বন্ধুরা ,
তোমরা সবাই কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমিও অনেক অনেক ভালো আছি। |
---|
প্রথমেই আজকের নতুন একটি ব্লগে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম জানাই। আজকের ব্লগে আমি তোমাদের সাথে দমদম থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল সেই সব নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব। সপ্তাহখানেক আগের ঘটনা এটি। আমি সকালে গেছিলাম রবীন্দ্রভারতী ইউনিভার্সিটিতে অর্থাৎ আমার যে ইউনিভার্সিটি সেইখানে। সেখানে পৌঁছানোর জন্য প্রথমে আমাদের নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন থেকে দমদমে গিয়ে নামতে হয় তারপর দমদম মেট্রো রেল স্টেশন থেকে মেট্রো রেলে করে গিরিশ পার্কে নামতে হয় ।সেখান থেকে কিছুদূর পথ হেঁটে আমাদের এই ইউনিভার্সিটি। যাইহোক ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে রীতিমতো ক্লাসগুলো সব করলাম সেদিন। আমাদের ইউনিভার্সিটি ছুটি হয়েছিল বিকাল চারটার দিকে। ইউনিভার্সিটি শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে প্রায় এক ঘণ্টা ইউনিভার্সিটির মধ্যে বসে আড্ডা দিয়েছিলাম।
আড্ডা শেষ করে ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আমরা পায়ে হেঁটে আবার গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রোতে করে দমদমে গিয়ে নামি। দমদমে আসার পরে দেখি আপাতত কোন ট্রেন নেই আমাদের বাড়ি ফেরার। তাই আমাদের ৩০ মিনিটের মতো অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী ট্রেনের জন্য। সেইদিন ইউনিভার্সিটির ক্লাসগুলো করে এমনিতেই টায়ার্ড হয়ে গেছিলাম তারপরও ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে এই ভেবে সময় কাটাচ্ছিলাম ।যদিও সময় কাটছিল না, স্টেশনের এপাশ-ওপাশ হাঁটাহাঁটি করছিলাম। অতঃপর ৩০ মিনিট কেটে গেল কিন্তু কোন ট্রেনের দেখা পেলাম না, লোকমুখে শুনতে পেলাম ট্রেন লেটে চলছে। তারপর প্রায় কুড়ি মিনিট পর একটি ট্রেনের দেখা পেলাম। ট্রেন লেটে করে আসার কারণে সেই সময় প্ল্যাটফর্মে হাজার মানুষের ভিড় অলরেডি হয়ে গেছে। মানুষের ভিড়ে পুরো গমগম করছিল দমদম স্টেশনের প্রত্যেকটি প্ল্যাটফর্ম। ট্রেন আসার সাথে সাথেই মানুষ একপ্রকার ঝাঁপিয়ে পরল ট্রেনে উঠার জন্য। ধাক্কাধাক্কি করে সবারই ট্রেনে ওঠার প্রচেষ্টা। এই বাজে অবস্থার মধ্যে আমি আর ট্রেনে উঠতে পারলাম না।
চেষ্টা করিনি বলা যাবে না, চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কোন অবস্থায় ট্রেনে ওঠার সুযোগ পেলাম না। ট্রেনে উঠতে পারলাম না এত সময় অপেক্ষা করার পরেও বিষয়টা ভেবে নিজের মধ্যে একটু রাগ হচ্ছিল। কোন কিছু করার নেই এই ভেবে আবারো অপেক্ষা করতে লাগলাম। খুবই খারাপ ভাবে সময় গুলো কাটছিল কারণ খিদেও অনেকটা লেগে গেছিল, তারপরও এতটা সময় অপেক্ষা করার পরে ট্রেনে উঠতে পারলাম না । এইসব ভাবতে ভাবতে ট্রেনের অপেক্ষায় একটা সাইডে গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রায় এক ঘন্টা পরে গিয়ে অ্যানাউন্সমেন্ট পেলাম আমাদের বারাসাতের উদ্দেশ্যে গাড়ি আসছে ।তারপর যথারীতি কিছু সময় অপেক্ষা করার পরে ট্রেন চলে আসলো । ট্রেন আসার পর মানুষের সেই ধাক্কাধাক্কি আর শেষ হয় না । সন্ধ্যার সময়টাতে সবাই সবার কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরে, এই জন্য এত বেশি লোকজন হয় আর সাথে এত ধাক্কাধাক্কি হয়ে থাকে। আমি এই ধরনের ধাক্কাধাক্কি একদমই পছন্দ করি না তারপরও কি আর করা বাড়ি ফিরতে হলে এই সময়টাতে এই ধাক্কাধাক্কি সহ্য করতেই হবে ।
সবকিছু সহ্য করে ট্রেনে উঠে পড়লাম। ট্রেনে উঠে একটু স্বস্তির আশ্বাস পেলাম এখন হয়তো বাড়ি যেতে পারবো এই ভেবে কিন্তু ট্রেনে ওঠার পর আবারও বিপাকে পড়তে হল। ট্রেন এসে দমদম স্টেশনেই দাঁড়িয়ে থাকলো, ট্রেন ছাড়ার কোন সংকেত পাচ্ছিলাম না। এক্ষেত্রে কারোর কিছু করার নেই তাই অপেক্ষা করতে থাকলাম আবারও। প্রায় ২০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করলাম তারপর ট্রেন ছাড়লো। এই কুড়ি মিনিট সময় মোটেও পার হচ্ছিল না । খুবই একটা অস্বস্তিকর অবস্থা ট্রেনের মধ্যে উঠে সহ্য করতে হয়েছিল। অসহ্য গরম লাগছিল প্রচন্ড ভিড়ের কারণে কিন্তু ট্রেনের পাখাগুলোও বন্ধ করে রেখেছিল সেই সময়টাতে। সব কিছু মিলে এক বাজে পরিস্থিতি যা হয়তো আমি ভাষায় প্রকাশ করে বোঝাতে পারবো না । যাইহোক সেদিন অনেক অনেক কষ্ট হয়ে গেছিল বাড়ি ফিরতে । কষ্টের অবসান ঘটেছিল প্রায় ৩০ মিনিট পর যখন আমি আমার বাড়ির নিকটবর্তী রেল স্টেশনে নামি।