বেলুড় মঠে কাটানো একটা দিন

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার,,

রাখি পূর্ণিমার দিনের বিকালের গল্প করছি। দুপুর পর্যন্ত শরীরটা অতটা ভাল ছিলনা। সকালের দিকে তাই কোথাও আর বের হইনি। কারণ সন্ধ্যেবেলা দিদি ভাইয়ের সাথে দেখা করার কথা রয়েছিল। রাখি পরিয়ে দেবে সেজন্য। তাই দুপুর পর্যন্ত রেস্ট নিয়ে বিকালের দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। আমার প্ল্যান ছিল দিদি ভাইয়ের সাথে দেখা করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সম্রাটের সাথে সময়টা কাটাবো। আর ওই দিনই হবে সম্রাটের সাথে এবারের ইন্ডিয়া ট্যুরের শেষ দেখা। কারণ তার পরদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুরো সিডিউল টা দাদার সাথে প্ল্যান করা ছিল।

IMG20220811175546.jpg
Location

IMG20220811175243.jpg
Location

সম্রাটের সাথে ঘোরাঘুরি করতে নিয়ে একটা মজার কান্ড ঘটতো, আমরা কখনোই আগে থেকে কোন কিছু প্ল্যান করতাম না। সময় বুঝে যেখানে যাওয়া যাবে সেখানেই চলে যেতাম। আমি সেদিন ট্রেনে করে একাই দমদম স্টেশনে পৌঁছে যাওয়ার পর হাতে ঘন্টা দুয়েকের মত সময় আছে দেখলাম। সম্রাট আমাকে জানালো যেহেতু অল্প সময়ে আছে তাই আজকে বেলুড় মঠ থেকে বিকেলের দিকটা ঘুরে আসা যায়। আমাকে দক্ষিণেশ্বর মেট্রো ধরে যাওয়ার পুরো ডিটেলস জানিয়ে দিল সম্রাট। আমি একাই পৌঁছে গেলাম আর সম্রাট সেখানে আমাকে রিসিভ করতে চলে আসে। তারপর দুই ভাই মিলে পৌঁছে গেলাম বেলুড় মঠ।

IMG20220811171840.jpg
Location

IMG_20220821_190502.jpg
Location

IMG_20220821_190546.jpg
Location

IMG20220811173307.jpg
Location

প্রথমেই বলে রাখি বেলুড় মঠের সৌন্দর্য এবং পরিবেশটা হয়তো লিখে প্রকাশ করা কখনোই সম্ভব নয়। যে ওখানে গিয়ে সময় কাটাবে সেই শুধুমাত্র পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারবে। এর আগেও বেলুড় মঠের আশেপাশে ঘুরে আসলেও ভেতরের দিকে কখনো যাওয়া হয়নি। এবারই প্রথম আমি আর সম্রাট সেখানে ঢুকলাম। হালকা বৃষ্টি হয়েছিল সন্ধ্যের আগে। পুরো পরিবেশটা একদম দেখার মত ছিল। প্রচুর দর্শনার্থী সেখানে প্রতিদিন ঘুরতে আসেন। আমি আর সম্রাট হাসিঠাট্টা করতে করতে এগিয়ে যেতে থাকলাম। চেষ্টা করছিলাম প্রতিটা অংশের একটু একটু করে ছবি নিতে। যদিও সব জায়গায় ছবি তোলার অনুমতি ছিল না। কিন্তু আমরা লুকিয়ে লুকিয়ে সব কাজে সেরে ফেলেছিলাম।

IMG-20220816-WA0009.jpg
Location

IMG20220811173044.jpg
Location

IMG20220811175623.jpg
Location

বেলুড় মঠ হল শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের প্রধান শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান কার্যালয়। ১ মে ১৮৯৭ সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বেলুড় মঠের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে গঙ্গা নদী। বিকেলের দিকে সেখানে বসে সময় কাটালে নিজে অন্য এক জগতে যেন চলে যাওয়া যায়। ভেতরে নানান মন্দির তো আছেই তার সাথে রয়েছে বিবেকানন্দ ইউনিভার্সিটি। রয়েছে লাইব্রেরিও। বেলুড় মঠের ভেতরে অবস্থিত প্রত্যেকটি স্থাপত্যের কারুকার্য চোখে লেগে থাকার মত। অবাক দৃষ্টিতে বারবার তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করবে।

IMG20220811175801.jpg
Location

IMG20220811175729.jpg
Location

আমাদের হাতের সময় অনেক কম ছিল। তাই সন্ধ্যে লাগার সাথে সাথে সেখান থেকে বেরিয়ে যাই। শেষ বেলায় অবশ্য গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পরতে শুরু করে। ইচ্ছে থাকলেও আর বেশি সময় দিতে পারিনি। নদীর ঘাটে আরেকটু বসে থাকতে পারলে হয়তো আরো ভালো লাগতো। আমি আর সম্রাট এই ব্যাপারটা নিয়ে বারবার আফসোস করছিলাম। তবে ইচ্ছে আছে এর পরের বার দুই ভাই একসাথে গিয়ে ঠিক ওই ঘাটেই আবার বসব এবং মন খুলে গল্প করব।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বেলুড় মঠ জায়গাটি সত্যি খুবই সুন্দর ভাইয়া। ফটোগ্রাফি গুলো দেখলেই বোঝা যায় আপনি কতটা ভালো সময় কাটছে। আসলে ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন লেখে সবকিছু প্রকাশ করা যায় না। পরিবেশটা সত্যি খুব সুন্দর ছিল। নদীর ঘাটাও বেশ চমৎকার ছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি জায়গার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এবং আপনার ভালো সময়টা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

অনেক চমৎকার করে মন্তব্য করেছেন আপু। ভালো লাগলো সত্যি। অনেক ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা রইলো।

বেলুড় মঠে আপনার কাটানো দিনটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটানোর পাশাপাশি ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল

অনেক ধন্যবাদ ভাই। পাশে থাকবেন সবসময়।

বেলুড় মঠের ফটোগ্রফি গুলো দেখে তো মনে হচ্ছে এড়িয়াটা অনেক বড়। পরিবেশটাও সাজানো গুছানো।স্বামী বিবেকানন্দের সম্পর্কেও কিছু ধারনা পেলাম। ধন্যবাদ ।

হ্যাঁ বেশ বড় এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। অপূর্ব একটা পরিবেশ। অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।