ট্রাভেলিং || উদ্দেশ্য মায়াপুর ভ্রমণ (পর্ব -০৪)

in hive-129948 •  last year 

বন্ধুরা,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমি মোটামুটি ভালো আছি। আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। আজকের ব্লগে মায়াপুর ভ্রমণের উদ্দেশ্য যাওয়া নিয়ে চতুর্থ পর্বে কিছু কথা শেয়ার করব।

তৃতীয় পর্বের লিঙ্ক

এর পর আমরা তিনজনে টোটো করে চলে আসি নবদ্বীপ লঞ্চ ঘাটে। এই জায়গা থেকে পুনরায় আমাদের যাত্রা শুরু হয়। এইখানে গিয়ে প্রথমে আমি আমাদের তিনজনের মায়াপুর যাওয়ার টিকিট কেটে নিয়েছিলাম। আমার সাথে থাকা আমার বান্ধবী ও বান্ধবীর দিদিকে পাশের একটি জায়গায় দাড়িয়ে রেখে গেলেও টিকিট কাটা শেষে এসে তাদের আর খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে ফোন করে তাদের লঞ্চঘাটে আসার জন্য বলি । এই জায়গাটিতে বেশ ভিড় ছিল। তারপর কিছুটা ধাক্কাধাক্কি করেই আমরা লঞ্চে গিয়ে উঠি । লঞ্চে অতিরিক্ত লোক নেওয়ার ব্যাপার ছিল না তাই জন্য অনেক বেশি ভিড় ছিল না লঞ্চে। তবে একেবারে কম লোক ছিল সেটাও বলবো না। সেই জন্য আমি লঞ্চে উঠে আর বসার জায়গা পাইনি। তবে আমার বান্ধবী এবং বান্ধবীর দিদিকে অনেক কষ্টে দুটি বসার জায়গা করে দিয়েছিলাম । আর আমি তাদের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। নবদ্বীপ ঘাট থেকে মায়াপুরের লঞ্চ ঘাট টি খুব বেশি দূরে ছিল না।

20230308_150052.jpg

20230308_150048.jpg

লঞ্চটি ভরে যাওয়ার পরই ঘাট থেকে ছেড়ে দেয় । এই সময় নদীর অন্য রকম এক দৃশ্য উপভোগ করতে করতে আমরা যাচ্ছিলাম। লঞ্চটি আমাদেরকে নিয়ে যখন মাঝ নদীতে ছিল তখন সেই জায়গা থেকে মায়াপুরের সেই বিশাল মন্দিরের একাংশ দেখা যাচ্ছিল। যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা এখানে গেছিলাম সেই উদ্দেশ্য অনেক সময় পরে পূরণ হয়েছিল কিছুটা। অবশেষে অনেক দূর থেকেই মায়াপুরের এই বিশাল মন্দিরটি দেখার সুযোগ পাই। আমি তো এটি দেখে তাড়াতাড়ি ফটোগ্রাফি করার জন্য ব্যস্ত হয়ে যাই। তবে লঞ্চ চলার সময় অনেক সাবধানে ফটোগ্রাফি করতে হচ্ছিল। আমি একবার ফোন লঞ্চের একটু বাইরে নিয়ে ফটোগ্রাফির চেষ্টা করেছিলাম, তবে তখন আমার বান্ধবী আমাকে সাবধান করে দেয় এটা না করার জন্য। এই জন্য পরে আমি লঞ্চের ভিতর থেকেই ফটোগ্রাফি করেছিলাম।

20230308_150231.jpg

20230308_150225.jpg

এই লঞ্চে করে যেসব যাত্রীরা যাচ্ছিল তারা সবাই মায়াপুরের এই মন্দির দর্শনের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। বিশ্বের সবথেকে বড় মন্দির বলে কথা। হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিনই এইখানে আসে এই মন্দির দর্শন করার জন্য। কৃষ্ণ ভক্তদের জন্য অনেক পবিত্র একটি স্থান এটি। লঞ্চে থাকা যাত্রীরাও আমাদের মত দূর থেকে এই মন্দিরের সৌন্দর্য উপভোগ করছিল । তাছাড়া লঞ্চে করে যাওয়ার সময় নদীর সৌন্দর্য অনেক ভালো লাগছিল। নদী আমার কাছে সবসময় ভালো লাগে। ওভারঅল চারপাশের সবকিছু বেশ ভালোভাবে এনজয় করতে থাকি আমি তখন। এখন যতদূর মনে পড়ছে প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই আমরা পৌঁছে যাই মায়াপুরের লঞ্চ ঘাটে ।

