শারদীয়া কনটেস্ট ১৪৩১ || এই বছর দুর্গাপুজোয় ঘোরাঘুরি

🔱 নমস্কার সবাইকে 🔱

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও খুব ভালো আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম। আজকের এই ব্লগে আমাদের দাদার আয়োজন করার শারদীয় কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করেছি আমি। আসলে লাস্ট কিছুদিন ধরে প্রচন্ড ব্যস্ততার কারণে শেষ মুহূর্তে এসে এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে পারলাম। দুর্গাপুজোর পরপরই লক্ষ্মীপুজো তারপর কালীপুজো শুরু হয়ে যায়। এজন্য ব্যস্ততা শেষই হয় না। আর যেহেতু এই কনটেস্টটা কালীপুজোর আগে আগেই আয়োজন করা হয়েছিলো। সেই কারণেই প্রচণ্ড ব্যস্ততা ছিল। আর তাছাড়া দুর্গাপুজোর সময় বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরির যে ফটোগ্রাফি গুলো ছিল। সেগুলো আমার ল্যাপটপে রাখা ছিল। আর ল্যাপটপ খারাপ হওয়ার কারণে ফটোগ্রাফি গুলো সংগ্রহ করতে পারছিলাম না। আজ অনেক কষ্টে ল্যাপটপ অন করতে পারায় ফটোগ্রাফি গুলো নিয়ে এই পোস্টটি করার সুযোগ পেলাম। এইবার পুজোর সময় কলকাতা,বারাসাত,মধ্যমগ্রাম বেশ ঘোরাঘুরি করেছিলাম। আসলে রাজস্থান থেকে আমার বোন এবং তার পরিবার এসেছিল কলকাতার পুজো দেখার জন্য। সেই কারণে আশেপাশে যত গুলো পুজো প্যান্ডেল পারি তাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছিলাম। আসলে আমাদের কলকাতা দূর্গাপুজো অনেক ফেমাস।

বিভিন্ন থিমের কারণে আলোকসজ্জার কারণে এবং ইউনিক ভাবে ঠাকুর তৈরির কারণে,এটা পুরো বিশ্বের পরিচিত কলকাতার দুর্গাপুজো। দুর্গাপুজোর সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত আমরা সবাই অনেক ঘোরাঘুরি করি বাইরে খাওয়া-দাওয়া করি,ফটোগ্রাফি করি। যদিও এবারে দুর্গাপুজোতে অনেক বেশি ফটোগ্রাফি করার সুযোগ হয়নি।কারন প্রচন্ড ভিড়ের কারণে অনেক বেশি ফটোগ্রাফি করা যায় না। অনেক ধাক্কাধাক্কি থাকে ভিড়ের কারণে।সেই কারণে ভিডিওগ্রাফি বেশি করেছিলাম এবারের দুর্গাপুজোতে। তবে যেহেতু এটি একটি ফটোগ্রাফি মূলক কনটেস্ট তাই যে ফটোগ্রাফি গুলো করেছিলাম তার থেকে কিছু এখানে শেয়ার করলাম আর কি।যাইহোক, দুর্গাপুজোয় ঘোরাঘুরি চার দিন অর্থাৎ সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত যে ফটোগ্রাফি করেছিলাম।তার কিছু অংশ এই ব্লগে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।

কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতি পেয়েছে।

🔱 সপ্তমীর দিন পুজো দেখা 🔱

⚜️⚜️ প্রথম ১ ⚜️⚜️

আমাদের বারাসাতে দুর্গাপুজো খুব বেশি বড় করে না হলেও কয়েক জায়গায় বেশ সুন্দর করে করা হয়। আমাদের বাড়ির কাছে বারাসাত অ্যাসোসিয়েশন ক্লাবে প্রত্যেক বছরই বেশ সুন্দর করে পুজো করা হয়। এবার এখানে পুজোর থিম ছিল ভক্তি রূপে সিদ্ধি লাভ। অর্থাৎ শিবের একটা অংশকে তুলে ধরা হয়েছিলো এই থিমে। এখানে ধ্যানে বসে থাকা কয়েকজন লোককেও দেখতে পেয়েছিলাম পুজো প্যান্ডেলের ভিতরে। যদিও প্রকৃত ধ্যানী কেউ ছিল না। লোককে সাজিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছিলো। এই পুজো প্যান্ডেলটি বাড়ির কাছাকাছি হওয়ায় সপ্তমীর দিন এখানে ঘোরাঘুরি করার জন্য পরিবারের সাথে আমি গেছিলাম। এখান থেকে তোলা ফটোগ্রাফি গুলা নিচে শেয়ার করলাম।

এখানে পুরো প্যান্ডেলটি দেখা যাচ্ছে। প্যান্ডেলটির আলোকসজ্জা জাস্ট নজর কেড়ে নিচ্ছিলো সবার।

এই ফটোগ্রাফিটি প্যান্ডেলের বাইরে থেকে তোলা। এখানে দেখা যাচ্ছে, প্যান্ডেলের গেটে বড় বড় দুটি ষাড় এর মাথা তৈরি করা ছিল।

প্যান্ডেলের এই অংশে ষাঁড়ের অনেক শিং তৈরি করা ছিল।যা দেখতে বেশ ভালই লাগছিলো।

প্যান্ডেলের মাঝের অংশ থেকে এই ফটোগ্রাফি করা। এই অংশে জলের নিচে বেশ কিছু শিব লিঙ্গ ছিলো। আর তার উপরে মা দূর্গার পা তৈরি করা ছিলো।

এই অংশে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য পদ্মফুল তৈরি করা রয়েছে কাগজ এবং ফোম দিয়ে। এইগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগছিল।

এই ফটোগ্রাফিটি মূল মন্ডপের ভিতরের অংশ থেকে তোলা। এখানের উপরের অংশে ত্রিশূল তৈরি করা ছিলো যা দেখতে বেশ ভালই লাগছিল।

এই ফটোগ্রাফিটিতে মন্ডপের প্রধান প্রতিমাকে দেখা যাচ্ছে। তবে ভিড় হওয়ার কারনে ফটোগ্রাফিটি দূর থেকে করা।

প্রধান প্রতিমার কাছে যাওয়ার পরে এই ফটোগ্রাফি স্পষ্ট ভাবে করতে পেরেছিলাম। কাছে থেকে প্রতিমাটি দেখতে বেশ সুন্দর লাগছিলো।

প্রধান প্রতিমার উপরে হিন্দিতে অনেক কিছুই লেখা ছিল। তবে আমি হিন্দি না জানার কারনে হিন্দি লেখা গুলো পড়তে পারিনি।

থিম: "ভক্তিরূপে সিদ্ধিলাভ"।

স্থান: বারাসাতের চারের পল্লী অ্যাসোসিয়েশন, বারাসাত, নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ৬ pm ।
তারিখ: ১০ অক্টোবর ২০২৪ ।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

⚜️⚜️ দ্বিতীয় ⚜️⚜️

বারাসাত অ্যাসোসিয়েশনের পূজো দেখা শেষ করে ডাকবাংলো মোড়ে এসে একটি ছোট পুজো প্যান্ডেল দেখতে পাই। এখানে কোন থিম তৈরি করা ছিল না। ভিতরে তবে সুন্দর প্রতিমা করা ছিলো। প্রতিমাগুলো পিংক কালারের হওয়ার কারণ আমার বেশ ভালোই লেগেছিলো। সেইজন্য ভেতরে গিয়ে দুই একটি ফটোগ্রাফি করে নিচ্ছিলাম এই পুজো প্রতিমার।

এখানের প্রতিমা গুলো আমার খুব পছন্দ হয়েছিলো কারন এগুলো পিঙ্ক কালারের থিমে করা ছিলো। এখানের পুজো প্যান্ডেলটি ছোট হলেও প্রতিমা গুলো দৃষ্টিনন্দন ছিলো।

প্যান্ডেলটির‌ উপরের অংশে কাপড় দিয়ে এই রকম ডিজাইন করা ছিলো যা দেখতে বেশ ভালই লাগছিলো। অন্যান্য পুজো প্যান্ডেলের উপরের অংশে ঝাড়বাতি থাকলেও এই প্যান্ডেলে এইরকম করে কাপড় দিয়ে তৈরি করা ছিলো।

থিম: তেমন কোন থিম ছিল না।

স্থান: বারাসাত ডাকবাংলো মোড়, নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ৬.১৫ pm।
তারিখ: ১০ অক্টোবর ২০২৪।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

⚜️⚜️ তৃতীয় ⚜️⚜️

আমাদের বারাসাতের কাছাকাছি ব্রতি সংঘ নামক একটি ক্লাবে প্রত্যেক বছর মোটামুটি করে পুজো করা হয়। আসলে এখানে পূজোর থেকে বেশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। পুজো মন্ডপের বাইরেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। প্রত্যেকবারই এখানে যাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার জন্য। এবারও গেছিলাম গিয়ে কিছু সময় বসেছিলাম। যাইহোক,এখানে্য পুজো প্যান্ডেলটি অনেক বড় করে না করা হলেও মোটামুটি মধ্যে বেশ ভালোই করে। এই বছর এদের প্রতিমা একটু ছোট করে করেছিলো।তবে দেখতে বেশ সুন্দর হয়েছিলো।

পুজো প্যান্ডেলটির একদম সামনের অংশ থেকে এই ফটোগ্রাফিটি আমি করেছিলাম। একটা রাজবাড়ীর মতো করে তৈরি করা ছিলো এই পুজো প্যান্ডেলের সামনের অংশ।

প্যান্ডেলের ভিতরে গিয়ে উপরের অংশে আমি এই ঝাড়বাতিটি দেখতে পেয়েছিলাম। ঝাড়বাতিটি তুলনামূলক ছোট হলেও দেখতে বেশ সুন্দরই লাগছিলো।

এইখানের দুর্গা ঠাকুরের প্রতিমাটি ছোট করে তৈরি করা ছিল। ছোট হওয়ায় কারনে এখানকার প্রতিমা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিলো।

থিম: তেমন কোনো থিম ছিল না ।

স্থান: ব্রতিসংঘ ক্লাব, বারাসাত নর্থ ২৪ পরগনা।
ফটো তোলার সময়: ৬.৩০ pm।
তারিখ: ১০ অক্টোবর ২০২৪।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

⚜️⚜️ চতুর্থ ⚜️⚜️

এই বছর সব থেকে আকর্ষণীয় একটি পুজো প্যান্ডেল দেখেছিলাম তা হলো জ্যান্ত দুর্গা।যা আগে কখনো এরকম জ্যান্ত দুর্গার প্রতিমা দেখিনি। ডাকবাংলোর মোড়ে একটি বাড়ির মধ্যে এই পুজো প্যান্ডেলটি করা হয়েছিলো। আসলে স্থানীয় লোকেরা এই পুজো প্যান্ডেলটির আয়োজন করেছিলো। আমরা চলার পথে লোকের মাধ্যমে পুজো প্যান্ডেলটি সম্পর্কে জানতে পারে ভিতরে গিয়ে এই পুজো প্যান্ডেলটি দেখার সুযোগ পাই। ছোট ছোট বাচ্চাদের দেবদেবী রূপে সাজিয়ে এই পুজো প্যানেলটি তৈরি করা হয়েছিলো।যা সামনা সামনি না দেখলে এর সৌন্দর্য প্রকৃত অর্থে উপভোগ করা যায় না।

ছোট ছোট বাচ্চারা মিলে এই পুজো প্যান্ডেলটি তৈরি করেছিলো।ছোট ছোট বাচ্চাদের এমন দেব দেবীর রূপে সাজতে দেখে আমাব বেশ ভালোই লেগেছিল।

থিম: জ্যান্ত দুর্গা।

স্থান: ডাকবাংলো মোড়, বারাসাত নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ৭ pm।
তারিখ: ১০ অক্টোবর ২০২৪।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

🔱 অষ্টমীর দিন পুজো দেখা 🔱

⚜️⚜️ প্রথম ⚜️⚜️

সপ্তমীর দিন বারাসাতের পুজো প্যান্ডেল দেখলেও অষ্টমীর দিন চলে গেছিলাম মধ্যমগ্রামের কয়েকটি পুজো প্যান্ডেল দেখার জন্য। মধ্যমগ্রাম মোটামুটি ভালো পুজো প্যান্ডেল করা হয়। এখানে গিয়ে প্রথমে গেছিলাম নেতাজি সংঘের পুজো প্যান্ডেল দেখার জন্য। একটি মাঠের মধ্যে এই পুজো প্যান্ডেলটি করা হয়। মাঠের অনেকাংশ জুড়েই তৈরি করা হয়েছিলো। মূল মণ্ডপটি একটা অংশে তৈরি করা হলেও এর আশেপাশে গাছপালা এবং আলোকসজ্জা দিয়ে বেশ সুন্দর করে সাজানো ছিলো। এই পুজো প্যান্ডেলটি একটি রাজবাড়ীর থিমে করা হয়েছিলো।যদিও এই সম্পর্কে আমি সঠিক জানিনা। তবে এটি দেখে আমার সেরকমই মনে হয়েছিলো। এই প্যান্ডেলের প্রতিমা ভালো করে দেখার সুযোগ হয়নি।কারণ কোন একটা সমস্যার কারণে প্রতিমা ঠিক করার কাজ চলছিল আমি যখন গেছিলাম সেই সময়।

এই পুজো প্যান্ডেলের বাইরে হাতি,পরী এসব জিনিস তৈরি করা ছিলো এবং চারপাশে গাছ দিয়ে সাজানো ছিল।

এই প্যান্ডেলে প্রতিমায় কিছু একটা সমস্যা হওয়ার কারণে প্যান্ডেলের প্রতিমা ঠিক করার কাজ চলছিলো সেই কারনে প্রতিমা ভালো করে দেখার সুযোগ হয়নি এইখানে গিয়ে।

থিম: রাজবাড়ী

স্থান: উদয়রাজপুর নেতাজি সংঘ, মধ্যমগ্রাম, নর্থ চব্বিশ পরগনা , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ৭.৩০ pm।
তারিখ:১১ অক্টোবর ২০২৪।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

⚜️⚜️ দ্বিতীয় ⚜️⚜️

এই বছর মধ্যমগ্রাম করা হয়েছিলো কাঁচের শীষ মহল। এটি আমি অনেক আগেই শুনেছিলাম। তবে কোন জায়গায় করা হয়েছিলো প্রথমে জানতাম না। পরে লোকের কাছে শুনে শুনে এই জায়গায় পৌঁছে যাই। কাঁচ দিয়ে তৈরি করা এই প্যান্ডেলটি সত্যিই দারুণ হয়েছিলো। চারদিক থেকে এই প্যান্ডেলের উপর যখন লাইটিংগুলো পড়ছিলো চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছিলো।তাছাড়া মিউজিকের ও বেশ সুন্দর ব্যবস্থা ছিল।এই প্যান্ডেলটি দাঁড়িয়ে বেশ উপভোগ করেছিলাম আমি। এই প্যান্ডেলের বাইরে এবং ভেতর থেকে কয়েকটি তোলা ফটোগ্রাফি নিচে শেয়ার করা হলো।

প্যান্ডেলের ভিতরে পু্রো অংশ কাঁচ দিয়ে তৈরি করা ছিলো এবং কাঁচ গুলোতে ভারতীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল যা চিত্রে দেখা যাচ্ছে।

এই ফটোগ্রাফিটি এই প্যান্ডেলের বাইরের অংশ থেকে তোলা হয়েছিলো। আলোকসজ্জা দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছিলো এই প্যান্ডেলের বাইরের অংশটি।

এই প্যান্ডেলের প্রতিমা আমার খুব পছন্দ হয়েছিলো। স্বর্ণের কালার হওয়ার কারনে এটি দেখতে বেশ অসাধারন লাগছিলো।

থিম: শীষ মহল।

স্থান: উদয়রাজপুর পেয়ারাবাগান, মধ্যমগ্রাম, নর্থ চব্বিশ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ৮ pm ।
তারিখ: ১১ অক্টোবর ২০২৪
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

⚜️⚜️ তৃতীয় ⚜️⚜️

আমার দেখা মধ্যমগ্রামের সবথেকে ছোট পুজো প্যান্ডেল ছিল এটি। মধ্যমগ্রাম স্টেশনের কাছেই এই পুজো প্যান্ডেলটি তৈরি করা হয়েছিলো।আমরা যখন ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পুজো প্যান্ডেল দেখছিলাম হঠাৎ করে রাস্তার পাশেই এই পুজো প্যান্ডেলটি দেখতে পাই। আসলে এই ধরনের ছোট প্যান্ডেলের কোন থিম থাকে না।জাস্ট নরমাল ভাবে স্থানীয়রা মিলে তৈরি করে থাকে। প্যান্ডেলের ভিতরের ডিজাইন গুলো আমার বেশ ভালো লেগেছিলো।তাছাড়া প্রতিমাও আমার কাছে ভালো লেগেছিলো। এসব প্যান্ডেলে ভিড় ছিল না। তাই তাড়াতাড়ি গিয়ে দু একটা ফটোগ্রাফি করে অন্য প্যান্ডেল দেখার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি।

প্যান্ডেলের বাইরে থেকে এই ফটোগ্রাফিটি করা। বেশ ছোট করে‌ এই‌ পুজো প্যান্ডেলটি তৈরি করেছিল।

প্যান্ডেলের ভিতরে থাকা প্রতিমা দেখা যাচ্ছে এই‌ ফটোগ্রাফিতে। প্যান্ডেলের উপরে থাকা ডিজাইন এবং আলোকসজ্জা আমার অনেক পছন্দ হয়েছিলো।

থিম: তেমন কোনো থিম ছিল না ।

স্থান: দেবীগড় বিজলী পার্ক মধ্যমগ্রাম, নর্থ চব্বিশ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ৮.২০ pm ।
তারিখ: ১১ অক্টোবর ২০২৪
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

🔱 নবমীর দিন পুজো দেখা 🔱

⚜️⚜️ প্রথম ⚜️⚜️

নবমীর দিন পরিবারের সবাইকে নিয়ে গেছিলাম কলকাতার পুজো দেখতে। এই পুজো দেখার জন্য প্রথমে দমদমে নেমে সেখান থেকে কালীঘাট মেট্রো স্টেশন হয়ে গেছিলাম দেশপ্রিয় পার্কের পুজো দেখতে। এখানকার পুজো প্রত্যেকবারই বেশ ভালো করে করে। বেশ ফেমাস একটি জায়গা এই বছর এই পুজোর থিম করেছিল মা ভুবনেশ্বরী। মা ভুবনেশ্বরী মন্দিরের আদলে তৈরি করেছিল এইখানের পূজা প্যান্ডেলটি। যাইহোক, এখান থেকে তোলা ফটোগ্রাফি গুলো নিচে দেখে নেওয়া যাক।

দেশপ্রিয় পার্কের পুরো পুজো প্যান্ডেলটি দেখা যাচ্ছে এই ফটোগ্রাফিটিতে। প্যান্ডেলের সামনের অংশে অনেকটাই জায়গা ছিল।তাই দূর থেকেই খুব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো এই প্যান্ডেলটি।

প্যান্ডেলের ভেতরের অংশ গিয়ে ভালো করে ছবি তোলার সুযোগ ছিল না।কোনরকম করে পাশের দেয়ালের ছবিটি করেছিলাম। কারন ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে গিয়েছিলো এই ভিতরের অংশে যাওয়ার পর।

এই ফটোগ্রাফিতে দেখা যাচ্ছে এই প্যান্ডেলের উপরের একটা অংশ। ঝাড়বাতি এবং বিভিন্ন লাইটিং দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিলো ভিতরের অংশটি।

এই পুজো প্যান্ডেলের প্রতিমাটি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিলো। প্যান্ডেলের প্রতিমার গায়ে সোনার গহনাও ব্যবহার করা হয়েছিলো।যদিও এখানে গিয়ে ভালো করে দেখার সুযোগ পাইনি। ভালো করে ছবিও তুলতে পারিনি এই ছবিটি তোলার সময় তাই হাত কেঁপে গেছিলো লোকের ধাক্কায়।

থিম: "মা ভুবনেশ্বরী"।

স্থান: দেশপ্রিয় পার্ক, কালীঘাট, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ১০ pm ।
তারিখ: ১২ অক্টোবর ২০২৪ ।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

⚜️⚜️ দ্বিতীয় ⚜️⚜️

কলকাতায় গিয়ে দ্বিতীয় যে প্যান্ডেলটি দেখি সেটা হলো ত্রিধারা সম্মেলনির পুজো প্যান্ডেল। এটিও বেশ নামকরা একটি পুজো প্যান্ডেল।এবার এখানে করেছিল সৃষ্টির উল্লাসে অর্থাৎ সৃষ্টিকতা আনন্দে থাকতে পারে তার একটা আভাস এই পুজো প্যান্ডেলের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিল। প্যান্ডেলটিক অধিকাংশ জায়গায় সবুজে সবুজ নিয়ে করা ছিলো । বিভিন্ন আর্টিফিশিয়াল,প্লাস্টিক এবং থার্মোকল দিয়ে পুরো প্যান্ডেলটি সাজিয়েছিলো। প্রজাপতি, গাছপালা এরকম অনেক কিছুই তৈরি করা ছিলো।এই প্যান্ডেলটি ঘুরে আমার বেশ ভালোই লেগেছিল।

ত্রিধারা সম্মেলনের বাইরে থেকে শুরু হয়েছিল পুজো প্যান্ডেলের কাজ। বিভিন্ন রকম আর্টিফিশিয়াল গাছ প্রজাপতি এসব দিয়ে পুজো প্যান্ডেলের থিম করা হয়েছিলো।

বাইরে থেকে ভিতরের দিকে যেতে যেতেও একই ধরনের ব্যাপার গুলো দেখা যাচ্ছিলো। বেশ ভালো লাগছিলো চলতে চলতে এই ফটোগ্রাফি গুলো করে নিচ্ছিলাম।

এই প্যান্ডেলের ভেতরের প্রতিমাও খুব সুন্দর ছিল। শিল্পীর নিখুঁত হাতের কাজ দেখা গেছিল এই পুজো প্যান্ডেলের প্রতিমায়।প্যান্ডেলের ভিতরে যেহেতু একটু অন্ধকার ছিল।তাই ফটোগ্রাফি খুব ভালো করে তোলা যাচ্ছিলো না।

থিম: সৃষ্টির উল্লাসে।

স্থান: ত্রিধারা সম্মিলনী, কলকাতা, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ১০.৩০ pm।
তারিখ: ১২ অক্টোবর ২০২৪।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

⚜️⚜️ তৃতীয় ⚜️⚜️

কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের কাছে ছোট একটি পুজো প্যান্ডেল দেখতে পাই। যদিও এই প্যান্ডেলটির কাদের দ্বারা আয়োজন করা হয়েছিল সেই সম্পর্কে আমার জানা নেই। আসলে প্যান্ডেলটি অনেকটাই ছোট ছিলো। আর বাইরে কোথাও লেখা ছিল না এই পুজো সম্পর্কিত কোনো বিষয়। যাইহোক, চলার পথে এই প্যান্ডেলটি দেখতে পেয়ে এখান থেকে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করেছিলাম। যা এই ব্লগে শেয়ার করলাম। এই প্যান্ডেলে ভারতীয় সংস্কৃতির অনেক বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল।

এই প্যান্ডেলটি ছোট একটি প্যান্ডেল ছিল। এই প্যান্ডেলে যাওয়ার পর খুব বেশি ভিড়ও দেখতে পাইনি। এই প্যান্ডেলের বাইরে থেকে এই ফটোগ্রাফিটি করা।

