ক্রিয়েটিভ রাইটিং || ভৌতিক গল্প : বৃষ্টির রাতে (পর্ব -০১)

in hive-129948 •  7 months ago 

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি ভৌতিক গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "বৃষ্টির রাতে"। গল্পটির প্রথম পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।

spider-web-8159315_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

দিপু এমন একটা গ্রামে বসবাস করে, যে গ্রামের লোক সংখ্যা খুবই কম। হাতেগোনা কিছু বাড়ি রয়েছে এই গ্রামে। তাছাড়াও একটি বাড়ি থেকে আরেকটি বাড়ির দূরত্ব অনেকটা বেশি এই গ্রামে। দেশের একদম শেষ অংশে এই গ্রামের অবস্থান। এরকম একটা জায়গায় গ্রামের অবস্থান হওয়ার কারণে সরকারেরও নজর এই গ্রামে পড়ে না। তাছাড়াও এই গ্রামে কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেই বললেও চলে। প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ, জল এগুলোর ব্যবস্থা এই গ্রামে নেই। অনেকটা কষ্ট করেই এই গ্রামের লোকজন এইখানে বসবাস করে।

এই গ্রামে সব থেকে বড় সমস্যা রাত হলে শুরু হয়। যেহেতু বিদ্যুৎ নেই তাই সারা গ্রাম প্রায় ভুতুড়ে অন্ধকার হয়ে থাকে সন্ধ্যার পর থেকে । সেইজন্য এই গ্রামের সবাই সন্ধ্যা হওয়ার পর পরই ঘুমিয়ে পড়ে। দিপুদের পরিবার চারজনের সদস্য নিয়ে গঠিত। দিপু, দিপুর বড় দিদি, তার মা এবং বাবা। বাবা গ্রামের কৃষক আর মা গৃহিণী। অন্যদিকে দিদি এবং সে কোন কিছুই করে না। যেহেতু গ্রামে স্কুল নেই, সেজন্য তারা আর পড়াশোনাও করতে পারে না ইচ্ছা থাকলেও। দিপুর বয়স এখন ১১ বছর আর তার দিদি বয়স ১৭ বছর

যাইহোক, কোন এক বর্ষার মৌসুমের দিপুদের পুরো পরিবার নিমন্ত্রণ পেয়েছিল পাশের একটি গ্রাম থেকে। গ্রামের নিমন্ত্রণ সাধারণত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। সেজন্য এই নিমন্ত্রণ রক্ষা করার জন্য দিপুর বাবা তাদের দুই বোনকে পাঠিয়েছিল পাশের এই গ্রামে। সকাল থেকেই সেদিন আকাশ মেঘলা মেঘলা ছিল। তবে বৃষ্টি হতে দেখা যায়নি দুপুর পর্যন্ত। আর বৃষ্টি না হওয়ার কারণেই দুপুরের দিকে দুই বোন চলে যায় সেই নিমন্ত্রণ বাড়িতে। কিন্তু তারা সেখানে পৌঁছানোর পরেই বৃষ্টি শুরু হয়। আর এই বৃষ্টির কারণে নিমন্ত্রণের সব কার্যক্রমও পিছিয়ে যায়। তাই তাদের খাবারের নিমন্ত্রণ শেষ করতে বেশ কিছুটা রাত হয়ে যায়।

এই অবস্থায় দুই বোন কি করে পুনরায় তাদের বাড়িতে ফিরে আসবে এই নিয়ে সমস্যায় পড়ে যায়। যদিও তারা সাথে করে লাইট নিয়ে গেছিল, যদি সন্ধ্যা হয়ে যায় তাহলে কোন রকম করে লাইটের আলোয় বাড়ি ফিরতে পারবে সেই চিন্তা করে। তবে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে কিছুটা রাত হয়ে গেছিল। তখনও হালকা হালকা বৃষ্টি হচ্ছিলো, তবে সেই সময় দুই বোন আর দেরি না করে বেরিয়ে পড়ে মনে সাহস নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে। হেঁটে তাদের বাড়ি ফিরতে ৪৫ মিনিট সময়ের প্রয়োজন পড়বে, এতটা দূরের একটি জায়গায় গেছিল তারা নিমন্ত্রণ খেতে। তারা সেই রাতে বেরিয়ে পড়ার কিছু সময়ের মধ্যে পুনরায় খুব জোরে বৃষ্টি শুরু হয়।

