কোলকাতা মেট্রো সার্ভিস

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার,,

ইন্ডিয়াতে বেশিরভাগ মানুষজনই ট্রেনে করে যাতায়াত করাটাই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বাংলাদেশে থাকাকালীন অবস্থায় এই কথাটা অনেকবার শুনেছি। আরো শুনেছি ট্রেনে করে অনেক কম সময়ে অনেক লম্বা দূরত্ব আরামসে পাড়ি দেওয়া যায়। বেশ কয়েক বছর আগে চেন্নাই থেকে কলকাতা এসেছিলাম একবার ট্রেনে করে। এরপর আর কখনো ট্রেনে উঠিনি ইন্ডিয়াতে গিয়ে। তবে এবার ইন্ডিয়াতে মোটামুটি সব ধরনের মজাই করে এসেছিলাম। লোকাল বাস থেকে শুরু করে লোকাল ট্রেন। তার ভেতর সবথেকে দারুন লেগেছে যেই ট্রান্সপোর্ট সেটা হল মেট্রো।

IMG_20220915_095545.jpg
Location

IMG20220810123528.jpg
Location

IMG20220810123746.jpg
Location

এবারই প্রথমবারের মতো আমি মেট্রো তে উঠি। প্রথম দিন আমার সাথে ছিল সম্রাট। মেট্রো স্টেশনে যখন দাঁড়িয়েছিলাম মানুষের ভিড়ে আমি রীতিমতো ভয় পেয়ে যাচ্ছিলাম। সম্রাট কে যখন বললাম, "ভাই আমি বোধহয় এই ট্রেনে উঠতে পারবো না", সম্রাট দুষ্টুমি একটা হাসি দিয়ে বলল," তুমি শুধু মোবাইল আর মানিব্যাগটা সামলে রেখে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে,, বাকিটা পেছন থেকে আমি দেখে নিচ্ছি"। সে কি মজার কান্ড। ট্রেন আসার সাথে সাথে হুরমুর করে পেছন থেকে ঠেলা দিতে শুরু করল। আমি যেন অটো ট্রেনের ভেতরে ঢুকে গেলাম। ভীষণ ভিড় ছিল সেদিন । তবে সত্যি বলতে মানুষের চাপ অনেক থাকলেও দাঁড়িয়ে খুব মজা ছিল। এসির ভেতরে কোন প্রবলেম হচ্ছিল না একদম। এতটা স্মুথ এবং কমফোর্ট ফিল করছিলাম বলে বোঝাতে পারবো না।

IMG-20220811-WA0010.jpg
Location

IMG20220810164759.jpg
Location

IMG20220811163020.jpg
Location

IMG20220811163502.jpg
Location

IMG20220811164747.jpg
Location

এরপর আরো একদিন দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বর যাই মেট্রোতে করে। সেদিন অবশ্য সম্রাট ছিল না, আমি একাই ছিলাম। প্রথমে একটু ভ্যাবাচ্যাকা লাগছিল। পরে অবশ্য সব ঠিকঠাক হয়ে গিয়েছিল। সেদিন অবশ্য ট্রেনে খুব একটা ভিড় ছিল না । ফাঁকাই ছিল। মোটামুটি দারুন ভাবে পৌঁছে গিয়েছিলাম দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে। সম্রাট সেখানে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনটা এক কথায় অসাধারণ লেগেছে আমার। ভেতরটা এবং বাইরের দিকটা চোখে লাগার মত পুরো। আমি বেশ কিছু ছবি তুলে ফেলি।