এই প্যান্ডেলের প্রতিমা দেখা যাচ্ছে এই ফটোগ্রাফিতে। খুব সাধারণভাবে এই প্যান্ডেলের প্রতিমাটি করা হয়েছিল। এক অন্যভাবে মা দুর্গার প্রতিরূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল এই প্যান্ডেলটিতে।

আমাদের হিন্দু ধর্মমতে বিভিন্ন চিহ্নের ব্যবহার আমাদের কালচারে রয়েছে। সেসব কালচারের অনেকাংশই দেখতে পেয়েছিলাম এই পুজো প্যান্ডেলের বিভিন্ন অংশে। এই ফটোগ্রাফিতেও তোমরা তার কিছু অংশ দেখতে পাচ্ছো।

থিম: তেমন কোন থিম ছিল না ।

স্থান: কালীঘাট, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ১১.১০ pm ।
তারিখ: ১২ অক্টোবর ২০২৪।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

🔱 দশমীর দিন পুজো দেখা 🔱

⚜️⚜️ প্রথম ⚜️⚜️

এবারেরও পুজো কিন্তু পরিবারের লোকদের সাথেই কাটিয়েছিলাম। এই পুজোর দশমীর দিন আমরা চলে গেছিলাম কল্যাণীতে। কল্যাণী আর আইটি মোড়ে সব থেকে বড় পুজো প্যান্ডেল করেছিলো। যদিও সেই পুজো প্যান্ডেলটি অন্য একটি ব্লগে শেয়ার করেছি। তাই এখানে আর শেয়ার করলাম না। কল্যাণীর আই আই টি মোড়ের পুজো প্যান্ডেলটি দেখার পর আমরা চলে যাই এই সোনার তরী প্যান্ডেলটি দেখতে। এটি কল্যাণী স্টেশনের বেশ কাছেই ছিলো। যাইহোক, এই প্যান্ডেলটিতে মোটামুটি ভিড় হয়েছিলো।লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে এই প্যান্ডেলটিতে প্রবেশ করি। এই প্যান্ডেলটির আলোকসজ্জা এবং তৈরি করার সোনার তরী বেশ আকর্ষণীয় লেগেছিল আমার কাছে।

কল্যাণীতে করা এই প্যান্ডেলটি খুব বেশি বড় ছিল না। তবে বেশ কিছুটা সময় লাইনে দাঁড়িয়ে এই পুজো প্যান্ডেলটিতে ঢুকতে পেরেছিলাম। এখানে তার কিছু ভিউও তোমরা দেখতে পাচ্ছো।

এই প্যান্ডেলটির ভিতরে অংশের ঠাকুর দেখতে পাচ্ছো তোমরা এই ফটোগ্রাফিতে। এখানে ঠাকুরটি বেশ সুন্দরভাবেই করা হয়েছিলো ।তাছাড়া এই পুজো প্যান্ডেলের উপরের অংশে থাকা ঝাড়বাতিটি অনেক বড় ছিলো যা দেখতে বেশ দারুন লাগছিলো।

থিম: সোনার তরী ।

স্থান: কল্যাণী স্টেশন, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
ফটো তোলার সময়: ৭ pm।
তারিখ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

⚜️⚜️ দ্বিতীয় ⚜️⚜️

কল্যাণী পুজো দেখা শেষ করে আমাদের মধ্যমগ্রাম আসতে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। মধ্যমগ্রাম আসার পরেও টুকটাক আমরা পুজো প্যান্ডেল দেখার সিদ্ধান্ত নেই। তবে যেহেতু অনেকটাই টায়ার্ড ছিলাম তাই খুব বেশি একটা দেখতে পারিনি। স্টেশনের কাছে গিয়ে এই পুজো প্যান্ডেলটি আমি দেখতে পাই। বেশ ছোট ছিল কিন্তু মোটামুটি সুন্দরই ছিলো । যাইহোক,এই প্যান্ডেলে গিয়ে কিছু সময় বসে এবং টুকটাক ফটোগ্রাফি করে সেদিন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করি।

কল্যাণী থেকে মধ্যমগ্রামে এসে এই ছোট্ট একটি পুজো প্যান্ডেল দেখার জন্য যাই। একটি মন্দিরের মতো করে এই পুজো প্যান্ডেলটি করা হয়েছিলো।

