নমস্কার,,
আমার বাংলা ব্লগে সকল সদস্যকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জানিনা দেশের এমন পরিস্থিতিতে সকলে কেমন আছেন বা সকলের মানসিক অবস্থাটাই বা কেমন, তারপরও সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি সকলে যেন ভাল থাকেন এবং সুস্থ থাকেন। গতকাল রাত থেকেই হালকা-পাতলা বৃষ্টি শুরু হয়েছে ঢাকাতে। যার তীব্রতাটা বেশ ভালোই বেড়েছে আজ দিনের বেলাতে। প্রচন্ড গরমের রোষানল থেকে কিছুটা হলেও মুক্তির স্বাদ মিলেছে।
আজ যে ছবিগুলো নিয়ে লিখছি সেগুলো কয়েকদিন আগের। সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই রাজধানী শহর ঢাকা পুরো পানিতে ঢেকে যায় তারই একটা নমুনা আবারও স্বচক্ষে দেখতে পেরেছিলাম। রীতিমতো অভাবনীয় এবং কল্পনার বাইরে একটা জগতে চলে যাওয়ার মত অবস্থা হয়ে যায়। সচরাচর বৃষ্টির দিনে আমরা বাইরে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে সবকিছু ফেলে রেখে আমাদের বেরোতেই হয়। ঠিক তেমনি আমাকেও বের হতে হয়েছিল সেদিন। আর যার জন্যই এই ভয়াবহ অবস্থাটা খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম সেদিন। অফিসের জন্য যখন রওনা দেই বাসার নিচে পানি আটকে ছিল না একদমই। কিন্তু কিছুদূর এগোতেই মনে হলো এ কোন শহরে এসে পরেছি আমি! চার দিকে শুধু পানি আর পানি! ঢাকা শহরে এরকম অবস্থায় আমি কখনো এর আগে পড়িনি।
মাত্র পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ আমার অফিস হলেও বাধ্য হয়ে সেদিন রিকশা নিতে হলো। মজার ব্যাপার রিকশাতে উঠেও যেন রক্ষা হলো না। রিক্সার পা দানি অব্দি জল ছুঁইছুঁই করছিল। ভেবেছিলাম অফিস থেকে ফেরার সময় হয়তো পানি রাস্তা থেকে নেমে যাবে। কিন্তু দীর্ঘ সাত-আট ঘণ্টা পরেও আগের অবস্থাতেই রয়েছিল সবকিছু। একটা রাজধানী শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা এতটা নিম্নমানের হতে পারে এটা এই আধুনিক সমাজে এসে মানতে সত্যি ভীষণ কষ্ট হয়। খবরে জানতে পারি পুরো ঢাকা শহরে নাকি একই অবস্থা হয়েছিল।
সত্যি বলতে মৌমাছির মত মানুষ বাস করে এই রাজধানী জুড়ে। সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষেও হয়তো সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা সম্ভব হয়ে উঠবে না যদি না আমরা নিজেরা সচেতন হই। সবগুলো ড্রেন আজ পলিথিন, চিপসের প্যাকেট সিগারেটের প্যাকেট, কাগজ, ড্রিংসের বোতল দিয়ে ভর্তি। দায়বদ্ধতা কি শুধু একা কর্তৃপক্ষের! আধুনিকতার ছোঁয়া নাগরিক জীবনে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো আমরা কতটা মন থেকে আধুনিক হতে পেরেছি সেই প্রশ্নটা কখনো কি নিজের বিবেককে করেছি! আজ আমরা যদি সবাই একটুখানি সচেতন হতাম আমাদের আশেপাশের পরিবেশ নিয়ে তাহলে হয়তো এমন দুর্দিন আর দেখতে হতো না। জানিনা আমাদের মত শিক্ষিত মূর্খ জাতির বিবেক কবে নাড়া দেবে। তবে যত তাড়াতাড়ি দিবে ততই মঙ্গল। নয়তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সব সময়ের জন্য কলঙ্কিত হয়ে থাকবো আমরা নিজেরাই।