কালীপুজো পরিক্রমণ পর্ব - ০৩ || ২০ নভেম্বর ২০২২

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার সবাইকে ,

তোমরা সবাই কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আমিও অনেক অনেক ভালো আছি।

প্রথমেই সবাইকে আমার আজকের ব্লগে স্বাগতম জানাই। কালী পুজোয় ঘোরাঘুরি নিয়ে আজ তৃতীয়তম ব্লগ টি শেয়ার করব। কালী পুজো পরিক্রম নিয়ে দ্বিতীয় পর্বের ব্লগে তোমাদেরকে জানিয়েছিলাম পুজোর একদিন আগে বেরিয়েছিলাম পরিবারের সাথে বারাসাতের পুজো প্যান্ডেল গুলো ঘুরে দেখার জন্য। দ্বিতীয় পর্বে আমি বারাসাত ফায়ার বিগ্রেডের সামনের মাঠে অনুষ্ঠিত পুজো প্যান্ডেলটি সম্পর্কে শেয়ার করেছিলাম। ওই পুজো প্যান্ডেলটি দেখার পর আমি যে পুজো প্যান্ডেলটিতে গেছিলাম সেই পুজো প্যান্ডেলটির নাম হচ্ছে সাউথ ভাটরা ক্লাবের পুজো প্যান্ডেল। এই পুজো প্যান্ডেলটি ভাটরা পল্লী সুভাষ ময়দানের নিকটে অবস্থিত ছিল। পূর্বের পুজো প্যান্ডেলটি দেখে এখানে আসতে আমাদের একটু হাঁটতে যদিও হয়েছিল কিন্তু খুব একটা বেশি দূর ছিল না।

20221022_191025.jpg

20221022_191120.jpg

এই দিন রাস্তায় খুব ভিড় ছিল । আমরা যখন এই পুজো প্যান্ডেলটি দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা ভেবেছিলাম হয়তো এইখানে খুব ভিড় হবে কিন্তু গিয়ে দেখি আমাদের ধারণা ভুল ছিল। এখানে একদমই ভিড় নাই কিন্তু পুজো প্যান্ডেলটি দেখতে বেশ ভালো লাগছিল। এই বছর সাউথ ভাটরা ক্লাবের পুজো প্যান্ডেলের থিম ছিল আরতি হবে দিনরাত, জমে যাবে বারাণসী ঘাট। তারা দশাশ্বমেধ ঘাট এর মতো করে প্যান্ডেলটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। দশাশ্বমেধ ঘাট সম্পর্কে বলতে গেলে এটি উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে অবস্থিত এবং এইখানের একটি প্রধান ঘাট । এটি বিশ্বনাথ মন্দিরের কাছাকাছি অবস্থিত একটি ঘাট এবং এখানে সন্ধ্যা আরতি দেখার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। মানুষের কাছে এটি খুবই দর্শনীয় একটি জায়গা। এই ঘাট সম্পর্কে দুটি কথা বেশ প্রচলিত আছে। একটি হলো ব্রহ্মা শিবকে স্বাগত জানাতে এটি তৈরি করেছিল এবং অন্যটি হল এখানে ব্রহ্মা দশ- অশ্বমেধ যজ্ঞের সময় দশটি ঘোড়া বলি দিয়েছিলেন । যাই হোক এই সম্পর্কের বিস্তারিত আমি বেশি কিছু আর জানিনা। অল্প কিছু ইনফরমেশন যা জানতাম তাই শেয়ার করলাম।