20230308_150235.jpg

20230308_151400.jpg

এখানে আসার পরও দেখি যাত্রীদের ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে গেছে। সবাই আগে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত। তবে আমরা এ বিষয়ে একটু সাবধান ছিলাম। আমরা তিনজন শেষের দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নি কারণ এই ঠেলাঠেলির সময় পড়ে গিয়ে কোন দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এই ঘাটে নামার পর বাঁশের তৈরি একটি ছোট সেতু দেখতে পাই। এই ছোট সেতু পার করেই ঘাটের উপরের অংশে ওঠার ব্যবস্থা ছিল। এখানে নতুন করে কেন সেতু করেনি সেই কারণটা আমি জানি না। তবে সেই সময়টাতে আমাদের বাঁশের ওই ছোট সেতুর উপর দিয়েই যেতে হয়েছিল ।বেশ ভালই লাগছিল এর উপর দিয়ে যেতে। গ্রামের দিকে এরকম বাঁশের সেতু দেখা যায়। বাঁশের সেতু পার করে আরেকটু উপরে ওঠার পরেই আমাদের সবার টিকিট চেক হয়। টিকিট চেক করানো শেষে আমরা ঘাটের বাইরের অংশে পৌঁছে যায়।

20230308_152231.jpg

20230308_152343.jpg

মায়াপুরের এই লঞ্চঘাটে পৌঁছে যাওয়ার পরও আমরা মন্দিরের দেখা পাইনি । এখান থেকে টোটো করে পুনরায় যেতে হবে প্রধান ওই মন্দিরের উদ্দেশ্যে। এই দিন আমরা সকাল থেকেই জার্নি করছিলাম । জার্নি করতে করতে অনেকটা টায়ার্ড আমরা হয়ে গেছিলাম। তবে উদ্দেশ্য নিয়ে গেছিলাম মায়াপুরের সবকিছু ঘুরে ঘুরে দেখব তাই কষ্ট হলেও আনন্দের সাথে সবকিছু উপভোগ করছিলাম। এই জায়গাটিতে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর উদ্দেশ্যে করা বড় একটি গেট আমার নজরে পড়ে। তাছাড়া চারপাশে শুধু মন্দিরের দেখা পাচ্ছিলাম । সব কৃষ্ণ ভক্তদের মন্দির ছিল। এখানে আসার পর অন্যরকম একটা পরিবেশের মধ্যে চলে যাই। খুব ভালো লাগছিল এইখানে আসার পর । তবে জার্নি তখনও আমাদের শেষ হয়নি । এরপর টোটো করে যেতে হয়েছিল আমাদের সেই মায়াপুরের বড় মন্দিরের কাছে।

20230308_152346.jpg

20230308_152349.jpg

চলবে...



ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: মায়াপুর, ওয়েস্ট বেঙ্গল।



বন্ধুরা , মায়াপুর ভ্রমনের উদ্দেশ্যে যাওয়া নিয়ে শেয়ার করা আজকের চতুর্থ পর্বের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

মায়াপুর ভ্রমণ করতে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তের বিশেষ কিছু সুন্দর পথচলা আজকে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। খুবই ভালো লাগলো এই ভ্রমণের দৃশ্য, সেখানে নদীর বুকে রয়েছে অনেক মানুষের চলাচল। এরপর লঞ্চঘাট পেরিয়ে দেখা পেয়েছেন মন্দিরের তারপর এগিয়ে গেছেন আরো সামনে। বিস্তারিত উপস্থাপনা আমার কাছে ভালো লেগেছে পরবর্তী পর্ব পাওয়ার আশায় রইলাম।

আমার শেয়ার করা ভ্রমণের সময় ধারণ করা ফটোগ্রাফি গুলো আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

প্রতিদিনই বোধ হয় অনেকেই মায়াপুর এর জন্য রওনা করে। ছবিতে ভালোই ভীড় মনে হচ্ছে। আর নদীর ভ্রমণ আমার ভীষণ পছন্দের। মাঝ নদী থেকেই উদ্দেশ্য দেখা যাচ্ছে, এমন মূহুর্তে নিশ্চিয় ই ভালোই লেগেছে আপনার। আর আপনার বান্ধবী আপনাকে ভালো পরামর্শই দিয়েছে দাদা। নইলে নদীর জলে একবার হাত ফসকে মোবাইলটা পরে গেলেই ভবলীলা সাঙ্গ!!

Posted using SteemPro Mobile

দিদি , মোবাইল হাত থেকে নদীতে পড়ে গেলে হয়তো আমাকেই নদীতে ঝাঁপ দিতে হতো মোবাইল খোঁজ করতে ! এখন মোবাইল জিনিসটা এত ইম্পরট্যান্ট হয়ে পড়েছে, সব সময় সাবধান থাকা উচিত আমাদের এই মোবাইলের ব্যাপারে।