ট্রাভেল || দার্জিলিং এর ধোত্রে ভ্রমন (পর্ব - ০১)

in hive-129948 •  6 months ago  (edited)

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি।

ঘোরাঘুরি করতে আমরা সবাই ভালবাসি। আমাদের কাজের ব্যস্ততার মধ্যে যখনই আমরা একটু সময় বের করতে পারি, কোথাও গিয়ে ঘুরে আসতে ইচ্ছা হয়। যাইহোক, বেশ কিছুদিন আগে আমি বন্ধুদের একটি গ্রুপ নিয়ে ঘুরতে গেছিলাম "ধোত্রে" নামক জায়গাতে। এই জায়গাটি সম্পর্কে আমার আগে কোন ধারণা ছিল না। আমার কলেজের যে বন্ধুরা ছিল, তারা সবাইকে নিয়ে একটি গ্রুপ খুলেছিল হোয়াটসঅ্যাপে। সেখানেই ভ্রমণ রিলেটেড কথা হচ্ছিল, তারপর কয়েকজন বন্ধু এই জায়গাটির কথা বলে, ঘুরতে যাওয়ার জন্য। সেভাবেই প্ল্যান করা হয়।

IMG20240415080900.jpg

IMG20240413212840.jpg

আমরা যেই সময়টাতে ধোত্রে যাওয়ার প্ল্যান করছিলাম তখন আমাদের কলকাতাতে বেশ গরমও পড়েছিল । আর ধোত্রেতে শুনেছিলাম অনেকটা ঠান্ডা রয়েছে। সেজন্য আমাদের ওই জায়গায় যাওয়ার ইচ্ছা আরও অনেক গুণ বেড়ে গেছিলো। যাইহোক, ট্যুরের দিন আমাদের প্ল্যান মত আমারা বন্ধুরা মিলে প্রথমে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছাই। আমাদের ট্রেন শিয়ালদহ থেকেই ছিল। ধোত্রেতে যাওয়ার জন্য প্রথমে আমাদের শিয়ালদহ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছাতে হতো, সেখান থেকে পুনরায় গাড়িতে করে আমাদের ওই ডিস্টিনেশনে যাওয়ার কথা ছিল। যাইহোক, শিয়ালদহ যাওয়ার পরে আমরা সব বন্ধু বান্ধব মিলে একজায়গায় হই প্রথমে।

IMG20240413212927.jpg

IMG20240413212946.jpg

আমাদের ট্রেন ছিল রাত ১১:৫০ মিনিটে। আর আমাদের প্রথমে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছানোর কথা ছিল পরের দিন সকালে ৮:৩০ মিনিটে। আমরা আমাদের যাওয়ার পথে, ট্রেনে কিন্তু আমরা অনেক মজাই করেছিলাম। যাইহোক, আমাদের অনেকটাই জার্নি করতে হয়েছিল নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য। নিউ জলপাইগুড়ি নামার পরে আমাদের পূর্বের প্ল্যান অনুযায়ী, আমরা গাড়ি ঠিক করে নিয়ে এই ধোত্রের উদ্দেশে রওনা করি। ধোত্রে যাওয়ার পথে আমরা অনেক বেশি ইনজয় করেছিলাম।

IMG20240414073521.jpg

IMG20240414090615.jpg

যাওয়ার পথে এত সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখছিলাম যা দেখে চোখ ফেরাতে পারছিলাম না আমার কেউই। সত্যি কথা বলতে, আমার কাছে পাহাড় ভ্রমণ অনেক বেশি ভালো লাগে। আমরা তো আমাদের চলার পথে গাড়ি কয়েকবার দাঁড় করিয়েছিলাম, পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য। যেহেতু আমরা প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে গেছিলাম, এজন্য আমাদের কাছে এই ব্যাপারটা অনেক বেশি সুবিধার হয়েছিল। তাছাড়া আমাদের গাড়ির ড্রাইভারও অনেক ভালো ছিল। সে প্রত্যেকবারই আমাদের কথা মত গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছিল। পাহাড়ের উঁচু নিচু রাস্তা দিয়ে চলার সময় এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য জাস্ট অসাধারণ লাগছিল।

