চায়না টাউনের ভোজ বিলাস

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার,,

কয়েকদিন আগে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল নিয়ে পোস্ট করেছিলাম। দারুন একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে সেখানে গিয়ে। নানান ধরনের ছবির মাধ্যমে সেগুলো দেখানোর চেষ্টা করেছি। আপনারা অনেকেই জানেন আমি আমাদের শ্রদ্ধেয় দাদার সাথে সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সাথে নিলয় দা নামে আরেকজন দাদাও ছিলেন। মোটামুটি পুরো দুপুর আমরা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এবং তার আশেপাশে ঘুরে দেখি। এরই মাঝে আমাদের সকলের বেশ খিদে পেয়ে যায়। আগে থেকেই ঠিক করা ছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে বেরিয়ে চায়না টাউনে খেতে যাব। তাই গাড়িতে উঠে সোজা রওনা দিয়ে দিলাম চায়না টাউনে।

IMG20220812152045.jpg
Location

চায়না টাউনে রেস্টুরেন্ট গুলোতে খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের কারোরই ছিল না। দাদার গাড়ির ড্রাইভার বলেছিল বেশ ভালো রেস্টুরেন্ট গুলো। বলা যায় ওর কথার ওপর অনেকটা ভিত্তি করেই সেদিকে যাওয়া। প্রথমে যে রেস্টুরেন্টে ঢুকতে নিলাম হঠাৎ করেই কেন যেন ডিসিশন চেঞ্জ হয়ে গেল। গাড়িতে ড্রাইভার দাদা হঠাৎ করেই বলে বসলেন সামনে আর একটা রেস্টুরেন্ট আছে ওটা আরো ভালো। আমরা আর কথা না বাড়িয়ে সেখানেই চলে গেলাম। রেস্টুরেন্ট টার নাম ছিল বিগ বস।

IMG20220812154428.jpg
Location

খেতে বসে বেঁধে গেল আরেক বিপত্তি। চায়না টাউনের রেস্টুরেন্ট বলে কথা তাই চাইনিজ খাবার বেশি। পরিচিত খাবারের আইটেম বেশ কম। ভেতরের ডেকোরেশন খুব একটা যে মন কেড়ে নেবে এরকমটাও ছিল না। যাই হোক দাদা একপর্যায়ে মেনু কার্ড গুলো দেখে খাবার অর্ডার করলেন। দাদার অর্ডার মানেই টেবিল ভর্তি খাবার এসে হাজির হয়ে যাবে। যার শুরুটা হয় চাইনিজ সুপ দিয়ে। খেতে খুব একটা খারাপ ছিল না সুপ টা বেশ ভালই ছিল।

IMG20220812154706.jpg
Location

IMG20220812155659.jpg
Location

IMG20220812155704.jpg
Location

এরপর চিকেন আইটেম আসলো দুই ধরনের। আমার অবশ্য কোন মেনুর নাম মনে নেই। তবে খেতে বেশ ভালো ছিল। তার সাথে আসলো অনথন। এর আগেও অনথন খেয়েছি কিন্তু এদের খাবারের স্বাদ টা একটু ভিন্ন রকমের ছিল। খুব যে মজার লাগছিল এমনটাও না। তবে ছিল ভালই। খেতে বসে আমরা হাসাহাসি করছিলাম বেশ। চায়না টাউনে খেতে এসেছি তাই চায়নাদের মত করে খাবারের স্বাদ নিচ্ছি আজকে। ভিন্নতা তো থাকবেই।

IMG20220812161534.jpg
Location

সবশেষ আসলো ফ্রাইড রাইস আর চিকেন। খাবারের স্বাদ একদমই মন মত ছিল না আমাদের কারোরই। দাদা থেকে শুরু করে আমরা কেউই তৃপ্তি ভরে যেন খেতে পারছিলাম না। এমন একটা অবস্থা হল ফ্রাইড রাইসের ভেতর থেকে চিংড়ি গুলো শুধু বেছে বেছে খাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল খাবারের প্লেটে বরশি ফেলেছি চিংড়ি মাছ ধরার জন্য। চিকেনটা মোটামুটি খাওয়া গেলেও ফ্রাইড রাইস একদম খেতে পারলাম না কেউ। ভীষণ হাসাহাসি হচ্ছিল খাবারের এমন একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে। দাদা তো বলছিলই আর জীবনে কখনো এদিকে খেতে আসবে না। কোন খাবারের ই অরিজিনাল স্বাদ পাচ্ছিলাম না। শুধুমাত্র দুইটা জিনিসের স্বাদ একদম ঠিকঠাক ছিল। ঠান্ডা জল আর ড্রিংকস (থামস আপ)।

এইতো ছিল আমাদের চায়না টাউনে খাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা। যারা যারা রেস্টুরেন্টে ঢুকছিল, আমরা শুধু মনে মনে ভাবছিলাম আজকেই শেষ দিন এদের, একবার খেলে এখানে আর কোনদিন খেতে আসবে না কেউ। যাইহোক এভাবেই দুপুরের ভজন সম্পন্ন করে আমরা বেরিয়ে গেলাম সাইন্স সিটির দিকে। সাইন্স সিটির গল্পটা পরবর্তী কোনো পোস্টে লিখব। সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

মনে হচ্ছিল খাবারের প্লেটে বরশি ফেলেছি চিংড়ি মাছ ধরার জন্য।

খাওয়া-দাওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানতে পারলাম ভাইয়া। আপনি দাদার সাথে ঘুরতে গিয়েছেন এবং খেতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। খাবার দেখতে তো বেশ লোভনীয় লাগছে। তবে স্বাদের বেলায় একেবারে ঠিক নেই এটা বুঝতে পারলাম। আপনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

একটা বিরল অভিজ্ঞতা হয়েছিল সেদিন সত্যি। সবাই অবশ্য মজা করতে করতেই যতটা পারি শেষ করেছি। শেষের দিকে এসে একটু বেশি অসুবিধা হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপু পাশে থাকার জন্য। ভালো থাকবেন।