IMG20220811164949.jpg
Location

IMG20220811165052.jpg
Location

IMG20220811165249.jpg
Location

মেট্রো ট্রেন সার্ভিসে সবচেয়ে যে জিনিসটা আমার বেশি ভালো লেগেছে সেটা হল সময় মেইনটেইন করা। সময়ের কোন নড়চড় হয় না। একদম রাইট টাইমে ট্রেন প্লাটফর্মে এসে পৌঁছে যায়। আর সব থেকে বেশি মজার লেগেছে টিকিট সিস্টেমটা। টাকা দেয়ার পর টিকিটের বদলে ছোট একটা কয়েন দেয়। যেটা একচুয়ালি সেন্সর বেসড। আবার বের হওয়ার সময় সেই কয়েনটা ড্রপ করে তারপর স্টেশন থেকে বের হতে হয়। যার ফলে দুই নাম্বারি করার সুযোগ একদমই নেই। এই ব্যাপারটা অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। আবার ট্রেনের ভেতরে পরবর্তী স্টেশন আসার আগে বারবার সেই স্টেশনের নামটা অ্যানাউন্সমেন্ট করতে থাকে মাইক দিয়ে। তাই ভুল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। আর এত কম সময়ে এতটা আরামদায়কভাবে গন্তব্যে পৌঁছতে পারলে কার বা ভালো লাগবে না!!! ইন্ডিয়াতে ট্রেনের সেবার প্রশংসা না করে উপায় নেই সত্যি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

This post was selected for Curación Manual (Manual Curation)

@tipu curate

আমাদের দেশেও চালু হচ্ছে। আমাদেত টাও যদি এরকম হয় তাইলে বেশ হবে।ইন্ডিয়ার ট্রেন সেবার অনেক প্রাশংসা শুনেছি।আমাদের দেশেও এরকম টিকেটের বদলে কয়েন সিস্টেম চালু করতে হবে তাইলে আর কেউ টিকেট কালোবাজারি করতে পারবে না।ধন্যবাদ দাদা আপনার সুন্দর অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।

দেখা যাক আমাদের দেশে চালু হওয়ার পর কেমন সুফল পাওয়া যায়। সত্যি বলতে আমি নিজেও অপেক্ষায় আছি এই জন্য। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। ভালো থাকবেন ভাই।

মেট্রোরেল সার্ভিস ভ্রমণ করে আপনি খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন খুবই ভালো লাগলো আপনার ফটোগ্রাফি এবং লেখাগুলো পড়ে।। আসলে সময়ের কাজ সময়ে না হলে সময়টা যেন বড়ই সংকীর্ণ হয়ে যায়।। আপনার একটা কথা আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে সেটা হল ট্রেনের সিডিউল একদম জাস্ট টাইমে হয়ে থাকে ইন্ডিয়ায়।। আর বাংলাদেশের রেল সম্পর্কে কি বলবো সেটি সম্পর্কে আপনিও অবগত ৯ টার গাড়ি কয়টায় আসে বুঝতেই পারিনা।। আমার খুব ইচ্ছা আছে ঢাকাতে মেট্রোরেল চালু হলে প্রথম প্রথমই ভ্রমণ করার।।

ট্রেন জার্নি করতে নিয়ে আমাদের দেশে অনেক বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি ভাই তাই তো আর ট্রেনে যাতায়াত করিই না বলা চলে। আমাদের দেশের মেট্রো সার্ভিস দেখার অপেক্ষায় আমিও আছি ভাই। আশা করি ভালো কিছু হবে।

জি দাদা সত্যি ই আপনার মেট্রো রেলের প্রশংসা দেখেই আমারও এখন মেট্রোরেলে উঠতে ইচ্ছা করছে জানিনা বাংলাদেশে কবে এই সুযোগ-সুবিধা চালু হবে। সব মিলিয়ে মেট্রো রেলের ছড়ার যে দারুন অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সত্যি আমার অনেক ভালো লেগেছে। সে সাথে ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার হয়েছে। তবে এত গাদাগাদির ভিতরও যে চমৎকার টিকেট সিস্টেম করা হয়েছে বা টাইমিংটা এত চমৎকারভাবে মেন্টেন করা হয় এগুলো সত্যিই প্রশংসনীয়।

ইন্ডিয়ার ট্রেন এর সার্ভিস সত্যিই অনেক প্রশংসার দাবিদার। আর ভাড়া টাও অনেক কম। আমাদের দেশের মেট্রো সার্ভিস কেমন হয় সেটাই দেখার পালা এখন ভাই।

এ ধরনের জিনিসগুলো আমাদের দেশেও চালু করা দরকার কেননা বর্তমানে ঢাকা শহরে মেট্রোরেল চালু হচ্ছে। আর আমাদের দেশের মানুষেরা এত বেশি পরিমাণে ২ নম্বরই কাজ করে যার ফলে ট্রেন সার্ভিস হুমকির মুখে পড়ে যাবে।

