সুন্দর একটা পরিবেশে কিছুটা সময় কাটানো ||পর্ব -০২

in hive-129948 •  2 years ago 

বন্ধুরা ,

তোমরা সবাই কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমিও অনেক অনেক ভালো আছি।

আজকের নতুন একটি ব্লগে তোমাদের সবাইকে আমি স্বাগতম জানাচ্ছি। সুন্দর একটা পরিবেশে কিছুটা সময় কাটানো নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব আমার আজকের ব্লগে। সপ্তাহখানেক আগের কথা হবে নীলগঞ্জের একটি জায়গায় ঘুরতে গেছিলাম আমি এবং আমার দাদা। নীলগঞ্জের সেই জায়গাটির নাম হলো বেড়াবাড়ি। এইখানে বড় একটি বিল রয়েছে। আমি বছরে অনেকবার সেখানে ঘুরতে চলে যাই যখনই কাজের ফাঁকে একটু সময় পাই। খুবই সুন্দর একটা পরিবেশ পাওয়া যায় সেখানে গেলে। তাছাড়া মনের ভিতর আলাদা একটা শান্তিও লাগে সেখানে কিছু সময় কাটাতে পারলে। এই বিলটির একটি নামও রয়েছে নামটি হলো বর্তির বিল।

বর্তির বিল ভ্রমণ করা নিয়ে গত পর্বের ব্লগে তোমাদের জানিয়েছিলাম এই বিলটি অনেকটা জায়গা নিয়ে বিস্তৃত। এই বিলটি মোটামুটি ভাবে ঘুরে দেখতে হলেও অনেকটা সময়ের দরকার পড়ে। আমি সেই দিন এই বিলে গিয়ে একটি অংশে কিছু সময় কাটিয়েছিলাম এবং বাকি কিছু সময় অন্য আরেকটা অংশে গিয়ে কাটিয়েছিলাম। প্রথম অংশে সময় কাটানো নিয়ে গত পর্বেই জানিয়েছিলাম ।আজ দ্বিতীয় যে অংশটিতে গিয়ে সুন্দর সময় কাটিয়েছিলেন তাই নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব। সেই দিন আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল চারপাশের প্রকৃতিটাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে কেমন লাগে সেটা বোঝার। প্রথম অংশে কিছুটা সময় কাটানোর পর আমি যখন অন্য অংশে গেছিলাম আমার আরো বেশি ভালো লেগেছিলো । সেখানে আসার পর রাস্তার পাশে আগুন জ্বালানো দৃশ্য আমার চোখে পড়েছিল।

20221110_162843.jpg

20221110_162859.jpg

সেখানকার স্থানীয় কিছু কৃষকেরা খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়েছিল । এই দৃশ্য দেখার পর আমার শীতকালে আগুন পোহানোর কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। অনেক শীত পড়লে গ্রামে আগুন পোহানোর দৃশ্য সচরাচর দেখা যায়। যাই হোক তখন যেহেতু সূর্য ডুবে যাওয়ার মুহূর্ত ছিল তাই হালকা হালকা ঠান্ডা লাগছিল। প্রকৃতিকে একটা অন্য রূপে দেখা যাচ্ছিল সেই সময় । সেখানে যাওয়ার পর বেশি ভালো লাগার আরও একটি কারণ হলো সেই জায়গাটা একটু উঁচু প্রকৃতির ছিল। একটু উঁচু জায়গা ছিল বলে সেখান থেকে দূরের প্রকৃতি দেখতে আরো বেশি ভালো লাগছিল। রাস্তার উপরে ওঠার পরে সেখানে একটি লোকের সাথে আমার কথা হয়। সেই লোকটি সেখানের একজন কৃষক ছিল। তার কাছ থেকে সেইখানের অনেক বিবরণ জানতে পারি ।

20221110_162712.jpg

20221110_161718.jpg

সেই লোকটি আমাদের তার নৌকায় ওঠার জন্য বলে। সেখানে ছোট্ট একটি খালের মতো জায়গা ছিল যেখানে সামান্য পরিমাণ জল ছিল। কোন রকমে নৌকা নিয়ে চলাচল করা যাবে এরকম একটা জায়গায় কিন্তু আমরা এরকম ভাবে নৌকা চড়তে রাজি হই না কারণ অনেক জল না থাকলে নৌকা চড়ে কোন মজা পাওয়া যায় না । তারপর সেই লোকের সাথে অন্যান্য আরও বিষয় নিয়ে অনেক কথা হয়। উনার এইখানে কতটুকু জায়গা রয়েছে, এই বিলে জায়গার দাম কত, এইখানের কৃষকরা প্রতিদিন কিরকম ইনকাম করে ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। কৃষকটির সাথে কথা বলে খুব ভালো লেগেছিল। সত্যি বলতে মন মানসিকতার দিক থেকে এইসব সাধারন মানুষ খুব ভালো ।

20221110_162702.jpg

20221110_163438.jpg

কৃষকটির সাথে গল্প করতে করতে রাস্তায় পাশের একটি ছোট চায়ের দোকান থেকে চা এবং চিপস কিনে নিয়ে আসি আমি । চা এবং চিপস কিনতে যাওয়ার আগে আমি কৃষকটিকে চা খাওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম কিন্তু তিনি আমাকে জানিয়েছিল সে চা খায় না। তাই তার জন্য আর চা অর্ডার করিনি কিন্তু যে চিপস এনেছিলাম তা আমি সেই কৃষকটির সাথে ভাগাভাগি করে খেয়েছিলাম। গল্প করার সময় কৃষকটির একটা ইগো বিহীন হাসি আমাকে মুগ্ধ করেছিল।

20221110_163442.jpg

20221110_161732.jpg

লোকটির সাথে গল্প করতে করতেই আমি সূর্য ডোবার দৃশ্য উপভোগ করছিলাম। গল্প করার এক ফাঁকে সেই কৃষক লোকটি আমাকে বর্ষার সময় এখানে এলে নৌকায় নিয়ে পুরো বিল ঘুরে দেখাবে সেই কথা জানায়। তাই তার ফোন নাম্বারটিও আমাকে দিয়ে দেয়। তারা এই নৌকা ভ্রমন গুলো সাধারণত টাকার বিনিময়ে করিয়ে থাকে কিন্তু আমাকে সে জানায় সে অনেকটা কম টাকায় আমাকে নৌকা ভ্রমণ করিয়ে দেবে পরের বার সেখানে গেলে। অচেনা একটা মানুষের এত আন্তরিকতা দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছিল। খুব একটা সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম সেই লোকটির সাথে সেখানে গল্প করে। যাই হোক সেখানে অনেকটা সময় কাটিয়ে আমি আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করি। আসার সময় একটু বেশি বেশি ঠান্ডা লাগছিল কারণ গ্রামের প্রকৃতিতে শীতের সন্ধ্যায় একটু বেশি ঠান্ডা লাগে। যাই হোক স্কুটি চালিয়ে সন্ধ্যার একটু পরপরই আমি বাড়িতে চলে আসি।

20221110_161711.jpg

ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান:বেড়াবাড়ি, নীলগঞ্জ, বারাসাত, ওয়েস্ট বেঙ্গল।

সুন্দর একটা পরিবেশে কিছুটা সময় কাটানো নিয়ে শেয়ার করা আজকের দ্বিতীয় পর্বের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

🏜🏜ধন্যবাদ সবাইকে🏜🏜

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এত চমৎকার পরিবেশে সুন্দর জায়গায় সময় কাটতে পারলে খুবই ভালো লাগে। নিশ্চয়ই এত অসাধারণ পরিবেশে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আপনার পোস্টটি দেখে খুবই ভালো লাগলো। প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। এত সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

এরকম সুন্দর জায়গায় কিছুটা সময় কাটাতে পেরে সেদিন অনেক ভালো লেগেছিল। প্রকৃতিকে কাছ থেকে দেখে মনের ভিতর একটা আলাদা আনন্দ লাগে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।

  ·  2 years ago (edited)

ভাইয়া বর্তির বিলের আশেপাশের খুব সুন্দর জায়গার ছবি শেয়ার করেছেন আর তার সাথে খুব সুন্দর বর্ণনা করেছেন। গ্রামের এই সুন্দর পরিবেশে সময় কাটাতে অনেক ভালো লাগে। গ্রামীন এই সুন্দর দৃশ্য গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। নদীতে নৌকা ভ্রমণ করতে কিন্তু অনেক ভালো লাগে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর পরিবেশে কাটানোর সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

বর্তির বিল জায়গাটা সত্যি অনেক সুন্দর। গ্রাম্য পরিবেশে সময় কাটাতে খুবই ভালো লাগে আমার। আমার শেয়ার করা গ্রামীণ জীবনের সুন্দর দৃশ্য গুলো আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম আপু।

এরকম দৃশ্যগুলো সত্যিই একদম উপভোগ করার মত। আমিও দেখেছি এরকম কৃষকেরা খরকুটার মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সত্যি এরকম আগুন জালানো দেখলে শীতের কথা মনে পড়ে যায়। আর এখন তো শীতকাল চলেই এলো। আমার কাছে আরও বেশি ভালো লাগলো আপনার প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি।আপনিও দেখছি প্রত্যেকটা দৃশ্য খুব ভালোভাবে উপভোগ করেছেন। ভালোই হয়েছে কৃষকের জন্য চিপস নিয়ে আসলেন। যদিও চা অফার করাতে সে খাবেনা বলেছে।

এরকম দৃশ্য দেখলে গ্রামে শীতের সময় আগুন পোহানোর কথা খুব মনে পড়ে যায়। আমায় শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম। কৃষকটিকে চায়ের অফার করার সাথে তিনি জানিয়েছিলেন তার চায়ের নেশা নেই, তাই তিনি আর চা খান নি ।আমি চিপসও কিনেছিলাম সেই চিপস তার সাথে ভাগাভাগি করেই খেয়েছিলাম সেদিন।

এই বর্তির বিলের ছবি অনেক আগে ব্লাকস দাদা একবার শেয়ার করেছিল। খুব সুন্দর জায়গাটি। তাছাড়া শীতের দিনে আগুন জ্বালিয়ে আগুন পোহানোর মজাই আলাদা। ঠিক বলেছেন ভাইয়া সন্ধ্যার সময় প্রকৃতিতে একটা অন্যরকম সৌন্দর্য দেখা যায়। একজন কৃষক পেয়ে অবশ্য ভালো হয়েছে আপনার। তার সঙ্গে গল্প করে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন। আবার চিপসও ভাগাভাগি করে খেয়েছেন দেখছি। যাই হোক খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন বোঝাই যাচ্ছে।

শীতকালে আগুন পোহানোর মজা সত্যি খুব ভালো লাগার মত । হ্যাঁ আপু খুবই সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম সেই দিন সেখানে গিয়ে।