20221022_191354.jpg

20221022_191135.jpg

এই প্যান্ডেলের থিম অনুসারে এখানে সবসময় আরতি হওয়ার দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু আমরা যেহেতু পুজোর একদিন আগে গেছিলাম তাই এখানে আরতি দেয়ার কোনো আয়োজন ছিল না। আমি এই পুজো প্যান্ডেলটিতে পুজোর দুইদিন পর আরো একবার গিয়েছিলাম সেদিন গিয়ে আমি আরতি দেখতে পেয়েছিলাম। অন্য একটি ব্লগে সেই আরতি করার দৃশ্যের ভিডিও দেওয়ার মাধ্যমে শেয়ার করব আমি । পুজো প্যান্ডেল কর্তৃপক্ষ এইখানে মন্দির এবং মন্দিরের সামনের ঘাট টি খুবই সুন্দর ভাবে করেছিল। এখানে লোকজনের ভিড় তেমন না থাকায় খুব ভালোভাবে দেখতে পেয়েছিলাম। মন্দিরের সামনে একটি পুকুর ছিল , পুকুরের অন্য পাড় থেকে প্যান্ডেলটি দেখতে জাস্ট অসাধারণ লাগছিল যা ফটোগ্রাফিতে দেখলে তোমরাও বুঝতে পারবে। বাইরে থেকে প্যান্ডেল দেখার পর প্যান্ডেলটির ভিতর এসে মা কালীর প্রতিমাটি দেখেও অনেক ভালো লেগেছিল।

20221022_191143.jpg

20221022_191206.jpg

আমার সাথে আমার পরিবারের লোকজন ছিল তারাও এই প্রতিমাটি খুবই পছন্দ করেছিল। মাটি দিয়ে তৈরি করেছিল প্রতিমাটি কিন্তু দেখে মনে হচ্ছিল কালো পাথর কেটে তৈরি করেছে। এটি অন্নপূর্ণা মৃৎ শিল্পালয় এর শিল্পীদের দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল এবং এর প্রধান শিল্পী ছিলেন শিল্পী রণজিৎ পাল । আমি এই ইনফরমেশন গুলো প্রতিমার পাশে লেখা দেখেছিলাম। যাই হোক এখানে খুব একটা ভিড় না থাকায় খুব ভালোভাবে ঘোরাঘুরি এবং টুকটাক ফটোগ্রাফি করে নিয়েছিলাম যেগুলো আজকের পর্বে শেয়ার করলাম। আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি, অন্য একটি পর্বে কালীপুজোর ঘোরাঘুরি নিয়ে আরো অনেক অনেক কথা শেয়ার করব।

20221022_191252.jpg

ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: বারাসাত ,নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।

কালীপুজো পরিক্রমন নিয়ে শেয়ার করা আজকের তৃতীয়তম ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানাতে পারো । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

কালী পুজোতে অনেক সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আসলে পূজার মুহূর্তগুলো খুবই দুর্দান্ত হয়ে থাকে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে পূজাতে কাটানো অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন। আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলো বেশি দুর্দান্ত ছিলো। পরবর্তী পর্ব জন্য অপেক্ষায় রইলাম ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

কালী পুজোতে সত্যিই অনেক আনন্দ করেছিলাম। বিভিন্ন পুজো প্যান্ডেল ঘুরে ঘুরে অনেক অনেক ফটোগ্রাফি করেছিলাম যা কতগুলো পর্বের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আমার শেয়ার করা পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম।

সত্যি বলতে আপনাদের ওখানকার পুজোর থিমগুলো একদম হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়। এত অপূর্ব হাতের কাজ শিল্পীদের 👌। দেখতেই ইচ্ছে করে বার বার। অসাধারন লাগলো সব গুলো পূজোর প্যান্ডেল। তবে দশাশ্বমেধ ঘাট সম্পর্কে এই প্রথম জানলাম আমি। খুব ভালো লাগলো সব টা পড়ে। জানার ইচ্ছেটাও আরো বেড়ে গেল।

এটা সত্যি কথা এইখানের পুজো প্যান্ডেলের থিমগুলো মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। শিল্পীদের নিখুঁত হাতে ছোঁয়ায় প্যান্ডেল গুলো অসম্ভব সুন্দর হয়ে ওঠে। ফটোগ্রাফিতে দেখে যদিও সম্পূর্ণ বোঝা যায় না , সামনাসামনি দেখতে আরো অনেক বেশি সুন্দর লাগে পুজো প্যান্ডেল গুলো।