মন্দিরের উপরের অংশ জুম করে এই ফটোগ্রাফিটি করেছিলাম। আসলে প্যান্ডেলটি ছোট হলেও উপরের এই অংশটা দেখতে বেশ ভালোই লাগছিলো। সেইজন্যই জুম করে এই ফটোগ্রাফিটি আমি করেছিলাম।

থিম: তেমন কোন থিম ছিল না।

স্থান: মধ্যমগ্রাম, নর্থ ২৪ পরগনা, ওয়েস্ট বেঙ্গল ।
ফটো তোলার সময়:১১.৫৫ pm ।
তারিখ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪।
ক্যামেরা পরিচিতি : SAMSUNG
ক্যামেরা মডেল : SM-M317F
ফটোগ্রাফার:@ronggin

আজকে শেয়ার করা দুর্গাপুজোর বিভিন্ন প্যান্ডেল দেখতে দেখতে তোলা কিছু ফটোগ্রাফি তোমাদের কেমন লাগলো অবশ্যই জানিও। সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

⚜️⚜️ ধন্যবাদ সবাইকে⚜️⚜️

Sort Order:

Trending

[-]

jswit (68) · 14 days ago

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

To turn off auto-reply, write a reply to this comment with "@jswit reply-off"
Delegate SP to jsup & receive daily upvote
Search and find Steemit posts

$0.00

emon42 (72) · 14 days ago

কলকাতায় যেভাবে জাকজমকভাবে দূর্গা পূজা পালন করা হয় অন্য কোথাও হয় না। কথাটা একেবারে ঠিক। আপনাদের ফটোগ্রাফি গুলো এবং থিমগুলো দেখে বেশ চমৎকার লাগে। দারুণ ছিল আপনার ফটোগ্রাফি গুলো ভাই। দারুণ ঘোরাঘুরি করেছিলেন পূজাতে। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

ronggin (74) · 5 days ago

এত সুন্দর ভাবে আমার এই পোস্টের প্রশংসা করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

jannatul01 (66) · 14 days ago

আপনি সুন্দর এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন দেখে খুবই ভালো লেগেছে ভাইয়া। বেশ অনেক কিছু দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন পোষ্টের মধ্যে দিয়ে। এছাড়া অনেক কিছু জানার সুযোগ করে দিয়েছেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার আজকের এই চলমান কনটেস্ট অংশগ্রহণ করতে দেখে।

আমার এই পোস্টটি যে আপনার কাছে খুবই ভালো লেগেছে তা জেনে আমারও অনেক ভালো লাগলো আপু।

riyadx2 (67) · 14 days ago

কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতি পেয়েছে, জেনে বেশ ভালো লাগলো। আপনি শারদীয় দুর্গোৎসবের খুবই সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি দিয়ে শারদীয় ফটোগ্রাফী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। আপনার শেয়ার করা প্রতিটি ফটোগ্ৰাফী চোখ জুড়ানোর মতো।রাজবাড়ী দূর্গা পূজার ফটোগ্রাফি অনেক বেশি সুন্দর লাগছে।

ধন্যবাদ ভাই , আপনার এই প্রশংসা মূলক মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

kausikchak123 (67) · 14 days ago

বারাসাতের অনেকগুলি ঠাকুরের ছবি আপলোড করে আমাদের দেখালে ভাই। বারাসাতে কালী পূজার সাথে সাথে দুর্গা পুজোও তো অনেক সুন্দর হয়। খুব সুন্দর ভাবে সবকটি ছবি দিয়ে সম্পূর্ণ পূজা পরিক্রমাটি আমাদের সামনে তুলে আনলে। পুজোর পরে প্যান্ডেল ও ঠাকুরের ছবি দেখতে ভালো লাগে। প্রতিযোগিতার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ভাই।

এই প্রতিযোগিতায় আমার জন্য শুভ কামনা করেছেন, এটা জেনে অনেক খুশি হলাম দাদা আমি। ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার এই মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।