ক্রিয়েটিভ রাইটিং || ভৌতিক রহস্য গল্প : পোড়া বাড়ি (পর্ব-০১)

in hive-129948 •  10 months ago 

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি রহস্যময় ভৌতিক গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "পোড়া বাড়ি " ।গল্পটির প্রথম পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।

abandoned-3311725_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে রাজপুর গ্রামের এক বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় একই পরিবারের পাঁচ জন মানুষ মারা যায়। যাদের বাড়িতে এই আগুন লেগেছিল তারা খুব প্রভাবশালী ছিল। কিন্তু কিভাবে যে তাদের বাড়িতে আগুন লেগেছিল, এই কারণটা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে অনেকেই মনে করে থাকে শত্রুতার জের ধরেই তাদের বাড়িতে কেউ হয়তো আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। গ্রামের শেষ অংশে সেই পোড়া বাড়ি। বছরের পর বছর সেখানে কেউ না যাওয়ার কারণে সেই জায়গাটা অনেকটা জঙ্গলের মত হয়ে গেছে। এর আশেপাশে আগে বাড়ি ছিল তবে বর্তমানে এর আশেপাশে কোন বাড়িও নেই।

যেহেতু এখানে এত বড় একটা ঘটনা ঘটেছিল, তারপর থেকে মানুষের মনে ভয় জন্মে গেছিলো। সেজন্যেই এর আশেপাশে যে বাড়িঘর গুলো ছিলো তারাও অনেকটা দূরে গিয়ে বসতি স্থাপন করেছে। এই পোড়া বাড়িতে যেতে গ্রামের বৃদ্ধরাও না করে। কারণ তারা নাকি অনেক কিছুই দেখেছে এই বাড়িতে যাওয়া নিয়ে। বিগত পাঁচ-ছয় বছরে এই গ্রামে কয়েকজন মারা গেছে অস্বাভাবিক ভাবেই। যাদের হয়তো মরার বয়স হয়নি এবং কোন অসুখও হয়নি তবে হঠাৎ করেই মারা গেছে। তাদের মৃত্যুর কারণের সূত্র ধরতে গেলে প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই একটা কমন ব্যাপার ছিল সেটা হলো তারা সবাই কোনো না কোনো সময় ওই পোড়া বাড়িতে একবার হলেও গেছিল।তবে মৃত্যুর কারণ এই বাড়ির সাথে কানেক্ট করা অনেকেই যুক্তি সংগত মনে করে না। গ্রামে অনেক সাহসী ব্যক্তিরাও রয়েছে যারা এই নিয়ে বেশি একটা ভাবতেও চায় না। পোড়া বাড়ি নিয়ে ঘাটাঘাটি করে লাভ নেই তাই মনে করে তারা।

lost-places-776297_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

বর্তমানে এই গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি সুজন ঘোষ। তার একটাই ছেলে, নাম দ্বীপ । ছেলের বয়স ১৩ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে হবে। ছেলের যেহেতু উরতি বয়স, সেই জন্য খুব দুরন্ত তার ছেলে।কোন কিছুই মানে না, কারো কোন কথাই শোনে না। যা যখন মনে আসে তাই করে। তার বন্ধুদের একটা গ্রুপও আছে। তাদেরকে সাথে নিয়ে সারা গ্রাম চড়ে বেড়ায়। তারাও অনেকবার ওই পোড়া বাড়ির গল্প শুনেছে। তবে এই বয়সে তাদের ভিতর ভয় বলে কোন কিছুই নেই। তারা এটাকে একটা রহস্যময় বাড়ি হিসেবে মনে করে এবং এই বাড়ি সম্পর্কে কৌতূহল তাদের মধ্যে আরও বেড়ে ওঠে। দ্বীপ অনেকবার তার বাবার কাছে এই পোড়া বাড়ি নিয়ে শুনতে গেছে কিন্তু তার বাবা এসব ব্যাপারে কোনো কিছু বলে না তাকে। শুধু সচেতন করে দেয় ওই বাড়ি নিয়ে। তবে এই বয়সী ছেলেদের বোঝানো আর না বোঝানো একই কথা। তাদের মাথায় যা চলে তারা তাই করে, কারোর কথা শুনতে চায় না।

দ্বীপ তার পাঁচ বন্ধুর এক গ্রুপ নিয়ে একবার প্ল্যান করে এই পোড়াবাড়ির মধ্যে যাবে। তবে দিনের বেলায় নয়, অন্য সময়। কারণ দিনের বেলায় যেতে গেলে কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলে এই নিয়ে হাঙ্গামা শুরু হয়ে যাবে। সেইজন্য তারা প্ল্যান করে সন্ধ্যা অথবা রাতের দিকে যাবে। তবে সন্ধ্যার সময় বাড়ি থেকে বের হওয়া অনেকটা চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল তাদের জন্য। যাইহোক, সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়েই তাদের একসাথে বেরোতে হবে, সেই হিসেবে তারা প্ল্যান করে নেয় ।

চলবে...


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (ভৌতিক রহস্য গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা পোড়া বাড়ি গল্পের প্রথম পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

যেহেতু আগুনে পুড়ে একই পরিবারের পাঁচজন মারা গিয়েছে তারপর থেকে ওই বাড়িতে কেউ থাকেও না এজন্য সবার মনে একটা ভয় জন্মেছে। তাছাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মারা গেছে। দ্বীপ এখন ওই পোড়া বাড়িতে যাওয়ার প্লান করলো বন্ধুদের নিয়ে। তাদের যে কি হয় জানার অপেক্ষায় রইলাম। ভালো লাগলো গল্পটি।

দ্বীপ এবং তার বন্ধুদের কি হলো সেটা সামনের পর্বে জানতে পারবেন আপু। যাইহোক,গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

ভাইয়া অনেক দারুন একটি গল্প শেয়ার করলেন। আমার কাছে এই ধরনের গল্প বেশ ইনটারেশটিং লাগে। ভৌতিক গল্পগুলো পড়তে আমি সেই ছোট থেকেই পছন্দ করি। তবে এটা পড়ে খারাপ লাগলো যে আগুনে পুড়ে একই পরিবারের পাঁচজন মারা গিয়েছে। আর তাকি মরে ভূত হয়ে গেল। আপনার আজকের গল্পের ১ম পর্ব পড়ে মনে হচ্ছে আগামীতে এর বাকি অংশগুলোও পড়ে ভালো লাগবে। আগামী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম যে দ্বীপ ও তার বন্ধরা কি পরিস্থিতে পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ভৌতিক গল্পগুলো পড়তে আপনি ছোট থেকেই পছন্দ করেন জেনে ভালই লাগলো আপু। যাইহোক, আমার শেয়ার করা এই গল্পটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য টি করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

পোড়া বাড়ি তো এমনিতেই ভৌতিক লাগে। আবার পরিবারের পাচঁ সদস্য মারা গিয়েছিল। যারা থাকতো তারাও অস্বাভাবিকভাবে মারা গিয়েছে। তবে দ্বিপ কি ভুল পথে পা দিয়েছে? তারা বাড়িতে প্রবেশ করে কি অনুভূতি হয়েছিল জানার জন্য পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম 🌼

তবে দ্বিপ কি ভুল পথে পা দিয়েছে?

হ্যাঁ ভাই, সেটা এক প্রকার দিয়েছে । পরের পর্বে বিষয়টা জানতে পারবেন ।