মেট্রোরেলে চড়ার কাহিনীটা খুবই ভালো লাগলো। ভিড় দেখেই বুঝতে পেরেছি কিভাবে আপনারা ট্রেনে উঠেছিলেন।

মানুষ তো দুই নাম্বারি করার চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আইনের প্রয়োগ টা কেমন হবে সেটাই হলো আসল কথা। অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

আপনার ট্রেনে ওঠার অভিজ্ঞতা শুনে আমার কলেজ লাইফের কথা মনে পড়ে গেল। কলেজের বাসে উঠতে গেলে এমন অবস্থা হতো। বাসের দরজার কাছে দাঁড়ালে পেছনের ধাক্কায় একাই বাসে কখন উঠে যেতাম টেরই পেতাম না। আমি তো প্রথমে ভাবছিলাম যে এত ভিড়ের মধ্যে উঠলেন ট্রেনে কিন্তু এত ফাঁকা কিভাবে পেলেন। পরে বুঝতে পারলাম যে অন্য আরেকদিন ফাঁকা পেয়েছেন। মেট্রোরেল খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তাছাড়া কয়েন সিস্টেমটা আমার কাছেও খুবই ভালো লাগলো শুনে। খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন বোঝাই যাচ্ছে।

হাহাহাহা,, আমার স্কুল লাইফে এমন হতো। রীতিমত যুদ্ধ করে বাসে উঠতাম জানালার পাশে সিট পাওয়ার জন্য। আর কয়েন টা সেন্সর বেসড। টাচ করে তবেই মেট্রো প্ল্যাটফর্মে ঢোকা যায়,, বের হওয়ার সময় টায় ড্রপ করে দিতে হয়। অনেক ভালো লাগলো আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়।

তাও ভালো উঠতে পারছেন।আর ট্রেনের মধ্যে এসি না থাকলে বুঝতেন গরম কারে বলে।আর টিকেট সিস্টেম টা আমারও ভালো লাগছে।

হাহাহাহা,, একদম মনের কথা বলেছেন। আর পুরো সিস্টেম টা সত্যিই প্রশংসা করার মত।

  ·  2 years ago (edited)

দাদা আমি তো মনে করেছি যে আমাদের বাংলাদেশ্ই মনে হয় এরকম ট্রেন হোক বাস হোক যেখানে মানুষ মানুষ উপরে পরছে বিশেষ করে ঈদে ৷এখন তো দেখি ইন্ডায় একি অবস্থা আপনি দারিয়ে থাকা আর ট্রেনে ঢুকে পরলেন ৷বেশ মজার ছিল হাহাহাহাহাহ ৷
দেখলাম অনেক যাত্রী দারিয়ে

ভাই কমেন্ট লিখে একবার পড়ার চেষ্টা করবেন,, তাহলে ভেতরের ছোট ছোট মিসটেক গুলো চোখে পরবে। আশা করি ব্যাপারটা খেয়াল রাখবেন পরবর্তিতে। ধন্যবাদ।

আপনার বন্ধু একদমই ঠিক বলেছে মোবাইল এবং মানিব্যাগটাই সাবধানে রাখার দরকার। কারণ এইরকম অবস্থায় সেগুলো নিতে একদমই কম সময় লাগবে। আসলেই আপনার মত আমিও ভয় পেয়ে গেলাম এত ভিড় দেখে। কিন্তু ভিড়ে দাঁড়িয়ে একটা খেলার সাথেই ভিতরে ঢুকে পড়লেন এই বিষয়টা অবাক লাগলো। আর ভেতরটা আমার অসাধারণ লেগেছে। মনে হচ্ছিল আমি যদি এরকম একটা জার্নি করতে পারতাম বেশ ভালই লাগতো।

আপু কয় দিন পর আমাদের দেশেই মেট্রো সার্ভিস শুরু হবে। আশা করি আমরা সবাই এই মজা টা নিতে পারবো। অনেক ভালো থাকবেন।