গরুর মাংসের কথা শুনলেয় যেন জিভে পানি চলে আশে । কিন্তু গরুর মাংস চাইলেই আমরা প্রচুর পরিমাণে খেতে পারি না কারন এতে আমাদের দেহের ক্ষতি হতে পারে । তাই আসুন জেনে নেয়া যাক দৈনিক কতটুকু গরুর মাংস আমাদের দেহের জন্য উপকারী বা ক্ষতিকারক ।
গরুর মাংস কতটুকু খাওয়া নিরাপদঃ
অনেকেরই ধারণা গরুর মাংস খেলে বুঝি স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে গরুর মাংসে প্রচুর কোলেস্টেরল থাকায় অনেকেই সেটি খাওয়া এড়িয়ে চলেন। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে গরুর মাংসের ক্ষতিকর দিক যেমন আছে তেমনি এই মাংস অনেক উপকার করে থাকে । কারন গরুর মাংসের যতো পুষ্টিগুণ আছে সেগুলো অন্য কোন খাবার থেকে পাওয়া কঠিন ।এখন এই মাংস আপনার জন্য ক্ষতিকর হবে না উপকারী সেটা নির্ভর করবে আপনি সেটা কতটা নিয়ম মেনে কি পরিমানে খাচ্ছেন।
গরুর মাংসের পুষ্টিগুণঃ
গরুর মাংসের রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল বা খনিজ উপাদান যেমন জিংক, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, আয়রন। ভিটামিন এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি ২, বি ৬ এবং বি ১২ আর এ উপাদানগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পেশী দাঁত ও হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে । তক, চুল ও নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
source
শরীরের বৃদ্ধি ও বুদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রাখে। ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে ।দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে। অতিরিক্ত ক্লান্তি বা শরীরের অলসতা দূর করে কর্মোদ্যম রাখে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে । রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে, খাবার থেকে দেহে শক্তি যোগান দেয়, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, অবসাদ বা মানসিক বিভ্রান্তি বা হতাশা দূর করে।
প্রোটিনের চাহিদা মেটায়ঃ
গরুর মাংসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন মগজ ও কলিজায় প্রোটিন থাকলেও সেটার পরিমাণ কম। বরং এর বেশিরভাগ জুড়েই রয়েছে কোলেস্টেরল। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিনের প্রোটিনের চাহিদা নির্ভর করে একজন মানুষের ওজনের ওপর । আবার মেয়েদের মাসিক চলাকালীন কিংবা গর্ভবতী অবস্থায় স্বাভাবিক পরিমাণের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ প্রোটিন প্রয়োজন হয়। এছাড়া যাদের ওজন আদর্শ ওজনের চাইতে কম তাদের বেশি বেশি প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন । তবে প্রতিদিন ৭০ গ্রামের বেশি এবং সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাওয়া উচিত নয় বলে বৃটেনের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ জানিয়েছে ।
প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে 26 গ্রাম প্রোটিন এবং দুই গ্রাম ফ্যাট থাকে । তার মানে কি প্রতিদিনের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে আপনি ২৭০ গ্রাম মাংস খাবেন? একদমই না কারণ দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা একটি খাবার দিয়ে নয় বরং বিভিন্ন খাবার ও পানীয় দিয়ে আমরা পূরণ করে থাকি।
source
কখনোই প্রতিদিন একটানা গরুর মাংস খাওয়া যাবে না পুষ্টিবিদদের মতে গরুর মাংস খাওয়ার নিয়ম মাত্রা হলো সপ্তাহে দুই দিন , ৩ থেকে ৫ বেলা খাওয়া।। অন্যভাবে বলা যায় প্রতি বেলায় ঘরের রান্না করা মাংস ২\৩ টুকরার বেশি খাওয়া যাবে না। তবে আপনি যদি ডায়াবেটিস হৃদরোগ হাইপার্তেনশন বা কিডনি রোগে আক্রান্ত হন তাহলে চিকিৎসকের কাছে মাংস খাওয়ার পরিমাণ জেনে নিতে হবে চিকিৎসক যদি মাংস খেতে সম্পূর্ণ নিষেধ করেন তাহলে কিন্তু খাওয়া যাবে না। যারা এতদিন ভাবতেন গরুর মাংসে সবচেয়ে বেশি কোলেস্টেরল রয়েছে তাদের জন্য পুষ্টিবিদ চৌধুরী তাসলিম হাসিন বলেন একটি মুরগির ডিমের কুসুমে ১৯০ মিলিগ্রাম ভালো কোলেস্টেরল থাকে যা চর্বি ছাড়া ২১০ গ্রাম গরুর মাংসের সমান।সুতরাং গরুর মাংস মানেই অনেক বেশি কোলেস্টেরল এই ধারণা থেকে সরে আসতে হবে।
গরুর মাংস কিভাবে খেলে ঝুঁকি কমবেঃ
গরুর মাংস কতটা নিরাপদ সেটা নির্ভর করবে আপনি সেটা কিভাবে কাটছেন এবং রান্না করছেন তার ওপর। যুক্তরাষ্ট্রের একটি হেলথ যোর্নাল থেকে জানা গেছে গরুর শরীরের দুটি অংশের চর্বির পরিমাণ অনেক কম থাকে। একটি হলো গরুর পেছনে রানের উপরে খোলা অংশের মাংস যেটাকে রাউন্ড বলা হয় এবং পেছনের দিকের উপরের অংশের মাংস । তবে এর বাইরেও যে চর্বি লেগে থাকে সেটা রান্নার আগে কেটে ফেলে দিলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা যায়। মাংস ভালোভাবে ধুয়ে কিছুক্ষণ পানিতে সিদ্ধ করলে চর্বির স্তর উপরে উঠে আসে ।মাংসও কিছুক্ষণ ফুটে ওঠার পর এই পুরো পানিটা ফেলে দিতে পারেন। যদিও মনে রাখতে হবে এতে মাংসে থাকা চর্বির পাশাপাশি ভিটামিন ও মিনারেলসও কিন্তু বেরিয়ে যায়। এরপর সেদ্ধ মাংস কম তেল দিয়ে রান্না করুন যতটুকু না দিলেই না ।
গরুর মাংস বেশি তেল মসলা দিয়ে কষিয়ে ভুনা করে রান্না না করাই ভালো। এর চাইতে ভালো ঝোল ঝোল করে মাংস রান্না করা এবং খাবার সময় সেই ঝোল এড়িয়ে যাওয়াই নিরাপদ ।
source
এছাড়া গরুর মাংস আগুনে ঝলসে খেলে চর্বি অনেকটাই চলে যায় আবার গরুর মাংস কম খাওয়া হয় সেজন্য মানুষের সাথে বিভিন্ন সবজির যেমন মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পেঁপে ইত্যাদি মেশাতে পারেন ।
অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়ার ঝুঁকিঃ
অতিরিক্ত গরুর মাংস শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে কারণ গরুর মাংসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় আর উচ্চ রক্তচাপ থেকে হূদরোগ ও কিডনির জটিলতা দেখা দিতে পারে ।এছাড়াও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে গরুর মাংস যদি খেতেই হয় তার আগে বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নিন আপনার জন্য কতটুকু গরুর মাংস প্রযোজ্য ।
আমার বাংলা ব্লগে এই ধরনের পোস্ট করা নিষিদ্ধ। আপনাকে আমার বাংলা ব্লগে পোষ্ট করতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল নিয়ম জানতে হবে।
আমার বাংলা ব্লগ এর নিয়মাবলী লিংক।
Link: https://steemit.com/hive-129948/@rme/7tfsz3
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit