কিছুটা ভোগান্তি, শেষবেলায় একটু শান্তি

in hive-129948 •  2 years ago 

নমষ্কার,,

পার্থদার সাথে যেদিন দেখা হল সেদিনই দাদা আমাকে একটা স্কলারশিপ এর ব্যাপারে খোঁজ দিয়েছিল। কিন্তু আবেদনের জন্য সময় ছিল হাতে মাত্র একদিন। এর মাঝে অনেক কিছু ডকুমেন্টস রেডি করতে হবে। একদিনের মাঝে এত কিছু করা একদমই সম্ভব নয়। তাই দাদা বলেছিল তার সব ডকুমেন্টস আমাকে পাঠিয়ে দেবে। আমি যেন সেগুলো একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দেই, হিহিহিহি। কাজটা যে হবেই এমন কোন কথা নয়। চেষ্টা করতে দোষ কি! ব্যাপারটা এমন।

IMG20230116154049.jpg
Location

এবার আমি রাতেরবেলা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখলাম আবেদন করার সময় ঐদিন বিকাল চারটা পর্যন্ত। মনে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। ভাবলাম তাড়াহুড়ো না করে আস্তে ধীরে ডকুমেন্টগুলো রেডি করে তারপর অনলাইনে সবকিছু সাবমিট করব। সারারাত জেগে কাজ করেছি। আবার ওই দিকে সকাল সাড়ে সাতটার মাঝে উঠে কাজে বসে গিয়েছি। কারণ সেদিনের মাঝেই সমস্ত কিছু অনলাইনে সাবমিট করে তারপর সচিবালয়ে গিয়ে ডকুমেন্টস গুলো জমা দিয়ে আসতে হবে।

সকাল তখন ১১ টা বাজে। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে এপ্লাই করব। ঠিক ওই সময়েই লিংকে ক্লিক করলেই দেখাচ্ছে আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। আমার মাথার তার পুরো ছিড়ে গেল যেন। কারণ স্পষ্টভাবে লেখা আছে বিকাল চারটা পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পরেও কোন কাজ হলো না। আমার দুই দিনের রাত জেগে কাজ করা পুরোপুরি জলে চলে গেল। মন মেজাজ ভীষণ খারাপ। তারপর হঠাৎ মনে হল মন্ত্রণালয়ের যে ইমেইল এড্রেস টা দেওয়া আছে সেখানে একটা মেইল করে রাখি। আনএক্সপেক্টেড ইরোর টাইটেল দিয়ে সমস্ত কিছু লিখে একটা ইমেইল করলাম মন্ত্রণালয় বরাবর। তখন পর্যন্ত আমার বিশ্বাস বাংলাদেশে এসব মেইল দিয়ে কোন কাজ হবে না। কেউ খুলেও দেখবে না।

IMG20230116154108.jpg
Location

এর মাঝে আরো কয়েকবার চেষ্টা করলাম অনলাইনে ঢুকে অ্যাপ্লাই করার জন্য। কিন্তু কোন কাজ হলো না। তার ঠিক ঘন্টাখানেক পর মন বলছিল একবার একটু দেখি এবার খুললো কিনা। যদি ইমেইল চেক করেই থাকে! এবার আমি রীতিমত অবাক। দেখলাম সার্ভার টা ঠিক করে দিয়েছে। তখন বাজে দুপুর সাড়ে বারোটা। তাড়াহুড়ো করে অনলাইনে সমস্ত কাজ সেরে ফেললাম। সকাল থেকে খাওয়া-দাওয়া নেই। কোনরকমে মুখে একটু ভাত দিয়ে বেরোতে বেরোতে আড়াইটা বেজে গেল। চারটার মাঝে আমাকে সচিবালয় পৌঁছাতেই হবে। তা না হলে তার আবেদন করাই হবে না।

IMG20230116155008.jpg
Location

শ্যামলী থেকে পল্টন যেতে যে কেমন জ্যাম পোহাতে হবে এটা ভাবতেই দম আটকে আসছিল। ঈশ্বরের নাম নিয়ে রওনা দিয়ে দিলাম। বেশ ভাল রকমের জ্যাম দেখলাম রাস্তায়। অবশেষে চারটা বাজার ঠিক ১০ মিনিট আগে আমি সচিবালয়ের গেটে পৌঁছালাম। তারপর সব ডকুমেন্টগুলো নির্ধারিত জায়গায় জমা দিলাম। হতে পারে কিছুটা ভোগান্তি গেছে আমার উপর দিয়ে। তবে এই পুরো ব্যাপারটায় ভীষণ মজা পেয়েছি আমি। শেষ মুহূর্তে এসে যে কাজটা হয়েছে এটার জন্যই আমি ভীষণ খুশি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দাদা পার্থদার কথা মতো কি ডকুমেন্ট নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন পরে 🤔। আসলে মাথায় টেনশন থাকলে কোনো কিছুতেই মন বসে না! ফাইনালি সার্ভার খুলে দিয়েছে এবং আপনি ফাইল আপলোড করতে পেরেছেন এটা জেনে ভালো লাগলো! তবে ঢাকা শহরের যে জ্যাম!! আমার তো মাথা ঘুরে পুরা! সেই শ্যামলী থেকে পল্টন!

ভাই ওগুলো মোটিভেশনাল লেটার ছিল, একটু ঘুরিয়ে পেচিয়ে চালিয়ে দিয়েছি। হিহিহিহি। সময় ছিল না তাই এসব চোরামি। আর ঐ দিন যে পৌছাইতে পারছিলাম এটাই বড় কপাল ছিল আমার জন্য। অনেক ধন্যবাদ ভাই।

যখন কোন ইম্পরট্যান্ট কাজ করার জন্য তাড়াহুড়া করা হয় যতসব ঝামেলা তখনই হয়।সত্যি তো আসলেই এত সহজে তো কিছু পাওয়া যায় না অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়।তবে শেষমেষ আপনি যে আবেদনটা করতে পেরেছেন সব কিছু সাবমিট করতে পেরেছেন।আপনার স্বস্তি দেখে আমিও স্বস্তি পেলাম ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলেই আপু তাড়া থাকলে যেন আরো বেশি বিপত্তি বাঁধে। ঐ দিনের কান্ড গুলো মনে থাকবে খুব সত্যি। অনেক ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন সবসময়।

দম বন্ধ করে পুরো লেখাটি শেষ করলাম শেষে জানার জন্য আপনি কি কাগজটি জমা দিতে পেরেছেন কিনা। বারবার মনে হচ্ছিলো মিস করে ফেললেন কিনা। যাই হোক দশ মিনিট আগে হলেও পৌঁছে গিয়ে কাগজটি জমা দিতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার রাত জেগে কাজ করা সার্থক হয়েছে। ভাগ্য ভালোর জন্য ইমেইলটা তারা চেক করেছে সার্ভার আবার চালু করে দিয়েছে। । আশা করি ভালো কিছুই হবে। দোয়া রইল।

ঐ দিনটা যে কি ছিল আমার জন্য আপু,, এখন মনে হলেই হাসি পায়, একটা করে বিপত্তি বাধবেই আমার কাজে। একদম নরমাল একটা ব্যাপার এটা। যাই হোক আপনাদের দোয়াতে সব টুকু কাজ যে করতে পেরেছি এটাই অনেক বড়। ভালো থাকবেন আপু। অনেক শুভেচ্ছা রইলো।