IMG20240414120311.jpg

IMG20240414120315.jpg

তাছাড়াও সেখানকার ঠান্ডা ওয়েদারটা সত্যিই অসাধারণ লাগছিল। কারণ আমরা কলকাতা থেকে অনেক গরম সহ্য করে ওইখানে গেছিলাম। এখানে যাওয়ার পর তো আমাদের মনে হচ্ছিল, আমরা আর কলকাতাতেই ফিরব না। যাইহোক, আমাদের পূর্বে থেকেই থাকার জায়গা বুক করা ছিল অর্থাৎ আমরা যে হোমস্টে থাকবো, খাব তা আগে থেকেই আমরা অনলাইনের মাধ্যমে বুক করে নিয়েছিলাম। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ৪৫ কিলোমিটার জার্নি করে আমরা আমাদের হোমস্টে তে গিয়ে পৌঁছাই। আমাদের জার্নিটা অনেক সময়েরই ছিল। আমরা হোমস্টে এর কাছে আসার পরে অনেকটাই টায়ার্ড হয়ে গেছিলাম। তবে ধোত্রে পৌঁছানোর পরে আমরা প্রথমে আমাদের থাকার জায়গার ভিতরে প্রবেশ করিনি, থাকার জায়গার বাইরের অংশগুলোতে আমরা প্রথমে একটু ঘোরাঘুরি করে নিয়েছিলাম সেখানে পৌঁছানোর পরেই।

IMG20240414121511.jpg

IMG20240414140228.jpg

আমাদের বন্ধুদের গ্রুপটা বেশ ভাল ছিল, তারাও ঘোরাঘুরি করায় বেশ উৎসাহ দেখাচ্ছিল। ভালো একটা ফ্রেন্ডদের গ্রুপ পেয়েছিলাম, এই জন্য ঘোরাঘুরি করাটা অনেকটা মজার হয়েছিল। এইখানে গিয়ে আমরা প্রথমে কিছু খাবার খাওয়ার জন্য আশেপাশে দোকান খুঁজতে থাকি কারণ আমাদের জার্নি পথে আমরা কোন কিছুই খাইনি। আর যেহেতু অনেকটা জার্নি করেছিলাম তাই আমাদের খিদেটাও অনেক পেয়ে গেছিল। যাইহোক, আমরা আশেপাশে কোন দোকান খুঁজে না পেয়ে, থাকার জায়গার ঐখান থেকেই কোনরকম একটু খাওয়া দাওয়া করে কিছু সময় আমরা রেস্ট করি। তারপর আমাদের ঘোরাঘুরির যাত্রা পুনরায় শুরু হয়।

চলবে...

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীট্রাভেল
ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফার@ronggin
লোকেশনধোত্রে , দার্জিলিং, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আজকের এই ভ্রমণ মূলক ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

দার্জিলিং ওয়েট বেঙ্গল জায়গাটিতে আমি কখনো যাইনি তবে এর অপরূপ দৃশ্য থেকে সত্যি অনেক মুগ্ধ হলাম। একটা জিনিস ভালো লাগলো আপনি ট্রেনে বেশ মজা করেছেন। আসলে আমাদের বাংলাদেশের ট্রেনের অবস্থা মোটামুটি বেশ খারাপ কারণ অনেক সময় অনেক লেটে চলে আসে যার জন্য অনেক সমস্যা হয়ে যায়।

একটা জিনিস ভালো লাগলো আপনি ট্রেনে বেশ মজা করেছেন।

হ্যাঁ ভাই, আমাদের এই দিকে ট্রেন জার্নি করার সময় অনেক মজা করা যায়।

শুনেছি দার্জিলিং অনেক সুন্দর। তবে কখনো যাওয়া বা দেখা হয়নি। কিন্তুু আপনার পোষ্টের মাধ্যমে কিছু পাহাড়ের পাকৃতিক দৃশ্য দেখে দারুন লাগছে। রীতিমত দার্জিলিং এর প্রেমে পড়ে গেলাম। ধন্যবাদ।

দার্জিলিং এমন একটা জায়গা , সেখানে গেলে দার্জিলিংয়ের প্রেমে পড়তেই হবে আপু।