনাকে দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। বিগত দুই সপ্তাহ ধরে ভার্সিটিতে এক্সাম থাকার কারণে আপনার অনুপস্থিতি কাটিয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কলেজের বন্ধুদের সাথে গেট টু গেদার খুবই জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালন করেছেন দেখছি। টপ টেন রেস্টুরেন্টে গিয়ে বন্ধুদের সাথে মুখরোচক খাবার খেয়ে খুবই আনন্দময় সময় উপভোগ করেছেন। আপনার শহীদ ছাত্রাবাসে দুই বছর কাটানো সময়টুকু মনে রাখার জন্য, এবং বন্ধুদের সাথে কাটানো সময়টুকু স্মৃতির পাতায় ধরে রাখার জন্য আপনি যে ফটোগ্রাফি গুলো করেছেন তা অত্যন্ত চমৎকার হয়েছে। এত সুন্দর বর্ণনা ও চমৎকার ফটোগ্রাফি নিয়ে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

গুছিয়ে এত সুন্দর গঠনমুলক মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জামাইবাবু। আবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পেরে আমারও অনেক ভাল লাগছে। ভালবাসা নিবেন আমার।

আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে অনেক সুন্দর গেট টুগেদার আনন্দের মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। টপ টেন রেস্টুরেন্ট দেখে অনেক ভালো লাগলো। রেস্টুরেন্ট এর ফটোগ্রাফি দেখে বোঝা যাচ্ছে ওখানকার পরিবেশ টা অনেক সুন্দর। আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে গেট টুগেদার ইফতার মাহফিল অনেক সুন্দর ভাবে কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

জি আপু। রেস্টুরেন্ট অনেক গুছানো পরিপাটি ছিল। খাবারের মানও মাহশাল্লাহ ভাল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি কমেন্ট করার জন্য। ভাল থাকবেন

পুরনো বন্ধুদের সাথে অনেকদিন পর দেখা হলে খুব ভালো লাগে। আর মাঝে মাঝে যদি এভাবে গেট টুগেদার করা যায় তাহলে তো কথাই নেই। আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন আর আমাদের সাথে সেই অনুভূতি শেয়ার করেছেন অনেক ভালো লাগছে শুভকামনা আপনার জন্য।

হ্যা ভাই অনেক ভাল লেগেছে আমাদের। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য

আসলে এ কলেজের বন্ধুদের সাথে এরকম মুহূর্তগুলো কখনো ভোলা যায়না। আমিও এবার আমার গ্রামে গিয়ে আমার ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে কথা বলেছি। এখন সবার সাথে এরকম দেখা হলে খুব ভালো লাগে খুব সুন্দর একটি সময় কাটে। দেখে ভালো লাগলো যে আপনি কলেজের বন্ধুদের সাথে খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন ভাই। সুন্দর মুহূর্তটাকে আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল। আপ্নিও অনেক ভাল সময় পার করেছেন হয়তো। অনেক ভাল লাগলো আপনার কমেন্ট পেয়ে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই

স্কুল বা কলেজের বন্ধুরা ভার্সিটিতে ওঠার পরপরই একেক জন একেক জায়গায় চলে যায়। এরপর অনেকদিন পর যখন সবাই একত্রিত হওয়া হয় তখন কি যে ভালো লাগে সে অনুভূতি লিখে প্রকাশ করার মতো না। তবে ঈদের সময় ছাড়া সবাইকে একসাথে পাওয়াই যায়না।
আপনি বন্ধুদের সাথে গেটটুগেদার এর অনুভূতি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন।
ইফতার, আড্ডা, অতীতের স্মৃতিচারণ সব মিলিয়ে খুব সুন্দর একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল মনে হয়।
আপনাকে ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

জি আপু। আপনি ঠিক কথাই বলেছেন। বন্ধুদের সাথে যখন আড্ডা দেয়া হয় তখন মন খারাপ থাকলেও ভাল হয়ে যায়। আর সেটা যদি হয় স্কুল কলেজের বন্ধু তাহলে তো কথাই নেই। অনেক ভাল ছিল আপনার মন্তব্য । ধন্যবাদ আপনাকে

মনে হয় অনেক মজা, মাস্তি করেছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আসলে কলেজের বন্ধুরা একসাথে হলে তখন মজাটা বেড়ে যায়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে বন্ধুদের মজার মুহূর্তের কিছু অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

আপ্নাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই এত গুছিয়ে কমেন্ট করে আমার পাশে থাকার জন্য। ভাল থাকবেন।

লিভ হোক আর গেট হোক
দুটোই কিন্তু টুগেদার
সব আনন্দ চুটিয়ে করলেন
ছবিতে ছিল আনন্দের বাহার।

হাহা। লিভ টুগেদার বাংলাদেশে এখনও বৈধ না ভাই। অনেক ভাল লাগলো আপনার সুন্দর কমেন্ট পেয়ে

মনে হচ্ছে কিছুটা দিন পরে আপনার পোস্ট পেলাম। নাকি চোখের সামনে আপনাকে দেখি নাই। নিজে বুঝতেছিনা। যাইহোক রোজার সময় এর সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। খুবই ভালো লাগলো আপনার সুন্দর পোস্ট দেখে। আসলে বন্ধুদের সাথে থাকার আনন্দটাই আলাদা।

ভারসিটি এএক্সাম এর কারণে বেশ কিছুদিন লেখালেখির বাইরে ছিলাম ভাই। তাই পোস্ট দেখতে পাননি। এখন থেকে রিগুলার পাবেন আগের মত ইনশাল্লাহ। ভাল লাগলো আপনার কমেন্ট পেয়ে। ভালবাসা নিবেন।