তাছাড়া বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়াও ছিল প্রচন্ড। আর সব থেকে বড় ভয়ের ব্যাপার ছিল, জোরে জোরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল আকাশে। এই অবস্থায় তারা কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবে, সেটাই খুঁজে পাচ্ছিল না। কারণ তারা এমন একটা জায়গায় গিয়ে ফেঁসে গেছিল যার আশেপাশে কোন বাড়ি ছিল না। তারা অনেকটা ছুটতে ছুটতে গ্রামের একটা অংশে গিয়ে একটা পুরনো বাড়ি দেখতে পায়। এই পুরনো বাড়িটার অবস্থান তাদের গ্রামে ছিল না। তাদের পাশের গ্রামের একটি পুরনো বাড়ি ছিল এটি। যে বাড়িতে কেউই এখন আর থাকে না। রাজাদের আমলের বাড়ি হবে, তবে বাড়ির সব কিছু প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। তবে সেই পরিস্থিতে কিছু সময়ের জন্য আশ্রয় নেওয়ার জন্য এটা একটা ভালো জায়গা হতে পারে, এমনটা মনে করে তারা দুই বোন এই বাড়ির মধ্যে কোন কিছু না বুঝেই ঢুকে যায়

চলবে..


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (ভৌতিক গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা "বৃষ্টির রাতে" গল্পের প্রথম পর্ব টি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

গল্পটা বেশ ভালো লাগছিল শেষ পর্যায়ে এসে তারা পরিত্যক্ত রাজার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরবর্তী ঘটনাটা জানার একটা ইচ্ছা রয়ে গেল যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

পরবর্তী ঘটনাটি আর সামনের সপ্তাহে শেয়ার করবো ভাই, সেই পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে আপনাকে ঘটনাটি জানার জন্য।

আপনার লেখা আজকের এই গল্পটা পড়তে যেমন ভালো লাগছিল তেমনি অনেক বেশি ভয়ও লাগছিল। বৃষ্টির রাতে দুই বোন দেখছি পুরনো একটা বাড়িতে গিয়েই উঠেছে। পুরনো বাড়িটার কথা শুনেই তো আমার কাছে হঠাৎ করে ভয় লেগে গিয়েছে। এখন তো শুধু এটা ভাবতেছি তাদের সাথে কি ভয়ানক ঘটনা ঘটে। আমার তো মনে হয় তাদের উচিত ছিল ওই বাড়ি থেকে পরের দিন সকালে ফিরে আসা। নিমন্ত্রণের সেই বাড়িতে এক রাত থাকা উচিত ছিল। এতটা দূর রাতের বেলায় আসা উচিত হয়নি। তবে দেখা যাক এখন তাদের সাথে কি হয়।

এখন তো শুধু এটা ভাবতেছি তাদের সাথে কি ভয়ানক ঘটনা ঘটে।

বৃষ্টির রাতে এমন পুরনো বাড়িতে যেহেতু গিয়েছে তারা, তাহলে তো কিছু একটা ভয়ানক ঘটনা ঘটবেই ভাই।

গল্পটা পড়তে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো। আসলে গ্রামের দিকের মানুষজন খুব তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ার চেষ্টা করে, ভালো বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায়। দিপু আর দিপুর দিদি সাথে যদিও টর্চ লাইট নিয়ে গিয়েছিল, তবে রাতের বেলা গ্রামের মধ্যে তার উপর আবার বৃষ্টি হচ্ছিল,বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল, ঝড়ো হাওয়া দিচ্ছিল। এরকম একটা পরিস্থিতিতে তারা একটা বাড়ি দেখতে পেয়ে আশ্রয়ের আশায় কোনো কিছু না ভেবেই ঢুকে পড়ল। দেখা যাক পরবর্তী পর্বটিতে কি হয়!

আমার শেয়ার করা এই গল্পটি পড়ে আপনার কাছে যে বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে, সেটা জেনে খুব খুশি হলাম দিদি।

দেশের শেষ প্রান্তরে গ্রাম তাই সরকারি সুযোগ সুবিধা নেই।দুবোন নিমন্ত্রণ খেতে গিয়ে ফিরতে দেরি এবং ঝড়বৃষ্টির কারণে পরিত্যাক্ত রাজ বাড়িতে আশ্রয়। বেশ ভালো লাগলো গল্পটা বাকি পর্ব আরো সুন্দর হবে।বাকি গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।

আমার শেয়ার করা এই গল্পটি আপনার কাছে বেশ ভালো লেগেছে, জেনে খুব খুশি হলাম দিদি।