নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি ছোট গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "টিয়ারা"। গল্পটির তৃতীয় পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।
হঠাৎ করেই অমিতদের বাড়ির রান্নাঘরে আগুন লেগে যায়। এই আগুন লাগার পেছনে তার মায়ের একটি ভুল ছিল। সেদিন তার মা রান্না বসিয়ে দিয়ে বাইরের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেছিল। সেই সময় কোন না কোনভাবে এই দুর্ঘটনাটা ঘটে যায়। তাদের রান্নাঘর ছনের ছিল, এইজন্য আরও বেশি করে চারিদিকে আগুনটা ছড়িয়ে গেছিল। অমিত অন্যান্য দিন টিয়ারাকে থাকার ঘরে রাখলেও সেদিন সে তাকে রান্না ঘরে রেখেছিল।
হঠাৎ করে যখন চারিদিকে আগুন ছড়িয়ে যায়, টিয়ারা প্রচন্ড ভাবে চিৎকার শুরু করে। তারপর চারদিক থেকে লোকজন ছুটে আসে এই আগুন নেভানোর জন্য। কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে, কেউই এই আগুন নিভাতে পারছিল না সহজে। আর টিয়ারা যেহেতু এই রান্না ঘরে ছিল তাই সেই সময় টিয়ারার গায়েও কিছুটা আগুন লেগে যায়। যার ফলে টিয়ারার পাখা পুড়ে যায় এবং কিছুটা আহত সে হয়। অমিত যদিও সেই মুহূর্তে বাড়ি ছিল না। তবে যেহেতু তাদের রান্না ঘরে আগুন লেগে যাওয়ার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল তাই অমিত এই খবরটা পেয়েই তাড়াতাড়ি বাড়িতে ছুটে আসে। এই সময় তার রান্না ঘরের চিন্তা ছিল না, তার প্রথম চিন্তা ছিল টিয়ারা ঠিক আছে কিনা সেটা দেখা। বাড়িতে এসে সে দেখে টিয়ারা আর ডাকাডাকি করছে না, একদম নরম হয়ে অনেকটা ঘুমিয়ে থাকার মতো রয়েছে। আর তাকে ডাক দিলেও আগের মতো সে আর সাড়া দিচ্ছে না।
সেই সময় কোনরকম করে তাকিয়ে তাকিয়ে টিয়ারা সবকিছু দেখছিল। সে যে আহত এবং প্রচন্ড ভয় পেয়ে রয়েছে, এই ব্যাপারটা তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। টিয়ারার এই অবস্থা দেখে অমিত কান্নাকাটি শুরু করে দেয় এবং কিছু সময় পরেই সে টিয়ারাকে নিয়ে এক পশু-পাখির ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর টিয়ারার চিকিৎসা করা হয় এবং টিয়ারার সুস্থ হতে বেশি কিছুদিন সময় লাগবে এমনটা ডাক্তার অমিতকে বলে দেয়। কিছুদিন পরে আবার টিয়ারা আগের মত হয়ে যাবে, এমনটা কল্পনা অমিত মনে মনে করতে থাকে । বাড়িতে আসার পরে অমিতকে দুটো প্রবলেম একসাথে ফেস করতে হয়। একদিকে রান্নাঘর পুড়ে যাওয়ার এক বিপদ, অন্যদিকে টিয়ারার অসুস্থতা। বাড়িতে এক অশান্তি শুরু হয়ে যায় সেইসময়।
হঠাৎ করে গোছানো সবকিছু কেমন জানি এলোমেলো হয়ে যায়। অমিতদের খুব বেশি টাকা ছিল না, সেই জন্য তাদের এই ক্ষয়ক্ষতি কোনভাবে পূরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। যাইহোক, কয়েকদিনের মধ্যেই গ্রামের কিছু লোকজন সাহায্য করে তাদের এই রান্না ঘরটা পুনরায় তৈরি করে দেয়। আর আস্তে আস্তে টিয়ারাও সুস্থ হতে থাকে। কিছুদিন যাওয়ার পর টিয়ারা অনেকটাই সুস্থ হয়ে যায় এবং সে নিজে নিজেই খেতে পারার অবস্থায় ফিরে আসে। তবে আগে যেমন চঞ্চল একটা ব্যাপার ছিল টিয়ারার মধ্যে, সেই ব্যাপারটা আর দেখা যায় না।
সে যেন আগের মতো আর রিয়েকশন দেয় না, ডাকা ডাকিও আগের মত আর করে না। এই ব্যাপারটা অমিতকে অনেকটা আহত করতে থাকে। অমিত তাকে যতই আদর ভালবাসা দিক না কেন, টিয়ারা আর কোনো অবস্থায় আগের মত হয় না। টিয়ারা এই আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনাটিতে অনেক বেশি ভয় পেয়েছিল যা তাকে দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। অমিতের হাসি যেন চলে যায় টিয়ারার এই অবস্থা দেখে।
চলবে...
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ক্রিয়েটিভ রাইটিং (ছোট গল্প) |
---|---|
লোকেশন | বারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
টিয়ারা গল্পটার তৃতীয় পর্ব পড়ে আমার কাছে সত্যি খুবই ভালো লেগেছে। তবে এই পর্বের মধ্যে কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটেছে যেটা দেখে আমার কাছে তো অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। তাদের রান্নাঘরে আগুন ধরে যাওয়ার বিষয়টা সত্যি অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। আর টিয়ারার ডানার মধ্যেও আগুন লেগে গিয়েছিল আর সেও আহত হয়েছে শুনে খারাপ লেগেছে। এটাই কামনা করি যেন টিয়ারা আগের মতই হয়ে যায়। আশা করছি আপনি এই গল্পটার চতুর্থ পর্বটা খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই, টিয়ারা আগের মত হবে কিনা, সেটা আগামী পর্বেই জানতে পারবেন এবং আগামী পর্বের মাধ্যমে এই গল্পের সমাপ্তিও ঘটবে। যাইহোক, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, আপনার এই মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit