নমষ্কার,,
আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি সকলে ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমার অবশ্য একটু বেগ পেতে হচ্ছে শরীরটা নিয়ে। হঠাৎ করেই ভীষণ গলা ব্যথা আর সর্দি শুরু হয়ে গেছে। তার সাথে মাথা ব্যাথা শরীর খারাপের তীব্রতা আর বাড়িয়ে দিয়েছে। আসলে গতকাল এসি গাড়িতে জার্নি করা মোটেও ঠিক হয়নি আমার জন্য। হয়তো ঠান্ডাটা আরো বেশি লেগে গেছে ঐ জন্য। আরো দুই থেকে তিন দিন আমাকে ভুগতে হবে।
আজ আজ একটু ভিন্ন গল্প করি আপনাদের সাথে। তিন দিন আগে যখন বাড়িতে ছিলাম হঠাৎ দেখি আমার কাঁধের ব্যাগের একটা অংশ থেকে একটু সুতো খুলে গেছে। মুচির কাছ থেকে সেলাই করে নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। বেরিয়ে পরলাম বাড়ির কাছেই বাজারে এক মুচির কাছে। সত্যি বলতে মানুষটাকে দেখে ভীষণ মায়া হচ্ছিল। তীব্র রোদের ভেতর মাথার উপরে একটা ছাতা ধরে জুতো সেলাই করার সব জিনিসপত্র নিয়ে বসে আছেন। আমি গিয়ে তাকে আমার ব্যাগের সেলাই করার জন্য নির্ধারিত অংশটুকু দেখালাম । আমাকে বলল খুব ভালো করে সেলাই করে দিচ্ছি, একটু সময় দাও বাবা। ব্যাগটা ওনার হাতে দিয়ে পাশে রাখা টুলের ওপরে আমি বসে গেলাম।
কাজটা করতে মিনিট দশেকের মত সময় লাগলো। আর এর ফাঁকে ফাঁকে আমি চেষ্টা করছিলাম তার কাছ থেকে নানান ধরনের কথা শোনার। মানুষের সাথে নানান কথা বলা এক ধরনের অভ্যেস বলা যায় আমার। জিজ্ঞেস করলাম পরিবারে কে কে আছে এবং এই পেশা দিয়ে তার কেমন চলছে। উত্তরে তিনি খুব হতাশ হয়ে গেলেন। আমাকে জানালো একটা ছেলে আছে তার। মুদিখানার দোকানে রেখে দিয়েছে। সেখান থেকে প্রতিমাসে কিছু মাইনে পায়। আর এখন আগের মত আর সেরকম রোজগার হয় না তার এই পেশায়। যেটুকু রোজগার হয় সেটা দিয়ে সংসার চালানো কতটা কষ্টের সে কথাগুলো যেন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম তার মুখে।
বর্তমান বাজারে প্রতিটা জিনিসের দাম যেভাবে ঊর্ধ্বমুখী দুই বেলা ঠিকমতো ডালভাত খেয়ে বেঁচে থাকাটাই কষ্টের হয়ে গেছে। তরকারি মাছ মাংস তেল সবকিছুতেই যেন লাগাম ছাড়া ঊর্ধ্বগতি। আর এর মাঝে যদি পরিবারের কেউ অসুস্থ হন তাহলে বাড়তি খরচ মেটাতে আরো নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায়। কখনো কখনো ঠিকমতো চিকিৎসাটাও করা হয়ে ওঠে না। শুধুমাত্র বংশ-পরম্পরায় এ কাজটা তিনি এখনো করেই যাচ্ছেন। "সবকিছুর দাম বাড়লেও আমার কাজের দাম দশ টাকা বেশি চাইলেই সবার অসুবিধা হয়ে যায়।" এই কথাগুলো যখন তিনি বলছিলেন তার ভেতরের কষ্টের তীব্রতা টা যেন ভীষণ ভাবে অনুভব করতে পারছিলাম আমি। তাকে কোন কিছু বলে সান্তনা দেয়ার ভাষা আমার ছিল না। কারণ আমি জানি বর্তমান পরিস্থিতি কতটা নাজুক।
সমাজ ব্যবস্থা যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে উপরের শ্রেণীর মানুষ রাতারাতি আরো উপরের দিকে উঠছে। আর খেটে খাওয়া এই মানুষগুলো দিন দিন আরো নিচে নেমে যাচ্ছে। তাদের ভালো-মন্দ দেখার সময় কোথায় এই সুশীল সমাজের! মুখে ভালো কথার বুলি ওড়াতেই সবাই ব্যস্ত শুধু। অথচ সকল শ্রেণীর মানুষ ছাড়া পুরো সমাজ ব্যবস্থাটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আমরা মূল্যায়ন করতে আরো কবে শিখব! শিক্ষা আর মনুষ্যত্বের জ্ঞান শুধু কাগজে-কলমেই থেকে গেল। বাস্তবিক প্রয়োগ থেকে আমরা অনেক দূরে। বর্তমান বাজার ব্যবস্থা যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষজনকে হয়তো দিনে এক বেলা আহার করে বাঁচতে হবে তখন। খুব দ্রুত এই মানুষগুলোর জীবনে সুদিন আসুক এমনটাই প্রত্যাশা করি।
মধ্যবিত্তরাও খুব খারাপ অবস্থায় আছে।এভাবে পরিস্থির অবনতি হতে থাকলে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে।সৃষ্টিকর্তা যেন সব ঠিক করে দেন,এই আশাই করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই তাই দাদা,, এমন পরিস্থিতি বেশি থাকলে মানুষের কষ্টের শেষ থাকবে না। যত তাড়াতাড়ি এর থেকে মুক্তি পাব ততই আমাদের মঙ্গল। খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কাজের ফাকে একটু কথা বার্তা খোজ খবর নিয়েছেন জেনে ভাল লাগলো । আসলে পরিস্থিতি এমন মনে মনে হায় হুতাশ করা ছাড়া যেন আমাদের এখন কিছুই করার নেই । সবাই সব কিছু বুঝেও চুপচাপ । নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে সবার আগে বিপদে পড়বে দিন মজুর মানুষ গুলো । এরপর একে একে সব শ্রেনী পেশার মানুষ পিষ্ঠ হবে এর পদতলে । এখন থেকেই আমাদের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত । নতুবা বড় রকমের ক্ষতির মুখে পড়া লাগবে । দেশের কর্তা ব্যক্তিরা যেন এদিকে নজর দেয় এই আশা করি ।
ধন্যবাদ ভাইয়া । সময় উপযোগী আলোচনা ছিল ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অসাধারন ভাবে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন ভাই। খুবই ভালো লাগলো শুনে। অনেক ধন্যবাদ আর অনেক ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit