নমস্কার,
গত ঈদ থেকে আমার ঈদের ছুটি গুলো একটু ভিন্ন ভাবেই কাটছে। সচরাচর ঈদের ছুটিতে সবাই বাড়িতে যায়। কিন্তু ওই সময়টাতে আমাকে ঢাকাতেই থাকতে হয়। ঈদের ছুটি আমি ঈদের আগে কাটাই অথবা ঈদের পরে। জীবিকার তাগিদেই আমার এমন রুটিন মেনে চলতে হয়। কিছুই করার নেই এখানে। ঈদে যেহেতু ঢাকাতেই থাকতে হবে তাই বাড়ি থেকে খাবার রান্না করে পাঠানোর কথা ছিল আগে থেকেই। মোটামুটি এবার লম্বা একটা ছুটিতে পুরো দেশ। রান্নার খালাও থাকবে না। প্রায় এক সপ্তাহ নিজেরটা নিজেকে ম্যানেজ করে নিয়ে চলতে হবে। সেই বুঝেই বাড়ি থেকে খাবার পাঠাতে বলেছিলাম।
বাবাকে বলেছিলাম একদম সকালের দিকে খাবারের ব্যাগ গাড়িতে তুলে দিতে। বাবা করেছিলও তাই। সকাল ৭ টার দিকে আমার জন্য খাবার গাড়িতে তুলে দেয়। আমি ভেবেছিলাম মোটামুটি দুপুর বারোটা থেকে একটার ভেতর খাবারের ব্যাগটা হাতে পেয়ে যাব। কিন্তু এবার যে এতটা ভোগান্তি অপেক্ষা করেছিল সেটা আমি নিজেও বুঝিনি। আমার খাবারের গাড়িটা ঢাকার টেকনিক্যালে পৌঁছতে পৌঁছতে বেজে যায় প্রায় বিকাল পাঁচটা। অসম্ভব রকমের জ্যাম ছিল যমুনা সেতু এবং তার আগে পরে। আমি শুধু ভয় পাচ্ছিলাম খাবারগুলো না নষ্ট হয়ে যায়। গাড়ির সুপারভাইজার কে ফোন করে বলেছিলাম চন্দ্রা পার হওয়ার সাথে সাথেই যেন আমাকে একটা ফোন করে। কিন্তু তিনি ঢাকা টেকনিক্যাল পৌঁছানোর পরে আমাকে জানায় খাবারটা নিয়ে যাওয়ার জন্য। বলা যায় অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই আমি রওনা দিলাম পল্টন থেকে টেকনিক্যাল এর উদ্দেশ্যে।
সব থেকে অদ্ভুত ব্যাপার আমি যাওয়ার সময় কোন উবার পাচ্ছিলাম না। তাই মেট্রোরেলে ছুটে গেলাম। বেশ ফাঁকা ছিল। মোটামুটি ১২ মিনিটের মধ্যেই আগারগাও নেমে গেলাম। তারপর সেখান থেকে বাস দিয়ে টেকনিক্যাল মোড়ে পৌঁছালাম। ঘড়ির কাটায় তখন পৌনে ছয়টা বাজে। খাবারের ব্যাগটা নিয়েই আবার ছুটলাম আগারগাওয়ের উদ্দেশ্যে। এবারে আর গাড়ি পেতে কোন অসুবিধা হয়নি। প্ল্যাটফর্মে পৌঁছার সাথে সাথেই মেট্রোরেল পেয়ে গেলাম। ভয়ে ছিলাম ব্যাগ চেক করা নিয়ে। কারণ মেট্রোরেলে ফ্রিজিং করা খাবার নিয়ে ওঠা নিষেধ। একবার আমাকে আটকেও দিয়েছিল। কিন্তু অনেক রিকুয়েস্ট করে সেবার পার পেয়ে গিয়েছিলাম। পল্টনে আসতে সবমিলিয়ে আধা ঘন্টার মত সময় লেগে যায়। তারপর তো রিক্সা নিয়ে বাড়িতেই চলে আসলাম। আমার ভাগ্য ভালো যে খাবারগুলো একদম ঠিকঠাক ছিল।
ঈদের ছুটি পর্যন্ত এই খাবারগুলো আমার চলবে। তারপর তো বাড়িতে গিয়ে আবার রান্না করে নিয়ে আসবো। হিহিহিহি। অদ্ভুত একটা রুটিন চলছে বিগত কয়েক মাস ধরে। সত্যি বলতে বাইরের খাবার খুব একটা সহ্য হয় না আমার। তাই এমন ব্যবস্থা ছাড়া আর কোন গতি নেই আপাতত।
এটা ঠিক ঈদে রান্নার খালারা বাড়ি চলে যায়। তাই খাওয়া-দাওয়ার ভীষণ কষ্ট বুঝতে পারছি। তবে অবাক হলাম এতো দূর থেকে মা খাবার পাঠায়।এতো গরমে ও নষ্ট হয়নি ভাগ্য তবে ভালো ই।আমি হলে কিন্তু বাড়ি থেকে খাবার আনাতাম না।হয় নিজে এই সুযোগে রান্না শিখে নিতাম নয়ত বিয়ে করে ফেলতাম।🫣
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit